প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

কোভিড-১৯: যখন আতশি কাচের নিচে সরকারি কেনাকাটা

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

English

ছবি: পেক্সেলস

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার জন্য বিশ্বের দেশগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খুব দ্রুত খরচ করছে। কোন ধরনের সরকারি চুক্তির মাধ্যমে এসব অর্থ খরচ করা হচ্ছে, তা তলিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়ছে।

এই সংকট কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। দেশে দেশে সরকারি কর্মকর্তারা এসব কেনাকাটা করছেন জরুরি ভিত্তিতে। জনসাধারণের কাছে সেসব তথ্য ‍উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে তৈরি করছেন প্রতিবন্ধকতা এবং তথ্য অধিকার আইনে করা আবেদনগুলোর জবাব দিচ্ছেন দেরিতে।

এমন নতুন ও পুরোনো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রিপোর্টাররা প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে যাচ্ছেন সরকারি কেনাকাটা-সংক্রান্ত প্রতিবেদন।

কীভাবে এসব প্রতিবেদন তৈরি করা যায়, তার কিছু পরামর্শ থাকছে জিআইজেএন-এর এই রিসোর্স গাইডে। সঙ্গে থাকছে নানা উদাহরণ। এখান থেকে জানা যাবে: দুর্নীতির আভাস-ইঙ্গিত কীভাবে পাবেন এবং কেনাকাটা-সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য কোথায় মিলবে? জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায় তে বটেই, আমরা এখানে তুলে ধরেছি বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে আসা অর্থের হিসাব চিহ্নিত করার উপায়ও।

সরকারি চুক্তি ও কেনাকাটা নিয়ে কাজ করার মৌলিক পরামর্শগুলো সংক্ষেপে সংকলন করা হয়েছে এই এক পৃষ্ঠার টিপশিটে

সূচিপত্র

তথ্য কোথায় খুঁজবেন

আগেই সতর্ক হবেন যেসব চিহ্ন দেখে

কাজ কে পেল ঘোষণা হলে কী খুঁজবেন

ঠিকাদার ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুসন্ধান

কাজের মান যাচাই

প্রকিউরমেন্ট ডেটা ব্যবহার

আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থসাহায্য অনুসন্ধান

আরও তথ্যসূত্র

পরামর্শ কোথায় পাবেন

এই গাইডের জন্য জিআইজেএন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে ওপেন কন্ট্রাক্টিং পার্টনারশিপের কর্মীদের কাছে। তাঁদের সাপ্তাহিক নিউজলেটারে এসব চুক্তি নিয়ে অনুসন্ধানের নানা উপকরণ থাকে।

মৌলিক, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ

প্রথমেই আপনাকে নিজ দেশের সরকারি ক্রয়কাঠামো বুঝে নিতে হবে এবং জানতে হবে দুর্নীতি, দরপত্র জালিয়াতি, গোপনীয়তা ও প্রতারণার বিষয়গুলো খুঁজে পেতে কোন জায়গাগুলোতে নজর দিতে হবে।

এখানে থাকছে একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

সাধারণত একটি ক্রয়‍চুক্তির প্রক্রিয়ায় পাঁচটি পর্যায় থাকে:

  • পরিকল্পনা – যখন কী কী জিনিস কিনতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আলোচনা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরিকল্পনার পর্যায়টি খুব তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কখনো কখনো এসব সিদ্ধান্তের কথা জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করা হচ্ছে না এবং কোনো নথিপত্রও থাকছে না।
  • টেন্ডারিং – এই পর্যায়ে সরকার কোট, বিড বা প্রস্তাব আহ্বান করে। (কখনো কখনো এটিকে অন্য নামেও ডাকা হয়। যেমন রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজাল, অ্যাপ্রোচ টু মার্কেট ও সলিসিটেশন)
  • কাজ দেওয়া – এই পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চুক্তিটি কার সঙ্গে করা হবে। এটা নির্ধারিত হয় হাই বিডার দেখে বা অন্য কোনো উপায়ে।
  • চুক্তি – এই পর্যায়ে চুক্তির নানা শর্ত বিস্তারিত লেখা হয়। এটি আইনি সমঝোতার বিষয়। কখনো কখনো, এসব চুক্তিপত্রের সংশোধন ও সংযোজনের জায়গাগুলোতে পাওয়া যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য।
  • বাস্তবায়ন – কাজটি কি শেষ হয়েছে? পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে? সরবরাহকারীর অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে?

আমার দেশের কী অবস্থা

মূল বিষয়গুলো এক হলেও সরকারি ক্রয়ের প্রক্রিয়া একেক জায়গায় একেক রকম। খুব অল্প কিছু দেশে এটি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাপারটি তেমন নয়।

সরকারি ক্রয়ের পরিভাষা, আইনি কাঠামো ও আমলাতন্ত্র সম্পর্কে জানা থাকলে রিপোর্টিং সহজ হয়। এগুলো জানতে জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন, এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞ বেসরকারি পেশাজীবী এবং এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন।

কোভিড-১৯ মহামারি,  বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। অনেক সরকারই আগেকার স্বাভাবিক ধাপ বাদ দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে নানা ধরনের পণ্য ও সেবা কিনছে। “জরুরি অধ্যাদেশ” জারির মাধ্যমে সাধারণ নিয়মনীতি পাশ কাটিয়ে কেনাকাটা করা হচ্ছে। ফলে স্বচ্ছতা বজায় থাকছে না।

এই নতুন নিয়মনীতি হয়তো উসকে দিচ্ছে নানা দুর্নীতি। যেমন, তথাকথিত “সোল সোর্স” বা “নো-বিড” চুক্তি। প্রতিযোগিতাবিহীন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করা হয় বলে এখানে দুর্নীতি-অনিয়মের অনেক সুযোগ থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে, সরকারগুলো কোনো বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেও আলোচনার ভিত্তিতে কেনাকাটার চুক্তি করতে পারে। পরিণতিতে এখানে স্বচ্ছতার ঘাটতি থেকে যায়। (ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিস্থিতি এবং সংস্কারের সুপারিশসংক্রান্ত তথ্য দেখতে পারেন এখানে: অ্যাকসেস ইনফো ইউরোপ রিপোর্ট।)

ক্রয় চুক্তিসংক্রান্ত তথ্য উন্মুক্ত করার নীতিমালা ও চর্চার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিছু দেশে সেগুলো উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে। এমনকি চুক্তি সইয়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলো যে কেউ ডাউনলোড করতে পারে। আবার অনেক জায়গায় কম তথ্য জানানো হয় বা চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক সপ্তাহ পরে সেটি জানানো হয়।

এ কারণে নিজ নিজ দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাটা গুরুত্বপূর্ণ। আইন ও কেনাকাটা-সংক্রান্ত সংস্থার দেশভিত্তিক তথ্য জানতে পারবেন বিশ্বব্যাংকের এই ডেটাবেস থেকে। দেখতে পারেন ওসিপির সংক্ষিপ্ত তালিকাও।

সংবাদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া

সরকারের কোনো চুক্তি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া যেতে পারে সরকারি প্রকাশনা বা ওয়েবসাইটে। কোথায়, কীভাবে এগুলো প্রকাশিত হয়, তা খুঁজে বের করার জন্য স্থানীয় জ্ঞান খুব জরুরি।

মাথায় রাখুন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের মতোই রাজ্য, আঞ্চলিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও (যেমন হাসপাতাল) কেনাকাটা হচ্ছে।

তথ্য পাওয়ার সম্ভাব্য সূত্রগুলো নিয়মিত নজরে রাখুন। এগুলোর মধ্যে থাকতে পারে ক্রয়-কমিটির সভার সারাংশ, প্রেস রিলিজ, ই-প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল, সংবাদপত্রে দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি। এগুলোতে কোনো ক্রয় কর্মকর্তার নাম আছে কি না, এ জাতীয় বিষয়গুলো খেয়াল করুন।

বাজারব্যবস্থা ভালো বোঝেন, এমন কোনো সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করুন। স্বাস্থ্যবিষয়ক রিপোর্টাররা অর্থবাণিজ্য-বিষয়ক রিপোর্টারদের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে পারেন।

কেনাকাটার এই পদ্ধতির প্রতিটি পর্যায়ে কোন ডেটা ও তথ্যগুলো প্রাসঙ্গিক, তা জানা থাকলে আপনি সবকিছু এক জায়গায় জুড়তে পারবেন এবং কোন জায়গায় অব্যবস্থাপনা, প্রতারণা ও দুর্নীতির ঝুঁকি রয়েছে, তা চিহ্নিত করতে পারবেন।

(ডেটা স্ক্রাপিং নিয়ে আরও আলোচনা আছে নিচে)

সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো তথ্য অবশ্যই ‍গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভেতরকার খবরও জানতে হবে।

এ ধরনের তথ্যের জন্য সম্ভাব্য আদর্শ জায়গা হতে পারে বাণিজ্যিক প্রতিযোগীরা। কাজের জন্য আবেদন করে হেরে যাওয়া কোম্পানি হয়তো তার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করতে পারে। এই পুরো প্রক্রিয়া ও নির্দিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানাতে পারে। প্রকিউরমেন্ট এজেন্সিগুলো সাধারণত বিডারদের কাছ থেকে আসা এমন অভিযোগের রেকর্ড রাখে। আপনি যদি খুব ভাগ্যবান হন, তাহলে এসব নথিপত্র তাদের ওয়েবসাইটের কোথাও পেয়ে যেতে পারেন।

যাঁদের ওপর এই এই কেনাকাটা প্রক্রিয়ার প্রভাব পড়বে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন। যেমন হাসপাতালের ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স।

কোনো কোনো তথ্য পাওয়ার জন্য হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করার প্রয়োজনও হতে পারে। কোভিড-১৯ বিষয়ে কীভাবে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আবেদন করবেন তা নিয়ে দেখতে পারেন জিআইজেএন-এর এই পরামর্শগুলো।

ছবি: পিক্সাবে

চিহ্ন দেখে দুর্নীতি চেনা

কেনাকাটায় প্রতারণা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা দুর্নীতির কিছু লক্ষণ শনাক্ত করেছেন। এগুলো সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে। এই লক্ষণগুলো দেখা গেলে বুঝতে হবে দুর্নীতি-অনিয়মের শঙ্কা আছে।

করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত কেনাকাটার ক্ষেত্রে আমরা এমন কিছু চিহ্নের দিকে খেয়াল রাখব।

এ বিষয়ে ওসিপির পরামর্শ: “ক্রয়প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে আলাদা কিছু লক্ষণ দেখা যায়। ক্রমাগত তথ্য যাচাই করা এবং কোথাও পর্যাপ্ত ডেটা না থাকলে সেটি স্পষ্ট করে বলে দেওয়ার মাধ্যমে রিপোর্টিংয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে পারেন। শুধু একটিমাত্র লক্ষণের ওপর ভরসা করবেন না। যতটা সম্ভব বেশি আঙ্গিক থেকে বিবেচনা করুন। স্বার্থের সংঘাত নিয়ে চট করে কোনো সিদ্ধান্তে চলে আসবেন না। প্রায়ই দেখা যায়, কোনো বিষয় বাস্তবের চেয়ে বেশি সন্দেহজনক মনে হয়। এবং সেখানে প্রেক্ষাপটের ঘাটতি থাকে বা ডেটায় ভ্রান্তি থাকে।

দুর্নীতি-অনিয়ম চেনার চিহ্ন সম্পর্কে আরও তথ্যের হদিস আছে নিচে

পরিকল্পনা পর্যায়ে সতর্ক চিহ্ন

বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রয়-পরিকল্পনা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হচ্ছে খুব দ্রুত এবং সংক্ষেপে। তারপরও এই পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো: যে পণ্য বা সেবা কেনা হচ্ছে, সেগুলোর আদৌ প্রয়োজন আছে কি না এবং এখানে কোন কোন সংস্থা জড়িত।

এই পর্যায়ে আপনি সহায়তা পেতে পারেন সরকারি বিভিন্ন নথিপত্র থেকে। কিন্তু তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগ করে সেগুলো পেতে গেলে সময়ের প্রয়োজন। এখন অনেক সরকারই তথ্য অধিকার আইনে করা আবেদনের উত্তর দিতে অনেক সময় নিচ্ছে।

কী দেখবেন এসব নথিপত্রে? কৌশল নির্ধারণ-সংক্রান্ত এসব নথিপত্রে বা বার্ষিক বাজেটে হয়তো সরকারি এজেন্সিগুলো তাদের লক্ষ্যের কথা নির্ধারণ করে। অন্য রিপোর্টগুলোতে মজুত, সম্ভাব্য চাহিদা ও নানা টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশনের কথা বলা থাকতে পারে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ওষুধ বা কোনো উপকরণের সম্ভাব্য জোগানদাতার কথা বা সময়সীমার কথা উল্লেখ করা হতে পারে। কীভাবে দরপত্রের আবেদনগুলো মূল্যায়ন করা হবে, তা নির্ধারণ করা হতে পারে। এই পরিকল্পনাটি কে প্রস্তুত করেছে, সেটিও সাংবাদিকদের আগ্রহের বিষয় হতে পারে। সরকার কীভাবে এই জরুরি পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে, সেগুলো নিয়ে নানা সন্দেহ-সংশয় থেকেও এই কেনাকাটাসংক্রান্ত অগ্রাধিকারবিষয়ক ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

আগেভাগেই তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য চেয়ে আবেদন করে রাখলে সেগুলো দিয়ে পরবর্তীকালে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন তৈরি করা সম্ভব।

দরপত্র আহ্বান পর্যায়ে সতর্ক চিহ্ন 

সরকারি কেনাকাটা-সংক্রান্ত এই খরচ নিয়ে দুর্নীতি-অনিয়মের প্রথম লক্ষণ দেখা যায় দরপত্র আহ্বান এবং সেটির প্রক্রিয়ার সময়।

কোম্পানিগুলো যেন ভালোভাবে দরপত্রের জন্য আবেদন তৈরি করতে পারে, সে জন্য এ-সংক্রান্ত কাগজপত্রে বিস্তারিত বর্ণনা থাকতে হয়। কোন সরকারি কর্মকর্তারা এই প্রকল্পের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, দরপত্রে তার উল্লেখ থাকতে পারে। দরপত্রটি কীভাবে লেখা হয়েছে সেখান থেকেও সম্ভাব্য দুর্নীতির আঁচ পাওয়া যেতে পারে। এই পর্যায়ে নিচের এই লক্ষণগুলোর দিকে খেয়াল রাখুন:

  • এমন বিশেষ কিছুর উল্লেখ আছে কি না, যা থেকে কোনো নির্দিষ্ট আবেদনকারী সুবিধা পেতে পারে।
  • কোনো নির্দিষ্ট পণ্য কেনাকাটাসংক্রান্ত দরপত্রের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা নিয়ে অযৌক্তিক কড়াকড়ি বা বাড়তি অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে কি না, খেয়াল করুন। এটি হয়তো প্রতিযোগিতা কমিয়ে আনা বা কোনো নির্দিষ্ট আবেদনকারীকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হতে পারে।
  • আগের দরপত্রগুলোতে ছিল না, এমন কোনো নতুন প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হচ্ছে কি না।
  • মনে রাখবেন, দরপত্রে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোর কথা স্পষ্ট করে না বলাটাও সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এতে যোগ্যতাহীন আবেদনকারীরাও প্রতিযোগিতার সুযোগ পেয়ে যায়।

আরেকটি দেখার বিষয় হলো: প্রকল্পের কর্মকর্তারা, পছন্দের আবেদনকারীর কাছে দরকারি কোনো তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছেন কি না। সম্ভাব্য আবেদনকারী ও সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা এসব ব্যাপারে তথ্য দিতে পারেন। একই ধরনের পণ্য বা সেবাসংক্রান্ত আগের চুক্তিগুলো দেখলে পাওয়া যেতে পারে সম্ভাব্য সূত্র।

সাধারণ কিছু প্রশ্ন তোলার মাধ্যমেও আপনি অনেক ধারণা পেতে পারেন। যেমন: যে ধরনের উপকরণ কেনার জন্য চুক্তি করা হচ্ছে, সেটির আদৌ দরকার আছে কি না, যে পরিমাণ কেনা হচ্ছে, সেটি যথার্থ মনে হচ্ছে কি না এবং এই নির্দিষ্ট পণ্য শেষ কবে কেনা হয়েছিল।

এই কেনাকাটার প্রক্রিয়াটি নিজেই নানা সন্দেহের জন্ম দিতে পারে। যেমন:

  • পর্যাপ্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল কি না?
  • দরপত্র আহ্বানের বিজ্ঞাপন ভালোভাবে প্রচার করা হয়েছে কি না, যেমন: এটি কি স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে?
  • কোনো সময় বাড়ানো হয়েছে কি না?
  • দরপত্রসংক্রান্ত নথিপত্র, এ-সংক্রান্ত পরিবর্তনের বিষয়গুলো আবেদনকারীদের কাছে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে কি না?

শেষ পর্যন্ত দেখতে হবে এই প্রতিযোগিতামূলক আবেদনের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না। “সোল সোর্স” বা প্রতিযোগিতা ছাড়াই কোনো একক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ার সুযোগ হয়তো আইনিভাবে আছে। কিন্তু সেগুলোতে দুর্নীতি-অনিয়ম হতে পারে।

চুক্তি সম্পর্কে ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত হয়তো এই পরিস্থিতিগুলোর কথা সামনে আসবে না।

কাজ দেওয়ার পর্যায়ে সতর্ক চিহ্ন

কোন দরপত্র আবেদনকারী বিজয়ী হয়েছেন, তা নির্বাচন ও ঘোষণার প্রক্রিয়ায় অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারেন সরকারি কর্মকর্তা ও সেই বিজয়ী আবেদনকারীরা। ফলে যেকোনো ধরনের স্বচ্ছতার অভাবকে দুর্নীতি-অনিয়মের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। দেখতে হবে: দরপত্র আহ্বানের সময় বিলম্ব করা হয়েছে কি না, এটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল কি না।

এই প্রক্রিয়ার পরিণতি কী হচ্ছে, তা বোঝার জন্য এই চিরাচরিত চিহ্নগুলোর দিকে নজর দিতে পারেন। এগুলো বলে দেবে, কোথায় আরও অনুসন্ধান করা দরকার।

  • অনেক বেশি বা অনেক কম আবেদনকারী।
  • খুবই নতুন আবেদনকারী।
  • অস্বাভাবিক কম দর দিয়ে বিজয়ী হওয়া
  • আবেদন বাতিল হয়েছে, সম্ভবত বিধিবহির্ভূত কারণে।
  • যোগ্যতাসম্পন্ন কোম্পানিগুলো আবেদন করেনি। (আপনি হয়তো এটাও জানতে পারবেন যে কারা কারা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো চেয়েছিল।)

কোন আবেদনকারী চুক্তিটি করেছে এবং আরও কারা আবেদন করেছিল, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন। আইটেম ধরে ধরে দেখুন দামের তারতম্য আপনার মনে কোনো প্রশ্ন জন্ম দেয় কি না। (ভারসাম্যহীন বিডিং সম্পর্কে আরও জানতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন সেন্টার আইএসিআরসির ব্যাখ্যা দেখুন।

এই দরপত্র যদি সবার জন্য উন্মুক্ত না থাকে, তাহলে এগুলোর জন্য তথ্য অধিকার আইন অনুসারে আবেদন করা যেতে পারে। দরপত্র মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা কাগজপত্র, আবেদনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রকল্পসংক্রান্ত অন্যান্য নথির জন্যও আবেদন করা যায় তথ্য অধিকার আইন কাজে লাগিয়ে।

অন্যান্য ব্যর্থ আবেদনকারী, বিশেষভাবে যাদের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে অনেক অভিযোগ সম্পর্কে জানা যেতে পারে। তবে এগুলো খুব সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। যদি কেউ প্রক্রিয়াটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সেদিকে নজর রাখুন।

লম্বা সময় ধরে কাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করলেও কিছু ধরন বেরিয়ে আসতে পারে।

যদি একই আবেদনকারীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার চুক্তি করা হয়, তাহলে তার অর্থ কী দাঁড়ায়? কখনো কখনো প্রতিযোগী কোম্পানিগুলো পুরো ব্যবসাটা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। একেকবার একেকজন চুক্তির সুযোগ পায়। কখনো কখনো হেরে যাওয়া আবেদনকারীকে দেখা যেতে পারে সাবকন্ট্রাকটর হিসেবে। নির্বাচিত দরপত্রে যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার সঙ্গে আগেরবারের কেনাকাটার হিসাবের তুলনা করে দেখুন।

আরও যা যা দেখতে পারেন

কিছু আবেদনকারীকে দেখে মনে হতে পারে, তারা ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি। কিন্তু আসলে তারা একই। এ ক্ষেত্রে একই ধরনের নাম, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা খেয়াল করুন। দরপত্রের আবেদনের ক্ষেত্রে একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে কি না, একই ধরনের ফন্ট ব্যবহার বা ভুল করা হয়েছে কি না, নজর রাখুন। কখনো কখনো প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে বিজয়ী আবেদনকারী কিছু ভুয়া কোম্পানিও তৈরি করে। (প্রতারণামূলক বিডিং স্কিম নিয়ে আরও দেখুন আইএসিআরসি-র এই পেজে।)

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য একটি বড় অনুসন্ধানের জায়গা বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ছবি: পিক্সাবে

উদাহরণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের করা চুক্তিগুলো বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল প্রোপাবলিকা। সেখানে দেখা যায়, অনেক চুক্তিই করা হয়েছে একেবারে নতুন কোম্পানির সঙ্গে। “এ সময় স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। যুক্তি দেওয়া হয়েছিল: যে কোম্পানিগুলো পণ্য সরবরাহ করতে পারবে না, সেগুলোকে বাদ রাখা হবে।” 

ব্রাজিলে, দ্য ইন্টারসেপ্ট রিপোর্ট করেছিল কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই মাস্ক কেনাসংক্রান্ত একটি চুক্তি নিয়ে। যেখানে দেখা যায়, চুক্তিতে সরকারের অন্যান্য সরবরাহকারীর চেয়ে ৬৭ শতাংশ বেশি দাম ধরা হয়েছে। 

ইতালিয়ান আইল্যান্ড অব সারডিনায়, সরকার অনেক বেশি দামে কিনেছে ৪০ লাখ মাস্ক। রিপোর্ট করেছিল Ilইল ফাতো কুতিদিয়ানো বা ডেইলি ফ্যাক্ট।

প্যারাগুয়েতে রেসপিটরের বাড়তি দাম নিয়ে অনুসন্ধান করেছিল লাতিন আমেরিকান অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কেন্দ্র

সাতটি দেশ থেকে চুক্তিসংক্রান্ত উন্মুক্ত ডেটা নিয়ে রিপোর্টিং করছে দ্য লাতিন আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড করাপশন (পিএএলটিএ)।

ঠিকাদার ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুসন্ধান

কোনো চুক্তির সময় যেসব ঠিকাদার ও পরামর্শকদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাঁদের নিয়ে অনুসন্ধান করার অনেক কারণ আছে। যে সমস্যা বেশি দেখা যায়, তা হলো: সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংযোগ। সেটি প্রকল্প কর্মকর্তার মতো ছোট পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পর্যন্ত হতে পারে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে, এমন কিছু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে, যারা আগে কখনোই এসব পণ্য বা সেবার ব্যবসা করেনি।

এসব বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছে আইএসিআরসির তালিকা থেকে।

যে প্রশ্নগুলো করতে হবে:

  • কোম্পানিটির কি বিশ্বাসযোগ্যতা/অভিজ্ঞতা/আইনি বৈধতা আছে?
  • কোম্পানিটি কি কখনো কোনো দাপ্তরিক ঝামেলায় পড়েছিল?
  • তাদের ব্যবসায়িক ইতিহাস ও ভাবমূর্তি কেমন?
  • কোম্পানির কি কাজটি করার সামর্থ্য আছে?
  • কোম্পানিটির কি এই ক্ষেত্রে কাজ করার কোনো অতীত অভিজ্ঞতা আছে?
  • কোন কোন ব্যক্তি, কর্পোরেট কর্মকর্তা ও কর্মীরা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত? (ওপরের সব কটি প্রশ্নই তুলতে পারেন সেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দক্ষতা ও ভাবমূর্তি সম্পর্কে।)

তথ্য খুঁজবেন কোথায়

সংশ্লিষ্ট করপোরেট ও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্দেহজনক যোগসূত্র নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে আপনাকে অনেক জায়গায় দেখতে হবে।

অবশ্যই গুগল ও সোশ্যাল মিডিয়া সার্চের মাধ্যমে কোম্পানি ও কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর করবেন। (গুগলে অ্যাডভান্সড সার্চ কীভাবে করবেন, শিখে নিন। এমন কঠিন কিছু নয়। জিআইজেএন হেল্প ডেস্কের এই লেখাগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন।) এর বাইরে আরও কী করতে পারেন?

কিছু দেশে অর্থবাণিজ্য-সংক্রান্ত এসব তথ্য জানান সরকারি কর্মকর্তারা। কিন্তু যখন কোনো দুর্নীতির আভাস থাকে, তখন এসব সংযোগের কথা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখা হয়। সম্পদের তথ্য জানানো সম্পর্কে আরও দেখুন জিআইজেএন-এর রিসোর্স পেজে।

সরকারি কর্মকর্তাদের বাণিজ্যস্বার্থ সম্পর্কে খোঁজখবর করুন। তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের ব্যাপারে জানুন।

ছবি: পিক্সাবে

ঠিকাদারদের ক্ষেত্রে খেয়াল করুন: তাদেরকে আগে কখনো দরপত্র আহ্বানপ্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কি না।

জাতীয় পর্যায়ে বা বিশ্বব্যাংক, আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা আছে কি না।

প্রতিষ্ঠান গঠনসংক্রান্ত কাগজপত্রের মতো আনুষ্ঠানিক করপোরেট নথিপত্রের খোঁজ করুন। এখান থেকে মালিক, অর্থ ব্যবস্থাপনা, কত দিন ধরে তারা কাজ করছেএমন নানা তথ্য পেতে পারেন।

দেখুন, তারা অন্য কোনো সরকারি চুক্তিতেও আছে কি না। ক্রেতাদের কাছে তাদের ভাবমূর্তি কেমন? সরকারি এজেন্সিতে কোনো অভিযোগ জমা হয়েছে কি না।

আবারও বলছি, এসব নথিপত্র দেখার বাইরে মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর কর্মী, সাবেক কর্মী, ক্রেতা, সাবেক ক্রেতা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন।

“গোপন স্বার্থ” উন্মোচন বিষয়ে আইএসিআরসি-র পেজে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে: “সন্দেহজনক কোম্পানির কার্যালয়ে আচমকা পর্যবেক্ষণে চলে যান।”

করপোরেশন ও তাদের মালিকদের নিয়ে গবেষণার জন্য দেখতে পারেন জিআইজেএন-এর এই রিসোর্স পেজ। (বাংলা | Español | Français)

উদাহরণ

রাশিয়ায় ইম্পর্ট্যান্ট স্টোরিজের করা এই অনুসন্ধান থেকে দেখা যায়: দেশটিতে ভেন্টিলেটর সামগ্রী কেনার চুক্তি করা হয়েছে অপরিচিত কিছু কোম্পানির সঙ্গে। তাদের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরাও সন্দেহভাজন।

যুক্তরাষ্ট্রে, ওয়াশিংটন পোস্ট দেখিয়েছে, এন৯৫ মাস্কের জন্য ৫৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করা হয়েছে প্যানথেরা ওয়ার্ল্ডওয়াইড এলএলসি নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে, যাদের এমন চিকিৎসা উপকরণ উৎপাদন বা ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো ইতিহাস নেই। “কোম্পানি ও এর সহযোগীদের মধ্যকার একটি আইনি বিরোধের কারণ হিসেবে তৈরি করা একটি পর্যালোচনায় এমনটি বলা হয়েছে।”

ইতালিতে কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যেও সুরক্ষাসামগ্রী কেনার জন্য চুক্তি করা হয়েছে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত দুই ইতালিয়ান ব্যবসায়ীর সঙ্গে। এ নিয়ে রিপোর্ট করেছিল ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং প্রজেক্ট ইতালি। (এখানে দেখুন ইংরেজিতে।)

অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের দ্রাভকো লুবিয়াস দেখিয়েছেন, ভেন্টিলেটর কেনার জন্য চুক্তি করা হয়েছে বসনিয়ার একটি কৃষি খামারের সঙ্গে।  

চিকিৎসা পোশাকের জন্য আধা বিলিয়ন ডলার: পেনসকে আতিথ্য দেওয়া সুতা প্রস্তুতকারী কীভাবে বিশাল করোনাভাইরাস চুক্তি করলেন। প্রতিবেদনটি করেছে কোর্টহাউস নিউজ।

চুক্তির শর্ত ধরে অনুসন্ধান

ছবি: পিক্সাবে

ক্রয়চুক্তিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন: পণ্য বা সেবার সুনির্দিষ্ট বিবরণ, মূল্য এবং কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের মানদণ্ড।

দরপত্রে উল্লেখ করা অঙ্কের সঙ্গে চুক্তিতে উল্লিখিত অঙ্কের পার্থক্য আছে কি না, এটি লক্ষ করার মতো আরেকটি বিষয়।

ডেডলাইনগুলো খেয়াল করুন।

চুক্তিপত্র উন্মুক্ত করা না হলে সেটি একটি বড় সতর্কসংকেত।

উদাহরণ

স্লোভেনিয়ায় অস্ট্রোর রিপোর্টাররা খুঁজে বের করেছেন, সেখানে “সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়ের চুক্তি করা হয়েছে এক ক্ষমতাবান ব্যবসায়ীর সঙ্গে, যার জুয়া, ইলেকট্রনিকস ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা আছে, কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই।” প্রতিবেদন থেকে আরও দেখা যায়: সেই চুক্তিতে “সুরক্ষা উপকরণ”-এর কোনো বর্ণনাও নেই।

কাজের মান যাচাই

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছেভেন্টিলেটর বা পিপিইর মতো উপকরণ হাসপাতালগুলোতে সময়মতো পৌঁছাচ্ছে কি না।

চুক্তি অনুযায়ী কেমন কাজ হচ্ছে, তা ভালোমতো জানা থাকলে সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিতে সুবিধা হবে। কখনো কখনো এ-বিষয়ক সরকারি প্রতিবেদনও পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু যাদের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে, তারাই আপনার সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো সোর্স।

এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন:

  • সরবরাহের সময়।
  • পণ্য বা সেবার মান।
  • কাজ না করেই অর্থ নেওয়া।
  • সরকারি নজরদারির অবস্থা। কে এটি দেখভাল করছে? কোনো স্বার্থের সংঘাত আছে কি না?

উদাহরণ

এল পাইসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়: স্পেনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষ চীন থেকে আসা একটি টেস্ট কিটের চালান ফিরিয়ে দিয়েছিল। সেগুলো নির্ভরযোগ্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যে টেস্টিং সেন্টারের সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল গার্ডিয়ান

বিভিন্ন উপকরণ পাওয়ার জন্য হোয়াইট হাউসের এলোমেলো প্রচেষ্টার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। বিষয়টি পরিচালনা করছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড ক্রুশনার।

মাঝপথে শর্ত পরিবর্তন

“চেঞ্জ অর্ডারের” মাধ্যমে চুক্তিপত্রের শর্তাবলিতে পরিবর্তন আনা হয়। চুক্তি হয়ে যাওয়ার পরে এসব বদল আসে। এগুলো প্রয়োজনীয়ও হতে পারে। কিন্তু এখানে অনিয়ম করারও সুযোগ থাকে। একই সঙ্গে এটি দুর্বল পরিকল্পনারও সাক্ষ্য দেয়।

চেঞ্জ অর্ডার সম্পর্কে এই লক্ষণগুলোর ব্যাপারে সতর্ক করেছে আইএসিআরসি:

  • পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা বা ডকুমেন্টেশন ছাড়াই একটি চুক্তির মূল্যমান বৃদ্ধি করা।
  • নীতিমালায় “একক উৎস” থেকে ক্রয়ের যে মূল্যসীমা আছে, তার চেয়ে বেশি টাকায় কেনার চুক্তি করা।
  • অন্যান্য বিডের চেয়ে কম দাম প্রস্তাবকারীকে কাজ দিয়ে, তারপরই খরচ বাড়িয়ে একই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে  চুক্তি করা।
  • কিছু ঠিকাদারের বেলায় বারবার চুক্তির পর মাঝপথে শর্তে পরিবর্তন আনা, যা কিনা অন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে করা হয় না।
  • পর্যাপ্ত যথার্থতা প্রমাণ বা নথিভুক্তকরণ ছাড়াই চুক্তির মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া।
  • সীমার মধ্যে থেকে একক উৎসের সঙ্গে চুক্তি করে, পরে সীমার বাইরে দাম বাড়িয়ে চুক্তি পরিবর্তন করা।

যদি সম্ভব হয়, তাহলে আরেকটি জায়গা দেখা উচিত: অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া। প্রশ্নবিদ্ধ ইনভয়েসঅর্থ প্রদানসংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য আইএসিআরসির এই নির্দেশনাগুলো দেখুন। এগুলো খুঁজে বের করার জন্য ইনভয়েস, সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, কাজ সম্পন্ন হওয়ার রিপোর্ট, পরিদর্শন রিপোর্ট ইত্যাদি দেখতে পারেন।

পণ্য সরবরাহের তারিখ ঠিকঠাক করার জন্যও অনেক সময় এসব পরিবর্তন আনা হয়, যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জরুরি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

প্রকিউরমেন্ট ডেটা ব্যবহার

কেনাকাটা-সংক্রান্ত ডেটা থেকে অনেক ধরন বেরিয়ে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে এটাও মাথায় রাখতে হবে: আপনি হয়তো সংযোগ বিচ্ছিন্ন ডেটাবেস থেকে পাওয়া অসম্পূর্ণ তথ্য নিয়েও কাজ করেছেন।

এখানে যে ধরনের সম্ভাবনা আছে:

  • একটি নির্দিষ্ট পণ্যের মূল্য তুলনা করা
  • কী পরিমাণ পণ্য কেনা হয়েছে, তা মূল্যায়ন করা
  • সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক শনাক্ত করা
  • পণ্য সরবরাহের দক্ষতা/সক্ষমতা
  • মোট খরচের হিসেব এক জায়গায় করা
  • দরপত্র আহ্বান, ঘোষণা ও চুক্তির সময় কোন তথ্যগুলো প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো বিশ্লেষণ।

নোট: এটি সাংবাদিকদের সহযোগিতামূলক প্রজেক্টের দারুণ ক্ষেত্র হতে পারে। এতে অঞ্চলভেদে নানা পার্থক্য দেখা যেতে পারে।

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তহবিলের অর্থ কীভাবে খরচ করা হচ্ছে, তা একসঙ্গে এক জায়গায় নথিভুক্ত করার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে আফ্রিকার কিছু নাগরিক গ্রুপ। তাদের কাজ সম্পর্কে দেখতে পারবেন এখানে

উদাহরণ

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত অনুসন্ধানে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করছে লাতিন আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলো?

ওহো পুবলিকো, ইন্টারসেপ্ট ও এল মার্কুরিও দে ইকুয়েডর সম্মিলিতভাবে টেস্ট কিট বিক্রি করা ১১০টি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির ডেটাবেস তৈরি করেছে এবং এখান থেকে তারা পেরুর সরকারি ক্রয়ের চিত্র তুলে এনেছে।

স্ক্রিনশট: ওহো পুবলিকো

ডেটা স্ক্রাপিং

কিছু দেশে, কেনাকানা-সংক্রান্ত ডেটা ডাউনলোড করে নেওয়া যায় বা অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই)-এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায়। ওসিপি-র মতো “ওপেন কন্ট্রাকটিং” সংস্কারের জন্য কাজ করা সংগঠনগুলোর চাপে এসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানাবোঝা শুরুর আদর্শ জায়গা হতে পারে ওসিপির ক্যামিলা সালাজারের এই লেখা—মনিটরিং কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি প্রকিউরমেন্ট উইথ ডেটা। কলম্বিয়া ও চিলির উদাহরণ দিয়ে সালাজার দেখিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে কীভাবে সরকারি ডেটা ব্যবহার করা যায়।

ওসিপির আরেকটি লেখায় আছে: ইউক্রেনের কোভিড-১৯ ড্যাশবোর্ড বিশ্লেষণের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা

ওপেন কন্ট্রাক্টিং ডেটা স্ট্যান্ডার্ড (ওসিডিএস) ব্যবহার করে কীভাবে নিজের ডেটাবেস তৈরি করতে হয়, সেই আলোচনাও করেছেন সালাজার। ওসিপি-র ওপেন কন্ট্রাক্টিং টুলস ডিরেক্টরি থেকে পাওয়া যাবে ওসিডিএস ডেটা ব্যবহার, বিশ্লেষণ ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার টুল।

স্ক্র্যাপিংয়ের মতো টেকনিক্যাল বিষয়ে প্রাথমিক ধারণার জন্য দেখতে পারেন জিআইজেএন-এর ডেটা জার্নালিজম রিসোর্স সেন্টার। ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের ধারণা পাবেন দে বাই ফ্রম ইউ-এর মার্চ মাসের নিউজলেটারে। এটি কন্ট্রাক্টিং পলিসি নিয়ে কাজ করা একটি ইউরোপীয় এনজিও।

ডাউনলোড করার মতো ডেটা যদি আনুষ্ঠানিকভাবে সরবরাহ করা না হয়, তাহলে রিপোর্টাররা নিজেদের ডেটাবেস তৈরির কথা বিবেচনা করতে পারেন। মাস্কের মতো কোনো একটি উপকরণের নির্ধারিত মূল্য তুলনা করলেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে প্রতিবেদনের ধারণা।

নাইজেরিয়ায়, কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য জমা হওয়া অর্থসাহায্যের ডেটাবেস তৈরি করেছে ফলো দ্য মানি নামের একটি গ্রুপ । এবং কীভাবে এই অর্থ খরচ করা হচ্ছে, সেদিকেও নজর রাখবে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রে, প্রোপাবলিকার তৈরি করা কন্ট্রাক্টস ডেটাবেস সবার জন্য উন্মুক্ত এবং এখানে আপনি সার্চ করে দেখতে পারেন।

উদাহরণ

কলম্বিয়ায়, লা সিলা ভাসিয়া উন্মোচন করেছে কীভাবে পৌরসভাগুলো উচ্চমূল্যে খাদ্যদ্রব্য কিনেছে।  

কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরামর্শে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাদেশিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারগুলোর কাছে ৩০ মিলিয়ন ম্যালেরিয়ার ওষুধ পৌঁছানো হয়েছে বলে রিপোর্ট করেছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। যদিও বিজ্ঞানীরা এ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, এখানে আরও গবেষণা প্রয়োজন। 

নাইজেরিয়ার ডেটাফাইট বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে: সরকার যে পরিমাণ অর্থ খরচের হিসাব দিচ্ছে, তাতে কী পরিমাণ প্রয়োজনীয় রিসোর্স কেনা সম্ভব।

সরকারি নথিপত্র পর্যালোচনা করে রোচেস্টার টাইমস ইউনিয়ন দেখিয়েছে, চিকিৎসা উপকরণ কেনার জন্য নিউইয়র্ক স্টেট ৬৮৬ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।

গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির কোম্পানিগুলোকে দেওয়া হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ডলার।

“যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো রেসপিরেটর ও মাস্ক সরবরাহের জন্য এমন সব ঠিকাদারকে নিয়োগ দিয়েছে, যাদের এ বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এতে কালোবাজারে পণ্যের  দাম বেড়েছে এবং বেশ কয়েক ধাপে মুনাফা লুটে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে,” এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে প্রোপাবলিকা

কেন্দ্রীয় সরকারের কন্ট্রাকটিং ডেটা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রোপাবলিকা দেখতে পায়, কোনো অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সরকার থেকে একটি বড় আকারের কাজ পেয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। এটিই অনুসন্ধান শুরুর জায়গা ছিল বলে বর্ণনা করেছেন তাদের রিপোর্টার জে. ডেভিড ম্যাকসোয়ান।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যাদের সঙ্গে কোভিড-সংক্রান্ত চুক্তিগুলো করা হয়েছে, তাদের মধ্যে পাওয়া গেছে অনভিজ্ঞতা, প্রতারণা এবং অন্যের বাড়ি ব্যবহার করে অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগ। প্রোপাবলিকার এই অনুসন্ধান থেকে দেখা গেছে, প্রথমবারের মতো চুক্তি করা ৩৩৫টি কোম্পানিকে অন্তত ১.৮ বিলিয়ন ডলারের কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কোনো রকম অতীত অভিজ্ঞতা যাচাই বা প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতির মধ্যে না গিয়েই এগুলো করা হচ্ছে। 

লবিংয়ের ব্যাপারে ভুলবেন না

সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা ও সরকারি অর্থ খরচ হাতে হাত মিলিয়ে চলে। ফলে বিভিন্ন লবিং তৎপরতা ও খরচ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখাটা খুবই জরুরি।

উদাহরণ

যুক্তরাষ্ট্রে, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও দেখেছে: “কোভিড-১৯-এর জন্য তৈরি পরীক্ষামূলক ওষুধ, রেমডিসিভির প্রস্তুতকারী কোম্পানি, জিলিয়াড সায়েন্সেস ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে অনেক টাকা খরচ করেছে কংগ্রেস ও প্রশাসনে লবিং করার জন্য। এমনটা তারা আগে কখনো করেনি। তথ্যটি জানা গেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নথিপত্র থেকে।”

কানাডায়, ডেমক্রেসিওয়াচ নামের একটি এনজিও জানতে পেরেছে: কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময় অস্থায়ী আইন প্রণয়নের জন্য ওন্টারিও সরকার ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছিল “গোপনে লবিং” করার জন্য। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে একটি টুইট পাঠানোর পর, এই ব্যক্তি নিউ ইয়র্কে ভেন্টিলেটর সরবরাহের জন্য ৬৯ মিলিয়ন ডলারের কাজ পেয়েছেন। এটি ছিল নিউ ইয়র্ক স্টেটের একটি চুক্তি নিয়ে বাজফিড প্রতিবেদনের শিরোনাম। সেখানে দেখা গেছে “সরকারি চুক্তি বা চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহের কোনো ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই চুক্তি করা হয়েছে।”

গুয়াতেমালার দরপত্রসংক্রান্ত উন্মুক্ত পোর্টাল ব্যবহার করে প্লাজা পাবলিকা এমন কিছু কোম্পানি খুঁজে পেয়েছে, যাদের সঙ্গে দেশটির উপস্বাস্থ্যমন্ত্রীর সন্দেহজনক সংযোগ আছে।

স্বচ্ছতা আছে কি নেই, সেটিও দেখুন

দরপত্রসংক্রান্ত কাগজপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা নিয়েও কাজ করতে পারেন সাংবাদিকেরা। বিশেষভাবে যেসব জায়গায় এসব তথ্য একেবারেই পাওয়া যায় না।

তথ্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা তৈরি করে কোনো বিশেষ আইনকানুন তৈরি করা হয়েছে কি না, তা দেখা যেতে পারে। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় করা আবেদনগুলোর ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে কি না এবং বিশেষ কোনো তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানানো হচ্ছে কি না, তা-ও দেখতে পারেন সাংবাদিকেরা।

উদাহরণ

 ফোলা দে এস.পাওলো-র একটি প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে: ব্রাজিলের যেসব জায়গায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি, সেখানে মহামারির জন্য আসা অর্থ খরচের ব্যাপারে স্বচ্ছতা কম। 

হাঙ্গেরির ডিরেক্ট৩৬ তুলে এনেছে দরপত্রের কাগজে থাকা অসংখ্য তথ্য ঘাটতি। দেখা গেছে মাস্ক সরবরাহের জন্য চুক্তি করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের এক পরামর্শকের বাবার কোম্পানির সঙ্গে। “সেখানে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পণ্যের ধরন, মূল্য ও কোথায় তৈরি; সেসব তথ্য দেওয়া হয়নি।” 

গার্ডিয়ানের অনুসন্ধান থেকে বেরিয়ে এসেছে: কোভিড-১৯ সংকটের সময় দরপত্র আহ্বান ছাড়াই বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে করা হয়েছে অন্তত ১ বিলিয়ন ইউরোর চুক্তি। 

ব্লুমবার্গলস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস রিপোর্ট করেছে: চিকিৎসা উপকরণের সরবরাহ চেইন (প্রজেক্ট এয়ার ব্রিজ নামে পরিচিত) সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিচ্ছে না ট্রাম্প প্রশাসন। এটি পরিচালনা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার।

জাপানে, মাইনিচি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে: গর্ভবতী নারীদের জন্য কাপড়ের মাস্ক সরবরাহকারী চারটি কোম্পানির মধ্যে একটি সম্পর্কে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়। “ফলে এর পেছনে কী ধরনের সংযোগ আছে, তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে।”

নাইজেরিয়ায়, সরকারকে দেওয়া বিভিন্ন অনুদানের হিসাব এক জায়গায় করেছে ডেটাফাইট। কিন্তু সরকার কীভাবে এই অর্থ খরচ করছে, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে পাওয়া অর্থসাহায্যের খোঁজ

কোভিড-১৯ সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সাহায্যের জন্য অনুদান, ঋণ, ঋণ মওকুফের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো।

এই অতিরিক্ত অর্থ তহবিল সাধারণত খরচ হয় জাতীয় পর্যায়ের ক্রয়পদ্ধতির মধ্য দিয়ে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিজেরা এটি করে না। যদিও তারা এই ক্রয়প্রক্রিয়ায় বাড়তি প্রভাব বিস্তার করে এবং কীভাবে এই অর্থ খরচ করা উচিত, তা নিয়ে দিকনির্দেশনা দেয়।

অর্থ খরচ ও কেনাকাটা-সংক্রান্ত এই প্রক্রিয়া খুব তড়িঘড়ি করে সারা হচ্ছে। তাই এখানে দুর্নীতি ও প্রতারণার আশঙ্কাও বেড়ে গেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে অনেক এনজিও। এবং মনে হচ্ছে, এই খরচ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য কিছু দেশে নানা সংস্কার আনা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও অন্যান্য আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থা থেকে আসা অর্থ খরচের হিসাব কীভাবে রাখবেন? এদের সাইটগুলোতে আপলোড করা বিভিন্ন কাগজপত্র থেকে এই অর্থায়ন সম্পর্কে জানতে পারবেন। ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে শর্তগুলো জানতে পারবেন। প্রতিটি দেশের জন্য কেমন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেই অংশে গেলে আরও নানা কিছু খুঁজে পেতে পারেন। যদিও এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও স্বচ্ছতা বজায় রাখার একটা সীমা আছে। তাই কীভাবে তাদের এই অর্থ খরচ করা হবে, তা জানতে গেলে প্রতিটা দেশ ধরে আলাদা গবেষণা করতে হবে।

আন্তর্জাতিক তহবিলের হিসাব রাখা, ডেভেক্স জানাচ্ছে: “কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ মে পর্যন্ত ১,৭১৪টি কর্মকাণ্ডে ১৫.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি খরচের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।” বিশ্বজুড়ে উন্নয়নমূলক নানা ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করে ডেভেক্স। বিষয়টি নিয়ে তাদের একটি ডেটাবেস আছে।

এই অর্থগুলো কীভাবে খরচ করা হচ্ছে, তার হিসাব রাখতে যাওয়ার জটিলতা সম্পর্কে ডেভেক্স লিখেছে, “অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়ার সময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব থাকায় বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে যে, কারা এই অর্থ জোগান দেবে, কোথায় ও কীভাবে সেগুলো খরচ করা হবে এবং এতে কারা সুবিধা পাবে?” বিষয়টি নিয়ে একটি ওয়েবিনারও করেছিল ডেভেক্স।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন অনুসন্ধান

বিশ্বব্যাংক থেকে এসেছে প্রায় ১৬০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল। কোন প্রকল্পে, কী খরচ করা হচ্ছে; তার নথিপত্র তৈরি করে বিশ্বব্যাংক। তাদের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তহবিলের খবর দেখুন এখানে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, সে ব্যাপারে জানতে দেখুন এখানে

কোনো নির্দিষ্ট দেশ নিয়ে গবেষণার জন্য, তাদের অ্যাডভান্সড সার্চ পেজে যান। এখানে বেশ কয়েকটি ভাষায় আপনি কাজ করতে পারবেন।

সার্চ বক্সে লিখুন “কোভিড-১৯ রেসপন্স” এবং একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দিন। আপনি যে দেশ সম্পর্কে জানতে চান, তা সিলেক্ট করুন। টাইপ অব ডকুমেন্ট বক্সে কোনো পরিবর্তন আনবেন না। এভাবে সার্চের মাধ্যমে আপনি অনেক ধরনের কাগজপত্র পাবেন: প্রজেক্টের তথ্যসংক্রান্ত কাগজপত্র, স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট প্ল্যান, সামাজিক ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতা-সংক্রান্ত পরিকল্পনা, প্রকল্প মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কাগজপত্র ও কেনাকাটা-সংক্রান্ত পরিকল্পনা। (আপনি যদি সার্চে পরিবর্তন আনতে চান, তাহলে আগের সিলেক্ট করা বিষয়গুলো আনক্লিক করতে ভুলবেন না।)

এগুলোর মধ্যে সব মিলিয়ে সবচেয়ে কাজের নথি হয়তো হবে: প্রকল্প মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কাগজপত্র। তবে কেনাকাটা-সংক্রান্ত পরিকল্পনায় এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা পাবেন। অনুদানের আলাদা উপাদানগুলো সেখানে টেক্সট ও চার্টের মাধ্যমে ভেঙে ভেঙে বলা থাকে।

তবে দেশগুলো এই অনুদানের অর্থ নিজস্ব কেনাকাটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে খরচ করে। হয়তো বিশ্বব্যাংকের কোনো বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে পারে। এপ্রিলের শুরুতে তারা চালু করেছে ফাস্ট ট্র্যাক কোভিড-১৯ ফ্যাসিলিটি। এবং তারা এ-সংক্রান্ত কিছু টেমপ্লেট ও নির্দেশনা তৈরি করেছে।

বিশ্বব্যাংকের অন্যান্য কিছু তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হবে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে। কিন্তু কারা এগুলো পাবে, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। কীভাবে এই অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও তারা কিছু জানায়নি। এগুলো বিতরণ করা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের মাধ্যমে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন ক্রিশ্চিয়ান ডোনাল্ডসনের এই লেখা। তিনি অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার।

আইএমএফের তহবিলে স্বচ্ছতার অভাব

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জরুরি অর্থায়ন ও ঋণ মওকুফ নিয়ে কাজ করছে। তাদের কর্মকাণ্ডগুলোর ব্যাখ্যা পাবেন এখানে। আইএমএফ-এর ট্র্যাকার পেজে পাবেন প্রতিটি দেশের আলাদা তথ্য।

মে মাসের শুরুতে, ৯৯টি এনজিওর একটি গ্রুপ এক চিঠির মাধ্যমে আইএমএফের কাছে আবেদন জানিয়েছে “সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা ও দুর্নীতিবিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। যেমন তারা সব সরকারের কাছ থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব, কেনাকাটা-সংক্রান্ত পরিকল্পনা ও যেসব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে, তাদের মালিকদের নাম প্রকাশের দাবি করতে পারে।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সারাহ সাডোউন বলেছেন, “গত কয়েক সপ্তাহে আমরা খেয়াল করেছি, লেটার অব ইনটেন্ট-এ দুর্নীতিবিরোধী নানা ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।”

এ-সংক্রান্ত আইএমএফ-এর একটি ফ্যাক্ট শিটে বলা হচ্ছে: আরও অনেক কিছুর মধ্যে তাদের পক্ষ থেকে সদস্য দেশগুলোকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে কিছু বিষয়ে দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য। (১) সংকটকালীন অর্থ খরচের বিষয়ে আরও বিস্তারিত রিপোর্টিং, (২) সংকটকালীন আয়-ব্যয়ের হিসেব স্বাধীনভাবে পরিচালনা ও সেটি প্রকাশের ব্যবস্থা, (৩) কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা …” বেশ কয়েকটি দেশ এমন অঙ্গীকার করেছে। যেমন গ্যাবন, মালদোভা, নাইজেরিয়া, আফগানিস্তান, বলিভিয়া, ডোমিনিকান রিপাবলিক, কিরগিজ রিপাবলিক, মৌরিতানিয়া, পাকিস্তানসাও তোমে ও প্রিন্সিপ। (এই লিংকগুলোতে ক্লিক করলে পেয়ে যাবেন তাদের আইএমএফ নথিপত্র। আইএমএফ-এর নথিপত্র সার্চ করতে পারবেন এই পেজে।)

আইএমএফ থেকে যেসব জরুরি সহায়তা অনুমোদন পেয়েছে, তা দেখতে পাবেন এখানে। লেটার অব ইনটেন্টসহ (কী কী দায়বদ্ধতার কথা বলা হচ্ছে) অন্যান্য নথি আপলোড করতে তারা কয়েক দিন সময় নেয়। এরপর পাওয়া যায় বিজ্ঞপ্তি। দেশগুলোর বিভিন্ন পলিসি-সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ার একটি চলমান তালিকাও আছে এখানে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক

তাদের সব প্রকল্প ও নথির তালিকা পাবেন এখানে

তাদের প্রধান নথিটি হলো: প্রজেক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ম্যানুয়্যাল। যেমন বাংলাদেশের নথিটি দেখতে পারেন এখানে। জরুরি ভিত্তিতে কেনাকাটা করার পদ্ধতি চালু আছে এবং সেটি বর্ণনা করা হয়েছে VI সেকশনে। বাংলাদেশের ক্রয়ের ঝুঁকি বিবেচনা করা হচ্ছে “উচ্চমাত্রার”।

আরও কিছু তথ্যসূত্র

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রজেক্টের আগাম সতর্কব্যবস্থায় একটি পেজ আছে কোভিড-১৯ অর্থায়ন নিয়ে।

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রজেক্টের আগাম সতর্কব্যবস্থা পেজের স্ক্রিনশট

এ ধরনের অর্থায়ন সম্পর্কে খোঁজ রাখার জটিলতা নিয়ে একটি ব্লগ পোস্ট লিখেছে দ্য সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট (সিজিডি)।

প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক সংস্থা সরকারি ও বেসরকারিউভয় ক্ষেত্রে কী পরিমাণ অর্থায়ন করছে, তার একটি সারাংশ দেখতে পারেন সিজিডির তৈরি করা এই চার্ট থেকে।

আরও পড়ুন

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ‍চুক্তি নিয়ে অনুসন্ধানের এই গাইড প্রকাশ করেছে ওসিপি।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সরকারি কেনাকাটা পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ। এটিও তৈরি করেছে ওসিপি। দুর্নীতির চিহ্ন বোঝার জন্য দেখতে পারেন এই স্প্রেডশিট।

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আইএসিআরসি এমন আরও কিছু রেড-ফ্ল্যাগের তালিকা তৈরি করেছে। তাদের কিছু লেখায় আলোচনা করা হয়েছে: প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণার সাধারণ কিছু লক্ষণ এবং চলমান নানা প্রতারণা সম্পর্কে

এই রিপোর্টের ২৬ নম্বর পেজে একটি টেবিলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে কাছাকাছি ধরনের আরও কিছু চিহ্ন। ডেটা ব্যবহার করে কীভাবে দুর্নীতি শনাক্ত করবেন, এ-বিষয়ক রিপোর্টটি তৈরি করেছে ওসিপি ও ডেভেলপমেন্ট গেটওয়ে।

বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পগুলো বিশ্লেষণ করে আটটি লক্ষণের কথা জানিয়েছে গ্লোবাল ইন্টেগ্রিটি।

টুয়েলভ রেড ফ্ল্যাগস: করাপশন রিস্ক ইন দ্য অ্যাওয়ার্ড অব এক্সট্রাকটিভ সেক্টর লাইসেন্স অ্যান্ড করাপশন, এটি ন্যাচারাল রিসোর্স গভর্ন্যান্স ইনস্টিটিউটের একটি হ্যান্ডবুক।

ইডিয়টস গাইড টু লুটিং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড গেটিং রিচ কুইক। মজার এই লেখা তৈরি করেছে ওসিপি।

একটি সরকারের প্রকিউরমেন্ট ব্যবস্থার সার্বিক অবস্থা কেমন, তা বিশ্লেষণের জন্য এই টেকনিক্যাল গাইডটি বানিয়েছে ওসিপি: ইন্ডিকেটরস টু ডায়াগনোজ দ্য পারফরম্যান্স অব আ প্রকিউরমেন্ট মার্কেট

পরামর্শের জন্য কথা বলুন

জনস্বার্থ কোনো বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে কোনো প্রশ্ন তৈরি হলে জিজ্ঞাসা করতে পারেন ওসিপির হেল্প ডেস্কে। ইমেইল করুন এখানে: media@open-contracting.org বা engage@open-contracting.org.

এসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সাহায্য করার জন্য আরও অনেক কাজ করছে ওসিসিআরপি। বিষয়টি সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে ওসিসিআরপির ইলিয়া লোজোভোস্কির এই লেখা থেকে: ইন ইউরোপস স্ক্রাম্বল টু বাই কোভিড-১৯ সাপ্লা্য়েজ, এন্টি-করাপশন মেজারস ফল অ্যাওয়ে

সাহায্য চাইতে পারেন জিআইজেএন হেল্প ডেস্কেও


জিআইজেএন রিসোর্স সেন্টারের পরিচালক টবি ম্যাকিনটোশ এই নির্দেশিকা সমন্বয় করেছেন। তিনি ওয়াশিংটনে ব্লমবার্গ বিএনএ’র সঙ্গে কাজ করেছেন ৩৯ বছর। ফ্রিডমইনফো ডট ওআরজি (২০১০-২০১৭) এর সাবেক এই সম্পাদক, বিশ্বব্যাপী এফওআই নীতিমালা সম্পর্কে লিখেছেন এবং ফোয়ানেটের স্টিয়ারিং কমিটিতে কাজ করছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

অনুসন্ধান পদ্ধতি

আবাসন খাত নিয়ে মেক্সিকোর পুরস্কারজয়ী প্রতিবেদন : যা শিখতে পারি

পানির মতো মৌলিক পরিষেবার সংকট থেকে মেক্সিকোর সিটির দক্ষিণে সান সেবাস্তিয়ান জোকোর মানুষ আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এককাট্টা হন। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো আসলে এই এলাকায় কী সঙ্কট সৃষ্টি করেছিল, তা অনুসন্ধানের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাবে এই নিবন্ধে।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

মেক্সিকো থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল থেকে ফিলিপাইন : জিআইজেএনের অনুসন্ধানী বইয়ের তাকে

ঐতিহাসিক ভুলভ্রান্তি, করপোরেট লুকোছাপা আর অসদাদচরণ – যা লুকিয়ে রাখাই ক্ষমতাবানদের কাজ তার উদ্ঘাটন নিয়ে লেখা বই এবার জায়গা পেয়েছে জিআইজেএনের বইয়ের তাকে।

হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বার্তাকক্ষের পাশে দাঁড়াচ্ছে রিপোর্টার্স শিল্ড

অনেকটা শূন্য থেকেই গত বছর যাত্রা শুরু করা রিপোর্টার্স শিল্ড বিশ্বেজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর পাশে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে। অলাভজনক সংস্থাটি স্ট্র্যাটেজিক ল-স্যুটস অ্যাগেইনস্ট পাবলিক পার্টিসিপেশন—সংক্ষেপে স্ল্যাপের (জনস্বার্থ বিরোধী কৌশলগত মামলা) বিপরীতে আর্থিক ও প্রয়োজনীয় সমর্থন দিয়ে থাকে। স্ল্যাপ মূলত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিকে নিরুৎসাহিত আর অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষকে ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করা হয় ।

অনুসন্ধান পদ্ধতি

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ছেন? এই তথ্য ও পরামর্শ আপনার জন্য

ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে নির্মিত “অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন” কিংবা হালের “দ্য পোস্ট”, “স্পটলাইট” এবং “সেইড” এর মতো চলচ্চিত্র অনেককেই সাংবাদিকতায় উদ্বুদ্ধ করে। বাস্তবে কিন্তু সাংবাদিকতা আরও অনেক বেশি রোমাঞ্চকর। যদি আপনি অনুসন্ধানের কলাকৌশলটা শিখে নিতে পারেন, তাহলে সফল আপনি হবেনই।