Illustration: Marcelle Louw for GIJN
মিথেন গ্যাসের উৎস অনুসন্ধানের গাইড – যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি
আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:
মিথেন গ্যাসের উৎস নিয়ে সাংবাদিকতা ক্রমেই আরও জরুরী হয়ে উঠছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার দ্রুততম পথ হলো মিথেন নিঃসরণ হ্রাস করা। গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের পর মিথেনের পরিমাণ-ই সবচেয়ে বেশি, যার নিঃসরণ ক্রমেই বাড়ছে এবং নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে।
মিথেন নিয়ে সাংবাদিকতা করার ক্ষেত্রে জিআইজেএনের পূর্ণাঙ্গ গাইডটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন তা অনুসন্ধানী রিপোর্টারদের মিথেন নিঃসরণের সুনির্দিষ্ট উৎস চিহ্নিত করতে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সহায়তা করে। এখানে আমরা তুলে ধরেছি:
- মিথেন নিঃসরণের তাৎপর্য এবং বিদ্যমান ডেটা সোর্সের অবস্থা নিয়ে একটি প্রেক্ষাপট।
- যে কারণে মিথেন পরিমাপের পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ এবং তা অনুসন্ধানের উপায়।
- ভূমিতে ও আকাশ থেকে মিথেন নিঃসরণকারীদের সন্ধানের কৌশল।
- কীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অঙ্গীকার ও ডিসক্লোজার নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
- নিঃসরণ ও অঙ্গীকার নিয়ে দেশগুলোকে কীভাবে জবাবদিহি করবেন।
এখানে থাকছে আমাদের পরামর্শ ও টুলগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ।
ডেটাকে প্রশ্ন করুন
বিজ্ঞানীরা একমত যে, মিথেন নিঃসরণের হিসেব নিয়মিতভাবে কম করে দেখানো বা উপেক্ষা করা হয়। ফলে, খোদ পরিমাপ পদ্ধতি রিপোর্টিংয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ওঠে।
মিথেন নিঃসরণ নিয়ে প্রাথমিক তথ্যের অনেক উৎস আছে।
মিথেন নিঃসরণের হার কতটা তা ট্র্যাক করে প্যারিসভিত্তিক ইন্টার গভর্নমেন্টাল সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। এর সবশেষ দৃষ্টান্ত মিথেন ট্র্যাকার ২০২৪। আইইএ’র মিথেন ট্র্যাকার ডেটাবেসে নিঃসরণ ও “হ্রাসকরণ সম্ভাবনার”দেশভিত্তিক ডেটা পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনের ধারণা:
- আপনার দেশে কতটা নিঃসরণ হয়?
- এর উৎপত্তি কোথায়?
- পরিমাপ কি ঠিক আছে?
ইউনাইটেড নেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) অনুযায়ী, প্রতিটি দেশের সরকারের ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জে জাতীয় মিথেন নিঃসরণ ডেটা জমা দেওয়ার কথা।
উন্নত দেশগুলো তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ে ন্যাশনাল ইনভেন্টরি রিপোর্ট (এনআইআর) নামের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করে। (ইউএনএফসিসিসি’র সাইটে ন্যাশনাল ইনভেন্টরি সাবমিশনস্ ২০২১ দেখুন)। উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের হালনাগাদ দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদনের (বিইউআরএস) অংশ হিসেবে নিঃসরণ ডেটার হিসেব দেয়।
মিথেন নিঃসরণ পরিমাপের একটি গুরুতর দুর্বলতা হলো, প্রতিটি দেশ নিজস্ব প্রাক্কলন তৈরির জন্য আলাদা পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে। ফলে ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
সরকারের সংগৃহীত মিথেন নিঃসরণ ডেটা নিয়ে আরও একটি মৌলিক সমস্যা হলো, এই ডেটাগুলো হিসাব আর সমীকরণ নির্ভর, প্রকৃত পরিমাপভিত্তিক নয়। কিছু কিছু দেশ এই সমস্যা নিয়েই এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করছে।
মিথেন লিক অনুসন্ধান
বিশেষ করে প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উৎপাদনের মতো মিথেন গ্যাসের উৎসগুলো উন্মোচন করা সম্ভব।
সনাক্তকরণের জন্য ইনফ্রারেড ক্যামেরা ও স্যাটেলাইট লাগবে। তার মানে, এই ধরনের কাজের জন্য বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা দরকার হবে।
ইনফ্রারেড ক্যামেরা আছে, এমন দুটি পরিবেশবাদী দল খুঁজে পেয়েছে জিআইজেএন। তারা সম্ভাব্য মিথেন নিঃসরণকারীদের নিয়ে বাস্তবসম্মত অনুসন্ধানে রিপোর্টারদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
প্রতিবেদনের ধারণা:
- ইনফ্রারেড ক্যামেরা সম্পন্ন দল বা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করুন, যেন লিক সনাক্ত করা যায়।
- ক্রমবর্ধমান সোর্সগুলো থেকে স্যাটেলাইট ছবি পাওয়ার চেষ্টা করুন।
ক্লিন এয়ার টাস্ক ফোর্স (সিএটিএফ) ইউরোপজুড়ে তেল ও গ্যাস নিঃসরণ নথিবদ্ধ করছে এবং অন্যান্য অঞ্চলেও এই কাজ সম্প্রসারণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউটিউবে এই প্রকল্পের বর্ণনা এবং এখানে ইনফ্রারেড প্রযুক্তি (ওজিআই) ব্যবহারের ব্যাখ্যা দেয়া আছে।
সিএটিএফ ক্যামেরা অপারেটরের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী সাংবাদিকদের রোয়ান এমসাইলের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
ইনফ্রারেড ক্যামেরার সক্ষমতা সম্পন্ন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাজে আগ্রহী আরও একটি বেসরকারি সংস্থা, আর্থওয়ার্কস। আগ্রহী সাংবাদিকেরা জাস্টিন ওয়াস বা জশ এইসেনফেল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
স্যাটেলাইট ছবি নির্ভর নিঃসরণ-তথ্যের কিছু বাণিজ্যিক উৎস আছে। কিছু প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে এবং কম দামে সীমিত পরিসরে তথ্য দিয়ে থাকে।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান জিওফাইনান্সিয়াল অ্যানালিটিক্স, সম্প্রতি মিথেনস্ক্যান ডেটা লেক নামে নতুন একটি পণ্য এনেছে। তাদের আরও কয়েকটি পণ্য আছে। বিশ্বজুড়ে, বিশেষত উত্তর আমেরিকায়, এক লাখের বেশি জ্বালানি শক্তি উৎপাদকের মিথেন নিঃসরণ রেটিং দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। তারা অলাভজনক সংস্থা ও “বিত্তহীন” সাংবাদিকদের জন্য ৫০% ছাড়ে (প্রতি মাসে ১০০০ ডলার) ডেটাসেট ও ম্যাপ দিতে পারে।
কেইরস নামের আরেকটি ডেটা অ্যানালিটিকস প্রতিষ্ঠান, কখনো কখনো প্রেস রিলিজ বা অ্যালার্টের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কাছে তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফল পাঠায়। প্রতিষ্ঠানটির একজন নির্বাহী বলেছেন, কেইরসের ডেটাবেস থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ব্লুমবার্গ, যা অন্যদের জন্যও উন্মুক্ত।
এছাড়া, জিএইচজিস্যাট অনেক সময় তাদের স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া মিথেন নিঃসরণ তথ্য প্রকাশ করে।
ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি, এবং নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ বা এসরন থেকেও নিঃসরণের ফলাফল নিয়ে সাময়িক ডিসক্লোজার পাওয়া যায়।
সামনের দিনগুলোতে তথ্য প্রকাশের ম্যান্ডেট নিয়ে আরও কিছু উৎস তথ্য আবির্ভূত হতে যাচ্ছে, তবে ২০২৩ সালের আগে নয়।
- কার্বন ম্যাপার একটি মার্কিন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এর ডেটা পোর্টালটির উদ্বোধর হয়। বিশ্ব মানচিত্রে খুঁটিয়ে দেখলে আপনি পর্যায়ক্রমে হালনাগাদ তথ্য পাবেন। আরও অত্যাধুনিক একটি স্পেকট্রোমিটার (সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রঙিন ছবি ধারণ ও বিশ্লেষণ করতে পারে এমন একধরনের যন্ত্র) ২০২৪ সালেই ভূ-উপগ্রহে যুক্ত করার কথা রয়েছে। এটি যুক্ত হলে, আরও সুনির্দিষ্টভাবে কার্বন নিঃসরণ পরিমাপ করা সম্ভব হবে। সাংবাদিকেরা যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায়: data@carbonmapper.org অথবা কেলি ভনের সঙ্গে, kelly@carbonmapper.org
- মিথেন অ্যালার্ট অ্যান্ড রেসপন্স সিস্টেম (মার্স) ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রগ্রাম (জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপি) তেল ও গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্র এবং কখনও কখনও কয়লাখনি ও বর্জ্য ফেলা হয় এমন স্থানের ম্যাপ ও ডেটা পোস্ট করে থাকে। মিথেন অ্যালার্ট অ্যান্ড রেসপন্স সিস্টেম (মার্স) নভেম্বর ২০২৩ সাল থেকে ডেটা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। দুই মাস পরপর তারা নতুন ডেটা দিচ্ছে। এই ডেটায় শুধু কোন দেশ কার্বন নিঃসরণ করছে সেই ডেটা থাকছে না। থাকছে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের হিসেব, ফলে কার্বন নিঃসরণের উৎস সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ১৭ টি কলামে আরও দেখানো হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় কত টন কার্বন নিঃসরণ হয়। অনলাইনে খুব সহজে এই ডেটাবেজটি খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য আপনাকে GeoJSON এবং CSV এ দুটি ফরম্যাট ডাউনলোড করতে হবে। কার্বন নিঃসরণ শনাক্ত হওয়ার ৪৫ থেকে ৭৫ দিন পর ডেটা উন্মুক্ত করা হয়। কারণ ইউএনইপি এই ডেটার ব্যাপারে স্বচ্ছ থাকতে চায় এবং নিঃসরণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তথ্য প্রকাশ করে। প্রয়োজনীয় যোগাযোগ এই ঠিকানায় unep-newsdesk@un.org.
- দ্যা কায়রস মিথেন ম্যাপ এতে ফরাসী প্রতিষ্ঠান কায়রসের বিপুল পরিমাণে কার্বন নিঃসরণের তথ্য প্রকাশ পায় ২০১৯ সালে। এরপর তারা নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য দিতে থাক, যদিও যে সময় নিঃসরণ ঘটছিল সে সময়ের তথ্য ছিল না। মানচিত্রের (‘সুপার-এমিটার ভিউ’) সুনির্দিষ্ট জায়গায় ক্লিক করলে কার্বন নিঃসরণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। কায়রস সাংবাদিকদের সঙ্গে কাজ করবে এবং প্রশ্নের জবাব দেবে। যোগাযোগ: : team-kayrros@sonder-london.com
-
জিএইচজিস্যাট স্পেকট্রা বিশ্বজুড়ে বড় নিঃসরণের তথ্য অনুসরণ করে থাকে। যদিও তারা শতভাগ নির্ভুল তথ্য দিতে পারে না এবং তথ্য প্রকাশে তাদের কয়েক সপ্তাহ দেরি হয়ে থাকে। (এই সাইটের তথ্য পেতে সাইন-ইন করতে হবে)। স্পেকট্রা ম্যাপে ওপরের ডানদিকে ”অ্যানালিকিটস ফ্রম” বক্সে ক্লিক করে তারিখ ও ডেটা পরিবর্তন করে নিতে হবে। মানচিত্রে যে ত্রিভূজ দেখা যায় সেখানে ক্লিক করলে পাওয়া যাবে প্রতিটি নিঃসরণের তথ্য। আরও তথ্যের জন্য রয়েছে, “?”। “স্পেকট্রা” সতর্ক করে বলেছে, “মিথেনের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেলেও এই মানচিত্র থেকে মিথেনের সূত্র শনাক্ত করা যায় না।” জিএইচজিস্যাট একটি প্রতিষ্ঠান এবং তারা বিস্তারিত তথ্য বিক্রি করে থাকে। তাই তারা ‘আপগ্রেড টু স্পেকট্রা প্রিমিয়াম’ নামের একটি বার্তা দেবে। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র বলেন, “কাভারেজ এবং যে বিকল্প আপনি বেছে নেবেন তাতে আপনার দশ থেকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত লাগতে পারে।”
-
এসরন বিশ্বজুড়ে মিথেন নিঃসরণের ছবি প্রকাশ করে থাকে। নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ এই ছবি প্রস্তুত করে থাকে। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তারা মানচিত্র হালনাগাদ করে থাকে, এবং মিথেন নিঃসরণের কাছাকাছি উৎপত্তিস্থলগুলো দেখায়। তবে, তাদের ছবির রেজল্যুশন কম। চার্টে অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ দেখা যায় (দেশ দেখা যায় না)। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। তবে প্রাপ্ত তথ্য গুগল ম্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে নিলে স্থান চিহ্নিত করা যায়। অথবা অন্যান্য কনভার্টারগুলো দেখুন।
- স্যাটঅ্যালার্ট মিথেনের ঘনত্বের স্তর দেখায়। এতে তারিখ ধরে ধরে তথ্য পাওয়া যায়। সুনির্দিষ্ট সূত্রের উল্লেখ না থাকলেও, এলাকাভিত্তিক মিথেনের ঘনত্বের তথ্য পাওয়া যায়। কীভাবে স্যাটঅ্যালার্ট ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আছে। এই উদ্যোগের উদ্ভাবক অস্ট্রেলিয় গবেষক ড্যান মস। বিভিন্ন সময়কাল ভেদে, মিথেনের ঘনত্ব – যেমন একদিনে হয়তো অন্যান্য সময় হয়তো গড়ে যত নিঃসরণ হচ্ছে তার চেয়ে বেশি নিঃসরণ হয়ে থাকে। স্যাটঅ্যালার্ট যেসব ছবি ব্যবহার করে থাকে তার উৎস ইইউ এর সেন্টিনেল-৫পি স্যাটেলাইপ এবং এর রেজল্যুশন প্রতি পিক্সেলে সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ কিলোমিটার প্রস্থ (৪.৬৫ দৈর্ঘ্য ও ৩.১ মাইল প্রস্থ)। তবে, আরও গভীরে যেতে, ২০ মিটার রিজল্যুশনের জন্য স্যাটঅ্যালার্ট সেন্টিনেল ২ ব্যবহার করে থাকে। মস সাংবাদিকদের তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।
- ক্লাইমেট ট্রেস : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি সংগঠন। বিশ্বজুড়ে মিথেনসহ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ সম্পর্কিত ডেটার বিশাল ভান্ডার আছে তাদের কাছে। এর মধ্যেই তারা তিন লাখ ৯৫ হাজার ৭৫ টি উৎস শনাক্ত করেছে। ম্যাপ থেকে আপনি শুধু মিথেনের তথ্যও নিতে পারেন। সবশেষ ডেটা ২০২২ সালের, তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের ডেটাও পাওয়া যাবে। দেশভেদে কত নিঃসরণ হচ্ছে সেই ডেটাও পাওয়া যায়। এই ডেটা ডাউনলোড করা যায়। একাধিক উৎস থেকে (পদ্ধতি অনুসরণ করে) পাওয়া হিসাব থেকে তারা এই ডেটা প্রকাশ করে থাকে। যোগাযোগের ঠিকানা: নিকি আরনোন nikki@inflectionpointagency.com অথবা ফ্যা জেঙ্কস fae@carthagegroup.com
- দি গ্লোবাল মিথেন এমিটার্স ট্র্যাকার (জিএমইটি) কাজ শুরু করেছে নভেম্বর ২০২৩ সাল থেকে। এখানেও মানচিত্র ও ডাউনলোড করা যায় এমন ডেটা আছে। তবে ওরা শুধুমাত্র স্যাটেলাইট ডেটার ওপর নির্ভর করে না। এটি পরিচালনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গ্লোবাল এনার্জি মনিটর। কয়লা খনি, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র এবং গ্যাস সরবরাহকারী সংযোগ লাইন থেকে মিথেন নিঃসরণ হয়। এই সাইটের ডেটা ডাউনলোড করা যায়। ইন্টার্যাকটিভ ম্যাপিং ও সারাংশ আছে সেগুলোও দেখা যায়। দেশ ভেদে কার কত নিঃসরণ তার হিসাব পাওয়া যাবে টেবিলে। মিডিয়া তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারে, ডেভিড হফম্যানের সঙ্গে এই ঠিকানায়, david.hoffman@globalenergymonitor.org
- ওয়েস্টম্যাপ চার হাজার ৫৬ টি সুনির্দিষ্ট বর্জ্য ফেলার স্থান শনাক্ত করেছে এবং কতটা মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে এসব তথ্য রাখে। বিভিন্ন সূত্র, মডেলিং এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট ইমেজ এই কাজে ব্যবহার করছে। WasteMAP গবেষকেরা বিভিন্ন দেশ ও শহরের নিঃসরণের হিসাব রাখে। মিডিয়ার জন্য যোগাযোগের ঠিকানা : wastemap@rmi.org
- চেজিং মিথেন ইন্ডিয়াস্পেন্ডের উদ্যোগ ও ভারতের প্রথম মিথেন ট্র্যাকার। ভারতের বিভিন্ন খাতে মিথেনের নিঃসরণ পর্যবেক্ষণ করা হয় এখানে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুম্বাই, পুনে ও ব্যাঙ্গালুরুর যেসব জায়গায বর্জ্য ফেলা হয় সেসব জায়গায় নিঃসরণ চিহ্নিত করে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্দ এবং তাদের মাধ্যমে ইইউ স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ডেটা তারা বিশ্লেষণ করছে। তাদের পরিকল্পনা হলো মাসে অন্তত একবার তথ্য হালনাগাদ করা। মিথেন নিঃসরণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও পাওয়া যাবে এতে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এই গবেষণায় কার্বন বোমা কি তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে, অথবা জীবাশ্ম জ্বালানির সম্ভাব্য উৎস যা থেকে মিথেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড সেগুলোর উল্লেখ আছে। পরিবেশবাদী একটি দল, লিঙ্গো , এই গবেষণা থেকে ডেটা সংগ্রহ করেছে এবং এগুলোকেও “মিথেন বোমা” নামে অভিহিত করেছে। এই ডেটা দেশভিত্তিক।
- সর্বোপরি, স্যাটেলাইট ছবির ভিত্তিতে নিঃসরণের উৎস চিহ্নিত করার কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। তারা কখনও কখনও বিনামূল্যে এবং ছাড়ে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে থাকে। বাণিজ্যিক এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে, জিওফাইনান্সিয়াল অ্যানালিটিকস এবং কায়রস। কায়রস সম্প্রতি ২০২৩ সালের মিথেনের ব্যাপক নিঃসরণের ডেটা গার্ডিয়ানে প্রকাশ করেছে। গার্ডিয়ান এর ভিত্তিতে, রিভিলিড: ওয়ান থাউজ্যান্ড সুপার-এমিটিং মিথেন লিক্স রিস্ক ট্রিগারিং ক্লাইমেট টিপিং পয়েন্টস নামে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কায়রস মুখপাত্র জানান, সাংবাদিকেরা ডেটাবেজের জন্য অনুরোধ করতে পারেন। তাদের কাছে দেশওয়ারী তথ্য আছে এবং তারা তিনমাস পরপর তথ্য হালনাগাদ করে থাকে। সাংবাদিকেরা নিঃসরণ নিয়ে আরও অতিরিক্ত তথ্যও চাইতে পারেন।
আরও সম্ভাবনা
- মিথেনস্যাট এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ড ও অন্যান্যদের একটি প্রকল্প। এর মধ্যে গুগলও আছে। মার্চ ৪, ২০২৪ সালে একটি স্যাটেলাইট উদ্বোধন করা হয়। এটি ৩৫০ মাইলের বেশি গতিতে প্রতিদিন পৃথিবীর চারপাশে দিনে ১৫ বার পরিভ্রমণ করে। ইডিএফের মতে, এই স্যাটেলাইট অপ্রত্যাশিত গতিতে মিথেন নিঃসরণের যে মাত্রা তা শনাক্ত করে, এবং ঠিক যে সময়ের তথ্য সেই সময়েই উপস্থাপন করতে পারে। ইডিএফ মুখপাত্র জন কইফম্যান বলেন, জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এই ডেটা সবার জন্য উন্মুক্ত হবে। তাঁকে পাওয়া যাবে, এই নম্বরে (২১২) ৬১৬-১৩২৫ (অফিস) (৯১৭) ৫৭৫-১৮৮৫। Email এখানে।
অবশ্য, নিঃসরণের তথ্যের জন্য ছবিই একমাত্র উৎস নয়। এখানে রইল আরও কয়েকটি পরামর্শ:
- নিয়ন্ত্রক সংস্থায় সংরক্ষিত উন্মুক্ত নথিগুলো সন্ধান করুন,
- স্থানীয় বিজ্ঞানী ও এনজিওদের সঙ্গে খাতির গড়ে তুলুন, কারণ তারা প্রচুর গবেষণা করে, এবং
- তেল ও গ্যাস খনি এবং অন্যান্য সম্ভাব্য নিঃসরণ ক্ষেত্রগুলোর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন।
নিঃসরণ প্রত্যক্ষ করেছেন, এমন সোর্সের কাছে মন্তব্য চাওয়া, সাংবাদিকতার আদর্শ কর্মপ্রক্রিয়ার মধ্যেই পড়ে। তবে প্রত্যুত্তরে যা পাওয়া যায়, তা অসম্পূর্ণ ও ভীতিকর হতে পারে।
দায়িত্বশীলেরা বলতে পারেন, নিঃসরণ একটি বৈধ অথবা স্বাভাবিক সক্রিয় প্রক্রিয়া। এই মন্তব্যগুলো সঠিক হতে পারে, আর তা যাচাই করাও কঠিন। স্থানীয় ও জাতীয় সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং তথ্যসমৃদ্ধ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে উপযুক্ত। অন্যান্য সম্ভাবনাময় সোর্সগুলো হলো: অনুসন্ধান যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে সেটির নিকটবর্তী বাসিন্দা, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বা সাবেক কর্মী, এবং এই খাতের বিশেষজ্ঞরা।
কর্পোরেট নিঃসরণ অনুসন্ধান – এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ
অনেক কোম্পানি আছে, যেগুলো তাদের মিথেন নিঃসরণ নিয়ে মোটেও স্বচ্ছ নয়, তবে তাদের ওপর আরও তথ্য প্রকাশ ও নিঃসরণ কমানোর চাপ আছে। এই ক্রমবর্ধমান চাপ সাংবাদিকদের, বিশেষত ব্যবসায় সাংবাদিকদের, আরও প্রশ্ন করার তাগিদ দেয়।
জ্বালানি তেল ও গ্যাস শিল্প, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মিথেন নিঃসরণের জন্য দায়ী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই খাতের দিকে, তাই মনোযোগ দেওয়া উচিত বেশি। সব না হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান নিঃসরণ প্রতিবেদন প্রস্তুত করে, এবং যেভাবে করে, তাতে ফাঁকি দেয়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকে।
প্রতিবেদনের ধারণা:
- প্রধান প্রধান শিল্পখাতের দিকে নজর রাখুন।
- নিঃসরণের জ্ঞাত বা অনুমিত মাত্রা সম্পর্কে জানতে চান।
- নির্দিষ্ট নিঃসরণ লক্ষ্য এবং প্রশমনের প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে চান।
পরিমাপ-পদ্ধতির জটিলতা, অনুসন্ধানের জন্য একরকম বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়, যদিও তা অভেদ্য নয়। এটি ভেদ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা একাডেমিক ও এনজিও বিশেষজ্ঞ, এবং সম্ভব হলে, কর্পোরেট ওয়াচডগ ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করা। আর ব্যাখ্যার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চাওয়া।
মিথেন বিষয়ক কর্পোরেট ডিসক্লোজারগুলো সাধারণত থাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে, তাদের “সাসটেইনেবিলিটি” প্রতিবেদনে। অভিন্ন ফরম্যাটে, কিছু কর্পোরেট ডিসক্লোজার পাওয়া যায় অলাভজনক সংগঠন সিডিপির সাইটে।
নিঃসরণের আরও একটি উৎস হলো ফ্লেয়ারিং, অর্থ্যাৎ, দাহ্য বর্জ্য গ্যাস পোড়ানো।
বিশ্ব ব্যাংকের জিরো রুটিন ফ্লেয়ারিং ইনিশিয়েটিভ (জেডআরএফ), সরকার ও তেল কোম্পানিগুলোর ফ্লেয়ারিং কার্যক্রমের তালিকা তৈরি করে এবং তা জনসম্মুখে তুলে ধরে। দেশ ও কর্পোরেশনগুলোর নিজস্ব প্রতিবেদনকৃত ফ্লেয়ারিং সংক্রান্ত ডেটা জেডআরএফ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
তেল ও গ্যাস খাতের নিঃসরণ নিয়ে কর্পোরেট প্রতিবেদন আরও উন্নত করতে বেশ কিছু প্রয়াস চলমান আছে।
বিশ্বে জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদনের ৩০% নিয়ন্ত্রণ করে যে ৭৪টি বড় প্রতিষ্ঠান, তারা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস মিথেন পার্টনারশিপ (ওজিএমপি) উদ্যোগের সদস্য। বিভিন্ন জাতিসংঘ সংস্থা ও ইডিএফ এর সঙ্গে জড়িত। এই ডেটা নিয়ে ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ক্লাইমেট ইনিশিয়েটিভ (ওজিসিআই) হলো শিল্পখাতের একটি উদ্যোগ। তারা একটি রিপোর্টিং কাঠামো তৈরি করেছে। আর কয়েকটি তেল ও গ্যাস কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত একটি কনসোর্টিয়াম তৈরি করেছে মিথেন গাইডিং প্রিন্সিপালস, যেখানে উত্তম চর্চাগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
কর্পোরেট মিথেন নিঃসরণ নিয়ে প্রতিবেদন করার সময় এই প্রশ্নগুলো বেশ প্রাসঙ্গিক:
- আপনাদের মিথেন নিঃসরণ মাত্রা কত?
- এই মাত্রা কি বাড়ছে না কমছে, এবং কতটা?
- এই মাত্রা কীভাবে হিসাব করা হয়?
যাচাইয়ের বিদ্যমান ব্যবস্থা এমনভাবে সাজানো, যেন নিশ্চিত করা যায় যে কর্পোরেট কার্যক্রম সেই মানদণ্ডগুলো মেনে চলছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত প্রশ্নের ধরন হলো, তারা এই যাচাই প্রয়াসে যোগ দিবে কি না। এছাড়া মিথেন নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবিত সরকারী নীতিগুলো সম্পর্কে কোম্পানিগুলোকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে।
মিথেন নিঃসরণ হ্রাসে অঙ্গীকারবদ্ধ কর্পোরেশনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে তাদের অঙ্গীকারের বিবরণ খুব একটা স্পষ্ট না-ও হতে পারে; আর তাদের অঙ্গীকার পর্যাপ্ত কিনা, সেটিও একটি বিতর্কের বিষয়।
তাদের অঙ্গীকারের খুঁটিনাটি এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য সন্ধান করুন। কিছু পরামর্শ হলো:
- প্রতিশ্রুত হ্রাসকরণ লক্ষ্যমাত্রা কখনো কখনো দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে, যেমন, ১০ বা ২০ বছর; স্বল্পমেয়াদী ও মধ্যবর্তী লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে জানতে চান।
- জানতে চান- পরিকল্পনাটি ঠিক কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, যা সব সময় বিস্তারিত বলা থাকে না।
- নিঃসরণ হ্রাসের পদ্ধতিতে নজর দিন।
সবচেয়ে বেশি নিঃসরণকারী প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ শুরু করাই সঙ্গত। রাষ্ট্রায়ত্ত বড় পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলো হতে পারে একটি বিশেষ সম্ভাবনাময় খাত।
মিথেন নিঃসরণ শুধুমাত্র আহরণের জায়গাতেই হয় না। তাই গোটা সাপ্লাই চেইন জুড়েই মনোযোগ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি, বিমান পরিবহন, সাগরে নৌ চলাচল এবং অন্যান্য খাত থেকেও মিথেন নিঃসরিত হয়।
বিশেষ করে, কৃষি উৎপাদন মিথেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, চাল উৎপাদন (জলমগ্ন ধান ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়া থেকে নিঃসরিত) ও গবাদিপশু প্রতিপালন। শুধু খামার পর্যায়েই নয়, তারা যেসব কোম্পানির কাঁচামাল ব্যবহার করে, সেগুলো কতটা প্রশমন করতে পারে- তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
সমাধান নিয়ে সর্বশেষ গবেষণার অনুসরণ করাও মিথেন নিয়ে সাংবাদিকতার একটি জরুরী অনুষঙ্গ। এখন নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা নিয়ে দ্রুত গতিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানকে অনুসরণের মাধ্যমেই সময়োপযোগী প্রশ্ন তোলা সম্ভব হবে।
মিথেন নিঃসরণের জন্য দেশগুলোকে জবাবদিহি করা
২০২১ সালের নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (সিওপি২৬) সামনে রেখে অনেক দেশ মিথেন নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
প্রতিবেদনের ধারণা:
- কীভাবে ও কেন জাতীয় হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল?
- কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং যাচাই করা হবে?
নিঃসরণের অঙ্গীকার নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকার যেসব তথ্য জমা দেয়, সেগুলো পাওয়া যায় জাতিসংঘের ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) রিপোর্টে। এই এনডিসিগুলো প্রকাশিত হয় জাতিসংঘের এনডিসি রেজিস্ট্রি-তে। এসব এনডিসি সমন্বিত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ইউএনএফসিসিসি। (এখানে অক্টোবর ২০২১ সংস্করণ দেখুন।)
বেশ কয়েকটি দেশ এই রিপোর্টে জাতীয় নিঃসরণ ডেটা প্রকাশ করে।
২০২৪ এর শুরুতে ১৫৬ টি দেশ গ্লোবাল মিথেন প্লেজে সাক্ষর করে। তারা সম্মিলিতভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০২০ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে অবদান রাখায় একমত হয়। ক্যায়রস অ্যানালাইসিস বলছে, ২০২৩ এর শেষ নাগাদ এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি আছে। আলাদাভাবে প্রতিটা সরকারের যে প্রতিশ্রুতি তা নিয়ে প্রতিবেদন করার দায়িত্ব সাংবাদিকদের। তবে, অনেক দেশই তাদের অবস্থানের কথা ঘোষণা দিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টে এনভায়রনমেন্টাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির একটি জরুরি রিপোর্ট দেখুন।
এই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনার সম্ভাব্য সেরা সোর্স স্থানীয়/আঞ্চলিক পরিবেশবাদী দল, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী সংগঠন, এবং রাজনৈতিক কর্মী।
নিঃসরণ পরিমাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা বিন্দু, তাই সাংবাদিকেরাও নিঃসরণ প্রাক্বলনের পদ্ধতিটি খতিয়ে দেখতে পারেন।
প্রদেশ ও শহরের মতো উপ-জাতীয় বিচার ব্যবস্থাও নেট-জিরো (শূণ্য নিঃসরণ) অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।
প্রাক্তন রিপোর্টার ও ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের গ্রাজুয়েট স্কুল অব জার্নালিজমের বর্তমান পরিচালক রাফায়েল লোরেনটি বলেন, “নিঃসন্দেহে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ একটি বড় সমস্যা, যা আমাদের পৃথিবীর এই কঠিন সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। সাংবাদিকদের সমস্যা হলো, এই স্টোরিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলা।”
আরও পড়ুন
ক্লাইমেট চেঞ্জ: জিআইজেএন’স গাইড টু ইনভেস্টিগেটিং মিথেন (ফুল গাইড)
নিউ ডেটা টুলস অ্যান্ড টিপস ফর ইনভেস্টিগেটিং ক্লাইমেট চেঞ্জ
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অপরাধ অনুসন্ধান
টবি ম্যাকিনটোশ জিআইজেএন রিসোর্স সেন্টারের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি ওয়াশিংটনে ব্লুমবার্গ বিএনএ-র সঙ্গে ৩৯ বছর কাজ করেছেন। ফ্রিডমইনফো ডট ওআরজি (২০১০-২০১৭) এর সাবেক এই সম্পাদক, বিশ্বব্যাপী এফওআই নীতিমালা সম্পর্কে লিখেছেন এবং তথ্য অধিকার সমর্থকদের আর্ন্তজাতিক নেটওয়ার্ক, ফোয়ানেটের স্টিয়ারিং কমিটিতে কাজ করেন।