প্রবেশগম্যতা সেটিংস

ট্র্যাকার
ট্র্যাকার

রিপোর্টার ছয়টি পোশাকের মধ্যে জিপিএস ট্র্যাকার লুকিয়ে রেখেছিলেন। ছবি: জ্যান জারভিনেন, ইলে

লেখাপত্র

বিষয়

ট্র্যাকার দিয়ে অনুসন্ধান করে জানা গেল বাতিল পোশাকের শেষ গন্তব্য

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

বাতিল পোশাক দান

ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বদলে যাচ্ছে এবং গোটা বিশ্বের অনলাইন পোশাক কেনাকাটায় এর প্রভাব রয়েছে। ছবি: তাইস্তো লাপিলা, ইলে

আপনি হয়তো দাতব্য সংস্থা বা ফ্যাশন চেইনের জামাকাপড় সংগ্রহের বাক্স দেখে থাকবেন, যেখানে ব্যবহার করা জিনস বা টি-শার্ট ফেলে আসা যায়। সত্যিই প্রয়োজন নেই—এমন নতুন জামাকাপড় আবার কেনার সময় আপনার হয়তো অপরাধবোধ কম হবে এই ভেবে যে, পুরোনো কাপড়গুলো আপনি ভালো উদ্দেশ্যে দান করেছেন। তাই না? কিন্তু আসলে কী ঘটে এই ব্যবহার করা পুরোনো জামাকাপড়গুলোর ভাগ্যে? এগুলো কোথায় যায়? এগুলো কি বিক্রি করা হয়? কার কাছে? এবং সবচেয়ে ছেঁড়াফাটা জামাগুলোর কী হয়?

বা গল্পটি হয়তো আরও আগেও শুরু হতে পারে, যখন আপনি অনলাইন থেকে কোনো পোশাক অর্ডার করেন। ফিনল্যান্ডে কয়েকটি সাইট আছে, যেখান থেকে পোশাক অর্ডার করা যায় এবং মাপমতো না হলে সেগুলো আবার ফিরিয়েও দেওয়া যায়। অনেক দোকানি আপনাকে বলবেন, বাড়িই আপনার ফিটিং রুম। ফিট না হলে জামা ফিরিয়ে দিতে তাঁরা আপনাকে উৎসাহিতও করবেন। কিন্তু যে পোশাকগুলো আপনি ফিরিয়ে দেন, সেগুলোর কী হয়? এগুলো কি নতুনভাবে প্যাকেট করে আবার বিক্রি করা হয়, নাকি ফেলে দেওয়া হয়?

গত বছর আমরা এই বিষয়গুলোই খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলাম। এবং আমরা একই রকম একটি পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। এখানে, আমরা আলাদা করে দুটি অনুসন্ধানের দিকেই নজর দেব এবং দেখব যে আমরা কী খুঁজে পেয়েছি। কীভাবে আমরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে নেমেছি, এই কাজে আমরা কী ধরনের ট্র্যাকার ব্যবহার করেছি (ট্র্যাকারের মাধ্যমে রিপোর্টাররা কোনো বস্তু সর্বোচ্চ এক বছর সময় পর্যন্ত ট্র্যাক করতে পারেন) এবং এ ধরনের ট্র্যাকার কীভাবে ব্যবহার করবেন—এই সবকিছু এখানে তুলে ধরছি।

বাতিল পোশাক বিদেশে রপ্তানি

লিখেছেন মিনা নুস-গালান

ব্যবহার করা পোশাকের কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা যে আশ্চর্য রকম গোপনীয়তায় পরিপূর্ণ, এটি বুঝতে আমাদের একটুও সময় লাগেনি। এটি নিয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরাও জানেন, ফিনল্যান্ডের মতো দেশগুলোর ক্রেতারা যেসব জামাকাপড় দান করেন, সেগুলো বাইরের দেশে বিক্রি হয়। কিন্তু এই বিশেষজ্ঞরা বা পোশাক সংগ্রহ করা সংগঠনগুলোও জানে না যে সেগুলোর শেষ গন্তব্য কোথায়।

আমরা ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বড় দাতব্য সংগঠন এবং ইউরোপের বড় কিছু পোশাক বাছাই কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে আমাদের ক্যামেরা নিয়ে যেতে দেয়নি। কোনো সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না, ভিডিও ধারণ করা যাবে না—এমন শর্ত দেখে ভাবতে শুরু করি: আমার পুরোনো টি-শার্টকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি ব্যবসায় কেন এত গোপনীয়তা? এই রকম সময়েই আমরা জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের কথা চিন্তা করি।

ইলেকট্রনিক বর্জ্য নিয়ে অনুসন্ধানী একটি প্রকল্পে আমি ট্র্যাকার ব্যবহার করতে দেখেছি, কিন্তু জামাকাপড় নিয়ে নয়। এ জন্য আমাদের সম্ভাব্য সবচেয়ে ছোট ট্র্যাকারের প্রয়োজন ছিল, যেটির ব্যাটারি অনেক দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং বৈশ্বিক কাভারেজ দেবে। কারণ, আমরা তখনো জানতাম না যে, জামাকাপড়গুলো কত লম্বা সময় ধরে ভ্রমণ করবে এবং কোন জায়গায় যাবে।

আমি জানতাম না কীভাবে এগুলো পাওয়া যাবে। ট্র্যাকারের মতো যন্ত্র ব্যবহার করে গবেষণা চালিয়েছেন—এমন অভিজ্ঞ সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর আমি বন্ধ দরজার সামনে এসে পড়ি: আমাকে যে ধরনের ডিভাইস ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়, সেগুলোর সবই ছিল খুব বড় ও ভারী। কাপড়ের মধ্যে লুকানোর উপযোগী নয়।

কিন্তু ২০১৯ সালের শরতে, ফিনিশ ব্রডকাস্টিং কোম্পানি, ইয়েলের কিছু সহকর্মীর একটি প্রকল্পের কথা কানে আসে। তাঁরা প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে অনুসন্ধানে এমন ছোট ট্র্যাকার ব্যবহার করেছিলেন। তাঁরা এগুলো কিনেছেন একটি ছোট ফিনিশ কোম্পানির কাছ থেকে। আমি তাঁদের কল করি এবং সঠিক জিনিসটির সন্ধান পেয়ে যাই। তাঁরা সদ্যই এক সেট নতুন যন্ত্র হাতে পেয়েছিলেন, যেগুলো আমাদের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করে। সেটি ছিল জিপিএস ট্র্যাকার-যুক্ত একটি ছোট্ট যন্ত্র, যেটি স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আরও আছে জিএসএম ট্র্যাকার, যেটি সেলফোনের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে। এগুলোর সঙ্গে একটি সিম কার্ড থাকে। সাধারণত এটি ব্যবহার করা হয় কুকুরের ওপর নজর রাখার জন্য, বা আলঝেইমার রোগে আক্রান্তদের সহায়তার জন্য। স্মার্টফোনের অ্যাপ দিয়ে আপনি ট্র্যাকারের অবস্থান জানতে পারবেন।

ট্র্যাকার

রিপোর্টার ছয়টি পোশাকের মধ্যে জিপিএস ট্র্যাকার লুকিয়ে রেখেছিলেন। ছবি: জ্যান জারভিনেন, ইলে

তো, সেই শীতেই, আমরা ছয়টি ছোট ট্র্যাকার গোপনে ঢুকিয়ে দিই বেশ কয়েকটি পোশাকে: আমার স্বামীর এক জোড়া জিনস, যেগুলোর জিপার ভাঙা ছিল; আমার মেয়ের দাগ লাগা সোয়েটার, সিগারেটের আগুনে বেশ কয়েক জায়গায় পোড়া একটি জ্যাকেট, সেলাই খুলে যাওয়া একটি হুডি এবং আরও দুটি পোশাক। সব কটিই বেশ বাজে অবস্থায় ছিল। এরপর আমরা পোশাকগুলো ফেলে আসি একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের পোশাক সংগ্রহের বক্সে। অভিজাত ফ্যাশন চেইনগুলো এখান থেকে ব্যবহৃত পোশাক সংগ্রহ করে।

যে দাতব্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম, তারা জানিয়েছিল: খারাপ অবস্থায় থাকা কাপড়গুলো তারা রপ্তানি করে না। একটি সংগঠন আমাদের বলেছিল যে, তারা ব্যবহার করা পোশাক আফ্রিকায় রপ্তানি করে না। কিন্তু আমাদের ট্র্যাকারের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে পুরো ভিন্ন গল্প। ছয়টি পোশাকই শেষ পর্যন্ত চলে গেছে ফিনল্যান্ডের বাইরে। জিনসগুলো চলে যায় জার্মানির একটি বিশাল বাছাই কেন্দ্রে। শীতকালীন কোটটির স্থান হয় লাটভিয়ায়; ছেলেদের জ্যাকেটটি চলে যায় হেলসিঙ্কি হার্বারে, যেখানে আমরা সেটির সিগন্যাল হারিয়ে ফেলি। অন্য তিনটি পোশাকের ক্ষেত্রে, পাঁচ মাস পর আমরা ছেঁড়া হুডিটির সিগন্যাল পাই নাইজেরিয়া থেকে, ছয় মাস পর দাগ লাগা সোয়েটারের সিগন্যাল আসে কেনিয়া থেকে। এবং এক বছর পর আসে সবচেয়ে বড় বিস্ময়: ফুটো হওয়া জ্যাকেটটির সিগন্যাল পাওয়া যায় পাকিস্তান থেকে।

ট্র্যাকার পাকিস্তান থেকে সিগন্যাল দিয়েছে

ট্র্যাকিং অ্যাপ্লিকেশনটি দেখিয়েছে কিভাবে এক বছর পরে জ্যাকেটটি পাকিস্তানে পৌঁছেছে। ছবি: স্ক্রিনশট

ট্র্যাকারগুলো যে এক বছর পর্যন্ত জীবিত থাকবে, তা কল্পনাও করিনি। ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হওয়াতেই আমরা বিস্মিত হয়েছিলাম। তবে এই পথে চলতে গিয়ে বেশ কিছু জিনিস শিখেছি। এখানে থাকছে আমাদের কিছু পরামর্শ:

  • দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য, মোবাইল ট্র্যাকার হিসেবে জিপিএস (এটি স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে)-এর পরিবর্তে জিএসএম (এটি মোবাইলের মাধ্যমে ট্র্যাক করা হয়) ব্যবহার করুন। জিপিএসের মাধ্যমে আপনি বস্তুটির পুঙ্খানুপুঙ্খ অবস্থান জানতে পারবেন। কিন্তু আমাদের এই কাজের জন্য, এই পুঙ্খানুপুঙ্খ অবস্থানের চেয়ে ট্র্যাকারটি দীর্ঘ সময় চালু থাকা দরকার ছিল।
  • ট্র্যাকারের সেটিংস এমনভাবে বদলে দিন, যেন এটি সিগন্যাল বা অ্যালার্ট খুব বেশি ঘন ঘন না পাঠায়। বিশেষভাবে, যদি আপনি এমন কিছু পর্যবেক্ষণ করতে চান, যেখানে অনেক সময় লাগবে। এতে ট্র্যাকারের ব্যাটারি অনেক লম্বা সময় টিকে থাকবে।
  • সম্ভব হলে, এমন ব্যবস্থা করুন যেন ট্র্যাকারগুলো বেশি ঠাণ্ডার কবলে না পড়ে। কারণ, এমন হলে ব্যাটারি অনেক দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়। আমরা আমাদের ট্র্যাকারগুলো কাপড়ে মুড়িয়ে পকেটের মধ্যে সেলাই করে দিয়েছিলাম।
  • সম্ভব হলে, একটি জিনিসের জন্য কয়েকটি ট্র্যাকার ব্যবহার করুন। একটি ট্র্যাকার থেকে শেষ সিগন্যালটি পেয়েছিলাম আমাদের অবস্থান থেকে কয়েক মাইল দূরে, হেলসিঙ্কি হার্বার পর্যন্ত। আমরা যদি কয়েকটি ট্র্যাকার যুক্ত করতাম, তাহলে হয়তো এটির যাত্রা সেখানেই শেষ হয়ে যেত না।

অনুসন্ধানের ফলাফলগুলো আমরা প্রচার করেছিলাম ফিনল্যান্ডের ন্যাশনাল পাবলিক সার্ভিস ব্রডকাস্টার, ইয়েল-এ। এটি প্রচারিত হয়েছিল দুটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে। (একটি প্রচারিত হয়েছিল ২০২০ সালে, এবং অপরটি ২০২১ সালে; দুটির সঙ্গেই আছে ইংরেজি সাবটাইটেল) এ ছাড়া আমরা ব্যবহার করা পোশাকের বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছি।

কী জানা গেছে আমাদের অনুসন্ধান থেকে? খারাপ অবস্থায় থাকা তিনটি পোশাক চলে গিয়েছিল ইউরোপের বাইরে। যদিও দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের বলেছিল: তারা এমনটি করবে না। একই সঙ্গে, মধ্যস্বত্বভোগীদের চেইন অনেক লম্বা। ফিনল্যান্ডের দাতব্য সংগঠনগুলোও জানে না যে তাদের ইউরোপিয়ান সহযোগীরা কোথায় এই কাপড়গুলো বিক্রি করছে।

আমাদের একটি ছেঁড়াফাটা সোয়েটার চলে গিয়েছিল আফ্রিকাতে। আমরা জানতে পারিনি যে, সেখানে যাওয়ার পর সেগুলোর সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল। তবে সাধারণত এমন ব্যবহার করা পোশাক ইউরোপ থেকে আফ্রিকায় যায় গাঁট ধরে। সেখানে এগুলোর ক্রেতারা (বেশির ভাগই নারী) আবার সেগুলো বিক্রি করে দেয়। অপেক্ষাকৃত ভালো পোশাকগুলো বিক্রি হয় বিশাল বড় সেকেন্ড হ্যান্ড বাজারে। খারাপ কাপড়গুলো ফেলে দেওয়া হয়।

ফিনল্যান্ডের আমদানি-রপ্তানি ডেটা থেকে আমরা জানতাম যে, ফিনল্যান্ড যেসব জায়গায় পোশাক রপ্তানি করে, সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম মোজাম্বিক। ফলে আমরা সেখানে গিয়ে চিত্রধারণের সিদ্ধান্ত নিই।

ব্যবহার করা এসব পোশাককে প্রায়ই ডাকা হয় “মৃত শ্বেতাঙ্গদের পোশাক” বলে। জীবনধারণের জন্য এসব কাপড় বাজারে বিক্রি করা অনেকের জন্যই জরুরি। কিন্তু তারা নিজেরা কেউই এসব ছেঁড়া কাপড় কিনতে যাবে না। ব্যবহার করা এসব কাপড়ের বিক্রেতারা আমাদের বলেছেন, তাঁদের কিনে আনা এসব কাপড়ের বান্ডিলের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।

পুরনো পোশাকের বাজার

মোজাম্বিকের এই বাজারে সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাককে “মৃত সাদা মানুষের কাপড়” নামে ডাকা হয়। ছবি: হানা নর্দেনসওয়ান, ইলে

আপনি হয়তো যুক্তি দিতে পারেন যে, এসব পুনরায় ব্যবহারযোগ্য পোশাক আফ্রিকাতে বিক্রি করা টেকসই অর্থনীতির অংশ। কিন্তু এসব ছেঁড়া, দাগ পড়া পোশাক ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আফ্রিকাতে পাঠিয়ে দেওয়ার কোনো নৈতিক জায়গা নেই।

অক্সফামের তথ্য অনুসারে, বিশ্বজুড়ে দান করা পোশাকের ৭০ শতাংশের বেশি চলে আসে আফ্রিকায়। পশ্চিমে ব্যবহার করা এসব পোশাক অনেক আফ্রিকান দেশের স্থানীয় পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করছে বলেও সমালোচনা আছে। এবং কিছু দেশ ব্যবহার করা পোশাক আমদানি নিষিদ্ধও করেছে

আমাদের অনুসন্ধান থেকে দেখা গেছে: দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভিন্ন কথা বললেও, ধনী দেশগুলো তাদের বর্জ্য ফেলছে আফ্রিকান মহাদেশে। সস্তা ফ্যাশনে বিশ্ব ছেয়ে যাওয়ায়, তৈরি পোশাকবর্জ্য হয়ে উঠেছে বিশাল বৈশ্বিক সমস্যা। শুধু ফিনল্যান্ডের মানুষই বছরে ৭০ মিলিয়ন কিলোগ্রাম ওজনের তৈরি পোশাক ফেলে দেয়, যা দিয়ে ৮০টি সুইমিংপুল ভর্তি করা যায়। এবং এটি শুধুই ফিনল্যান্ডের হিসাব। প্রতিবছরে।

দ্রুত, সস্তায় যেসব তৈরি পোশাক পাওয়া যায়, সেই সরবরাহ চেইনের অপর প্রান্তে কী প্রভাব পড়ে, সেটিই আমরা দেখাতে চেয়েছি এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে। এই পোশাকগুলো প্রায়ই আসে এশিয়ার খারাপ কর্মপরিবেশের কোনো কারখানা থেকে। সেখান থেকে এটি চলে যায় পশ্চিমে। পোশাকগুলোর দাম কম হওয়ায় এগুলো কিছু ব্যবহারের পরই ফেলে দেওয়া হয়। এবং এগুলো যখন একেবারেই পরা হয় না, তখন সেগুলো আবার চলে যায় বিশ্বের অপর প্রান্তে। এবার সেগুলো আবার ব্যবহার করা হয় পোশাক হিসেবে, বা সেগুলো ফেলে দেওয়া হয় বর্জ্য হিসেবে।

আমরা যে বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছি, তাঁরা হিসাব করে বের করেছেন যে, ফিনল্যান্ডের ব্যবহৃত পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে যে পরিমাণ কার্বন নির্গত হয়, তা দিয়ে ১২ হাজার মানুষ লন্ডন থেকে ফিনল্যান্ডে যেতে পারবেন বিমানে করে। এই পরিমাণ বিপুল কার্বন ফুটপ্রিন্টের হিসাব এমন সময় এসেছে, যখন তৈরি পোশাকশিল্প আগে থেকেই বিপুল কার্বন নির্গমন, বিষাক্ত রাসায়নিক ও ব্যাপক পানি ব্যবহারের অভিযোগে ভারাক্রান্ত

আমাদের এই তৈরি পোশাকশিল্পের পুরো সরবরাহ চেইনটি নিয়েই অনুসন্ধান করা উচিত।  শুধু যেখান থেকে পোশাক তৈরি করা হয়েছে, সেটুকুই নয়; বরং আমাদের খতিয়ে দেখা উচিত এর শেষ পর্যায়টিও। দেখা উচিত: ব্যবহার করা পোশাকগুলোর ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত সত্যিই কী ঘটে। তৈরি পোশাকশিল্পের পক্ষ থেকে আরও স্বচ্ছতারও প্রয়োজন, যেন ভোক্তারা এই পুরো চিত্র এবং দ্রুত তৈরি পোশাক কিনে ফেলার পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারে।

নিজের কিছুটা ভালো লাগলেও, চ্যারিটি বক্সে পুরোনো কাপড়ের একটি ব্যাগ ফেলে এলেই গল্পটি শেষ হয়ে যায় না। সেখান থেকে বরং নতুন আরেক যাত্রার গল্প শুরু হয়। প্রায়ই সেই যাত্রা শেষ হয় বিশ্বের অপর প্রান্তে গিয়ে।

নতুন পোশাক ফেরত দেওয়ার পর কী ঘটে?

লিখেছেন জেসিকা স্টোলজম্যান
বাতিল পোশাকের বাক্স

ফেরত দেওয়া জামাকাপড়ের শেষ কোথায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছবি: তাইস্তো লাপিলা, ইলে

মহামারির সময় অনলাইনে কেনাকাটার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। অনেক দেশে, যেখানে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থামানোর জন্য দোকানপাট বন্ধ ছিল বা মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তখন অনলাইন রিটেইলাররা বেচাকেনা চালিয়ে যাওয়ার একটি পদ্ধতি সামনে নিয়ে আসে।

অনলাইন কেনাবেচার এই প্রবণতা শুরু হয়েছিল মহামারির আগ থেকেই এবং ফিরিয়ে দেওয়া পণ্যের সংখ্যাও ক্রমে বাড়ছিল। ফিনল্যান্ডের প্রধান পোস্টাল ফার্মের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে অনলাইনে অর্ডার করা পণ্যগুলোর মধ্যে গড়ে প্রতি তিনটি আইটেমের একটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফাস্ট ফ্যাশনের (যে পোশাকগুলো দ্রুত তৈরি করা হয় ও খুব সস্তায় বিক্রি করা হয়) ক্ষেত্রে, কেউ কেউ মনে করেন, ফিরিয়ে দেওয়ার হার আরও বেশি। প্রতি একটি আইটেমের বিপরীতে একটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সুইডিশ সাইট ব্রেকইট-এর সমজাতীয় একটি অনুসন্ধান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, আমি সিদ্ধান্ত নিই বিষয়টি খতিয়ে দেখার: অনলাইনে কেনা যে পোশাকগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেগুলোর ভাগ্যে কী হয়? আমিও একই রকম ট্র্যাকার কিনেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম যে এই পোশাকগুলো খুব দ্রুত ভ্রমণ করবে। ফলে আমি জিএসএম তথ্যের বদলে জিপিএসের মাধ্যমে স্যাটেলাইট ডেটা পেতে চেয়েছিলাম। আমি জানতে চেয়েছিলাম: “অবাঞ্ছিত” হয়ে পড়া এই পোশাকগুলো ঠিক কোন পথ দিয়ে কোথায় যায়। এ জন্য আমি ট্র্যাকারটিকে প্রতি এক ঘণ্টা পরপর সিগন্যাল পাঠানোর জন্য প্রোগ্রামিং করেছিলাম।

আমি সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন পোশাকের দোকান থেকে পাঁচটি জিনিস কিনি এবং ট্র্যাকার লাগিয়ে সেগুলো ফেরত পাঠাই। কয়েক দিনের মধ্যেই, আমাদের প্রায় সব কটি ট্র্যাকার সুইডেনের ভিন্ন ভিন্ন ওয়্যারহাউসে গিয়ে পৌঁছায়।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত এগুলোর সঙ্গে কী হলো, তা তখনো জানা যায়নি। এগুলো কি আবার বিক্রি করা হলো, বা নষ্ট করে ফেলা হলো? কোম্পানিগুলো আমাকে নিশ্চিত করেছে যে, পোশাকগুলো আবার বিক্রি করতে পারা যায় না—এমনটি খুব কালেভদ্রে ঘটে। কিন্তু আমি নিজেই বিষয়টি দেখতে চেয়েছিলাম।

দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের কিছু ট্র্যাকার ম্যানুয়ালি ডিঅ্যাকটিভেট করা হয়। অন্যগুলোর ব্যাটারি শেষ হয়ে যায় ওয়্যারহাউসে। আমি একটি মুক্ত অনুসন্ধানের পথ বেছে নিয়েছিলাম। যার অর্থ: ট্র্যাকারগুলো লুকানো ছিল না। প্রতিটিতেই একটি বার্তা এটির আবিষ্কর্তার জন্য। এবং সেখানে আমার ইমেইল ঠিকানা ছিল, যেন তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

আমরা যদি আরও ভালো ব্যাটারিযুক্ত এবং আরও ছোট ট্র্যাকার খুঁজে পেতাম, তাহলে হয়তো এগুলো আরও লম্বা সময় ধরে ট্র্যাক করতে পারতাম। তবে পোশাকটি আবার বিক্রি করা হলে, এই ট্র্যাকারের মাধ্যমে আমরা সেই ক্রেতাকে অনুসরণ করতে চাইনি। আমরা ভোক্তার প্রাইভেসি লঙ্ঘনও করতে চাইনি।

ট্র্যাকারের সঙ্গে চিঠি

ফেরত দেওয়া পোশাকের প্রতিটি ট্র্যাকারের সঙ্গে একটি চিঠি লিখে দেওয়া হয় এই আশায় যে, যিনি সেটি পাবেন তিনি অনুসন্ধানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। ছবি: তাইস্তো লাপিলা, ইলে

কিন্তু এরপর আমাদের ভাগ্য খুলে যায়। একটি ট্র্যাকার আমার মনোযোগ আকর্ষণ করে: এটি গিয়ে পৌঁছেছিল এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিন-এ। জিপিএসের মাধ্যমে আমি একদম নিখুঁত অবস্থানটি জেনে যাই, এবং তালিন-এ চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি কোম্পানির সন্ধান পাই, যারা তথাকথিত “রিটার্ন ম্যানেজমেন্ট” নিয়ে কাজ করে। এস্তোনিয়া ও পোল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে এটি একটি ক্রমবর্ধমান ব্যবসা।

আমি গিয়ে দেখলাম: কোম্পানিটি ফেরত পাঠানো পোশাকগুলো ভালোমতো খতিয়ে দেখছে এবং সেগুলো আবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছে। যেমন, সেখানে কোনো চুল বা দাগ লেগে থাকলে, সেগুলো সরিয়ে ও পরিষ্কার করে নিচ্ছে। আমরা সেখানকার ম্যানেজারের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সেখান থেকে জানা যায়: তাঁদের কাছে আসা বেশির ভাগ পোশাকই ক্রেতারা ব্যবহার করেছেন। তাঁরা এটি বলতে পারেন পোশাকের গন্ধ বা দাগ থেকে।

তালিন-এ গিয়ে সেই কোম্পানির ম্যানেজার এবং সেখানে কাজ করা নারীদের সঙ্গে কথা বলে আমি আবিষ্কার করি: যে পোশাকগুলোর দাম ৬০ ইউরো (৭০ ডলার)-এর কম, সেগুলো নতুন করে বিক্রির জন্য তৈরির কথা বিবেচনা করা হয় না। এগুলো তারা অন্য কোনো কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয় বা দাতব্য সংগঠনে দান করে দেয়। এই কোম্পানি বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো এরপর সেগুলো হয় ইউরোপের বাইরে বিক্রি করে দেয় বা নষ্ট করে ফেলে।

এসব কাপড় অনুদান হিসেবে পাওয়া একটি সংগঠন দ্য স্যালভেশন আর্মি। এস্তোনিয়া থেকে ফেরার পর, আমি ফিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে, টুরকুতে এই দাতব্য সংগঠনের একটি ওয়্যারহাউসে যাই।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অনেক বাক্স ভর্তি করা হয়েছে ফিরিয়ে দেওয়া পোশাক দিয়ে। এগুলো সব যাচ্ছে উত্তর ইরাকের ইরবিল-এ। ইউরোপ থেকে প্রতিবছর এমন কয়েক টন পোশাক বিভিন্ন দেশে যায়। এগুলো তারই একটি ছোট অংশ।

মহামারির কারণে, আমি ইরাকে যেতে পারিনি। ফলে আমি ইরবিল-এ এক ক্যামেরাম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনিই খুঁজে বের করেন ফিনল্যান্ডের স্যালভেশন আর্মি থেকে পাঠানো পোশাকের চালানটি। দাতব্য সংস্থাটি প্রথমে পোশাকগুলো বিক্রি করেছে একটি স্থানীয় কোম্পানির কাছে। তারপর এগুলো আবার বিক্রি করেছে অসলো ও স্টকহোক নামের স্থানীয় দুটি দোকানের কাছে। মৌসুম পেরোনো বা বিক্রি না হওয়া অন্য পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে এগুলোকে বিক্রি করা হয়। দোকানের মালিকেরা আমাদের বলেছেন যে, এখানকার অল্প কিছু পোশাকই আছে বিক্রির মতো। এবং বাকিগুলো চলে যাবে ইরবিল-এর বাইরে একটি ভাগাড়ে।

ভাগাড়ে বাতিল পোশাক

শেষ পর্যন্ত ইউরোপের অনেক বাতিল পোশাকের ঠাঁই হয় ইরবিলের এই ভাগাড়ে। ছবি: হকার আহমেদ, ইলে

আমরা এই অনুসন্ধান থেকে কী খুঁজে পেয়েছি? এ নিয়ে আমরা একটি ওয়েব স্টোরি ও একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছি। যেখানে দেখা গেছে: কীভাবে অনলাইনে কেনা ও ফেরত পাঠানো কিছু পোশাক (এমনকি যদি ভালো ও অব্যবহৃত অবস্থাতেও থাকে) চলে যাচ্ছে অন্য এক মহাদেশের ভাগাড়ে। পোশাক ফেরত পাঠানো বা অন্য কোনো ক্রেতার কাছে চলে যাওয়ার ব্যবস্থাটিও অনেক কোম্পানির জন্য লাভজনক নয়। আমরা জানি যে, এটিকে ঘিরে একটি বড় ও জটিল লজিস্টিকস চেইন গড়ে উঠেছে।

আমরা এটিও দেখেছি যে, পোশাকগুলো যখন ইউরোপের বাইরে পাঠানো হচ্ছে, তখন কেউই এর দায়দায়িত্ব নিচ্ছে না। পোশাকগুলো এক মধ্যস্বত্বভোগী থেকে আরেক মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে চলে যাচ্ছে। এবং কেউই যেন এর চূড়ান্ত গন্তব্যটি জানে না। আসলে, প্রতিযোগিতামূলক কারণে, অনেক পোশাক কোম্পানিই দাতব্য প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাধ্য করে এসব ফিরিয়ে দেওয়া পোশাক তাদের নিজস্ব বাজারের বাইরে নিয়ে যেতে। এবং এসব কারণে অবশ্যই সেই অবাঞ্ছিত সুইমস্যুট বা খুব ছোট হয়ে যাওয়া জিনসটির পরিবহন খরচ এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট বেড়ে যায়।

এই প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে আমরা ট্র্যাকিং যন্ত্র ব্যবহার নিয়েও বেশ কিছু জিনিস শিখেছি। আমাদের প্রধান সমস্যা ছিল এমন ছোট ট্র্যাকার খুঁজে বের করা, যেটির ব্যাটারির স্থায়িত্বও বেশি হবে। আমরা যে ট্র্যাকারগুলো ব্যবহার করেছি, সেগুলো সন্তোষজনক ছিল না। ফলে আমরা কোনো নির্দিষ্ট পোশাক সেই ইরাকের ভাগাড় পর্যন্ত ট্র্যাক করতে পারিনি।

তবে এই ট্র্যাকারগুলো আমাদের এটি বুঝতে সাহায্য করেছে যে: আমার ফিরিয়ে দেওয়া কিছু পোশাক কোন পথে, কোথায় গেছে। এবং সেখান থেকে আরও জানা গেছে, ফিনল্যান্ডের কিছু ফিরিয়ে দেওয়া পোশাক কোন পথ ধরে গিয়েছে।  এটি আমাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট হিসাব করতে সাহায্য করেছে এবং দেখিয়েছে যে অবাঞ্ছিত পোশাক নিয়ে কাজ করার জন্য কী বিশাল একটি লজিস্টিকস নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।

ফিনিশ এনভায়রনমেন্ট ইনস্টিটিউটের এক বিজ্ঞানীর সঙ্গে কাজ করে আমরা এসব ফিরিয়ে দেওয়া পোশাকের কার্বন ফুটপ্রিন্ট হিসাব করতে পেরেছি। এই হিসাব করা হয়েছিল লাইফ সাইকেল অ্যাসেসমেন্ট অ্যাপ্রোচ ব্যবহার করে: এ ক্ষেত্রে একটি জিনিস কীভাবে (বিমান, নদী বা সড়কপথে) এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাচ্ছে, দূরত্ব, এর ওজন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়, এবং যাতায়াতের পদ্ধতিটির গড় নির্গমনের পরিমাণ দিয়ে সেটিকে গুণ করা হয়।

এসব হিসাবের পর আমাদের গুরুগম্ভীর উপসংহার: ইউরোপের ফেরত দেওয়া পোশাক-বাণিজ্যে এক বছরে যত কার্বন নির্গমন হয়, তা একটি শহরের এক বছরের মোট কার্বন নির্গমনের সমান।

আরও কষ্টদায়ক ব্যাপার হলো: বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব পোশাক ফেরত দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। এবং মানুষ যদি জানত যে, ফেরত দেওয়া এসব পোশাকের সঙ্গে কী হয়, এবং এ জন্য কত পরিবেশগত মূল্য চুকাতে হচ্ছে, তাহলে আমার ধারণা, অনেকেই হয়তো ভিন্ন রকম আচরণ করত। অন্তত, আমি নিজে এখন দুবার ভাবি নিজের বাড়িকে ফিটিং রুম হিসেবে ব্যবহার করতে, যেন বিশ্বের অন্য প্রান্তে আরও বেশি বর্জ্য জমা না হয়ে যায়।

সম্পাদকের নোট: গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সে এই দুই লেখকই থাকবেন বক্তা হিসেবে। কথা বলবেন পোশাকের সরবরাহ চেইন নিয়ে তাঁদের অনুসন্ধান সম্পর্কে। অনলাইন কনফারেন্সটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১-৫ নভেম্বর। অংশ নিতে নিবন্ধন করুন এখানে। 


মিনা নুস-গালান, ফিনিশ ব্রডকাস্টিং কোম্পানি, ইলে-র অনুসন্ধানী দল মোট-এর একজন রিপোর্টার। মানি লন্ডারিং, বাংলাদেশের পোশাক কারখানা এবং দুর্নীতি নিয়ে তার রিপোর্টিং বেশ কিছু পুরস্কার অর্জন করেছে। তিনি একাধিক আন্তঃসীমান্ত প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছেন এবং পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী পানামা পেপারস নিয়ে “প্রজেক্ট পানামা” বইটির লেখক।

জেসিকা স্টোলজম্যান, একজন পুরস্কারজয়ী অনুসন্ধানী সাংবাদিক। তিনি ফিনল্যান্ডের ব্রডকাস্টিং কোম্পানি ইলে-র সুইডিশ ভাষা বিভাগে কাজ করেন। তিনি এর আগে বিদেশি সংবাদ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। কয়েক বছর আগে তিনি ব্রাজিলে হিজড়াদের সমস্যা, কাজের পরিস্থিতি এবং ভূমি দ্বন্দ্বের মতো বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

টেকসইতা পদ্ধতি

সাংবাদিকতার প্রভাব পরিমাপ — আমরা নতুন যা জানি

সব সংবাদমাধ্যমই চেষ্টা করে তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরির জন্য। কিন্তু এই প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে একেক ধরনের সূচক। পড়ুন, এ নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন কী জানা গেছে।

CORRECTIVE Secret Master Plan Against Germany investigation

পদ্ধতি

আন্ডারকভার রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে জার্মানির চরম ডানপন্থী দলের গোপন বৈঠকের তথ্য উন্মোচন

ছদ্মবেশে জার্মানির চরম ডানপন্থী দলগুলোর গোপন বৈঠকে ঢুকে পড়েছিলেন কারেক্টিভের রিপোর্টার। সেখান থেকে তিনি জানতে পারেন: কীভাবে জার্মানি থেকে লাখ লাখ মানুষকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। পড়ুন, অনুসন্ধানটির নেপথ্যের গল্প।

পদ্ধতি

পূর্ব এশিয়াতে যৌন নিপীড়নের ভিডিওর অনলাইন বাণিজ্য নিয়ে অনুসন্ধান

পূর্ব এশিয়ায় কীভাবে যৌন হয়রানির ভিডিও কেনাবেচা হয়— তা নিয়ে বছরব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে ২০২৩ সালের জুনে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল বিবিসি আই। এখানে পড়ুন, কাজটির নেপথ্যের গল্পগুলো।

পদ্ধতি

পাইলোস জাহাজডুবি নিয়ে অনুসন্ধানটি যেভাবে হল

২০২৩ সালের ১৪ জুন ভোরে গ্রিসের পাইলোস উপকূলে কয়েকশ অভিবাসীকে বহনকারী একটি ছোট মাছ ধরার ট্রলার ডুবে প্রায় ৬০০ জনের মৃত্যু হয়। কোস্ট গার্ড, ঘটনার পর দায়সারা উদ্ধার অভিযান পরিচালনার অভিযোগে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে। তারা দাবি করে যে জাহাজে থাকা অভিবাসীদের সহায়তার প্রস্তাব দিলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও গবেষকদের অনুসন্ধানে সত্যটা বেরিয়ে আসে।