প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Maria Ressa (left) interviews Jane Lytvynenko about Russian disinformation and the war in Ukraine. Image: Screenshot

রিসোর্স

» গাইড

বিষয়

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে থাকা মিথ্যা প্রচারণার গভীরে 

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

English

Maria Ressa interviews Jane Lytvynenko on Russian disinformation

রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত প্রোপাগান্ডা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে ডিসইনফরমেশন বিশেষজ্ঞ জেইন লিটভেনেঙ্কোর সাক্ষাৎকার নেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী ও র‌্যাপলার সিইও মারিয়া রেসা (বামে)। ছবি: স্ক্রিনশট

আমরা এখন জানি যে ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধের মূলে ছিল টনকিন উপসাগরে একটি আমেরিকান যুদ্ধজাহাজে হামলার মিথ্যা দাবি। একইভাবে, ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসনের ছক সাজানো হয়েছিল এই দাবিতে যে সাদ্দাম হোসেন গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী – যা শেষ পর্যন্ত ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণের অজুহাত হিসেবেও কি একই ধরনের অপপ্রচার ব্যবহার করা হয়েছে?

গেল সপ্তাহে দুই সাহসী অনুসন্ধানী সাংবাদিকের মধ্যকার সাক্ষাৎকার থেকে আভাস মিলছে, আসলেই এমন মিথ্যা অজুহাতের অস্তিত্ব আছে, যার উৎস রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও প্রধান সামাজিক প্লাটফর্মগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে চালানো মিথ্যা প্রচারণা, যা কিনা তারা অনেক বছর ধরে সয়েও গেছে। 

আক্রমণের দ্বিতীয় দিনে ফিলিপাইনের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম র‌্যাপলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, শান্তিতে নোবেল জয়ী মারিয়া রেসা, সাক্ষাৎকার নেন সাংবাদিক জেইন লিটভেনেঙ্কোর। একটি প্রধান ইউরোপীয় গণতন্ত্রের ওপর এই হামলাকে সাংবাদিকদের কীভাবে দেখা উচিত – এই বিষয় নিয়ে তাঁর একটি অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক আগে বাজফিড নিউজে ডিসইনফরমেশন ও ডানপন্থী উগ্রবাদ নিয়ে কাজ করতেন। এখন তিনি হাভার্ডের শোরেনস্টাইন সেন্টার অন মিডিয়া, পলিটিক্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসির টেকনোলজি অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ প্রজেক্টের জ্যেষ্ঠ ফেলো। তিনি ইউক্রেনে জন্ম নিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরা সেখানেই থাকেন এবং আক্রমণের কারণে শারীরিকভাবে হুমকিতে রয়েছেন। আগ্রাসনের শুরু থেকে তিনি স্বদেশের সমর্থনে স্পষ্টভাষায় কথা বলে আসছেন।  

লিটভেনেঙ্কো রেসাকে বলেন, “সেখানে আমার পরিবার আছে, এবং আজ তাদের পিছনের উঠানে ব্যাপক হামলা হয়েছে।” 

লিটভেনেঙ্কো আরও বলেন, মিথ্যা প্রচারণার এই অভিযানে যেসব হাস্যকর দাবি করা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছে: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যা চালানো, দেশটির নির্বাহী ক্ষমতা নাৎসিদের হাতে যাওয়া, ইউক্রেন জাতির প্রকৃত স্থপতি হিসেবে ভ্লাদিমির লেনিনকে তুলে ধরা এবং রাসায়নিক অস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা। তিনি বলেন, পশ্চিমের অধিকাংশ গণমাধ্যম হয় তাতে মনোযোগ দেয়নি, অথবা সেগুলো তাদের চোখেই পড়েনি। কারণ, রাশিয়ার মিথ্যা প্রচারণার প্রাথমিক লক্ষ্যবস্তু হল, দেশটির স্থানীয় পাঠক-শ্রোতা।

এই সাক্ষাৎকারে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে: ২০১৪ সালে তথাকথিত ময়দান বিপ্লবের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত, ক্রেমলিনপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে, রাশিয়া গত আট বছর ধরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি প্রক্সি যুদ্ধ লড়ছে – যার ফলে, গত সপ্তাহে রুশ ট্যাঙ্কের ব্যাপক অনুপ্রবেশের আগেই, হাজার হাজার ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছেন।

লিটভেনেঙ্কো বলেন, পশ্চিমা সাংবাদিকদের জন্য ২০১৪ সালকে এই যুদ্ধ শুরুর সময় হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি ছিল – আর সহজ করে বললে, এই যুদ্ধের প্রকৃত কারণ, “ইউক্রেনীয়রা স্বাধীনতা চেয়েছিল।”

তিনি বলেন, “ঠিক এই মুহুর্তে, [রাশিয়ার] মিথ্যা প্রচারণা আন্তর্জাতিক পাঠক-দর্শকদের জানাশোনার এই ঘাটতিকে কাজে লাগাচ্ছে। ইউক্রেনীয় বিপ্লব, ক্রিমিয়ার সংযুক্তি এবং ফ্লাইট এমএইচ-১৭ এর দুর্ভাগ্যজনক পতন বিশ্ববাসীর মনোযোগ কাড়লেও, মূলত তখন থেকে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের কাছে যুদ্ধের বিষয়টি ঝাপসা হতে হতে পেছনে চলে গেছে। জানাশোনার ঘাটতি মানে, রাশিয়ার জন্য মিথ্যা ভাষ্য ছড়িয়ে দেয়ার একটি বড় সুযোগ।”

রেসা যখন জিজ্ঞাসা করেন যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই নতুন ও  ব্যাপক আক্রমণ থেকে কী চান, তখন পুতিনের কৌশলগুলোর একটি ভীতিকর তালিকা তুলে ধরেন লিটভিনেঙ্কো এবং এই প্রশ্নের জবাবে তার প্রতিক্রিয়া ছিল চমকপ্রদ: “তিনি কী চান সেটি উত্তর নয়, বরং [উত্তর হলো] তিনি যা চান না: গণতন্ত্র।”

আরও পড়ুন

এক্সপার্ট টিপস ফর ডিগিং আউট দ্য রুটস অব ডিসইনফরমেশন

ভুয়া তথ্য ছড়ানোর নেপথ্যে কারা – অনুসন্ধান করবেন কীভাবে?

অন দ্য ফ্রন্টলাইনস অব রাশিয়া’স প্রোপাগান্ডা ওয়ার, হেয়ার’স হাও ইউক্রেনিয়ান গ্রুপস আর ফাইটিং ব্যাক


রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের প্রতিবেদক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ২৪টির বেশি দেশে সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

AI fact checking 2024 elections

পরামর্শ ও টুল সংবাদ ও বিশ্লেষণ

নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ঠেকাচ্ছে জেনারেটিভ এআই, বৈশ্বিক দক্ষিণে প্রভাব কম

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এআই ব্যবহার করে ভুয়া তথ্যের প্রচার যেমন চলছে, তেমনি সত্যতা যাচাইয়ের কাজও করছে এআই। কিন্তু পশ্চিমের বাইরের দেশগুলোয় তথ্য যাচাইয়ে এআই খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছে না। আছে নানা সীমাবদ্ধতা।

Studio, headphones, microphone, podcast

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

ঘুরে আসুন ২০২৩ সালের বাছাই করা অনুসন্ধানী পডকাস্টের জগত থেকে

নানাবিধ সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে সাড়া জাগানো কিছু অনুসন্ধানী পডকাস্ট। এখানে তেমনই কিছু বাছাই করা পডকাস্ট তুলে এনেছে জিআইজেএনের বৈশ্বিক দল।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

চিংড়ি চোরাচালান, হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড, তামাক শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব: চীন, হংকং ও তাইওয়ানের ২০২৩ সালের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

অনেক বাধাবিপত্তি ও চ্যালেঞ্জের মুখেও চীন, হংকং ও তাইওয়ান থেকে ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয়েছে প্রভাব তৈরির মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এমনই কিছু প্রতিবেদন জায়গা করে নিয়েছে জিআইজেএনের সম্পাদকের বাছাইয়ে।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান: ভুয়া বিশেষজ্ঞের লেখা, টেলিগ্রামে ব্ল্যাকমেইল, সেচপাম্প মালিকদের আর্থিক নিষ্পেষণ

২০২৩ সালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রকাশিত ৮টি প্রতিবেদন জায়গা করে নিয়েছে জিআইজেএনের সম্পাদকের বাছাইয়ে। যেখানে উঠে এসেছে ভুয়া লেখক-বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ছড়ানো অপতথ্য; টেলিগ্রামে ব্ল্যাকমেইল; বিদেশে রাজনীতিবিদের সম্পদের খোঁজ— এমন নানা বিষয়।