প্রবেশগম্যতা সেটিংস

GIJN Toolbox
GIJN Toolbox

লেখাপত্র

বিষয়

জিআইজেএন টুলবক্স: ক্রাউডট্যাঙ্গল, ইকোসেক ও সোশ্যাল মিডিয়া সার্চ

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

ছবি: পেক্সেলস

জিআইজেএন টুলবক্সে স্বাগতম। এখানে আমরা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য সাম্প্রতিক সব টিপস ও টুলের খবর হাজির করি। এবারের পর্বে আমরা এমন কিছু টুলের কথা বলব, যেসব দিয়ে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট (ইউজিসি), অর্থ্যাৎ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের পোস্ট করা ছবি, ভিডিও বা লেখা খোঁজা যায়। আমরা এখানে দেখাবো: কিভাবে ক্রাউডট্যাঙ্গলইকোসেক ব্যবহার করে টুইটার, ফেসবুক ও রেডিটের বিভিন্ন কন্টেন্ট খুঁজতে হয়, এবং কয়েকটি টুলের সাহায্যে ফেসবুক থেকে বিভিন্ন কন্টেন্ট ছেঁকে আনার উপায়। ২০১৯ সালের জুনে, গ্রাফ সার্চ ফাংশন অকার্যকর করে দিয়েছে ফেসবুক। এর ফলে বিভিন্ন তথ্য খুঁজে বের করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য। 

ক্রাউডট্যাঙ্গল: পুরনো ইউজিসি রেকর্ড

প্রথমেই জানা যাক, সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে জনপ্রিয় কন্টেন্ট খুঁজে বের করার জন্য সাংবাদিকরা কোন কোন টুল ব্যবহার করতে পারেন। ধরা যাক, ফেসবুকে ভুয়া তথ্যের বিস্তার নিয়ে গবেষণার জন্য আপনি অতীতে ব্যাপকভাবে ছড়ানো কোনো পোস্ট খুঁজছেন। এ কাজের জন্য ব্যবহার করতে পারেন বাজসুমো বা ফেসবুকের মালিকানাধীন ক্রাউডট্যাঙ্গল। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে কোন পোস্টগুলো সবচে বেশি শেয়ার ও জনপ্রিয় হয়েছে, তা জানার সুযোগ করে দেবে এই দু’টি টুল। কোন পোস্ট কত শেয়ার হলো,  তারও বিস্তারিত ডেটা জানাবে। এভাবে আপনি চিহ্নিত করতে পারবেন পোস্টগুলো কোন ফেসবুক পেইজ বা টুইটার অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত এবং এমন আরো অনেক কিছু।  

শুরুতে নজর দেওয়া যাক ক্রাউডট্যাঙ্গলের দিকে। এটি “ফেসবুকের একটি পাবলিক ইনসাইট টুল, যার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বিভিন্ন কন্টেন্ট সহজে অনুসরণ, বিশ্লেষণ ও রিপোর্ট করা যায়।” ক্রাউডট্যাঙ্গলের গুগল ক্রোম এক্সটেনশনটি সবার জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু এর ফাংশন খুব সীমিত। ক্রাউডট্যাঙ্গল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যা ব্যবহারকারীদের একটি ডেটাবেজের মধ্যে সার্চ করার সুযোগ দেয়। এই ডেটাবেজে থাকে ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ, গ্রুপ ও ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট। আপনার যদি এরই মধ্যে ক্রাউডট্যাঙ্গল ব্যবহারের অনুমতি না থাকে, তাহলে সেটি নতুন করে পাওয়া বেশ কঠিনই হবে। কারণ তাদের ওয়েবসাইটে লেখা আছে: এই মুহূর্তে “নতুন পার্টনারদের এটি ব্যবহারের সুযোগ মিলবে সীমিত আকারে।” যাদের অ্যাকসেস আছে, অথবা যারা জানতে চান টুলটি কিভাবে কাজ করে, তাদের জন্য এই প্ল্যাটফর্মের মৌলিক বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হবে এই লেখায়। চলুন জেনে নিই, কিভাবে ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্টের জন্য সার্চ করতে হয়। 

প্রথমেই বলে রাখা দরকার যে, ক্লাউডট্যাঙ্গল প্ল্যাটফর্মে ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামের সব পোস্ট বা পেইজ থাকে না। কমপক্ষে এক লাখ লাইক বা সদস্য আছে, এমন পেইজ বা গ্রুপগুলো সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গ্রুপগুলোর ক্ষেত্রে দুই হাজার সদস্য থাকলেই সেটি এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়। এমনটিই জানিয়েছেন ক্রাউডট্যাঙ্গলের গবেষক নাওমি শিফম্যান। ইন্সটাগ্রামের বেলায়, ৭৫ হাজার বা তার বেশি ফলোয়ার আছে, এমন অ্যাকাউন্টগুলো প্লাটফর্মটিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়। এছাড়াও সব ভেরিফাইড ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলগুলোও জায়গা করে নিয়েছে ক্রাউডট্যাঙ্গলে। তবে, এদের বাইরে যে কোনো ফেসবুক পেইজ, গ্রুপ বা ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট আপনি নিজে থেকে যোগ করে নিতে পারবেন। সেখানে কত লাইক, ফলোয়ার বা সদস্য আছে, তা কোনো ব্যাপার হবে না। 

ক্রাউডট্যাঙ্গল দিয়ে রেডিট ও টুইটারেও সার্চ করা যায়। কিন্তু এগুলোতে সার্চ করার জন্য ক্রাউডট্যাঙ্গলের বদলে আমি ইকোসেক ব্যবহার করতে পছন্দ করি। বা আরো ভালো হয় যদি টুইন্ট বা আরস্টুডিওর আরটুইট প্যাকেজের মতো ওপেন সোর্স কোডিং টুল ব্যবহার করা যায়। কেন? কারণ তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে একদম মূল ডেটা পাবেন, যা কোনো বাণিজ্যিক থার্ড-পার্টির কাছ থেকে ফিল্টার হয়ে আসেনি। (টুইটারের ডেটা সংগ্রহের জন্য কিভাবে আরটুইট ব্যবহার করা যায়, তা একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে দেখিয়েছেন মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ডব্লিউ. কার্নি।)

এতোক্ষণে আমরা জেনে ফেলেছি: ক্রাউডট্যাঙ্গল কী। এবার দেখা যাক এটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়। 

ধরা যাক, আমি জানতে চাই গত ১২ মাসে সিরিয়া নিয়ে ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে কী ধরনের পোস্ট করা হয়েছে। আমরা এটি করতে পারি এভাবে:

ছবি: ক্রাউডট্যাঙ্গল

কিন্তু ধরা যাক, আমি জানতে চাই একটি নির্দিষ্ট পোস্ট, ফেসবুকে কে সবার আগে পোস্ট করেছিল। আমি জানতে চাই পোস্টটি আসলে কে দিয়েছিলেন এবং তারপর কারা সেটি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। আমরা তার জন্য সেই পোস্টের ঐতিহাসিক ডেটার দিকে নজর দিতে পারি। 

কোনো পোস্টের এমন ঐতিহাসিক ডেটা আপনি .সিএসভি ফাইল আকারে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। সেটি করার জন্য ওপরে, ডানদিকে ড্রপ-ডাউন বাটনটিতে ক্লিক করার পর “ডাউনলোড সিএসভি” বাছাই করতে হবে। 

ছবি: ক্রাউডট্যাঙ্গল

এবার এই তথ্য কাজে লাগিয়ে আপনি বুঝতে পারবেন কোথায় থেকে ক্রাউডট্যাঙ্গল এই নির্দিষ্ট কন্টেন্টটি প্রথম তার ডেটাবেজে যোগ করেছিল। 

এটি মাথায় রাখতে হবে যে, ক্রাউডট্যাঙ্গল যখন কোনো কন্টেন্ট প্রথমবারের মতো তার ডেটাবেজে যোগ করে, সেটিকেই দেখানো হয় ঐতিহাসিক ডেটা হিসেবে। ফেসবুকে পোস্টটি কখন প্রথম এসেছিল, তার ওপর ভিত্তি করে নয়। 

কোনো নির্দিষ্ট কন্টেন্টের উৎস কোথায়, তা জানার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হতে পারে। (উৎস বলতে বোঝানো হচ্ছে: অনলাইনে কন্টেন্টটি প্রথম কোথায় এসেছিল।) একটি সতর্কবার্তা: ক্রাউডট্যাঙ্গল আপনাকে নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে না যে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের কোনো নির্দিষ্ট কন্টেন্ট কোথায় প্রথম দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কন্টেন্টটির উৎস খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে এটি আপনাকে পথ দেখাতে পারে। এবং কিভাবে এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলো, সে সংক্রান্ত ভালো তথ্যও আপনি পাবেন। 

সঠিক উৎসটি খুঁজে বের করার জন্য আপনার আরো কিছু রিপোর্টিং করতে হবে। (এ নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য আপনি আরো একটি ফ্রি ও ওপেন সোর্স টুল ব্যবহার করতে পারেন। সেটির কথা নিচে আলোচনা করা হয়েছে। এবং সাহায্য নিতে পারেন হোক্সি নামের একটি টুলের। কিভাবে এটি ব্যবহার করতে হয়, সে ব্যাপারে জিআইজেএন-এর একটি লেখায় জানিয়েছেন কানাডার সাংবাদিক ও ভুয়া তথ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, ক্রেইগ সিলভারম্যান।)

ফেসবুকে চাপা পড়ে যাওয়া ইউজিসির খোঁজ

সাংবাদিকরা যে শুধু ভাইরাল বা ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া জনপ্রিয় কন্টেন্টই খোঁজেন, তা নয়। কিছু অনুসন্ধানের জন্য, তাঁদেরকে একেবারে উল্টো ধাঁচের জিনিসও খুঁজতে হয়। যেমন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পোস্টের নিচে চাপা পড়া বা ভুলে যাওয়া কন্টেন্ট, যা হয়তো পড়ে আছে কোনো অনুসন্ধানে উন্মোচিত হওয়ার অপেক্ষায়।

ধরা যাক, একজন সাংবাদিক যাচাই করতে চান, অন্য দেশে হওয়া সংঘাতে কোনো বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে কিনা। তাহলে তাঁকে এমন কিছু ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট খুঁজতে হবে, যা ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়নি। এসব ক্ষেত্রে, ক্রাউডট্যাঙ্গল খুব বেশি কাজে আসবে না। কারণ এখানে আমরা জনপ্রিয় বা অনেক শেয়ার হওয়া কন্টেন্ট খুঁজছি না। অতীতে, নির্দিষ্ট ফেসবুক কন্টেন্টের জন্য গ্রাফ সার্চ-ভিত্তিক কিছু টুল ব্যবহার করা যেত। যেমন হু পোস্টেড হোয়াট?, গ্রাফ ডট টিপস, বা ইনটেলিজেন্স এক্স-এর ফেসবুক গ্রাফ সার্চ। এই টুলগুলো ফেসবুকের ইউআরএল কাঠামো ব্যবহার করে নির্দিষ্টভাবে সার্চ করতে পারত। 

কিন্তু অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের পিত্তি জ্বালিয়ে, ২০১৯ সালে এই গ্রাফ সার্চ ফাংশন বন্ধ করে দেয় ফেসবুক। ফলে আগের মতো করে অনেক সার্চই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারপরও আমরা এই খোঁজ চালানোর আরো কিছু পন্থা আবিস্কার করেছি, যার শুরুটা হতে পারে নিচে বর্ণনা করা টুলগুলো দিয়ে। তারপর ব্যবহার করা যায়, ফেসবুকের নিজস্ব সার্চ প্ল্যাটফর্ম ও গুগল ডর্কিং। এগুলো কিভাবে কাজ করে, তাও নিচে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে মাথায় রাখুন, ফেসবুকের সার্চ প্ল্যাটফর্ম খুব একটা নিখুঁত না। আপনার সার্চের সঙ্গে মেলে, এমন সব ফলাফলই সে দেখাবে না। এ কারণে কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা ব্যক্তি নিয়ে অনুসন্ধানের সময় সার্চ করে তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। 

ফেসবুকের পুরোনো ইউআরএল কাঠামোতে, আপনি শুধু গ্রাফ সার্চ ব্যবহার করেই নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে খোঁজাখুঁজি চালাতে পারতেন। কিন্তু এই সুবিধাটি এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। এখন নির্দিষ্ট সেই বিষয়টি খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনাকে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে। এটাও বলে রাখা দরকার যে, ফেসবুকের অ্যালগোরিদম এমন ফলাফলই প্রাধান্য দেবে, যেগুলো আপনি খুঁজছেন বলে, তার মনে হবে। তাই অনুসন্ধানের জন্য আরাধ্য কন্টেন্টটি খুঁজে পেতে, আপনাকে ধৈর্য্য ধরে স্ক্রল করে যেতে হবে এবং ভিন্ন ভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করতে হবে।

হু পোস্টেড হোয়াট? একটি ফ্রি টুল, যা দিয়ে একটি ফেসবুক আইডি নম্বর খুঁজে পাওয়া যায়। এরপর গ্রাফ ডট টিপস-এ সেই নম্বরটি ব্যবহার করে খোঁজ চালাতে পারেন, নির্দিষ্ট সেই ইউজারের অন্যান্য পোস্ট ও ছবির জন্য। হু পোস্টেড হোয়াট দিয়ে আপনি নির্দিষ্ট বছর, মাস বা দিন ধরেও সার্চ করতে পারবেন পোস্টের জন্য। যেমন, ধরুন, আমি ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল, সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের শারমিন শহরে একটি বিমান হামলা নিয়ে তথ্য খোঁজার চেষ্টা করছি। সেজন্য আমি শহরটির আরবি নাম দিয়ে হু পোস্টেড হোয়াট?-এ সার্চ করছি সেই নির্দিষ্ট দিন ধরে। 

ফেসবুক থেকে এরকম ফলাফল আসবে। এখান থেকে আমি আমার অনুসন্ধানের জন্য প্রাসঙ্গিক (লাল বৃত্ত করা), এমন কিছু পোস্ট খুঁজে পেয়েছি। তবে সেগুলো আরো যাচাই-বাছাই প্রয়োজন: 

 গ্রাফ সার্চের মাধ্যমে খোঁজাখুঁজির সুবিধা কমে গেলেও, কাঙ্ক্ষিত ইউজিসির জন্য আপনি বেশ কয়েকটি উন্মুক্ত টুল ব্যবহার করতে পারেন। তাদের কয়েকটির কথা উপরে বলা হয়েছে। এর বাইরে ব্যবহার করতে পারেন লোনার্ড বোদোর কাস্টম সোশ্যাল মিডিয়া সার্চ ইঞ্জিন। অথবা অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করতে পারেন ইকোসেক, এক্সওয়ান সোশ্যাল ডিসকভারিস্যামডেস্ক। এগুলো অবশ্য বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে।

আমাদের আরেকটি পরামর্শ হবে: গুগল অ্যাডভান্সড সার্চ ব্যবহার করা। কখনো কখনো এটিকে গুগল ডর্কিংও বলা হয়। জিআইজেএন-এর সাইটে এবং অন্য আরো অনেক জায়গায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ফেসবুকের কোনো কন্টেন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য সেখানে সার্চ করার চেয়ে, গুগলের মাধ্যমে সার্চ করাটা বেশি কার্যকরী হয়। 

২০২০ সালের আগস্টে উইন্সকনসিনের কেনোসায় হওয়া বিক্ষোভের পোস্ট খুঁজতে আমি গুগলে সার্চ করেছিলাম এভাবে: 

site:facebook.com protest AND kenosha -news

site:facebook.com- এই অপারেটরটি ব্যবহারের ফলে সার্চটি শুধু ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। protest AND kenosha-এই দুই কিওয়ার্ড ব্যবহারের উদ্দেশ্য হলো: সার্চ ফলাফলে যেন এই দুই শব্দই থাকে। এবং -news-এই অপারেটরটি ব্যবহারের ফলে এ সংক্রান্ত সংবাদগুলো বাদ দেওয়া যায়। আমি সংবাদমাধ্যম থেকে আসা সার্চ ফলাফলগুলো এড়াতে চেয়েছিলাম। শুধু জানতে চেয়েছিলাম: সেখানকার সাধারণ মানুষ এ নিয়ে কী ধরনের পোস্ট দিয়েছিলেন। তারপরও আমার সার্চ ফলাফলে সংবাদমাধ্যমের কিছু জিনিস চলে এসেছে, কিন্তু আমি অনেক পোস্টই এটার মাধ্যমে ফিল্টার করতে পেরেছি। 

খেয়াল করুন, আমি সার্চের ক্ষেত্রে, দিনক্ষণও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম। আমি শুধু এমন কন্টেন্ট দেখতে চেয়েছিলাম যেগুলো আগস্ট মাসে পোস্ট করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে শুরু করে সেই মাসের শেষ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আমি সার্চ করেছি। এটি করার জন্য আপনাকে “টুলস” ক্লিক করে, “এনি টাইম” ড্রপডাউন মেন্যু বাছাই করতে হবে। এরপর ক্লিক করতে হবে “কাস্টম রেঞ্জ” অপশনে। এবং নির্ধারণ করে দিতে হবে কোন সময়ের মধ্যে আপনি সার্চ করতে চান। 

ইকোসেক: ইউজিসি খোঁজার শক্তিশালী প্লাটফর্ম 

ইকোসেক একটি পেইড টুল, যার মাধ্যমে আপনি টুইটার, ইউটিউব, রেডিট, মিডিয়ামসহ আরো বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে তথ্য খুঁজতে পারবেন। যেমন গ্যাব, ডিসকর্ড, ৪চান, রাশিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ভিকে (VKontakte) এবংওকে (Odnoklassniki)। কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে জিওট্যাগ করা পোস্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য এরিয়া অব ইন্টারেস্ট (এওআই) বাছাই করেও আপনি সার্চ করতে পারবেন। ম্যাপের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গা আপনি নিজেও এই এওআই এঁকে নিতে পারেন মাউসের সাহায্যে, বা সার্চবক্সে জায়গার নাম লেখার মাধ্যমে।

ধরুন, ওয়াশিংটন ডিসিতে গত ১ জুনের ঘটনা নিয়ে কী কী ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে, তা আমি খুঁজে পেতে চাই। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ছবি তোলার জায়গা করে দেওয়ার জন্য টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে সরানো হয়েছিল সেন্ট জন’স চার্চ ও লাফায়েট স্কয়ারের মাঝখানে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের। 

ভিডিওগুলো খোঁজার জন্য আমি ওই এলাকাজুড়ে একটি এওআই বাছাই করেছি। তারপর যোগ করেছি “ট্রাম্প” কিওয়ার্ড এবং নির্দিষ্ট সময় ধরে সার্চ করার অপশন। কারণ আমি শুধু ১ জুন বা তার পরের ভিডিওগুলিই পেতে চাই। এই সার্চের পর ইকোসেক খুঁজে পেয়েছে এগুলি: 

ছবি: ইকোসেক

কিন্তু এতেও সার্চ ফলাফল এসেছে অনেক বেশি। এবার আমি শুধু লাফায়েট স্কয়ারটুকুই চিহ্নিত করে দিয়েছি। তাতে সেই এলাকায় অন্তত ১০টি ভিন্ন ইউটিউব ভিডিও পাওয়া গেছে। 

ছবি: ইকোসেক

ইকোসেক যে ভিডিওগুলো খুঁজে এনেছিল, তার একটি নমুনা এটি: 

ছবি: ইকোসেক

রিপোর্টাররা এই পদ্ধতিতে টুলটি ব্যবহার করে ছবি-ভিডিওর মতো কন্টেন্ট খুঁজে বের করতে পারেন। এরপর সেগুলো পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে নিতে পারেন স্থান ও সময়ের ভিত্তিতে। এভাবে তারা যাচাই করে নিতে পারবেন – ভিডিওটি আসলেও সেই স্থান ও সময়েই ধারণ করা হয়েছিল কিনা। অনলাইনে পাওয়া ছবি বা ভিডিও যাচাই করার প্রথম ধাপ এটি। ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট যাচাই করার উপায় জানতে, ফার্স্ট ড্রাফটের মৌলিকঅ্যাডভান্সড ট্রেনিং কোর্সে অংশ নিতে পারেন। ফার্স্ট ড্রাফট একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যারা ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় কাজ করে।  

কে কী ধরনের কাজ করতে চান, তার ওপর ভিত্তি করে ইকোসেক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মূল্য নির্ধারিত হয়। জিআইজেএন-এর সদস্য বেলিংক্যাটসহ আরো কিছু সাংবাদিকতার সংগঠন অতীতে কাজ করেছে ইকোসেকের সঙ্গে। সাংবাদিকরা ইকোসেকের বিপণন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এখানে। এছাড়াও, সাবস্ক্রাইবাররা ইকোসেকের সব প্রয়োজনীয় ট্রেনিং কোর্সগুলোতে অংশ নিতে পারবেন বিনামূল্যে।

টুলবক্সের এই পর্ব এখানেই শেষ করছি। আগামী পর্বে থাকবে: ভেরিফিকেশনের জন্য নাসার রিমোট সেন্সিং ডেটা ব্যবহার, সোশ্যাল মিডিয়ায় একই রকম ইউজারনেম খুঁজে পাওয়ার কৌশল, ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার, এবং গুগল নিউজ ইনিশিয়েটিভের নতুন টুল, পিনপয়েন্ট।

প্রয়োজনীয় লিংক

আরো পড়ুন

আমার প্রিয় অনুসন্ধানী টুল: ম্যালাকি ব্রাউন

ফ্যাক্ট-চেকিং অ্যান্ড ভেরিফিকেশন

অনলাইন ইনভেস্টিগেটিভ টেকনিকস — জিআইজেএন ওয়েবিনার অ্যান্ড ওয়ার্কশপ উইথ হেঙ্ক ভন এস


ব্রায়ান পার্লম্যান জিআইজেএন-এর সহযোগী সম্পাদক। ডিজিটাল ফরেনসিক, ডেটা সায়েন্স ও ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের কৌশল ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গবেষণায় তিনি বিশেষ পারদর্শী। ইউসি বার্কলি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব জার্নালিজম থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী নিয়েছেন। ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন বার্কলি ল’র হিউম্যান রাইটস সেন্টারে। 

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

ডেটা সাংবাদিকতা

সাংবাদিক হিসেবে নিজেই নিজের ডেটাসেট তৈরি করবেন যেভাবে

কোনো বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যদি কাঙ্ক্ষিত ডেটা না পান, বা তেমন কোনো ডেটা যদি আদৌ না থাকে— তাহলে কী করবেন? পড়ুন, কীভাবে এসব ক্ষেত্রে তৈরি করে নিতে পারেন নিজস্ব ডেটাসেট।

IDL-Reporteros founder Gustavo Gorriti

সদস্য প্রোফাইল

আইডিএল-রিপোর্টেরস: যে নিউজরুম পেরুর রাজনৈতিক অভিজাতদের চ্যালেঞ্জের সাহস দেখিয়েছে

পেরুর ক্ষমতাবানদের দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য ক্রমাগত নানা ধরনের চাপ ও হুমকির মুখে পড়েছে অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম, আইডিএল-রিপোর্টেরস এবং এর প্রতিষ্ঠাতা গুস্তাভো গোরিতি। পড়ুন, কীভাবে সেগুলো সামলে তারা সাহসিকতার সঙ্গে রিপোর্টিং চালিয়ে যাচ্ছে।

post office boxes, shell companies

পরামর্শ ও টুল

শেল কোম্পানির গোপন মালিকদের যেভাবে খুঁজে বের করবেন

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য শেল কোম্পানি ও সেগুলোর প্রকৃত মালিকদের পরিচয় খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হতে পারে। তবে শক্তিশালী কিছু টুল রয়েছে যার সাহায্যে জটিল এই ক্ষেত্রে নতুন আসা সাংবাদিকেরাও গোপনে অবৈধ সম্পদ লুকোনো ব্যক্তিদের পদচিহ্ন খুঁজে বের করতে পারেন।

টেকসইতা পদ্ধতি

সাংবাদিকতার প্রভাব পরিমাপ — আমরা নতুন যা জানি

সব সংবাদমাধ্যমই চেষ্টা করে তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরির জন্য। কিন্তু এই প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে একেক ধরনের সূচক। পড়ুন, এ নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন কী জানা গেছে।