প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

আফ্রিকার ইবোলা যৌন নিপীড়ন কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হলো যেভাবে

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

ছবি কৃতজ্ঞতা: রবার্ট ফ্লুমারফেল্ট/দ্য নিউ হিউম্যানিটারিয়ান

গত বছরের শুরুতে, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর ইবোলা কবলিত এলাকা সফরের সময়, আমাদের কাছে খবর আসে, সেখানকার সাহায্যকর্মীরা সম্ভবত নারীদের যৌন নিপীড়ন করছে। 

“ওহ, তারা আমাদের নারীদের খুবই পছন্দ করে। অসুস্থদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য তারা সামরিক কনভয় নিয়ে হাজির হয়। এবং সবসময় শুধু নারীদেরকেই নিয়ে যায়” – ২০১৯ সালের মার্চে, বুতেম্বোর একটি পানশালায় বসে কথাগুলো বলছিলেন রিপোর্টার রবার্ট ফ্লুমারফেল্ট। তখন উত্তরপূর্ব কঙ্গোর এই এলাকায় ইবোলা সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য কাজ করছিলেন ত্রাণকর্মীরা। 

এই চর্চা স্থানীয়রা সবাই কমবেশি জানতেন, কিন্তু আমাদের বলা হয়েছিল, খুব কম নারীই হয়তো এ ব্যাপারে মুখ খুলবেন। “ভুক্তভোগীরা হয়তো তাদের এই অভিজ্ঞতা আমৃত্যু গোপন রাখবেন,” বলেছিলেন এক ব্যক্তি। 

আমরা সেই নারীদের খুঁজে বের করতে মাঠে নামি। 

ভুক্তভোগী নারীদের কাছ থেকে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে আমাদের এক বছর সময় লেগে যায়। এটি হয়ে দাঁড়ায় দ্য নিউ হিউম্যানিটারিয়ানথমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন-এর একটি যৌথ অনুসন্ধান। শেষপর্যন্ত, ৫১ জন নারী আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন: প্রায়ই তাদেরকে অনৈতিক যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দেওয়া হতো, নিপীড়ন করা হতো অথবা কাজ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নিপীড়নের ফাঁদে ফেলা হতো। এ ধরনের বেশিরভাগ কাজই করেছেন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ৩০ জন নারী। ত্রাণ সংস্থাগুলোর গাড়িচালক ও স্থানীয় এনজিও কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে আমরা এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি।

তবে এই নারীদের মুখ থেকে কথা বের করে আনার কাজটি সহজ ছিল না। 

খুব অল্প বয়সেই (একজন মাত্র ১৮ বছরে পা দিয়েছেন) তারা অনেক কিছু দেখেছেন। বুলেটের আঘাত এড়িয়েছেন। গণহত্যা, ধর্ষণ ও রোগবালাইয়ের মুখে পড়েছেন। 

আর এখন, আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদের মুখে মুখে তাদের নাম ছড়িয়েছে নেহাত “ভোগ্যপণ্য” হিসেবে। 

বিষয়টি নিয়ে প্রথম কোনো নারী আমাদের সঙ্গে কথা বলেন ২০১৯ সালের অক্টোবরে। সেটি ছিল কঙ্গোর উত্তরে, কিভু প্রদেশের আরেক প্রধান ইবোলা-কেন্দ্রস্থলে। আমরা সেখানে রিপোর্ট করছিলাম: কেন নারী ও কন্যাশিশুদের মধ্যে ইবোলা সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। 

সেই নারীর আগে থেকেই একটি চাকরি ছিল। কিন্তু তারপরও তাকে ক্রমাগত উত্যক্ত করেছেন ত্রাণকর্মীরা। রিপোর্টার স্যাম মেডনিককে তিনি বলেছিলেন, “তারা বলত, ‘তুমি তো বেশি টাকা আয় করতে পারছ না; আমার সাথে যৌন সম্পর্ক করলে, আমি তোমার পদোন্নতির ব্যবস্থা করে দেব।’” স্যাম সেসময় যৌন হয়রানি ছাড়াও আরেকটি প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিলেন। তার সেই রিপোর্টের বিষয় ছিল: অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের কারণেও যে ইবোলা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সে ব্যাপারে কেন নারীদের সতর্ক করা হচ্ছে না। 

“স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সাহায্যকর্মী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স ও কমিউনিটির সদস্য – সবাই জানতেন, কী ঘটে চলেছে,” বলেছেন মেডনিক। তিনি ভেবে অবাক হয়েছিলেন, যদি সবাই-ই সবকিছু জেনে থাকে, তাহলে কেন কেউ বিষয়টি রিপোর্ট করেনি?

মেডনিক সেসময় সরকারের দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছিলেন কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশ, দক্ষিণ সুদানে। সেখান থেকে বহিস্কার হবার পর তিনি বেনি ছেড়ে চলে যান। কিন্তু রিপোর্টিং চালিয়ে গেছেন দূর থেকেই।

একই সময়, উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় বসে অনুসন্ধান চালিয়ে গেছেন ফ্লুমারফেল্ট। তিনি কিসোয়াহিলি ভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে পারতেন। একপর্যায়ে, কঙ্গোর কিছু নারী গবেষক (নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না) এগিয়ে আসেন।

ফ্লুমারফেল্ট অনেক দিন ধরে এমন নিপীড়নের কথা শুনে আসছিলেন। “তুমি একজনকেও পাবে না, যে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইবে,” বেনির এক গবেষক তাকে বলেছিলেন।

“মানুষ ফোনে আমার কথা শুনে হাসত,” বলেছেন ফ্লুমারফেল্ট।

কিন্তু আমরা জানতাম, সামনে কিছু একটা আছে। 

ফলে আমরা একটি রিপোর্টিং পরিকল্পনা তৈরি করি। বিমানের সময়সূচি দেখা শুরু করি। সব কিছুই করছিলাম নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে। কারণ এলাকাটিতে যখন তখন সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়, আর ইবোলা হেলথ সেন্টারের কর্মীরাও হামলার শিকার হন।

দ্য নিউ হিউম্যনিটারিয়ান শুরু থেকেই ইবোলা সংক্রমণের বিষয়টি কাভার করছিল। এধরনের মানবিক সংকটে যৌন হয়রানির বিষয় নিয়েও আমরা ক্রমাগত কাজ করেছি। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে হাইতিতে অক্সফামের কেলেঙ্কারি পর্যন্ত। কিন্তু, ইবোলা সংক্রমণ ঠেকানোর সময় এ ধরনের যৌন হয়রানির ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত কাজ হয়নি। 

টিএনএইচ-এর প্রদায়ক ইমানুয়েল ফ্রয়েডেনথাল কয়েক সপ্তাহ কাটিয়েছিলেন একটি ইবোলা কবলিত এলাকায়। সেখানে তিনি দেখেছিলেন:“ইবোলা বাণিজ্যের” কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠী কিভাবে ফুঁসে উঠছে। এখানে থাকার সময়ই তিনি শুনেছিলেন: তাদের ক্ষোভের কারণগুলোর মধ্যে যৌন নিপীড়নও আছে। 

এদিকে, টিএনএইচ-এর আরেক প্রতিনিধি ফিলিপ ক্লেইনফেল্ডকে গত ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো হয়েছিল দক্ষিণ কিভু প্রদেশে। সেখানে তিনি মানবিক সহায়তা কর্মকাণ্ডে নানা রকমের প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আলাদা একটি অনুসন্ধান করছিলেন। 

এরপরেই আসে কোভিড-১৯। যাতায়াত, চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, তখন আমরা গবেষণায় মন দিই। 

আমরা সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছে জানতে চাই: ইবোলা সংক্রমণ নিয়ে কাজ করার সময় কতগুলো যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এসেছে? এমন অভিযোগের জন্য কি কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে? এ ধরনের নিপীড়নের ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করার জন্য কী ধরনের চর্চা জারি আছে? 

আমরা এ সংক্রান্ত লৈঙ্গিক ও ক্ষমতা-সম্পর্কগুলোও খতিয়ে দেখি। যেমন, ত্রাণকর্মীদের মধ্যে কতজন পুরুষ? সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীরা কিভাবে যুক্ত আছেন? এই খাতে খরচ হওয়া ৭০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে কতটুকু খরচ করা হয়েছে নারীদের সুরক্ষার জন্য?

আমাদের অনুসন্ধানী শিক্ষানবিশ ইজি এলিস, এ সংক্রান্ত সব ডেটাকে সাজিয়েছেন, টেবিল ও চার্টে। 

এরপর, জুনের শুরুতে, আমরা একটি বড় ঘটনার সন্ধান পেয়ে যাই। 

টিএনএইচ-এর ডেপুটি আফ্রিকা এডিটর, ক্লেইনফেল্ডের হাতে আসে একটি ফাঁস হয়ে যাওয়া রিপোর্ট। ইবোলা মোকাবিলায় ব্যাপক দুর্নীতির পাশাপাশি যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগেরও উল্লেখ ছিল সেখানে। ব্রিটিশ সরকারের এই রিপোর্টটি, আমাদের শোনা কথাগুলোকে আরো বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিল। 

কিছুদিন পর চলাচলের সীমাবদ্ধতাও শিথিল হয়। জুলাইয়ের শুরুতে আবার বেনিতে পৌঁছান ফ্লুমারফেল্ট। 

প্রথমেই তিনি যান স্থানীয় নারী সংগঠন, সোফিপাডি-তে। তারাও শুনেছিলেন, ইবোলা সংক্রমিত অঞ্চলে যৌনতার বিনিময়ে কাজের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত মাত্র একজন নারী, সরাসরি অভিযোগ নিয়ে তাদের কাছে এসেছে।

সেফিপাডির এক সদস্য বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নারীদের অনুপ্রাণিত করতে আমরা রেডিওতে প্রচারণা চালাই। কিন্তু তারা তা কেন করবে? আপনার পরিবারই যদি না জানে যে, কী ঘটেছিল; তাহলে আপনি কেন রেডিওর কিছু অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন?”

এভাবে আরো কিছুদিন কাটার পর, বেনি-ভিত্তিক এক গবেষক ফ্লুমারফেল্টকে ফোন করে জানান: ডব্লিউএইচও-তে কাজ করা তিন নারী তাদের সাথে কথা বলতে চান। 

শুরুতে, সেই নারীরা খুই উদ্বিগ্ন ছিলেন। ফ্লুমারফেল্ট ও কঙ্গোর এক নারী গবেষক তাদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রাথমিক এমন কিছু সাক্ষাৎপর্বই চলেছে বেশ কয়েক দিন ধরে। 

শেষপর্যন্ত, আমরা সেই নারীদের আস্থা অর্জন করি। তারা অন্যদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করিয়ে দেন। 

কখনো কখনো কথা বলতে গিয়ে তাদের কণ্ঠ ভেঙে আসত, হাতগুলো কাঁপত, চোখ দিয়ে পানি নেমে আসত। তাদের কেউই অবশ্য ন্যায়বিচার আশা করেননি। তারা নিজেদের গল্পগুলোই শুধু বলতে চেয়েছেন, যেন অন্য নারীদের এই একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়। 

ফ্লুমারফেল্ট বেশ কয়েকজন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সবাই প্রায় একইরকম কথা বলেছে। এই পর্যায়ে এসে আমরাও শক্ত অবস্থান নিই – এই নারীদের গল্পগুলো গোটা বিশ্বের গোচরে আনতে হবে।

এসময়েই আমরা যোগাযোগ করি থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের সাথে। আমরা জানতাম, এই অঞ্চলে তাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের; এবং নির্ভুল, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার জন্যেও তাদের সুনাম আছে। এতে আমাদের এই অনুসন্ধানের ওপর সবার আস্থা আরো বাড়বে। আমরা আরো জানতাম: বিশ্বব্যাপী রয়টার্সের যে পাঠকপ্রিয়তা আছে, তাতে অনেক সংবাদমাধ্যমই আমাদের এই যৌথ অনুসন্ধানটি প্রচার করবে।

আগস্টে, থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের এক রিপোর্টার (নিরাপত্তাজনিত কারণে তার নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না) বেনি-তে আসেন। সাক্ষাৎকার নেন আরো বেশ কয়েকজন নারী, সাহায্যকর্মী ও কর্মকর্তার। তাঁর রিপোর্টিংয়ের সাথে আমাদের আগের রিপোর্টিংয়ের ভাষ্য মিলে গিয়েছিল। 

জাতিসংঘ ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রয়টার্সের পশ্চিম আফ্রিকা প্রতিনিধি নেলি পেইটন। জাতিসংঘ ও অন্যান্য এনজিওগুলো যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে “জিরো টলারেন্সের” ঘোষণা দেওয়ার পরেও কেন বারবার সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে – এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য পেইটন কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সাথেও কথা বলেছেন। 

এরই মধ্যে, আমরা গোমা, লন্ডন ও জেনেভায় বসে গবেষণা এবং প্রতিবেদনগুলোর খসড়া তৈরির কাজও চালিয়ে গেছি। 

রিপোর্ট লিখতে গিয়ে আমরা ভুক্তভোগী নারীদের নাম গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছি। তাদের গল্পগুলো বলার এটাই একমাত্র উপায় ছিল। আমরা শেষ খসড়ায় খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছি, সেখানে এমন কিছু থেকে যাচ্ছে কিনা, যা দিয়ে সেই নারীদের বা তারা যে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে; তাদের পরিচয় বের হয়ে আসে। 

আমরা এই গল্পগুলো সত্যি সত্যিই পুরো বিশ্বকে শোনাতে চেয়েছিলাম। এজন্য আমরা টিএনএইচ-এর অডিয়েন্স এনগেজমেন্ট এডিটর, হুইটনি প্যাটারসনের শরণাপন্ন হই। তিনি কঙ্গোর রিপোর্টার হুইলাইন বালুমে ও আরো দুই নারীকে দিয়ে যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের জবানবন্দি রেকর্ড করান। সেগুলো পরিণত করেন অডিও ক্লিপে। 

এই জবানবন্দি কঙ্গোসহ পুরো বিশ্বের টেলিভিশন ও রেডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

কঙ্গোর ফরাসি-ভাষী সংবাদমাধ্যমের কাছে দেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদনগুলো অনুবাদও করেছে রয়টার্সের অনুবাদক দল।  

বিশ্বের ২০টিরও বেশি প্রধান মূলধারার সংবাদমাধ্যম এটি কাভার করেছে। যার মধ্যে ছিল: টাইমস অব লন্ডন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, ফ্রান্স২৪ ও লে মনডে। ৫০টিরও বেশি আঞ্চলিক ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও বিষয়টি কাভার করেছে। 

ডব্লিউএইচওঅন্যান্য এনজিওগুলো বিষয়টি তদন্ত করে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকান সরকারগুলোর কাছে যে বার্তা পাঠানো হয়েছে, তাতে বোঝা যায় বিষয়টিতে তারা ক্ষুব্ধ।

আমরা যে নারীদের সাথে কথা বলেছি, তারা কেউই আশা করেনি, এতে কিছু হবে। এর আগে এমন কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলোর দিকে যদি তাকালে দেখা যাবে, আসলে কিছুই হয়নি। 

এখানেও হয়তো ত্রাণ সংগঠনগুলো বড়জোর তাদের অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বহিস্কার করবে। কিন্তু এধরনের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। গর্ভবতী হয়ে পড়া নারীরা পিতৃত্বের দাবিতে অভিযোগ করতে পারেন ঠিকই, কিন্তু সেটিও খুব সহজ হয় না। কারণ অভিযুক্তদের অনেকেই কঙ্গো ছেড়ে চলে যায়। 

“সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, এই গল্পগুলো শুনতে শুনতে আমি ভাবি যে তারা এগুলো বলেছে পুরোপুরি অজানা এক মানুষের সামনে। এটি আমাকে খুব বিমর্ষ করে তোলে। আমি ভাবতাম — এখনো ভাবি — এই যে নারীদের জবানবন্দি শুনছি, তাদের কিভাবে ন্যায়বিচার এনে দিতে পারি?” নিজের রিপোর্টিং প্রসঙ্গে বলেছিলেন ফ্লুমারফেল্ট। 

আরো পড়ুন

লেখটি প্রথম প্রকাশিত হয় জিআইজেএন-এর সদস্য সংগঠন দ্য নিউ হিউম্যানিটারিয়ান-এ। অলাভজনক এই সংবাদ সংস্থা বিশেষভাবে রিপোর্টিং করে মানবিক সংকট নিয়ে। এই অনুসন্ধানটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে। এই লেখাটি অনুমতি নিয়ে এখানে পুনঃপ্রকাশ করা হলো। অনুবাদের যথার্থতার দায়দায়িত্ব, দ্য নিউ হিউম্যানিটারিয়ান-এর নয়। 


পেইসলি ডোডস দ্য নিউ হিম্যানিটারিয়ানের অনুসন্ধানী সম্পাদক। ২০ বছরেরও বেশি সময় তিনি কাজ করেছেন অ্যাসোসিয়েটিড প্রেসে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, হাইতি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো-তে অনুসন্ধান করছেন জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর নিপীড়ন নিয়ে। 

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

Studio, headphones, microphone, podcast

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

ঘুরে আসুন ২০২৩ সালের বাছাই করা অনুসন্ধানী পডকাস্টের জগত থেকে

নানাবিধ সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রকাশিত হয়েছে সাড়া জাগানো কিছু অনুসন্ধানী পডকাস্ট। এখানে তেমনই কিছু বাছাই করা পডকাস্ট তুলে এনেছে জিআইজেএনের বৈশ্বিক দল।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

চিংড়ি চোরাচালান, হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড, তামাক শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব: চীন, হংকং ও তাইওয়ানের ২০২৩ সালের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

অনেক বাধাবিপত্তি ও চ্যালেঞ্জের মুখেও চীন, হংকং ও তাইওয়ান থেকে ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয়েছে প্রভাব তৈরির মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এমনই কিছু প্রতিবেদন জায়গা করে নিয়েছে জিআইজেএনের সম্পাদকের বাছাইয়ে।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান: ভুয়া বিশেষজ্ঞের লেখা, টেলিগ্রামে ব্ল্যাকমেইল, সেচপাম্প মালিকদের আর্থিক নিষ্পেষণ

২০২৩ সালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রকাশিত ৮টি প্রতিবেদন জায়গা করে নিয়েছে জিআইজেএনের সম্পাদকের বাছাইয়ে। যেখানে উঠে এসেছে ভুয়া লেখক-বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ছড়ানো অপতথ্য; টেলিগ্রামে ব্ল্যাকমেইল; বিদেশে রাজনীতিবিদের সম্পদের খোঁজ— এমন নানা বিষয়।

InterNation international journalism network

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

ইন্টারনেশন: (সম্ভবত) বিশ্বের প্রথম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নেটওয়ার্ক

প্রায় ৪০ বছর আগে, গড়ে উঠেছিল অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের (সম্ভবত) প্রথম আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেশন। পড়ুন, এটির নেপথ্যের কাহিনী।