প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

ত্রুটিপূর্ণ ও ভুয়া একাডেমিক গবেষণা নিয়ে কীভাবে কাজ করবেন

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

রিট্র্যাকশন ওয়াচের ব্লগ ও ডেটাবেস অনুসারে, নৈতিকতা লঙ্ঘন বা গবেষণা জালিয়াতির কারণে ২০২২ সালে প্রায় ৪,৬০০টি বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাপত্র প্রত্যাহার করা বা সরিয়ে ফেলা হয়েছে।   

প্রত্যাহার করা গবেষণাপত্রগুলো প্রতি বছর প্রকাশিত গবেষণাপত্রের ক্ষুদ্র একটি অংশ। তবে এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ গবেষণা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা কিছু গবেষণায় নতুন ওষুধ, শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি এবং রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচির ওপর কাজ করা হয় — যা সরাসরি জনস্বাস্থ্য ও সুরক্ষাকে প্রভাবিত করে। তাছাড়া দুর্নীতি, শিক্ষা, সড়ক নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলোতে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সরকারী প্রতিনিধিরা এ ধরনের পাণ্ডিত্যপূর্ণ গবেষণার ওপর নির্ভর করেন এবং গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলোর সহায়তা নেন।

৩০ নভেম্বর দ্য জার্নালিস্ট’স রিসোর্সের পক্ষ থেকে আয়োজিত ওয়েবিনারে তুলে ধরা হয়েছে সাংবাদিকেরা কীভাবে ত্রুটিপূর্ণ গবেষণাগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাাশি তা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেন। ত্রুটিপূর্ণ গবেষণার ওপর কাজ করেছেন এবং সেগুলো পর্যবেক্ষণ বা সনাক্তের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তিনজন বিশেষজ্ঞ তাদের কৌশল ও পরামর্শগুলো ওয়েবিনারে তুলে ধরেন।

ওয়েবিনারটিতে যারা অংশগ্রহন করতে পারেননি, তাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের চারটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ এখানে তুলে ধরা হলো: ইভান ওরানস্কি, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ কেয়ার জার্নালিস্টের প্রাক্তন সভাপতি যিনি নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা সাংবাদিকতা পড়ান এবং রিট্র্যাকশন ওয়াচের সহপ্রতিষ্ঠাতা; এলিজাবেথ বিক, অণুজীববিজ্ঞানী এবং বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়নতা বিষয়ক পরামর্শক, যাকে “ পাবলিক ফেস অব ইমেজ স্লিউথিং” নামে অবিহিত করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জোডি কোহেন, তিনি প্রোপাবলিকার পুরষ্কার-বিজয়ী অনুসন্ধানী প্রতিবেদক। তার সিরিজ প্রতিবেদন দ্য থ্রি মিলিয়ন রিসার্চ ব্রেকডাউন শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক গবেষণা ঘিরে বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতি সামনে আনে।

১. রিট্র্যাকশন ওয়াচ এবং পাবপেয়ার হলো দুটি অনলাইন রিসোর্স, যেগুলো সাংবাদিকদের গবেষণা জালিয়াতি এবং ত্রুটি সনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে।

রিট্র্যাকশন ওয়াচ হচ্ছে ২০১০ সালে শুরু করা একটি ব্লগ। একাডেমিক জার্নাল থেকে মুছে ফেলা হয়েছে– এমন সব গবেষণাপত্র সম্পর্কিত তথ্যের ভান্ডার । এ ওয়েবসাইটের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে:

  • রিট্র্যাকশন ওয়াচ ডাটাবেস— সাংবাদিকেরা এখানে যে কোনো গবেষক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো গবেষণা সংস্থার ত্রুটি বা জালিয়াতিপূর্ণ গবেষণাগুলো নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে পারেন। প্যার্টার্ন খুঁজতে এটি ব্যবহার করুন— যেমন, দলগতভাবে কাজ করেন এমন গবেষক বা একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এমন একাধিক গবেষকদের প্রত্যাহারকৃত গবেষণা।

বিশিষ্ট শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মানি পাভুলুরির গবেষণা নিয়ে প্রোপাবলিকার অনুসন্ধানের জন্য সাংবাদিক কোহেনকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করে রিট্র্যাকশন ওয়াচ।

ছবি: স্ক্রিনশট, রিট্রাকশন ওয়াচ

“বিশাল এ তথ্য ভান্ডারটি  গবেষণা বিচ্যুতিগুলো বুঝে ওঠার জন্য যথেষ্ট ছিল।” ওয়েবিনারে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন কোহেন,  “ওদের যে পরিমাণ তথ্য রয়েছে এবং ওরা যেভাবে ডেটাবেসগুলো সাজিয়ে রেখেছে — চমৎকার।”

২০১৮ সালে তার সিরিজ প্রতিবেদন দ্য ক্রনিকল অব হায়ার এডুকেশন-এ কোহেন প্রমান করেন, পাভুলুরি “নিষেধ করার পরও ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপর শক্তিশালী ড্রাগ লিথিয়াম পরীক্ষা করার মাধ্যমে নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাছাড়া তিনি অভিভাবকদের সঠিক তথ্য তুলে ধরে সতর্ক করেননি এবং ঝুঁকির কথা গোপন করতে মিথ্যা রেকর্ড দেখিয়েছেন।” কোহেন লিখেছেন, শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় “অন্যায়ভাবে পাভুলুরির গবেষণা পরিচালনা এবং কর্তৃপক্ষের ঢিলেঢালা তদারকির জন্য বড় ধরনের শাস্তির মুখে পড়েছে।” কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে বাধ্য করেছে পাভুলুরির গবেষণার দেওয়া ৩.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

পাবপিয়ার হলো এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে গবেষকরা একে অপরের কাজের সমালোচনা করেন। এখানে উন্মুক্ত মন্তব্য করা যায়। তাছাড়া এটি সাংবাদিকদের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার অংশ পর্যবেক্ষণ করতে এবং প্রতিবেদন তৈরিতে দরকারী হতে পারে এমন তথ্য সংগ্রহের অনুমতি দেয়।

ওয়েবিনারে এলিজাবেথ বিক উল্লেখ করেন যে, একজন গবেষকের খ্যাতি ও তার কাজ সম্পর্কে আগাম অনুমানের ক্ষেত্রে পাবপিয়ার “যথেষ্ট সংযত”। ওয়েবসাইটটি তাদের ওখানে মন্তব্য করার নিয়মগুলো নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে। ব্যবহারকারীদের বিবৃতিগুলো হতে হবে সর্বজনীনভাবে যাচাইযোগ্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং সেখানে সূত্র উল্লেখ করতে হবে। অশোভন আচরণ এখানে নিষিদ্ধ।

“আপনি এখানে এসে কাউকে বলতে পারবেন না, ‘আপনি একজন প্রতারক,” বিক ব্যাখ্যা করেন। “আপনাকে পিয়ার রিভিউ রিপোর্টের মতো প্রমাণ ও যুক্তি নিয়ে আসতে হবে।”

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মার্ক টেসিয়ার-লাভিগনের একাডেমিক গবেষণাপত্র নিয়ে শিক্ষার্থী-সাংবাদিক থিও বেকারের ওপর করা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল পাবপিয়ার। এর ফলে টেসিয়ার-লাভিগনে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন এবং সায়েন্স ফ্যামিলি অব জার্নালের প্রধান সম্পাদক হোল্ডেন থর্প আগস্টের শেষের দিকে ঘোষণা করেন যে টেসিয়ার-লাভিনের দুটি গবেষণাপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে।

PubPeer academic journals articles

ছবি: স্ক্রিনশর্ট, পাবপিয়ার

গত আগস্টে পাবপিয়ার ব্যবহার করার বিষয়ে একটি টিপ শীট তৈরি করেছে দ্য জার্নালিস্ট’স রিসোর্স। ওই টিপ শীট থেকে টিপ #১: বিনামূল্যের পাবপিয়ার ব্রাউজার এক্সটেনশন ইনস্টল করুন। আপনি যখন কোনো প্রকাশ হওয়া গবেষণাপত্র খুঁজবেন, বা যখন আপনি একটি গবেষণাপত্রের সঙ্গে লিঙ্ক করে এমন একটি ওয়েবসাইট পরিদর্শন করবেন, তখন ব্রাউজার এক্সটেনশনটি আপনাকে বলে দেবে যে পাবপিয়ারে এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য আছে কিনা।

. কোনো গবেষণাপত্রে সমস্যা আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে প্রতিবেদন তৈরির প্রথম দিকে স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের সহযোগীতা নিন।

বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে নির্দেশনা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে গবেষণায় যদি কোনো তথ্যগত ভুল বা জালিয়াতি থেকে থাকে। এলিজাবেথ বিকের মতো বিশেষজ্ঞরা আপনাকে সত্যিকার অর্থে কোনো ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে কিনা, তা ইচ্ছাকৃতভাবে করা কিনা এবং তা কতটা গুরুতর তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করতে পারে।

 ওয়েবিনার চলাকালীন, বিক সাংবাদিকদের রিপোর্টিং প্রক্রিয়ার প্রথম দিকে সহযোগিতা চাওয়া এবং সম্ভাব্য সমস্যা মূল্যায়নের জন্য কিভাবে সুনির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞদের শরনাপন্ন হতে হবে সে সম্পর্কিত পরামর্শ দিয়েছেন। বিভ্রান্তিকর ও বিকৃত ছবি চিহ্নিত করতে পারদর্শী বিক। কেউ হয়তো পরিসংখ্যানগত অসঙ্গতি বা স্বার্থের দ্বন্দের মতো ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

সায়েন্স ইন্টিগ্রিটি ডাইজেস্ট ব্লগ অনুসারে, বিকের অনুসন্ধানের ফলে ১০৬৯টি ভুয়া বা ক্রটিপূর্ণ গবেষণাপত্র প্রত্যাহার, ১০০৮টি সংশোধন এবং আরো ১৪৯টি গবেষণা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। জার্নাল সম্পাদকেরা যখন কোনো একাডেমিক গবেষণাপত্রের ত্রুটি বা জালিয়াতি সম্পর্কে অবহিত হন, বা ফলাফল সম্পর্কে অনিশ্চিত থাকেন, তখন তারা তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে বিভ্রান্তিকর তথ্য বা ত্রুটিপূর্ণ গবেষণাগুলা চিহ্নিত করার উন্নত কৌশল ও সূচক রয়েছে।

সাংবাদিকদের বৈজ্ঞানিক রেকর্ড সংশোধন এবং গবেষকদের জবাবদিহি করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন বিক।

“আমার মনে হয় গবেষণাপত্রতে বড় ধরনের সমস্যা ছিল, এবং তা সংশোধন বা প্রত্যাহার করা হয়েছে– এমন সংখ্যা তুলনামূলকভাবে খুব কম,” বলেন তিনি। “প্রাতিষ্ঠানিক তদন্তগুলো সম্পাদনে সাধারণত বেশ কয়েক বছর সময় লাগে এবং এর বিপরীতে সামান্যই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। জ্যেষ্ঠ গবেষকরা, যারা নেতৃত্ব বা পরামর্শদাতা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন, পাশাপাশি যাদের ল্যাবে এ ধরনের গবেষণাগুলো চালানো হয়, তারা খুব সামান্যই দায়বদ্ধ থাকেন।”

ওরানস্কি সাংবাদিকদের বৈজ্ঞানিক সত্যান্বেষিদের সঙ্গে আলাপ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তারা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, এক্স (আগে টুইটার)-এ সক্রিয়।

“আপনি এমন কয়েক ডজন লোক খুঁজে পেতে পারেন যারা এই ধরনের কাজ করেন,” তিনি বলেন। “এটা অনেকটা হুইসেলব্লোয়ার বা সূত্রের মতো যা নিয়ে আপানি কাজ করতে পারেন।”

ওরানস্কি প্রচলিত কয়েকটি জালিয়াতির কথা উল্লেখ করেছেন, সাংবাদিকেরা যেগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন:

  • ভুয়া তথ্য।
  • বিকৃত ছবি।
  • গবেষণা চুরি।
  • নকল করা বা “নিজের গবেষণা ফলাফলের পুনরাবৃত্তি”— গবেষকরা  যখন তাদের নিজেদের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ডেটা পুনঃব্যবহার করেন, যা এরই মধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে এবং সেগুলো নতুন গবেষণাপত্রে ব্যবহার করেন।
  • ভুয়া পিয়ার রিভিউ –  কোনো একটি গবেষণাপত্র প্রকাশের লক্ষ্যে ভুয়া পিয়ার রিভিউ করিয়ে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি।
  • পেপার মিলস – যে সব সংস্থা জাল গবেষণাপত্র তৈরি এবং বিক্রি করে।
  • লেখকের সমস্যা।
  • প্রকাশকের ত্রুটি।

. গবেষণা জালিয়াতি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার সেরা পন্থা হচ্ছে এ বিষয়ক প্রতিবেদন করা

ওরানস্কি জানান, তিনিসহ রিট্র্যাকশন ওয়াচের অন্যান্যরা ধারাবাহিকভাবেই গবেষণা জালিয়াতি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য পান। তথ্যদাতারা সাংবাদিকদের কাছে আসবেন, কেননা তারা মনে করেন সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে রিপোর্ট করবেন, বলেন তিনি।

“আপনি এ সম্পর্কে লিখুন, এরপর লোকেরা আপনার কাছে আসবে,” যোগ করেন কোহেন। “আপনি যদি নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি না করেন তাহলে লোকেরা জানবে না যে আপনি এখনো এখানে আছেন এবং কাজ করছেন। যদি নিয়মিত রিপোর্ট নাও করেন, তারপরও বিষয়গুলো নিয়ে লিখতে শুরু করুন। দেখান যে আপনি এ বিষয়ে আগ্রহী। তাহলেই আপনি আরও অনেক ধারণা পেতে শুরু করবেন।”

আরেকটি যে জায়গায় সাংবাদিকরা ভুয়া গবেষণা সম্পর্কিত বিষয়গুলোর খোঁজ করতে পারেন তা হলো আদালতের রেকর্ড। সাংবাদিকেরা পাবলিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে রেকর্ডের অনুলিপি, যেমন তদন্ত রিপোর্ট বা গবেষক ও তাদের তত্ত্বাবধায়কদের মধ্যে লিখিত যোগাযোগের অনুলিপি চাইতে পারেন, উল্লেখ করেন কোহেন। গবেষণায় যদি মানবিক বিষয় জড়িত থাকে, তাহলে সাংবাদিকরা প্রাতিষ্ঠানিক রিভিউ বোর্ডের সদস্য ও তাদের কাছ থেকে পাঠানো তদন্ত রিপোর্ট এবং যোগাযোগের অনুলিপির জন্য অনুরোধ করতে পারেন। রিভিউ বোর্ড মূলত গবেষণা পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণকালীন মানবিক নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি তত্ত্বাবধানে দায়িত্বে নিয়োজিত।

কোহেন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছেন যে, স্থানীয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড এবং গবেষণার জন্য প্রদত্ত তহবিল ফেরত পাঠানো হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে জিজ্ঞেসা করুন। সাধারণত বায়োমেডিকাল গবেষণা পরিচালনার জন্য ফেডারেল অনুদানের অর্থ অনুদান পায় এমন সংস্থাগুলোর একটি ডেটাবেস সংরক্ষণ করে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ।

“আপনি যে প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে কাজ করছেন সেগুলো ঘিরে তদন্ত করতে শুরু করুন”, বলেন কোহেন। “সন্দেহ পোষণ করুন, ডেটা নিয়ে প্রশ্ন করুন, আপনি যাদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন।”

. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুইসেলব্লোয়ার এবং বিশেষজ্ঞদের পরিচয় সুরক্ষিত রাখবেন কিনা– তা নিয়ে আপনার সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করুন।

অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন, যারা অন্য নামে পাবপিয়ারে মন্তব্য করেন বা অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবেষণার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। কারণ তারা তাদের পরিচয় জানাতে চান না।

“আপনি ধরে নিতে পারেন যে, সবাই তাদের পুরো নাম ব্যবহার করতে ইচ্ছুক নয়, তাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছদ্মনাম ব্যবহার করেন, যদিও সম্প্রতি কিছু মানুষ তাদের সম্পূর্ণ নাম ব্যবহার করতে শুরু করেছেন” কোহেন বলেন। “কিন্তু এটাই আপনার কাজ, আর এ কাজে খুব বেশি ভক্ত জুটবে না।  বিশেষ করে আমরা যাদের কাজের সমালোচনা করি তারা কখনও কখনও এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন, বুঝতেই পারছেন। আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের কারো কারো নামে মামলা করেছেন বা করার হুমকি দিয়েছেন।”

ওরানস্কি বলেন যে বৈজ্ঞানিক সত্যান্বেষিদের বেনামী থাকতে দেওয়াটা কোনো সমস্যা না। তারা তাদের সন্দেহগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং সাংবাদিকদের সামনে প্রমাণও হাজির করতে পারেন। তবে যেকোনো সূত্রের মতোই, সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আগে একটি বেনামী উৎস থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে।

“হুইসেলব্লোয়ারদের মতো নাম-পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সূত্র বিপদের মধ্যে থাকেন। বিশেষভাবে নিম্নপদস্থ ব্যক্তিরা। তিনি হয়তো একটি গবেষণাগারের সমস্যা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি এবং আপনার সম্পাদক জানছেন যে সেই ব্যক্তিটি কে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেটি কোনো সমস্যা নয়। এটাই আমার নিয়ম, বলেন তিনি। “আমরা শুধু বুঝতে চাই কেন তারা বেনামী থাকতে চায়, তবে প্রায়ই কারণটি স্পষ্ট বোঝা যায়।”

লেখাটি প্রথমে প্রকাশিত হয় দ্য জার্নালিস্ট’স রিসোর্সে, তাদের অনুমতি নিয়ে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হচ্ছে। কিছু জায়গাতে ভাষা ও শৈলীগত সম্পাদনা করা হয়েছে।


ডেনিসমেরি অর্ডওয়ে অরল্যান্ডো সেন্টিনেল, ফিলাডেলফিয়া ইনকোয়ারারসহ যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্য আমেরিকার বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র ও রেডিও স্টেশনের রিপোর্টার হিসেবে কাজের পর ২০১৫ সালে দ্য জার্নালিস্টস রিসোর্সে যোগ দেন। তার কাজ প্রকাশিত হয়েছে ইউএসএ টুডে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, শিকাগো ট্রিবিউন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের মতো প্রকাশনায়।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

গাইড পরামর্শ ও টুল

প্রতিবন্ধীদের নিয়ে অনুসন্ধানের রিপোর্টিং গাইড: সংক্ষিপ্ত সংস্করণ

জাতিসংঘের মতে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা হচ্ছেন বৃহত্তম বিভক্ত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। কার্যত প্রতিটি রিপোর্টিং বীটেই প্রতিবন্ধী বিষয়ক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা বা কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

Using Social Network Analysis for Investigations YouTube Image GIJC23

পরামর্শ ও টুল

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় শক্তিশালী টুল সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস

ডেটা-চালিত সাংবাদিকতার যুগে, বিভিন্ন বিষয়কে একসঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে যুগান্তকারী সব তথ্য উন্মোচন করা সম্ভব। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস (এসএনএ) ঠিক এমন একটি কৌশল, যা ব্যবহার করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা ঠিক এ কাজটিই করতে পারেন।

পরামর্শ ও টুল

বৈশ্বিক সহযোগিতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ গতিপথ 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং এ সংক্রান্ত ভুলভ্রান্তি এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিন অভিজ্ঞ সাংবাদিক।

টিপশীট জলবায়ু পরামর্শ ও টুল

সরকারের জলবায়ু অঙ্গীকার নিয়ে যেভাবে জবাবদিহি আদায় করবেন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ‍উদ্যোগের কেন্দ্রে রয়েছে বিভিন্ন দেশের করা জাতীয় অঙ্গীকার। আপনার দেশের সরকার কী ধরনের ঐচ্ছিক অঙ্গীকার করেছে? সেখানে উল্লেখ করা প্রতিশ্রুতিগুলো কি তারা রক্ষা করছে? এসব প্রশ্ন ধরে অনুসন্ধান এবং সরকারকে জবাবদিহি করার গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপায়-কৌশল ও রিসোর্সের খোঁজ পাবেন এই লেখায়।