

Illustration: Marcelle Louw for GIJN
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
ভূমিকা: আরব উপসাগরীয় অঞ্চলে অভিবাসন নিয়ে রিপোর্টিংয়ের জিআইজেএন গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১: উত্তম চর্চা ও কোভিড যুগের উপযোগী বিষয়বস্তু
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ২ : কোভিড-১৯ এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের অভিবাসী শ্রমিক
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৩: পরিসংখ্যান ও গবেষণা
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৪: দরকারি পাঠ
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৫: বিশেষজ্ঞ গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৬: মানব পাচারের কেস স্টাডি
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৮: গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ৯: পাচার ও বলপূর্বক শ্রম সংক্রান্ত পরিভাষা
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১০: বাহরাইনের জন্য রিপোর্টিং গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১১: কুয়েতের জন্য রিপোর্টিং গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১২: ওমানের জন্য রিপোর্টিং গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১৩: কাতারের জন্য রিপোর্টিং গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১৪: সৌদি আরবের জন্য রিপোর্টিং গাইড
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
অধ্যায় ১৫: সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য রিপোর্টিং গাইড
এই পরামর্শগুলো দিয়েছেন ইয়াসিন কানাডে। অভিবাসী শ্রমিক ইস্যু কাভার করা জন্য উগান্ডার সাবেক এই সাংবাদিককে আরব আমিরাত থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
গণমাধ্যম পরিস্থিতি
আরব আমিরাতে, মানব পাচার নিয়ে রিপোর্টিং করতে গেলে আগে মনের মধ্যে গেঁথে নিন: দেশটিতে সরকারি ভাষ্যের বিপরীতে কোনো কিছু লেখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেখানকার গণমাধ্যম আইনে সরকার ও শাসক পরিবারের সমালোচনা নিষিদ্ধ। এবং তারা যেকোনো প্রকাশনা সেন্সর করার অধিকার রাখে। ২০১২ সালের সাইবার ক্রাইম আইন অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের ওপর আরও খড়্গহস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অনলাইনে তথ্য শেয়ার, ডিজিটাল সাংবাদিকতা ও সোশ্যাল মিডিয়া অন্তর্ভুক্ত আছে। এসব অপরাধের শাস্তি জরিমানা থেকে শুরু করে বিনা বিচারে আটকে রাখা কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো—এমন যেকোনো কিছুই হতে পারে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের ২০২১ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থান ছিল ১৩১। ছবি: স্ক্রিনশট
ডিজিটাল নিরাপত্তার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকুন। কারণ, এর আগে অভিবাসী শ্রমিক ইস্যু কাভারের চেষ্টা করায় স্থানীয় ও বিদেশি সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে কিংবা ফেরত পাঠানো হয়েছে। এটিও মাথায় রাখুন, আপনার প্রতিবেদন খুব কঠিন বা কঠোর না হলেও, আপনি শাস্তি পেতে পারেন। এমনকি শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ বা কীভাবে তাঁদের কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, এমন বিষয় নিয়ে সাধারণ পর্যবেক্ষণের কারণেও আপনাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে, বা কারাবন্দি করা হতে পারে।
কোথায় পাবেন খবর?
সরকারি সূত্র
তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করে এমন কোনো আইন আরব আমিরাতে নেই। তবে সরকারি বিভিন্ন সূত্রের কাছ থেকে ডেটা ও অন্যান্য তথ্য পাওয়ার কিছু পদ্ধতি আছে।
সরকারি বিভিন্ন বিভাগে জনসংযোগ দপ্তর আছে। যেখান থেকে আপনি মানব পাচারসংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক কেসের তথ্য পেতে পারেন। আমিরাতের সব পুলিশ ডিপার্টমেন্টেও একটি করে মিডিয়া অফিস আছে। দুবাই ও শারজাহ পুলিশের একটি আলাদা মানব পাচারসংক্রান্ত বিভাগও আছে। আমিরাতের সব আদালত ও সরকারি মামলা পরিচালনা বিভাগের একটি শ্রম দপ্তর আছে, যারা শ্রমসংক্রান্ত মামলাগুলো নিয়ে কাজ করে। আপনি আদালতের নথিপত্র পর্যালোচনা করার জন্য আবেদনও করতে পারেন।
মানব পাচার নিয়ে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের আরেকটি প্রধান সোর্স হলো: ন্যাশনাল কমিটি টু কমব্যাট হিউম্যান ট্রাফিকিং। সদর দপ্তর আবুধাবিতে। এই কমিটি আপনাকে শুধু তাদের উদ্যোগগুলোর ব্যাপার ইতিবাচক তথ্য দেবে। তারপরও এটি একটি নজর দেওয়ার মতো জায়গা।
দুবাই ও শারজাহর মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্সেস অ্যান্ড এমিরাটাইজেশন দপ্তর মাঝেমধ্যে মানব পাচারের ঘটনা নিয়ে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত ঘটনা ধরে কাজ শুরু করাটাই তুলনামূলক সহজ। পাচারের শিকার হওয়া শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে সরকারি দপ্তরের মাধ্যমেও। সেসব শ্রমিক হয়তো এখন তাঁদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চান। একবার আস্থা অর্জন করতে পারলে এই শ্রমিকেরা আপনার সঙ্গে মন খুলে কথা বলবেন। এ জন্য স্থানীয় কমিউনিটির কোনো দোভাষীকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। মানব পাচারের শিকার কারও সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের ভাষাতেই কথা বলতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
মাথায় রাখুন: এসব অফিসের কিছু কর্মকর্তা বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। এবং তাঁরা হয়তো নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা নিয়ে আপনাকে তথ্য দিতে পারেন। আমিরাতে ইংরেজি অনেক ব্যাপকভাবে বলা হলেও অনেক সরকারি কর্মকর্তা বেশির ভাগ সময়ই আরবিতে কথা বলেন। এবং মানব পাচারসংক্রান্ত সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা তাঁরা আরবিতেই করতে পছন্দ করেন। সরকারি অফিসের এসব সূত্র আপনার কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে চাইবেন যে, প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁরা কোনোভাবেই সমস্যার মধ্যে পড়বেন না।
আমিরাতে পতিতালয়ের চর্চা খুব সাধারণ, যা পাচারের শিকার হওয়া নারীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার বড় জায়গা।
কিছু কর্মকর্তা আপনার কাছে প্রতিবেদনটির একটি খসড়াও দেখতে চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদেরকে আপনি উদ্ধৃতি দেখাতে পারেন এবং সেটির তথ্য যাচাই করতে পারেন। কিন্তু পুরো প্রতিবেদন বা কোনো অংশ তাঁদের সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
বৈঠক ও সাক্ষাৎকার
শ্রম শিবির ও নির্মাণকাজের জায়গাগুলো তথ্যের বড় উৎস হতে পারে। কিন্তু একই সঙ্গে এখানে গেলে সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকিও তৈরি হয়। শ্রমিকদের কোনো বাসস্থানে যাওয়ার জন্য আপনাকে আগে জানতে হবে: সেখানে কোনো শ্রমিক আছেন কি না। নোট: যদি তাঁদের থাকার জায়গায় আপনার যাওয়ার কারণে সেখানে থাকা শ্রমিকটি ঝুঁকির মুখে পড়েন, তাহলে ক্যাম্পের বাইরে কোনো জায়গায় তাঁদের সঙ্গে দেখা করুন। শ্রমিকদের কাছে একটি অস্থায়ী ক্যামেরা দিয়ে দিতে পারলে তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতাগুলো সেটির মাধ্যমে রেকর্ড করতে পারেন। তবে এটি করতে হবে খুবই সতর্কতার সঙ্গে। এবং ক্যাম্পের অন্যান্য শ্রমিকের চেহারা এখানে না দেখানোই সবচেয়ে ভালো হবে। এগুলোর বাইরেও শ্রমিকদের কোনো ক্যাম্পে যাওয়ার আগে সতর্ক থাকুন। আপনার বিরুদ্ধে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ উঠতে পারে এবং সে অনুযায়ী শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে।
ক্যাম্পের বাইরে শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য চিন্তা করুন সেসব জায়গার কথা, যে জায়গাগুলোতে শ্রমিকেরা তাঁদের ছুটির দিন কাটাতে যান। যেমন দেইরার বানিয়াস স্কয়ার, দ্য গোল্ড সুক; আল সাবখার মতো বাস স্টেশন এবং দুবাই ক্রিকের মতো পর্যটনকেন্দ্র।
আমিরাতে পতিতালয়ের চর্চা খুব সাধারণ, যা পাচারের শিকার হওয়া নারীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার বড় জায়গা। ভারতীয়, ফিলিপিনো, বাংলাদেশি, ইরানি বা ইথিওপীয়—এমন প্রায় সব বড় কমিউনিটিতেই একটি করে পতিতালয় আছে। এসব জায়গায় কাজ করা অধিকাংশ নারীকেই আনা হয়েছে পাচারের মাধ্যমে। তবে আপনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অন্যদের জানতে না দিয়ে এসব নারীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে আপনাকে অনেক সৃজনশীল হতে হবে। (পাচার করে এনে যৌনকর্মে নিযুক্ত করা হয়েছে, এবং অন্যান্য যৌনকর্মী; এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্যটিও মাথায় রাখুন।)
পতিতালয়ের সঙ্গেই খুব অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পর্কিত হলো নাইটক্লাব। দুবাইয়ের বানিয়াস স্কয়ার ও খালেদ বিন আল ওয়ালিদ স্ট্রিটে সবচেয়ে বেশি নাইটক্লাব আছে। যেখানে নারীদের পাচার করে এনে যৌনকর্মে নিযুক্ত করা হয়েছে। ইওয়া শেল্টার নামের একটি সংগঠন এসব পাচার হওয়ার নারীদের নিয়ে কাজ করে। তারা সাধারণত কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে না। কিন্তু সাধারণ তথ্য পেতে ও পরিস্থিতি বুঝতে তারা খুবই উপকারী হতে পারে।