Image: Shutterstock
শেল কোম্পানির গোপন মালিকদের যেভাবে খুঁজে বের করবেন
আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য শেল কোম্পানি ও সেগুলোর প্রকৃত মালিকদের পরিচয় খুঁজে বের করাটা অনেকটা অচেনা আকাশযান (ইউএফও বা আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট) অনুসন্ধানের মতোই অধরা ও “ঘোলাটে” বলে মনে হতে পারে। তবে শক্তিশালী কিছু টুল রয়েছে যার সাহায্যে জটিল এই ক্ষেত্রে নতুন আসা সাংবাদিকেরাও গোপনে অবৈধ সম্পদ লুকোনো ব্যক্তিদের পদচিহ্ন খুঁজে বের করতে পারেন।
শেল কোম্পানি আসলে ব্যবসা করে না, তবে এগুলো প্রায়ই খোলা হয় কৌশলগত কারণে; যেমন বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কর এড়াতে সহায়তা — এবং যেসব ব্যক্তি অবৈধ বা নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের পরিচয় ও সম্পদ গোপন রাখা।
শেল কোম্পানি ও তার মূল সুবিধাভোগী মালিকদের (ইউবিও) খুঁজে বের করাটা অনুসন্ধানের একটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র। ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) এবং অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এর মতো নেটওয়ার্কগুলো এ ধরনের কাজে পারদর্শী। তারা ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন থেকে শুরু করে বিলম্বিত কর্পোরেট প্রসিকিউশন চুক্তির (যার অধীনে অপরাধে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়) গতিবিধি ট্র্যাকিং পর্যন্ত যেসব উন্নত কৌশল ব্যবহার করে তা নিয়ে কয়েকটি বই লিখে ফেলা যায়।
তবে নিকার ডেটা সাংবাদিকতা সম্মেলনে, মাত্র একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে, গোপন ব্যবসা সাম্রাজ্যের চূড়ায় থাকা ব্যক্তি ও তাদের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধানের বেশ কিছু পরামর্শ, কৌশল ও খোঁজ শুরু করার জায়গাগুলো দেখিয়ে দেন আইসিআইজের ডেটা ও গবেষণা শাখার উপপ্রধান, ক্যারি কেহো। তিনি শুরুতেই উপস্থিত সবাইকে বলেন, নিজেকে প্রশ্ন করুন: এ ধরনের কোম্পানির জন্য ফাইল করা নথিতে কী ধরনের শব্দ লেখা থাকতে পারে। এরপর ওই শব্দগুলোর সম্ভাব্য বিকল্পগুলো ভাবুন যেগুলো কর্পোরেট রেজিস্ট্রি এবং ডেটাবেসে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। যেমন, ইয়ান নামের কোনো পরিচালক বা মালিকের নাম কী “আইয়ান” হিসাবে লেখা হতে পারে?
শেল কোম্পানি নিয়ে অস্পষ্টতার অন্যতম কারণ হলো এগুলো খোলা হয় এমন জায়গায় যেখানে গোপনীয়তা আইন দিয়ে সুরক্ষিত। যেমন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, পানামা, সাইপ্রাস, বা কেম্যান আইল্যান্ডস। তবে এমন কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য সবসময়ই নথিপত্র প্রয়োজন হয়। “ফর্মেশন এজেন্ট”, অর্থাৎ যারা টাকার বিনিময়ে মালিকদের হয়ে ফর্ম পূরণের কাজটি করে থাকেন, তাদের নিয়েও সতর্ক থাকতে বলেন কেহো।
সুবিধাজনক আইনি ব্যবস্থায় ধনী ক্লায়েন্টদের হয়ে কোম্পানি খুলে দেওয়াটা তাদের কাজ, যেখানে নিবন্ধন খরচ মাত্র ১৪ ডলারও হতে পারে। বাড়তি ফি পেলে এই এজেন্টরা গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কাগুজে পরিচালক এবং সাচিবিক সেবাও দিয়ে থাকে। তবে তারা কোম্পানি গঠনের সময় মৌলিক কিছু বিষয় গোপন করতে পারেন না: যেমন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার একটি আনুষ্ঠানিক ঠিকানা, অন্তত কিছু পরিচালকের আসল নাম এবং ব্যবসার ধরন সংক্রান্ত নথি।
২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের এক রাজার বিদেশী সম্পদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে কেহো ও তার সহকর্মীরা দেখতে পান যে তিনি করস্বর্গে (ট্যাক্স হ্যাভেন) নিবন্ধিত ভুয়া কোম্পানির নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে গোপনে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বিলাসবহুল বাড়ির মালিক হয়েছেন। অনুসন্ধানী দলটি খুব নাটকীয়ভাবে গোপন মালিককে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়। তারা দেখতে পান ফর্মেশন এজেন্টরা তাদের নিবন্ধনপত্রে গোপন ওই গ্রাহকের বাড়ির ঠিকানায় সেই দেশটির ‘রয়েল প্যালেস’ এর নাম লিখেছেন।
কেহো জোর দিয়ে বলেন, এক্ষেত্রে, মনে রাখতে হবে আপনি আসলে অনুসন্ধানের শুরুতে পাওয়া নিছক কিছু পরিচালক বা মালিকের নাম নয় বরং প্রতিষ্ঠানটির মূল সুবিধাভোগী মালিককে (বেনিফিশিয়াল ওনার) খুঁজছেন।
কেহো বলেন, একটি সম্ভাব্য দৃশ্যপট হলো, “নেদারল্যান্ডসে বসে আপনি হয়ত হংকংয়ের ফর্মেশন এজেন্টকে কাজ দিচ্ছেন এবং এরপর তিনি আপনার হয়ে কুক আইল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য জায়গায় শেল কোম্পানি খুলতে শুরু করেছেন।” তিনি বলেন, “এরপর তারা আপনাকে সাচিবিক সেবা, একটি ঠিকানা এবং পরিচালক হিসেবে নামেমাত্র কোনো ব্যক্তিকে যোগাড় করে দিবে।”
এরকম একজন ব্যক্তিকে ১০০টি কোম্পানির পরিচালক হিসাবে তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। হতে পারে সেই ব্যক্তি আজারবাইজানের কোনো ট্যাক্সি চালক। এখানে তার তেমন কিছু করার নেই। তিনি হয়তো এর বিনিময়ে সামান্য কিছু অর্থ পাবেন। এ ধরনের ব্যক্তিরা কখনও কখনও ওই ফর্মেশন এজেন্টদের আত্মীয় বা সামান্য পরিচিত কেউ হতে পারেন; কখনও কখনও চাপে পড়েও এমনটি করে থাকেন। কিন্তু এমন লোকই এজেন্টদের প্রয়োজন।”
শেল কোম্পানিগুলো সম্পদ গোপনের বিভিন্ন ধরনের “প্রক্সি” পদ্ধতি ব্যবহার করে, যেমনটা লিখেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক উইল নিল। এই বিষয়ে আরও জানতে, জিআইজেএনের রিসার্চিং কর্পোরেশন অ্যান্ড দেয়ার ওনারস, শিরোনামের নির্দেশিকাটি দেখুন, যেখানে বার্ষিক প্রতিবেদনের পোর্টাল এবং জার্মানি থেকে হংকং পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রিতে প্রবেশের লিঙ্ক রয়েছে।
এখানে রইল নিকার সম্মেলনে কেহোর দেওয়া আরও কিছু পরামর্শ।
ওপেন কর্পোরেটস-এ কোম্পানি বা ব্যক্তির নাম দিয়ে দ্রুত অনুসন্ধান করুন। এখানে ১৪০টির বেশি দেশের কোম্পানি নিবন্ধনের সরকারি তথ্য পাওয় যায়। ওপেন কর্পোরেটস একটি উন্মুক্ত ডেটাবেস, যা সাংবাদিকদের বেশ পছন্দের। “আমি প্রথমেই চমৎকার অনুসন্ধানযোগ্য এ ডেটাবেসে প্রবেশ করি– এখানে ২২ কোটির বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির তথ্য রয়েছে,” কেহো ব্যাখ্যা করেন। “কিছু কিছু দেশের জন্য এটি বিস্ময়কর আবার কিছু দেশের ক্ষেত্রে দুর্বল। যেমন, আইরিশ শেল কোম্পানিগুলোর তথ্য আপনাকে অন্য কোথাও খুঁজতে হবে। তবে আপনি যদি একসঙ্গে অনেক কোম্পানির তথ্য খুঁজতে চান সেক্ষেত্রে তাদের এপিআই অ্যাক্সেস রয়েছে।”
আপনি যদি ওপেন সোর্স টুলের সাহায্যে গোপন তথ্য বের করতে আনতে চান তাহলে কর্পোরেট রিস্ক ডেটাবেসের সাবস্ক্রিপশন কিনতে পারেন। কেহো একটি প্রধান শেল কোম্পানির নাম দেখান যা ওপেন কর্পোরেটস ডেটাবেসে ছিল, তবে কোম্পানিটি সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া যায় পেইড সাইট সায়েরি কর্পোরেট রিস্ক প্ল্যাটফর্মে সার্চ করার পর। কোম্পানিটির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা বোঝানোর জন্য নামের পাশে লাল পতাকা এবং কোম্পানিটি ও এটির পরিচালকেরা কোন দেশের তা বোঝানোর জন্য ওই দেশের জাতীয় পতাকার আইকন রয়েছে। “এটি এমন একটি ডেটাবেস যা আমি সবসময় ব্যবহার করি— তবে এটি টাকা দিয়ে কিনতে হয়, যদিও তাদের বিনামূল্যের কিছু ট্রায়াল সুবিধা রয়েছে,” বলেন তিনি। এছাড়া রবিস ও ফ্যাক্টিভা-এর মতো কর্পোরেট পেইড ডেটাবেসগুলোও দুর্দান্ত।
কোটিপতি ও অলিগার্কদের মতো করে ভাবুন। কেহো বলেন যে, অলিগার্ক ও মূল সুবিধাভোগীরা কোন জায়গাগুলো ঘিরে অতি উৎসাহী, সেটি বিবেচনায় নিন। এটি ডেটাবেস ও রেজিস্ট্রি অনুসন্ধানকে পরিমার্জিত করতে সহায়তা করে। “অতি ধনী ব্যক্তিদের পছন্দগুলো অনুমানযোগ্য, আপনি যদি একজন কোটিপতি হন তবে আপনি কিনতে পারবেন এমন অনেক জিনিসই আছে,” কেহো উল্লেখ করেন। “ধনীরা প্রায়ই লন্ডন ও ফ্রান্সের দক্ষিণে বিলাসবহুল সম্পত্তি চায়; তারা মেগা-ইয়ট, জেট এবং শিল্পী ও খেলোয়াড়দের দল কিনতে চায়।” তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট দেশের সবচেয়ে ধনী এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে সেখানে অনুসন্ধান চালানো আপনার লুকানো সম্পদের অস্তিত্ব খোঁজার কাজটিকে সহজ করে তুলতে পারে।
আইসিআইজে অফশোর লিকস ডেটাবেসের যাচাইকৃত অনুসন্ধানী ডেটা ব্যবহার করুন। অনেক রিপোর্টার বুঝতে পারেন না যে অনুসন্ধানযোগ্য অফশোর লিকস ডেটাবেসে ২০০টির বেশি দেশের ৮ লাখ ১০ হাজার অফশোর কোম্পানি, ফাউন্ডেশন এবং ট্রাস্টের তথ্য রয়েছে। যে কোনো রিপোর্টার তার কাজের জন্য বা নতুন প্রতিবেদন তৈরির জন্য এগুলো অবাধে ব্যবহার করতে পারেন। “এগুলো ব্যবহার করুন,” তিনি বলেন। “আমরা জানি এ ডেটার ভেতরে আরও অনেক গল্প রয়েছে, আর আমরা চাই সাংবাদিকেরা সেগুলো খুঁজে বের করুক।”
আইসিআইজে সংকলিত ডেটাবেসটি অফশোর সম্পদ ও গোপন মালিকানার তথ্য, যেমন পানামা পেপারস, দ্য প্যান্ডোরা পেপারস, বাহামাস লিকস এবং প্যারাডাইস পেপারস ফাঁসের মতো সহযোগিতামূলক অনুুসন্ধান থেকে তৈরি করা হয়েছে। “অনুসন্ধান বক্সে আপনি শুধু ঠিকানা, বা ব্যক্তি বা কোম্পানির নাম লিখবেন,” তিনি ব্যাখ্যা করেন। রিপোর্টারেরা তাদের অনুসন্ধানগুলো ফাঁস হওয়া তদন্তের মাধ্যমে ফিল্টার করতে পারেন, যা বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের ওপর আলোকপাত করে। যেমন পানামা পেপার্সের তুলনায় প্যানডোরা পেপার্সে এশিয়া নিয়ে বেশি তথ্য পাবেন।
এ পর্যায়ে কেহো একটি সতর্কবার্তা যোগ করেন: “এই ডেটাবেসে কারো নাম থাকার অর্থ এই নয় যে নিশ্চিতভাবে তারা দোষী বা কোনো অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত। এর মানে তারা একটি অফশোর অধিক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত।” (এই ডেটাবেসের উন্নত অনুসন্ধান কৌশলগুলোর জন্য আইসিআইজের ভিডিও টিউটোরিয়াল সিরিজ দেখুন।)
ওসিসিআরপির ফলো–দ্য–মানি আর্কাইভে অপরাধমূলক সম্ভাব্য লিঙ্কগুলো দেখুন। ওসিসিআরপির আলেফ ডেটাবেসে ১৪১টি দেশের ৪৩৯ মিলিয়ন পাবলিক তথ্য রয়েছে। “এতে বিভিন্ন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য অনুসারে ডেটাসেট ও গেজেট রয়েছে,” কেহো বলেন। “ইউরোপের গেজেটগুলো বিশদ– যদি কোনো কোম্পানি [কোম্পানির নিবন্ধন থেকে] বাদ পড়ে যায়, তবে তা তালিকায় থাকবে।” (নিয়ম পরিপালন না করার জন্য কোম্পানিগুলোকে সাধারণত অফিসিয়াল রেজিস্টার থেকে বাদ দেওয়া হয়, বা মুছে ফেলা হয়, এবং পরবর্তী লেনদেন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।) তিনি যোগ করেছেন: “(আলেফ) এ প্রচুর আদালতের রেকর্ডও রয়েছে, যা অনেক দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বেশিরভাগ দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেসারের মতো কোর্ট রেকর্ড টুল নেই।”
বিভিন্ন বানান নিয়ে পরীক্ষা করুন — এবং গুগল ম্যাপে যাচাই করুন। এ সময় তিনি আয়ারল্যান্ডে তার নিজের শহরের নাম ব্যবহার করে দেখান। তিনি বলেন যে সাংবাদিকরা Dún Laoghaire শহরের কোনো ব্যক্তি বা সম্পদের অনুসন্ধান করছেন, তাদের “Dún Laoire” এবং “Dunleary” এর মতো বানানগুলো দিয়েও চেষ্টা করা উচিত। “আপনি যদি নামের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বানান চেষ্টা করেন তবে প্রাপ্ত তথ্যগুলো দেখে আপনি অবাক হবেন,” তিনি বলেন। “ফাঁস হওয়া ডেটাগুলো বিভিন্ন ভাষা থেকে আসে, তাই আপনি যদি রাশিয়ায় একটি ঠিকানা খুঁজে পেতে চান তবে ‘স্ট্রিট’ শব্দ দিয়ে সার্চ করার কোনো মানে নেই।”
আমার পরামর্শ হলো, গুগল ম্যাপে গিয়ে সিরিলিক শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করুন এবং বাক্যটি ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিয়ে সেটি দিয়ে ডেটাবেসে সার্চ করুন। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে: কর্পোরেট রেজিস্ট্রিতে তালিকাভুক্ত পরিচালকদের নামের জন্য বিকল্প বানান ব্যবহার করুন। যেমন “Ann” এবং “Anne” এর মতো এমন প্রচলিত বিকল্প বানান দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। কিন্তু রুশ নামের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে, বানানগুলো প্রায়শই পরিবর্তিত হয় – “i”s হয়ে যায় “y”s আর “x”s হয়ে যায় “ks”s ইত্যাদি,” ব্যাখ্যা করেন কেহো।
পরামর্শ: ওপেনস্ট্রিটম্যাপে আপনি যে ঠিকানাগুলো খুঁজে পান সেগুলো লিখুন। এরপর দেখুন পরিচালকের ঠিকানায় আপনি যেমনটি ভেবেছিলেন তেমন কোনো বড় ভবন আছে, নাকি কোনো ছোট অফিস বা অ্যাপার্টমেন্ট মিলছে, যা কিনা আরেকটি ভুল ফ্রন্টের ইঙ্গিত হতে পারে।
অন্যান্য ফ্রি পোর্টালগুলোতে আপনি যে সব “ছোট সূত্র” খুঁজে পাবেন তা-ও বারবার যাচাই করুন। লুকোনো আন্তঃসীমান্ত ব্যবসায়িক সংযোগগুলো অনুসন্ধানের জন্য কেহো এই বিনামূল্যের সাইটগুলোর কথা উল্লেখ করেন: ওপেন ওনারশিপ, যুক্তরাজ্যের রেজিস্টার অব ওভারসিজ এন্টিটিস এবং টেন্ডারস ইলেকট্রনিক ডেইলি (টেড)৷ “টেড চমৎকার– এতে ২৭টি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সদস্য রাষ্ট্রের পাবলিক চুক্তি রয়েছে”, কেহো বলেন। “তবে এটি একটু কঠিন হতে পারে কারণ এতে অনেকগুলো ভিন্ন ভাষা একসঙ্গে রয়েছে।”
পরামর্শ: কোম্পানির পরিচালক হিসাবে ডেটাসেট ও কর্পোরেট রেজিস্ট্রিতে তালিকাভুক্ত অলিগার্ক বা মূল সুবিধাভোগীর নাম দিয়ে তাদের ছবি অনুসন্ধান করুন।
অলিগার্কদের সম্পদ ট্র্যাক করতে পারিবারিক সংযোগ টুল ব্যবহার করে দেখুন। “রাশিয়ান অলিগার্করা হলেন শেল কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক প্রভু– তারা ১৯৯০ সাল থেকে এটি করে আসছেন, এবং সাংবাদিকেরা সবসময় তাদের ধরার চেষ্টা করছেন,” কেহো বলেন। “প্রথম কাজটি হলো তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা।”
তিনি রুপেপ নামে একটি ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যেটি রাশিয়া, বেলারুশ এবং কাজাখস্তানে হাজার হাজার “রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তি” কিংবা নিষেধাজ্ঞা আরোপিত ব্যক্তি, এবং তাদের আত্মীয়স্বজনসহ প্রশাসনের সঙ্গে সংযুক্তির তথ্য সবরবাহ করে। তিনি যোগ করেন: “এ ধরনের ডেটাবেসগুলো প্রায়ই আপনাকে নতুন তথ্য দেয়, তবে কাজ শুরুর জন্য এটি একটি দুর্দান্ত জায়গা। এখানে ব্যাপক সংখ্যক অলিগার্কের প্রোফাইল রয়েছে আর তাদের গবেষণাগুলোও দারুন, কেহো বলেন। “এটি আপনাকে পরিবারের সদস্যদের তথ্য দেয়, যা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রচুর সম্পদ তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে।”
নথিপত্রে গোপন অনেক তথ্য থাকে— তাই সেগুলো ঘাটতে থাকুন। “হাল ছাড়বেন না,” কেহোর পরামর্শ। “মূল সুবিধাভোগী মালিকেরা তাদের ফর্মেশন এজেন্টদের বিশ্বাস করেন এবং তথ্যগত যাচাই বাছাই থেকে তাদের নিরাপদ রাখার জন্য নিজেদের অনেক তথ্যও সরবরাহ করেন। এজন্য তারা তাদের বাড়ির ঠিকানা, পাসপোর্ট বা ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি পাঠিয়ে থাকেন। যা প্রায়ই ডেটাবেসের কোথাও না কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়।”
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমসের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। একজন বিদেশী সংবাদদাতা হিসেবে তিনি বিশ্বের দুই ডজনেরও বেশি দেশের সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি এবং সংঘাতের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।