প্রবেশগম্যতা সেটিংস

NYT screenshot of secret Pentagon records on airstrike civilian casualties
NYT screenshot of secret Pentagon records on airstrike civilian casualties

Image: Screenshot

লেখাপত্র

বিষয়

বিমান হামলায় বেসামরিক মৃত্যু যেভাবে উন্মোচন করল নিউ ইয়র্ক টাইমসের পুলিৎজার-জয়ী সিরিজ 

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

English

NYT screenshot of secret Pentagon records on airstrike civilian casualties

ছবি: স্ক্রিনশট

২০১৯ সালের ১৮ই মার্চ,  আইসিস সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু খুঁজতে থাকা একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান সিরিয়ার বাঘুজ শহরের কাছে নারী, পুরুষ ও শিশুদের একটি বড় জমায়েতের ওপর বোমা বর্ষণ করে। এর পরপরই, প্রথম হামলায় বেঁচে যাওয়াদের ওপর আরও দুটি বোমা ফেলে জোটের আরেকটি বিমান। তখন ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে, কাতারে মার্কিন সেনাবাহিনীর এয়ার অপারেশনস সেন্টারে বসে ড্রোন নজরদারি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছিলেন এক ব্যক্তি। নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই “বিভ্রান্ত বিশ্লেষক” সেসময় তাদের নিরাপদ বার্তা ব্যবস্থায় টাইপ করেছিলেন “এটি ফেলল কে?”। পত্রিকাটির রিপোর্টে বলা হয়, সম্ভবত এই একটি সর্বনাশা ভুলেই অন্তত ৭০জন নিহত হয়েছেন, যাদের অনেকেই বেসামরিক নাগরিক। 

গত বছর ২৯শে আগস্ট, আফগানিস্তানের কাবুলে একটি বাড়ির উঠানে ড্রোন চালিত হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ১০ জন নিহত হন। এদের সবাই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। যে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল, পরে জানা যায়, তিনি একজন উন্নয়নকর্মী। রিপার নামের একটি নজরদারি ড্রোন দিয়ে তাঁকে ট্র্যাক করা হয়েছিল এবং তাঁকে গাড়িতে বস্তু বোঝাই করতে দেখা যাচ্ছিল। দূরবর্তী বিশ্লেষকেরা সেই বস্তুকে বোমার যন্ত্রাংশ ভেবে ভুল করেছিলেন। 

এ তো মাত্র দু’টি উদাহরণ। আইসিসের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের আকাশ যুদ্ধ নিয়ে এক অনুসন্ধানে, ২০১৪ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বেসামরিক হতাহতের ঘটনার এমন ১৩০০টি অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে টাইমসের একটি দল। বিশদ বিশ্লেষণ শেষে টাইমস এই বলে উপসংহার টেনেছে যে, “আমেরিকার আকাশ যুদ্ধ ভীষণ ত্রুটিপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য, তাড়াহুড়ো করে ও ভুল লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ এবং হাজারো বেসামরিক মৃত্যুতে জর্জরিত।”

New York Times Pulitzer Prize International Reporting

ছবি: স্ক্রিনশট

পত্রিকাটির আট পর্বের এই দুর্দান্ত ধারাবাহিক মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে নাড়িয়ে দিয়েছে এবং এই মাসের শুরুতে আর্ন্তজাতিক রিপোর্টিং বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার জিতে নিয়েছে। পুলিৎজার বোর্ড তাঁদের মানপত্রে প্রশংসা করেছে সেই “সাহসী ও নিরলস সাংবাদিকতার, যা ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক সম্পৃক্ততার সরকারি ভাষ্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মধ্য দিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলার বিশাল বেসামরিক ক্ষতিকে উন্মোচিত করেছে।”

এই ধাঁচের অনুসন্ধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকৌশল এগিয়ে গেছে যুৃক্তরাজ্যভিত্তিক দুটি অলাভজনক সংগঠনের সাংবাদিক ও গবেষকদের হাত ধরে। সংগঠন দুটির নাম: দ্য ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (টিবিআইজে) এবং এয়ারওয়ারস। টিবিআইজে, জিআইজেএনের সদস্য এবং তারা ২০১০ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ড্রোন হামলা ট্র্যাকিংয়ের কাজে উন্মুক্ত নথি, সংবাদ প্রতিবেদন ও কিছু মৌলিক সোর্স ব্যবহার করে আসছে। আর ওয়াচডগ সংগঠন এয়ারওয়ারস আরবি ভাষার সামাজিক মাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টসহ বিভিন্ন ধরনের সোর্স ব্যবহারের মাধ্যমে ২০১৪ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলা ও গোলার আঘাতে বেসামরিক হতাহতের ঘটনাগুলোকে নথিবদ্ধ করছে। টাইমসের এই অনুসন্ধানের ভিত্তি ছিল ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে বেসামরিক হতাহতের ১০০টিরও বেশি ঘটনাস্থল থেকে সরেজমিন রিপোর্টিং, সামরিক বাহিনীর সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার, এয়ারওয়ারসের মত ডেটাবেস থেকে পাওয়া সূত্র এবং তথ্য অধিকার আইনে পাওয়া বেশ কিছু গোপন সামরিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ।

যারা এধরনের হামলার পরিকল্পনা করেন, তাদের সংখ্যা অনেক। তাদের মাত্র দুটি ভুলের ঘটনা প্রকাশ করেছে টাইমস। প্রথম ঘটনাটি ছিল নিশ্চিতকরণ পক্ষপাতের (ইংরেজিতে কনফার্মেশন বায়াস, যার অর্থ কোনো ব্যক্তি যখন তার নিজ বিশ্বাস বা মূল্যবোধ দিয়ে প্রভাবিত হয়ে কোনো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করেন)। এই ঘটনায় হামলার সিদ্ধান্তদাতা কর্মকর্তারা তাদের পূর্বধারণার ভিত্তিতে দৈনন্দিন জিনিসপত্র ও কর্মকাণ্ডকে অস্ত্র বা সন্দেহজনক গতিবিধি হিসেবে অপব্যাখ্যা করেছিলেন। দ্বিতীয় ঘটনাটি ছিল প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অজ্ঞতার। এক্ষেত্রে বেসামরিক চলাচল অনুমানের ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ “জীবনধারা” তত্ত্ব ব্যবহার করা হয়েছিল এবং মানুষের আচরণে রোজা, দুপুরের খরতাপ ও স্থান পরিবর্তনের জন্য আইসিস যোদ্ধাদের দেয়া আদেশের মতো অনুমানযোগ্য ঘটনার যে প্রভাব রয়েছে সেদিকে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়নি। 

(রিপোর্টার আজমত খানের আলোচনা শুনুন। এই আলোচনায় উঠে এসেছে, এ ধরনের  পক্ষপাত কীভাবে মার্কিন বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণকে প্রভাবিত করে।)

হতাহতের ঘটনা পর্যালোচনার প্রক্রিয়াতেও একই ধরনের পক্ষপাত ও অযোগ্যতার নজির তুলে ধরেছে টাইমস। কয়েকটি শহরে প্রাণহানির ঘটনাগুলোকে মূল্যায়নই করা হয়নি, কারণ সামরিক পর্যালোচকেরা হয় একই নামের অন্যান্য গ্রাম নিয়ে বিভ্রান্তিতে ছিলেন, অথবা মানচিত্রে সেই গ্রামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন। যেমন: পর্যালোচকেরা মসুলের সিহা এলাকায় প্রায় ৩০ জনের মৃত্যুর দাবি তদন্ত করা থেকে সরে এসেছেন, কারণ তারা এই (সিহা) নামে কোন জায়গা খুঁজে পাননি। তবে টাইমস পত্রিকা গুগল ম্যাপে গিয়ে দেখেন এই জায়গাটি রয়েছে “সিহাহ” নামে, এবং ইংরেজি বানান “সিহা” দিয়ে গুগলে সার্চ করে সংবাদ প্রতিবেদনও খুঁজে পায়। একইভাবে পেন্টাগন কর্মকর্তারা ইরাকের “আল-বাব আল-গারবি” নামক জায়গায় বেসামরিক মৃত্যুর দাবি নাকচ করেছিলেন, কারণ তারা “আল-বাব” ও “আল গারবি” নাম দিয়ে দুটি আলাদা জায়গা খুঁজেছিলেন এবং ব্যর্থ হয়েছিলেন। 

Azmat Khan

পুলিৎজার প্রাইজ কমিটি, টাইমস ফর ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং ২০২২ পুরস্কারে কন্ট্রিবিউটিং লেখক হিসেবে আজমত খানের কথা উল্লেখ করেছে। ছবি: আজমত খানের সৌজন্যে

এই যুগান্তকারী ধারাবাহিকটি পুলিৎজার পুরস্কার জেতার পর মার্কিন সামরিক বাহিনীও রিপোর্টারদের অভিনন্দন জানিয়েছিল, যা সচরাচর ঘটে না। পুরস্কার জয়ের পর পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কার্বি বলেছেন, “আমি বলব না যে, প্রক্রিয়াটি সুখকর ছিল। তবে আমি মনে করি, এটিই আসল কথা। এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। মুক্ত গণমাধ্যম তার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সেই কাজটাই করে। আমাদের জবাবদিহির মধ্যে রাখে।”  

এই অনুসন্ধানের পেছনের কথা জানাতে দলটির গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্যের সাক্ষাৎকার নিয়েছে জিআইজেএন। তারা হলেন: ক্রিস্টোফ কোয়েটল – টাইমসের ভিজ্যুয়াল অনুসন্ধানী দলের সদস্য যিনি গত সেপ্টেম্বরে কাবুল ড্রোন হামলার প্রথম স্টোরিতে কাজ করেছেন, এবং ধারাবাহিকের প্রধান রিপোর্টার আজমত খান যিনি নিউইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনের অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। আজমত খান ২০১৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলায় বেসামরিক মৃত্যু নিয়ে অনুসন্ধান করছেন। তিনি ও একজন সমাজবিজ্ঞানী মিলে সামরিক কর্মকর্তা ও মাঠের প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে উত্তর ইরাকের নমুনা এলাকায় ১০৩টি বিমান হামলার ঘটনা অনুসন্ধান করেছেন, এবং দেখতে পেয়েছেন যে প্রতি পাঁচটি তথাকথিত “নির্ভুল হামলার” একটিতে বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। খান বলেন, পেন্টাগনের দাবি করা পরিসংখ্যানের চেয়ে এই হার ৩১গুণ বেশি – এবং সেই তখন থেকে “হাজার হাজার হামলায়,” একই হার বজায় রয়েছে।

দূর্বল পর্যালোচনা ও জোরালো ভিডিও প্রমাণ থেকেই শুরু 

টাইমসের সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ছিল: অচেনা নথির সাংবাদিকতাসুলভ গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া। খান বলেছেন যে ২০১৬ সালে উত্তর ইরাকে একটি হামলা নিয়ে পেন্টাগনের বেসামরিক মৃত্যু মূল্যায়নের একটি রিপোর্ট হাতে পেয়েই তিনি এ ধরনের নথিতে দুটি চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য ধরতে পারেন: এতে সম্পৃক্ত সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যকার যোগাযোগের অপ্রত্যাশিত বিশদ বিবরণ ছিল, কিন্তু হামলার শিকার জনগোষ্ঠী সম্পর্কে তেমন যাচাই-বাছাই বা বোঝাপড়া ছিল না। 

খান ব্যাখ্যা করে বলেন, “প্রথম নথিতে যা ছিল, সেটি পড়ে আমি বেশ অবাক হই – সেই নথির ভাষ্য ছিল অনেকটা এমন ‘আমরা মানুষকে দরজা খুলতে দেখেছি,’ যা [মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে] ‘আইসিসের কৌশল’ … তারা বলেছে যে, তারা দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে ভিডিও করেছিল, তবে কোনো নারী ও শিশু তাদের চোখে পড়েনি – হতে পারে, তারা সেসময় ঘরের বাইরে ছিল।” তিনি বলেন, “আমি জানতাম, আমাকে এমন আরও নথি পেতে হবে।”

(নিচের এই ক্লিপে খান বেসামরিক মৃত্যু নিয়ে তাঁর রিপোর্টিংয়ের শুরুটা ব্যাখ্যা করেন।)

এরপর খান, পেন্টাগনের এমন আরও মূল্যায়ন প্রতিবেদন সংগ্রহের জন্য তথ্য অধিকার আইনে অনুরোধ পাঠাতে শুরু করেন এবং একটি মামলা দায়ের করেন। গত বছর পর্যন্ত, তিনি এধরনের ১,৩১১ টি রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন।  আগস্টে কাবুলে ড্রোন হামলায় সাত শিশু নিহত হওয়ার আগে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ঘটনাচক্রে তার দুটি নিরাপত্তা ভিডিও হাতে পান কোয়েটল ও তাঁর দল।। এরপর গত সেপ্টেম্বরে তারা ধারবাহিকটি শুরু করেন। এতে উঠে আসে যে জনপ্রিয় উন্নয়নকর্মী জামেরি আহমাদি ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন, যদিও তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য একটি ল্যাপটপ এবং তাঁর পরিবারের জন্য পানির ক্যানিস্টার সংগ্রহ করছিলেন; তাতে ক্ষতিকর কিছু্ই ছিল না, কিন্তু সামরিক বিশ্লেষক মুহূর্তের মধ্যে ভুল করে তাঁকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। 

স্মৃতি হাতড়ে কোয়েটল বলেন, “জামেরির সহকর্মীরা আমাদের বলেছেন, একেবারেই সাদাসিধে এই মানুষটি কীভাবে সকালে তাঁর বড় ক্যানিস্টারে পানি নিতে এসেছিলেন।” তিনি জানান, “এমন কিছু আমরা আগে শুনিনি, আর এটি নিয়ে আমাদের অনেক কৌতুহলও ছিল, কারণ সামরিক সদস্যরা একজনকে গাড়িতে ভারী দ্রব্য সামগ্রী বোঝাই করতে দেখে সেগুলোকে বোমা মনে করেছিলেন। তাই আমরা জানতে চেয়েছিলাম, তাদের কাছে এই ক্যানিস্টারগুলোর কোনো ছবি আছে কি না, আর এভাবেই বুঝতে পারি যে তাদের কাছে এইসব দারুণ নিরাপত্তা ফুটেজগুলো ছিল।”

Christoph Koettl

নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ভিজ্যুয়াল অনুসন্ধানী দলের সদস্য ক্রিস্টোফ কোয়েটল। ছবি: কোয়েটলের সৌজন্যে

এই স্টোরির প্রতিক্রিয়ায় পেন্টাগন ভুল স্বীকার করে তাদের প্রাথমিক “ন্যায়নিষ্ঠ হামলার” দাবি থেকে সরে এসেছে, কিন্তু পরক্ষণেই তারা দাবি করেছে, এই হামলার যথার্থতা আছে, কারণ আহমাদি আইসিসের একটি “সেফ হাউজের” পাশে গাড়ি পার্ক করেছিলেন। কোয়েটলের দল সঙ্গে সঙ্গে এই দাবিও মিথ্যা প্রমাণ করে। তাঁরা দেখিয়ে দেন যে এই “সেফ হাউজ” আসলে একটি পরিবারের আবাসস্থল ছিল। “বেসামরিক মৃত্যুকে সম্পাদকীয় পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে আনা সত্যিই কঠিন কাজ” এটুকু যোগ করে খান বলেন, “আমি মনে করি, কাবুল হামলা নিয়ে ক্রিস্টফ ও তাঁর ভিজ্যুয়াল অনুসন্ধানী দলের রিপোর্টিং বিশ্বের ঘুম ভাঙিয়েছে, এবং অনেককে এই বিষয়ে নজর দিতে বাধ্য করেছে।”

এই ধারাবাহিকের পরও সামরিক জবাবাদিহিতা ততটা দেখা যায়নি এবং সংষ্কারের ইঙ্গিতও নেহাতই সামান্য ছিল। তবে খান বলেন, এই প্রকল্পের স্থায়ী প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে এর পদ্ধতিগত মডেল এবং মূল্যায়নের নথি, যা দলটি অন্যান্য রিপোর্টারদের অনুসন্ধানের জন্য উন্মুক্ত করেছে

খান আরও বলেন, “সামরিক বাহিনীর মত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আপনি যে ধরনের পরিবর্তন আশা করেন, তা রাতারাতি দেখতে পাবেন না, তবে আমি যেখানে আশা দেখি, তা হল সাধারণ মানুষ এই ঘাটতিগুলো নিয়ে এখন আরও সচেতন। যুদ্ধের আইনের মত জিনিসগুলো দেখার জন্য আমরা যে নথিগুলোকে প্রকাশ্যে এনেছি, অনেক গবেষক এখন তা নিয়ে আলোচনা করছেন, যা রিপোর্টারদের দেখার সুযোগ ছিল না।” খানের মতে, আরেকটি প্রভাব হল: “ভবিষ্যতে সামরিক (হামলার) যথার্থতার দাবি নিয়ে আমরা এখন সংবাদমাধ্যমকে আরও সন্দেহপ্রবণ হতে দেখব এবং হতাহতের ঘটনা উন্মোচনে তারা আরও কঠোর পরিশ্রম করবে।”

(নিচের এই ক্লিপে খানের কথা শুনুন। বিমানহামলায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানে টাইমসের এই ধারাবাহিক কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তা নিয়ে এখানে তিনি কথা বলেছেন।) 

খানের নথি পর্যালোচনা করে কোয়েটল বলেন, তাঁর দল সামরিক সিদ্ধান্তগ্রহণে “ছোটখাটো ভুলের গুরুতর পরিণতির” ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করেছে এবং পদ্ধতিগত সমস্যার প্রমাণ পেয়েছে। 

“আমরা লক্ষ্য করেছি, সত্যি কথা বলতে, অনেক সামরিক পর্যালোচক আছেন যাদের দক্ষতা ও টুল আছে – এমনকি নথিতে তাদের ব্যবহৃত টুলের তালিকাও আছে: গুগল আর্থ; উইকিম্যাপিয়া; ঠিক আমরা যে টুলগুলো ব্যবহার করি” – বলেন তিনি। “তবে আমার মনে হয়, মাসখানেক পরপর সামরিক কর্মীদের বদলী হয়, তাই কোনো ধারাবহিকতা থাকে না, থাকে না পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, এমনকি ভাষাগত দক্ষতা। ফলে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি ব্যক্তি ও তার দায়িত্বশীলতার ওপর নির্ভর করে।”

খান বলেন, তিনি মূল্যায়ন প্রতিবেদন থেকে পাওয়া জিপিএস স্থানাঙ্কের সঙ্গে স্যাটেলাইটের প্রমাণাদি ও মাঠপর্যায়ের প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য মিলিয়ে এবং জোট বাহিনীর পোস্ট করা হামলার ভিডিওগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে হতাহতের দাবিগুলোকে যাচাই করেছেন। 

Maxar satellite imagery after a US airstrike in Syria

সিরিয়ায় বিমান হামলার আগে ও পরের ছবিগুলো তুলনা করার জন্য ম্যাক্সারের স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার করেছে টাইমস। ছবি: স্ক্রিনশট

তিনি বলেন, “মাঠে নামার আগে আমি স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া আগের ও পরের ছবির স্থানাঙ্কগুলো বিশ্লেষণ করি, এবং সেগুলোকে একটি নথিতে বসাই। শুরুতে আমি [স্যাটেলাইট ইমাজেরি সেবা] টেরাসার্ভার ব্যবহার করতাম; পরে পরিবর্তনের আশায় এবং নথির বর্ণনার সঙ্গে সেগুলো মিলে কি না, তা জানার জন্য ম্যাক্সার ও গুগল আর্থ ব্যবহার করেছি।” খান আরও বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকারের ক্ষেত্রে আমাকে সতর্ক থাকতে হয়েছিল, যেন নথির তথ্য প্রত্যক্ষদর্শীকে প্রভাবিত না করে, কারণ মানুষ হয়ত সেটিকে শুধু নিশ্চিত করেই ক্ষান্ত হত।”

বেসামরিক হতাহতের ঘটনা অনুসন্ধানে সহায়ক ডেটাবেস

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের মত সংস্থাগুলো বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ও ক্ষতিপূরণের অর্থপ্রদানের রেকর্ড নিয়ে কার্যকর প্রতিবেদন তৈরি করলেও খানের পরামর্শ হল, রিপোর্টারদের উচিত বহুস্তরের সোর্স নির্ভর ডেটাবেস ব্যবহার করে বিমান হামলায় হতাহতের ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করা। এই সোর্সের মধ্যে সামরিক বাহিনীর প্রকাশ্য বক্তব্য থেকে শুরু করে স্থানীয় ভাষার সামাজিক মাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টও থাকতে পারে। বিশেষ করে, তিনি এই সোর্সগুলোর সুপারিশ করেন:

  • এয়ারওয়ারস: যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত এই রিসোর্স ২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেনসহ ছয়টি দেশে কামানের গোলা ও বিমানহামলায় ৬০ হাজার বেসামরিক মৃত্যুর দাবির ডেটা সংগ্রহ করেছে। এই ডেটাবেসে হাজার হাজার সামরিক নথি, বেসরকারি সংস্থার বিবরণ, আরবি ভাষায় সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমের প্রতিবেদন, মানসম্পন্ন মূল্যায়ন এবং যাচাইয়ের সীমাবদ্ধতা ও প্রচারণার সোর্স সম্পর্কে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। খান বলেন, “এয়ারওয়ারস আর্ন্তজাতিকভাবে সাংবাদিকদের জন্য বেশ কার্যকর, কারণ তাঁরা কেবল মার্কিন সামরিক বিবৃতিই লিপিবদ্ধ করছে না, বরং এমন বিষয়েও নজর দিচ্ছে – যেমন, ঐদিন বা অন্য দিন হামলার সঙ্গে ফ্রান্স জড়িত ছিল কি না; অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডের মত জোটের অন্য অংশীদার কী করছে।” তিনি বলেন, “এসব এলাকার অনেকগুলোতেই যাওয়া কঠিন; অথবা সামরিক বাহিনী গোপন রাখে বলে আপনার পক্ষে অবস্থান জানা সম্ভব না – এমন ক্ষেত্রে এয়ারওয়ারস সত্যিই সহায়ক ছিল।”
  • ড্রোন ওয়ারস ডেটাবেস: দ্য ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নাালিজম (টিবিআইজে) সংকলিত এই ডেটাবেস ২০১০ সাল থেকে আফগানিস্তান, ইয়েমেন, পাকিস্তান ও সোমালিয়ায় যৌথ বিমান হামলার ওপর নজর দিয়ে থাকে। খান ব্যাখ্যা করে বলেন, “টিবিআইজে দারুণ কার্যকর, কারণ আপনি এখান থেকে সহজেই ইয়েমেন, আফগানিস্তান, ও অন্যান্য দেশ সম্পর্কে ডেটা ডাউনলোড করতে পারেন, এবং তাদের কর্মপদ্ধতি পড়তে পারেন। সেখানে তাদের আপেক্ষিক জিওলোকেশন আছে, এবং সামরিক বাহিনী কী স্বীকার করেছে ও করেনি – তাও আছে।”
  • উইকিম্যাপিয়া: এটি হতাহতের ডেটাবেস নয়। তবে খানের মতে, আংশিক ক্রাউডসোর্স করা ওয়েব ম্যাপ টুলটি হতাহতের অজ্ঞাত স্থান খুঁজে পেতে বেশ সহায়ক, কারণ এটি কিছু ঘটনার স্থানীয়দের দেওয়া বর্ণনা তুলে ধরে, এবং কখনো কখনো ঘটনার লেবেল ও ঘটনাস্থলের বিকল্প নামও এখানে পাওয়া যায় যা আনুষ্ঠানিক বা পশ্চিমা ম্যাপে যুক্ত হয়নি। তিনি এটি ব্যবহারের সময় গুগল ট্রান্সলেট, বা স্থানীয় ভাষায় দক্ষ সহকর্মীর মতামত নিতে পরামর্শ দেন। খানের মতে, “দেশভেদে ডেটার যোগান ভিন্ন হয়ে থাকে – ইরাকে উইকিম্যাপিয়ার ব্যবহার অনেক বেশি হলেও অন্য দেশগুলোতে এটি কম ব্যবহৃত হয়েছে – তবে এটি বেশ সহায়ক ছিল” বলেও জানান তিনি। “পশ্চিম মসুলের একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনে বোমা হামলা অনুসন্ধানের কথা মনে পড়ছে, আর আমি দেখেছিলাম, এই সাব-স্টেশনটিকে উইকিম্যাপিয়াতে নির্দিষ্ট নামে লেবেল করা হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম, গুগলে কেবল ‘মসুল’ ও ‘বিমানহামলা’ লিখে সার্চ করে দেখা যাক, এবং সত্যি সত্যিই ঘটনার ভয়ঙ্কর ভিডিও এসেছিল, আর আমি সত্যতা যাচাই করতে পেরেছিলাম।”

তবে খান সতর্ক করে বলেন যে অপর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা, ত্রুটিপূর্ণ সামরিক মূল্যায়ন ও সরকারি রেকর্ডে বাদ পড়া বা না থাকার মত বিষয়গুলোর কারণে দারুণ নথি-ভিত্তিক ডেটাবেসেও উল্লেখযোগ্য ফাঁকফোকর থাকতে পারে – আর গণনায় ঘাটতি এড়াতে মাঠ পর্যায়ের রিপোর্টিংও জরুরি। 

খান বলেন, “যেমন, আমি সত্যিই মনে করি, আফগানিস্তানে, বিশেষ করে দক্ষিণে এবং পূর্বে – নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে বেসামরিক বিমান হামলায় মৃত্যুর সম্পূর্ণ মাত্রা সম্পর্কে আমাদের এখনও ধারণা নেই। একটি গ্রামে আমি প্রায় এক মাস কাটিয়েছি। মামলার নমুনায়ন করতে গিয়ে দেখেছি, সরকারের পতনের পর সেখানে কারও মৃত্যুসনদ নেই। এ বিষয়ে তাদের ভাব ছিল অনেকটা এমন: ‘এগুলো কী?’ সরকারি নথিতে নেই মানে তারা গণনাতেও নেই। ফলে আমাকে ঘরে ঘরে যেতে হয়েছিল।”

বিমান হামলার প্রমাণ ও সোর্স সংগ্রহের টুল

  • ভিজ্যুয়ালপিং: ওয়েবসাইটের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণের জন্য এই টুল ব্যবহার করেছেন খান, যেন জোট বাহিনী হামলার নতুন ভিডিও পোস্ট করছে কিনা বা সরিয়ে নিচ্ছে কিনা তা ট্র্যাক করা যায়। তিনি বলেন, “এই টুলটি আমি সত্যিই পছন্দ করি – এটি সজজেই এমনভাবে কাস্টমাইজ করা যায় যেন সাইটে যে নির্দিষ্ট ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আপনি আগ্রহী, সেটি অনুযায়ী সতর্কবার্তা পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, “তারপর আমি সামরিক বাহিনীর আপলোড করা ভিডিওর সঙ্গে আমার প্রমাণ মেলাতে পেরেছিলাম। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ‘আপনি কি এই জায়গায় বিমানহামলা চালিয়েছেন ‘কখনো তারা আমাকে ‘না’ বলত। এভাবেই আমি উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছিলাম যে তারা তাদের নিজস্ব স্থানাঙ্কগুলো লিপিবদ্ধ করছে না।”
  • গুগল আর্থ প্রো: খান ও কোয়েটল বলেন, এই সুপরিচিত, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য ছবি এবং ম্যাপিং টুলের ডেস্কটপ সংস্করণ গত ছয় মাসে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এর সার্চ বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নত করেছে। টুলটির টাইম ল্যাপ্স স্লাইডার বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে এটি এখন বিমান হামলার দৃশ্যের সুনির্দিষ্ট, আগের ও পরের ছবি ডাউনলোডের সুযোগ দেয়। কোয়েটল উল্লেখ করেন, “আমি প্রতিদিন গুগল আর্থ ব্যবহার করি।” “কাবুলের ড্রোন হামলা নিয়ে স্টোরির জন্য এটি খুব গুরত্বপূর্ণ ছিল। এতে কেবল বড় করে দেখা যায়, আর কিছু নয় – এই ভাবনা থেকে অনেকে এই টুলকে অবজ্ঞা করেন। তবে সত্যি বলতে কী, একটি ম্যাপে সময়ক্রম ও তথ্য সংগঠন, এবং সহকর্মীর সঙ্গে ডেটা শেয়ারের কাজেও আপনি এটিকে ব্যবহার করতে পারেন।”
  • লিঙ্কডইন ও সামরিক বাহিনীর চ্যাট ফোরামে সার্চ: খান বলেন, “আমার এই পরামর্শ বলে ফেলা ঠিক হবে না, কারণ এটি চলমান রিপোর্টিংয়ের অংশ, কিন্তু আপনি খুব অবাক হবেন, বিমান যুদ্ধের এই ক্ষেত্রে কত চাকরির বিজ্ঞাপন যে লিঙ্কডইনে দেওয়া হয়েছে। আমি এ ধরনের কিছু চাকরির একটি ডেটাবেস তৈরি করেছি। আমি সেখানে যাদেরকে পাই, তাদেরকে হাতে লেখা চিঠি দিতে চাই, তাই কোনো ডিজিটাল প্রমাণ নেই।” খান বলেন, সাংবাদিকদেরও বেসামরিক উপদেষ্টা এবং সামরিক বাহিনীর পরামর্শকদের সন্ধান করা উচিত। “পেন্টাগনের একজন প্রাক্তন উপদেষ্টা এই সামরিক মূল্যায়নগুলো পড়েছেন এবং জবাবদিহিতা দেখতে চেয়েছেন এবং তিনি আমাদের অনুসন্ধানে সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যে ছিলেন,” তিনি যোগ করেন। খান আরও বলেন, সম্ভাব্য পরিচিতি শনাক্ত করার আরেকটি কার্যকর উপায় হল অনলাইন মিলিটারি ফোরামে অংশগ্রহণ করা এবং মন্তব্যের থ্রেডে চোখ বুলানো। “ এটি অবাক করার মতো যে এত মানুষ বলছে ‘আমি সেখানে ছিলাম যখন…’”
  • যুদ্ধাঞ্চলের কন্ট্রিবিউটরদের লোকেশন সার্ভিস চালু করা শেখান: খান বলেন, সাহস নিয়ে স্থানীয় কন্ট্রিবিউটরেরা বিমানহামলার ঘটনাস্থলের যেসব ছবি পাঠান সেগুলোর যাচাই মূল্য হারিয়ে যেতে পারে, কারণ তাদের ডিভাইসের মেটাডেটা ফাংশন চালু করা থাকে না। তিনি আরও বলেন, “যদি কঙ্গোর মত কোনো জায়গার দিতে তাকান – বিষয়টি কিছু টুল দিয়ে তাদের ক্ষমতায়িত করার মতোই সহজ, যেন তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা নথিভুক্ত করতে ও আপনার সঙ্গে শেয়ার করতে পারে। হয়তো শুধু এটাই দেখালেন, ফোনে কীভাবে জিপিএস স্থানাঙ্ক চালু করা যায়, যেন তাদের মেটাডেটা ট্র্যাক হতে থাকে।”

কোনো বিমানযুদ্ধের ভুক্তভোগী তাঁর পুলিৎজার জয়ের খবরে সাড়া দিয়েছেন কি না এবং বিমান হামলায় বেসামরিক মৃত্যুর বিষয়ে নতুন করে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে খান ব্যাপারটি সমর্থন বা উদযাপনের কোনো অনুভূতি জানান নি। এর বদলে তিনি আইসিস এবং তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের যুদ্ধের স্থায়ী ক্ষতির একটি ভয়াবহ স্মৃতিচারণ করেছেন।

তিনি বলেন, “দিনকয়েক আগে আমি কাবুল হামলায় বেঁচে যাওয়া একজনের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি। তিনি তাঁর মেয়েকে হারিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখনও কাবুলে আছি, আমাদের সরিয়ে নেওয়া হয়নি, আমরা কোনো [ক্ষতিপূরণ] অর্থকড়ি পাইনি।’ তিনি আরও বলেছেন: ‘এই পুরস্কার জেতায় আপনাকে অভিনন্দন – আপনি কী পরিমাণ অর্থ পাচ্ছেন?'”

“এটি শোনাই,” দীর্ঘ বিরতি দিয়ে খান বলেন, “কাজের সবচেয়ে বাজে অংশ।”

আরও পড়ুন

ড্রোন ও স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার করে আকাশ থেকে মিথ্যা উন্মোচন

লেসনস লার্নড ফ্রম সিরিয়ান জার্নালিস্টস ইনভেস্টিগেটিং রাশিয়ান ওয়ার ক্রাইমস

হাও টু ইউজ ডেটা জার্নালিজম টু কাভার ওয়ার অ্যান্ড কনফ্লিক্ট


Rowan-Philp-140x140রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের প্রতিবেদক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ২৪টির বেশি দেশে সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

টেকসইতা পদ্ধতি

সাংবাদিকতার প্রভাব পরিমাপ — আমরা নতুন যা জানি

সব সংবাদমাধ্যমই চেষ্টা করে তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরির জন্য। কিন্তু এই প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে একেক ধরনের সূচক। পড়ুন, এ নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন কী জানা গেছে।

CORRECTIVE Secret Master Plan Against Germany investigation

পদ্ধতি

আন্ডারকভার রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে জার্মানির চরম ডানপন্থী দলের গোপন বৈঠকের তথ্য উন্মোচন

ছদ্মবেশে জার্মানির চরম ডানপন্থী দলগুলোর গোপন বৈঠকে ঢুকে পড়েছিলেন কারেক্টিভের রিপোর্টার। সেখান থেকে তিনি জানতে পারেন: কীভাবে জার্মানি থেকে লাখ লাখ মানুষকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। পড়ুন, অনুসন্ধানটির নেপথ্যের গল্প।

পদ্ধতি

পূর্ব এশিয়াতে যৌন নিপীড়নের ভিডিওর অনলাইন বাণিজ্য নিয়ে অনুসন্ধান

পূর্ব এশিয়ায় কীভাবে যৌন হয়রানির ভিডিও কেনাবেচা হয়— তা নিয়ে বছরব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে ২০২৩ সালের জুনে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল বিবিসি আই। এখানে পড়ুন, কাজটির নেপথ্যের গল্পগুলো।

Studio, headphones, microphone, podcast

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

ঘুরে আসুন ২০২৩ সালের বাছাই করা অনুসন্ধানী পডকাস্টের জগত থেকে

নানাবিধ সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে সাড়া জাগানো কিছু অনুসন্ধানী পডকাস্ট। এখানে তেমনই কিছু বাছাই করা পডকাস্ট তুলে এনেছে জিআইজেএনের বৈশ্বিক দল।