

Image: Screenshot
ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণে সাহায্য করবে যেসব রিসোর্স
গাইড রিসোর্স
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অনুসন্ধান
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
শরণার্থী ইস্যু নিয়ে অনুসন্ধানের ৯ উত্তম চর্চা
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
রাশিয়া নিয়ে অনুসন্ধান: জিআইজেএনের তাৎক্ষণিক টুলকিট
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
যুদ্ধাপরাধ অনুসন্ধানের ১৫টি পরামর্শ
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণে সাহায্য করবে যেসব রিসোর্স
অধ্যায় গাইড রিসোর্স
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নেপথ্যে থাকা মিথ্যা প্রচারণার গভীরে

ছবি: স্ক্রিনশট
সম্পাদকের নোট: এই প্রবন্ধ প্রথম প্রকাশিত হয় নিম্যান ল্যাবে এবং ক্রিয়েটিভ কমনস লাইসেন্সের অধীনে এখানে পুনঃপ্রকাশ করা হয়েছে। সংঘাত নিয়ে সংবাদের বিশ্বস্ত সাইটগুলোর লিঙ্ক ও রিসোর্সের আরেকটি তালিকা পাওয়া যায় জার্নালিজমডটকোডটইউকে ওয়েবসাইটে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে প্রকাশিত খবর অনুসরণ করা বেশ কঠিন, বিশেষ করে, এই পরিস্থিতি নিয়ে যদি আপনার যথেষ্ট জানাশোনা না থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে আপনি হয়ত প্রথমেই টুইটারে নজর দিতে চাইবেন, কিন্তু এটি যে সবসময় কার্যকর হবে, এমন নয়। প্রথাগত টাইমলাইনে, ক্রমধারা অনুসারে খবর পাওয়া যায় না। এর অর্থ হচ্ছে, খবরগুলো বিশৃঙ্খল (তবে আপনি চাইলে, এভাবে ঠিক করে নিতে পারেন)। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী রিপোর্টারদের চেয়ে, মতামত বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সম্প্রতি, ইউক্রেনের ভিডিও পোস্ট করা অনেক টুইটার ইউজারের অ্যাকাউন্ট স্থগিত বা বন্ধ হয়ে গেছে, যাদের মধ্যে @conflict এর মতো বড় অ্যাকাউন্টও আছে। অবশ্য টুইটার বলেছে, ব্যাপারটি নিছক ভুলের কারণে।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভ্যানিয়ার লেই ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও যোগাযোগের সহযোগী অধ্যাপক জেরেমি লিটাও বলেন, এ ধরনের সময়ে, “বিস্তারিত জানা ও দিক-নির্দেশনা পাওয়ার প্লাটফর্ম হিসেবে টুইটারের সক্ষমতায় মানুষ আস্থা হারিয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে সেখানে সংবাদ কভারেজ নেই, কিন্তু সেই খবর খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। আমি সেখানে নানা কাজে পারদর্শী, হঠাৎ করেই বিশেষজ্ঞ বনে যাওয়া অনেকের গরম গরম মতামত, আর ইউক্রেনের পতাকা দিয়ে পোস্ট করতে থাকা লোকজন পেয়েছি। এটা অনেক, এবং আমি মনে করি, এই মুহুর্তে সেই বিপুল তথ্যের মধ্য থেকে বাছাই করে নিতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে।”
সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া – এবং সম্প্রতি ফের চালু হওয়া – কিয়েভ পোস্টের প্রাক্তন সাংবাদিকেরা ইংরেজি ভাষার ইউক্রেনিয় সংবাদ-সাইট কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট চালু করেন। মাত্র তিন মাস বয়সী এই সাইট বজ্রপাতের ইমোজি দিয়ে অন্যান্য টুইট থেকে ব্রেকিং নিউজ টুইট দ্রুত আলাদা করতে সহায়তা করছে পাঠকদের:
সেখানকার চলমান ঘটনাবলী সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে সহায়তার জন্য আমরা বেশ কিছু রিসোর্স এক জায়গায় জড়ো করেছি। তালিকাটি এখানে নিয়মিত হালনাগাদ হচ্ছে।
টুইটার লিস্ট
কয়েকজন মিলে টুইটারে ফলো করার মতো ব্যক্তিদের একটি তালিকা সংকলন করেছেন। তারপরও সতর্ক হোন: “নিজ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণকারীদের অন্ধের মতো বিশ্বাস করবেন না। অনেকে যাচাই বাছাই ছাড়াই চোখ বন্ধ করে ছুটছেন,” ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের মানব-কেন্দ্রিক নকশা ও প্রকৌশলের সহযোগী অধ্যাপক কেইট স্টারবার্ড, তাঁর টু্ইটে এমনটাই বলেছেন। “ভুল হয়। তাদের ভুলকে নিজের ভুল হতে দেবেন না এবং আপনার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেটি ছড়িয়েও পড়তে দেবেন না।” (উদাহরণ, উদাহরণ।)
জেইন লিটভেনেঙ্কো – যাঁর জন্ম ইউক্রেনে এবং যিনি হাভার্ড কেনেডি স্কুলের শোরেনস্টেইন সেন্টার অন মিডিয়া, পলিটিক্স, অ্যান্ড পাবলিক পলিসির টেকনোলজি অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জ প্রোজেক্টের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো – টুইট করেন:
https://twitter.com/JaneLytv/status/1494817169967878145
সিএনএন রিপোর্টার ড্যানিয়েল ডেইল টুইটে বলেন:
টকিং পয়েন্টস মেমোর সম্পাদক ও প্রকাশক জন মার্শাল বলেন:
এনবিসি নিউজের রাজনীতি বিষয়ক রিপোর্টার রেবেকা শাদাব বলেন:
ইংরেজি-ভাষার টেলিগ্রাম
https://twitter.com/JaneLytv/status/1497572711622656006
পে-ওয়াল অপসারণ/ বিনামূল্যে সেবাপ্রদান
ফাইনান্সিয়াল টাইমস, ইউক্রেন বিষয়ক সংবাদের জন্য তাদের পে-ওয়াল সরিয়ে নিয়েছে। (এতে করে, তাদের সাইট থেকে ইউক্রেনের খবর বিনা পয়সায় পড়া যাবে।)
সুইডেনের স্ভেনস্কা ডাগব্লাডেট, তাদের সরাসরি সম্প্রচারের ওপর থেকে পেওয়াল অপসারণ করেছে।
কিয়েভ পোস্ট ও কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্টে পে-ওয়াল নেই। (কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্যাট্রিয়ন ও গোফান্ডমি এর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করে।)
নিউজহুইপ কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে তাদের বিশেষ সেবা, স্পাইক – বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। (এই সেবা ব্যবহারের জন্য থ্রেডটির নিচের দিকে যোগাযোগের তথ্য খুঁজুন।)
তথ্য যাচাই ও মিথ্যা-খণ্ডন
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার আর্ন্তজাতিক জোট বেলিংক্যাট, ইউক্রেনের সম্মুখসারির কর্মীদের কাছ থেকে সন্দেহজনক ও বেফাঁস দাবির তথ্য যাচাইয়ের জন্য একটি স্প্রেডশিট তৈরি করছে। তারা বলেছে: “সাম্প্রতিককালে রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম অথবা ইউক্রেনে আগ্রাসনের পক্ষের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী চ্যানেলে সম্প্রচারিত অনেক নাটকীয় দাবিতে খুব একটা সত্যতার দেখা মেলে না। আবার, কিছু ভিডিওতে মিথ্যা প্রচারণার অসৎ চেষ্টাও দেখা যায়।”
যুদ্ধ বিষয়ক ভুয়া ইনস্টাগ্রাম পেজ এবং মিথ্যা যুদ্ধ-সাংবাদিকতা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন, যেমনটা উঠে এসেছে টেইলর লরেঞ্জের রিপোর্টে:
কেন্টাকির ২১ বছর বয়সী যুবক বলে দাবি করা হেইডেন বলেন, তিনি @Rap নামের হিপহপ ইনস্টাগ্রাম পেইজ থেকে যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারেন, যাকে তিনি একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তিনি আগে থেকেই @liveinafghanistan নামের একটি যুদ্ধ বিষয়ক পেইজ পরিচালনা করতেন। অতি সম্প্রতি তিনি পেইজটির নাম পরিবর্তন করে রাখেন @newstruth এবং সেখানে দোকান লুট ও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ক্লিপের ভাইরাল, অস্পষ্টভাবে রক্ষণশীল ভিডিও পোস্ট শুরু করেন।
কিন্তু বুধবার রাত থেকে, আবারও যুদ্ধ শুরু, আর পেইজটির নামও বদলে হয়ে যায় @livefromukraine।
হেইডেন বলেন, “আমি সত্যিই জানি না এই রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে আসলে কী হচ্ছিল।” তিনি আরও বলেন, “যা হচ্ছিল, আমি তাই নথিবদ্ধ করার চেষ্টা করছিলাম।” তার যাচাই প্রক্রিয়ায় মধ্যে রয়েছে ভিডিওর মন্তব্য অংশ ঘাঁটা এবং ও অন্য কেউ ভিডিওটিকে মিথ্যা দাবি করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা। তিনি তার শেয়ার করা ভিডিও সম্পর্কে বলেন, “আমি আসলে নিজে সেগুলো যাচাই করতে পারি না।”
ক্রেমলিনপন্থী গণমাধ্যমের ভাষ্য ছড়াতে রাশিয়া যেসব কৌশল ব্যবহার করছে, সেদিকে নজর দিয়েছেন বিবিসির মিথ্যা প্রচারণা মনিটরিং ইউনিটের কেইলিন ডেভলিন ও ওলগা রবিনসন। যেমন:
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, পশ্চিমা মিডিয়া সাইটে পাঠকদের করা কিছু মন্তব্যের ভিত্তিতে ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক শিরোনাম করেছে রাশিয়ার কয়েকটি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
জানুয়ারির শেষের দিকে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি লেখায় দাবি করা হয়েছে যে ডেইলি এক্সপ্রেসের “ব্রিটিশ” পাঠকরা এই মতকে সমর্থন করেছেন যে ইউক্রেনকে রক্ষা করা উচিত নয়; কারণ, এই অঞ্চলে ন্যাটোর চেয়ে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি শক্তিশালী ছিল।
অন্য একটি জায়গায় বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে পাঠকেরা হাসাহাসি করছেন।
এমনও উদ্বেগ রয়েছে যে ক্রেমলিনপন্থী ট্রলেরা, ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে, রাশিয়ার স্বার্থকে এগিয়ে নিতে ব্রিটিশ ও অন্যান্য বিদেশি গণমাধ্যম সাইটকে লক্ষ্যবস্তু লক্ষ্যবস্তু করেছে।
গত বছর কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির ক্রাইম ও সিকিউরিটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রেমলিনপন্থী ট্রলেরা আদতে ডেইলি এক্সপ্রেসসহ ১৬টি দেশের ৩২টি নামকরা গণমাধ্যম সাইটের মন্তব্য অংশ টার্গেট করেছে।
গবেষকদের মতে, তাদের পশ্চিমাবিরোধী ও রুশপন্থী মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে রুশ-ভাষী গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল।
ফরেন পলিসি জানিয়েছে, “আগ্রাসন নিয়ে মিথ্যা প্রচারণার মূল ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে” বার্তা আদান প্রদানের নিরাপদ প্লাটফর্ম টেলিগ্রাম:
টেলিগ্রাম পশ্চিমের জন্য মোটামুটি প্রান্তিক একটি সামাজিক মাধ্যম হতে পারে, তবে – টুইটার, ফেসবুক এবং ইউটিউবের বিপরীতে – এটি রাশিয়ায় কোনও বাধা ছাড়াই রাষ্ট্র-সমর্থিত প্রচার প্রচারণা চালাতে পারে, আর সেখানে এটি জনপ্রিয়ও বটে। যেমন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আরটি-র এই প্লাটফর্মে দুই লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে।
টেলিগ্রাম থেকে ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা প্রচারণার পরিমাণ এত বেশি যে বৃহস্পতিবারে ইউক্রেন সরকারের মিথ্যা প্রচারণা বিরোধী শাখা এ নিয়ে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে। তাতে, এই চ্যানেলগুলোর কাজকে “তথ্য সন্ত্রাস” বলা হয়েছে। সরকারের চিহ্নিত বিপদজনক গণমাধ্যমের তালিকায় কয়েকটি ইংরেজি-ভাষী চ্যানেলেরও নাম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কয়েকটির অনুসারী সহস্রাধিক। এরপরও বিবৃতিটি কিয়েভের সেই ভয়কে তুলে ধরে যে টেলিগ্রাম রাশিয়াপন্থী প্রচারণার একটি একনিষ্ঠ পাইপলাইন হয়ে উঠেছে।
https://twitter.com/JaneLytv/status/1496862329807458312
সরাসরি সম্প্রচার
কিয়েভের ময়দান স্কয়ারে রয়টার্সের সরাসরি সম্প্রচার দেখা প্রসঙ্গে লিটভেনেঙ্কো দ্য আটলান্টিকে লিখেছেন:
ময়দানের সম্প্রচার সব কোলাহল থেকে আলাদা। এখানে কিছুই ভুয়া নয়; কোনো অ্যালগরিদম নেই; এবং একবার লাইভ চ্যাট লুকিয়ে ফেললে, লেখার মতো কোনও কথোপকথনও থাকে না। এটি এমন পর্দা নয় যেখানে টিভির পন্ডিতেরা রাশিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। এই লাইভস্ট্রিম আমাকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করে না; এটা শুধু আমাকে তা-ই দেখাচ্ছে, যা ঘটছে।
মানচিত্র
ডেটার্যাপারের লিজা শার্লোট মুথের কাছে গ্রাফিক্স রিপোর্টারদের একগুচ্ছ মানচিত্র আছে।
অনুবাদ
রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ে নিজস্ব কিছু স্টোরি স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করছে, নিউ ইয়র্ক টাইমস।
আরও পড়ুন
এক্সপার্ট টিপস ফর ডিগিং আউট দ্য রুটস অব ডিসইনফরমেশন
হাও টু ইউজ ডেটা জার্নালিজম টু কভার ওয়ার অ্যান্ড কনফ্লিক্ট
স্মার্টফোনে ছবি যাচাইয়ের চারটি সহজ পদ্ধতি
লরা হ্যাজার্ড ওয়েন, নিম্যান ল্যাবে সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটির উপ-সম্পাদক ছিলেন। তারও আগে তিনি প্রযুক্তি ওয়েবসাইট গিগাওমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন এবং সাত বছর ধরে প্রকাশনা শিল্প নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।