Maria Ressa (left) interviews Jane Lytvynenko about Russian disinformation and the war in Ukraine. Image: Screenshot
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে থাকা মিথ্যা প্রচারণার গভীরে
আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:
গাইড রিসোর্স
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অনুসন্ধান
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
শরণার্থী ইস্যু নিয়ে অনুসন্ধানের ৯ উত্তম চর্চা
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
রাশিয়া নিয়ে অনুসন্ধান: জিআইজেএনের তাৎক্ষণিক টুলকিট
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধানের ১৫টি পরামর্শ
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণে সাহায্য করবে যেসব রিসোর্স
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে থাকা মিথ্যা প্রচারণার গভীরে
আমরা এখন জানি যে ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধের মূলে ছিল টনকিন উপসাগরে একটি আমেরিকান যুদ্ধজাহাজে হামলার মিথ্যা দাবি। একইভাবে, ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসনের ছক সাজানো হয়েছিল এই দাবিতে যে সাদ্দাম হোসেন গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী – যা শেষ পর্যন্ত ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণের অজুহাত হিসেবেও কি একই ধরনের অপপ্রচার ব্যবহার করা হয়েছে?
গেল সপ্তাহে দুই সাহসী অনুসন্ধানী সাংবাদিকের মধ্যকার সাক্ষাৎকার থেকে আভাস মিলছে, আসলেই এমন মিথ্যা অজুহাতের অস্তিত্ব আছে, যার উৎস রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও প্রধান সামাজিক প্লাটফর্মগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে চালানো মিথ্যা প্রচারণা, যা কিনা তারা অনেক বছর ধরে সয়েও গেছে।
আক্রমণের দ্বিতীয় দিনে ফিলিপাইনের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম র্যাপলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, শান্তিতে নোবেল জয়ী মারিয়া রেসা, সাক্ষাৎকার নেন সাংবাদিক জেইন লিটভেনেঙ্কোর। একটি প্রধান ইউরোপীয় গণতন্ত্রের ওপর এই হামলাকে সাংবাদিকদের কীভাবে দেখা উচিত – এই বিষয় নিয়ে তাঁর একটি অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক আগে বাজফিড নিউজে ডিসইনফরমেশন ও ডানপন্থী উগ্রবাদ নিয়ে কাজ করতেন। এখন তিনি হাভার্ডের শোরেনস্টাইন সেন্টার অন মিডিয়া, পলিটিক্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসির টেকনোলজি অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ প্রজেক্টের জ্যেষ্ঠ ফেলো। তিনি ইউক্রেনে জন্ম নিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরা সেখানেই থাকেন এবং আক্রমণের কারণে শারীরিকভাবে হুমকিতে রয়েছেন। আগ্রাসনের শুরু থেকে তিনি স্বদেশের সমর্থনে স্পষ্টভাষায় কথা বলে আসছেন।
লিটভেনেঙ্কো রেসাকে বলেন, “সেখানে আমার পরিবার আছে, এবং আজ তাদের পিছনের উঠানে ব্যাপক হামলা হয়েছে।”
লিটভেনেঙ্কো আরও বলেন, মিথ্যা প্রচারণার এই অভিযানে যেসব হাস্যকর দাবি করা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছে: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যা চালানো, দেশটির নির্বাহী ক্ষমতা নাৎসিদের হাতে যাওয়া, ইউক্রেন জাতির প্রকৃত স্থপতি হিসেবে ভ্লাদিমির লেনিনকে তুলে ধরা এবং রাসায়নিক অস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা। তিনি বলেন, পশ্চিমের অধিকাংশ গণমাধ্যম হয় তাতে মনোযোগ দেয়নি, অথবা সেগুলো তাদের চোখেই পড়েনি। কারণ, রাশিয়ার মিথ্যা প্রচারণার প্রাথমিক লক্ষ্যবস্তু হল, দেশটির স্থানীয় পাঠক-শ্রোতা।
এই সাক্ষাৎকারে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে: ২০১৪ সালে তথাকথিত ময়দান বিপ্লবের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত, ক্রেমলিনপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে, রাশিয়া গত আট বছর ধরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি প্রক্সি যুদ্ধ লড়ছে – যার ফলে, গত সপ্তাহে রুশ ট্যাঙ্কের ব্যাপক অনুপ্রবেশের আগেই, হাজার হাজার ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছেন।
লিটভেনেঙ্কো বলেন, পশ্চিমা সাংবাদিকদের জন্য ২০১৪ সালকে এই যুদ্ধ শুরুর সময় হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি ছিল – আর সহজ করে বললে, এই যুদ্ধের প্রকৃত কারণ, “ইউক্রেনীয়রা স্বাধীনতা চেয়েছিল।”
তিনি বলেন, “ঠিক এই মুহুর্তে, [রাশিয়ার] মিথ্যা প্রচারণা আন্তর্জাতিক পাঠক-দর্শকদের জানাশোনার এই ঘাটতিকে কাজে লাগাচ্ছে। ইউক্রেনীয় বিপ্লব, ক্রিমিয়ার সংযুক্তি এবং ফ্লাইট এমএইচ-১৭ এর দুর্ভাগ্যজনক পতন বিশ্ববাসীর মনোযোগ কাড়লেও, মূলত তখন থেকে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের কাছে যুদ্ধের বিষয়টি ঝাপসা হতে হতে পেছনে চলে গেছে। জানাশোনার ঘাটতি মানে, রাশিয়ার জন্য মিথ্যা ভাষ্য ছড়িয়ে দেয়ার একটি বড় সুযোগ।”
রেসা যখন জিজ্ঞাসা করেন যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই নতুন ও ব্যাপক আক্রমণ থেকে কী চান, তখন পুতিনের কৌশলগুলোর একটি ভীতিকর তালিকা তুলে ধরেন লিটভিনেঙ্কো এবং এই প্রশ্নের জবাবে তার প্রতিক্রিয়া ছিল চমকপ্রদ: “তিনি কী চান সেটি উত্তর নয়, বরং [উত্তর হলো] তিনি যা চান না: গণতন্ত্র।”
আরও পড়ুন
এক্সপার্ট টিপস ফর ডিগিং আউট দ্য রুটস অব ডিসইনফরমেশন
ভুয়া তথ্য ছড়ানোর নেপথ্যে কারা – অনুসন্ধান করবেন কীভাবে?
অন দ্য ফ্রন্টলাইনস অব রাশিয়া’স প্রোপাগান্ডা ওয়ার, হেয়ার’স হাও ইউক্রেনিয়ান গ্রুপস আর ফাইটিং ব্যাক
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের প্রতিবেদক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ২৪টির বেশি দেশে সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।