প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

মালয়েশিয়াকিনি: স্বাধীন বার্তাকক্ষ যেভাবে ইটের পর ইট গেঁথে ক্ষমতাবানদের “গলার কাঁটা” হয়ে ওঠে

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

২০০৩ সালের কথা। বেনামি একটি চিঠি প্রকাশের পর শাসক দলের যুব শাখার পক্ষ থেকে মালয়েশিয়াকিনির বিরুদ্ধে আনা হয় রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ। কার্যালয়ে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। জানাতে চাওয়া হয় লেখকের নাম-পরিচয়। বার্তাকক্ষটির পক্ষ থেকে নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানালে জব্দ করা হয় তাদের সার্ভার ও কম্পিউটার।

এ কথা জানাজানির কিছুক্ষণের মধ্যেই নিউজরুমের বাইরে মোমবাতি হাতে জড়ো হন প্রায় ২০০ জন পাঠক ও সমর্থক। একটি মনিটর, প্রসেসর আর কিবোর্ড নিয়ে হাজির হয়ে এক পাঠক বলেন, “তাঁর নিজের সন্তানের চেয়ে মালয়েশিয়াকিনির সাংবাদিকদের এখন এগুলোর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।”

সে ঘটনার পর মালয়েশিয়াকিনির দলটি যখন খানিক সামলে ওঠে, তখনই আবার নিউজরুম খালি করার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। এ নিয়ে মালয়েশিয়াকিনির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান সম্পাদক স্টিভেন গান বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন স্বাধীন সাংবাদিকতা করার কারণে তাদের ভবনমালিককে পর্যন্ত বড় ধরনের চাপে রেখেছিল সরকার।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়াকিনিকে দফায় দফায় জরিমানা করেছে সরকার। সাহসী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে বিভিন্ন ধরনের হয়রানিমূলক মামলা। তবে প্রত্যেকবারই কোনো না ভাবে তাঁরা তা সামলে উঠেছেন।

২০২১ সালে, আদালত অবমাননার জন্য মালয়েশিয়াকিনিকে ৫ লাখ রিংগিত (প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়। যদিও নিজেদের প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনের জন্য নয়, বরং অনলাইনে পাঠকদের করা পাঁচটি মন্তব্যের বিপরীতে। (অ্যাটর্নি জেনারেল একজন সাবেক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর দুর্নীতি মামলার বিচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে পাঠকরা মন্তব্যের ঘরে আদালতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।)

এটাই প্রথম নয়। আগেও সরকারের রোষানলে পড়েছে মালয়েশিয়াকিনি। তবে এবারের জরিমানার অঙ্কটি ছিল চমকে ওঠার মতো। বার্তাকক্ষটি মনে করে, এটি ছিল তাদের আর্থিক সংকটে ফেলা এবং কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য করার একটি প্রচেষ্টা।

এ পর্যায়ে আবারও পাঠকদের সহযোগীতা চাওয়া হয়। পাঠকেরা এতটাই স্বতস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয় যে, মাত্র মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে জরিমানার সব অর্থ উঠে যায়। বাড়তি টাকা জমা রাখা হয় আইনি প্রতিরক্ষা তহবিলে।

“আমরা বুঝতে পারিনি যে সাধারণ পাঠক আমাদের নিয়ে এতটা উদ্বিগ্ন ছিলেন,” ওই ঘটনার কথা মনে করে বলেন স্টিভেন গান।

স্টিভেন গান (ছবির বামে) এবং প্রিমেশ চন্দ্রন, মালয়েশিয়াকিনির সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ছবি: মালয়েশিয়াকিনির সৌজন্যে।

ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে সত্য উচ্চারণ এবং ধারাবাহিক প্রতিবেদন  প্রকাশের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে মালয়েশিয়াকিনির। যা নিয়ে তাঁরা রীতিমতো গর্ব করেন। অক্ষেপের বিষয় অন্য অনেক প্রকাশনাই সাংবাদিকতার এ গুরু দায়িত্বটি এড়িয়ে গেছে। যেমন ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে দেশটির সংস্কার আন্দোলনের (Reformasi Movement)  সময় নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়াকিনি। এর জের ধরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদকে পদত্যাগের আহ্ববান জানানো হয়। মাহাথির তাদের “বিশ্বাসঘাতক” তকমা দিয়ে আউটলেটটির সাংবাদিকদের সরকারি সংবাদ সম্মেলন থেকে নিষিদ্ধ করেন। পরবর্তীতে পদত্যাগের পর মাহাথির এ সম্পর্কে মূল্যায়ণ করতে গিয়ে বলেছিলেন: “আমার আমালে, মালয়েশিয়াকিনি ছিল গলার কাঁটা।”

জিআইজিএনের সদস্য সংগঠন মালয়েশিয়াকিনি আগামী বছর কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৫ গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সের সহ-আয়োজক।

“এশিয়ার দেশগুলোতে স্বৈরাচারী সরকারের অভাব নেই। প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলে গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্স আয়োজনের মধ্য দিয়ে জিআইজিএন সরকারগুলোকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চায় যে, কাজের জন্য তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে। এ দেশগুলোর নাগরিকদের প্রায়ই অন্ধকারে রাখা হয়—তাঁরা দুর্নীতির গন্ধ পায়, কিন্তু দেখতে পায় না। সাংবাদিক হিসেবে আমাদের কাজ হলো আলো জ্বালিয়ে রাখা,” বলেন স্টিভেন গান।

একটি দেশের গণমাধ্যমকে সরকার যখন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন আত্মনিয়ন্ত্রণই হয় টিকে থাকার একমাত্র কৌশল। বিপরীতে মালয়েশিয়াকিনির নিরলস স্বাধীন সাংবাদিকতা পাঠকদের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করেছে।  সৃষ্টি করেছে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন তৈরির চাহিদা। পরিবর্তন এনেছে মিডিয়া পরিমণ্ডলে।

স্বাধীন সাংবাদিকতা যেখানে ‘বিপ্লবী’ বলে গণ্য হয়

স্টিভেন গান এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রিমেশ চন্দ্রন ১৯৯৯ সালে অনলাইন পোর্টাল হিসেবে মালয়েশিয়াকিনি শুরু করেন। এর আগে, মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য সান-এ একসঙ্গে কাজ করেছেন। ছাপা পত্রিকা ও টেলিভিশনে সরকারপন্থী সংবাদ প্রচারণা দেখতে দেখতে তাঁরা ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। সংবাদমাধ্যমগুলো হয় রাষ্ট্র কিংবা রাজনৈতিক দলের মালিকানাধীন ছিল।

যেমন, মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় মিডিয়া সংস্থা মিডিয়া প্রাইমা গ্রুপ। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখা শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল মিডিয়া প্রাইমার মালিকদের। দেশটির সবচেয়ে বেশি দর্শকপ্রিয় নেটওয়ার্ক TV3 তাদের মালিকানাধীন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেডিও টেলিভিশন মালয়েশিয়া (আরটিএম) ৩০টিরও বেশি রেডিও স্টেশন এবং তিনটি টিভি চ্যানেল পরিচালনা করে। এখানে বিরোধী দলগুলোরও রয়েছে নিজস্ব মিডিয়া, প্রকাশনা ।

পঁচিশ বছর আগে ইন্টারনেট সংযোগ এতোটা অবাধ ছিল না। ঢাউস আকৃতির ডেস্ক কম্পিউটার, আর ইটের মতো ভারী মোবাইল ফোন। ওই সময় সরকার ওয়েব সেন্সর না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম ছিল সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের বড় সুযোগ। যা মালয়েশিয়ানদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অ-পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের সুযোগও করে দেয়।

১৯৯৮ সালে উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে বরখাস্ত, পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হলে বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। সময়টি ছিল রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি নতুন যুগ। আনোয়ারের বরখাস্ত,  বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ, এবং রাজনৈতিক ঘটনাগুলো নিয়ে মালয়েশিয়াকিনির অনলাইন প্রতিবেদন এমন এক প্রভাব তৈরি করে, যা তথ্যপ্রবাহের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ভেঙে দেয়।

স্টিভেন গান বলেন, “রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির কাজটা ছিল সহজ। প্রতিবেদন প্রকাশ এবং মালয়েশিয়ানদের মতামত প্রকাশের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে ততদিনে আমরা নিজেদের আলাদা অবস্থান তৈরি করেছিলাম।”

বহু বছর ধরে মালয়েশিয়াকিনি নিয়ে গবেষণা করেছেন মিডিয়া ইতিহাসবিদ এবং জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জ্যানেট স্টিল। কাজটি করতে গিয়ে তিনি বার্তাকক্ষ, সম্পাদকীয় বৈঠক এবং সংবেদনশীল বিষয়গুলো কীভাবে কভার করা হয় তা দেখার অবাধ সুযোগ পেয়েছেন। মালয়েশিয়াকিনির কর্মীদের সাথে কথা বলা এবং প্রকাশনার ১৫ বছরের কার্যক্রম বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তিনি একটি গবেষণামূলক বই লিখেন: Malaysiakini and the Power of Independent Media in Malaysiaনামে।

 স্টিল ব্যাখ্যা করেন, “মালয়েশিয়াকিনি সবচেয়ে জরুরী কাজটি করেছে। বার্তাকক্ষটি সরাসরি এবং সুস্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে ক্ষমতাবানদের কর্তৃত্বকে। সাধারণ মালয়েশিয়ানদের জন্য নিষিদ্ধ বিষয় যেমন জাতি, রাজপরিবার এবং ধর্ম নিয়ে মতামত প্রকাশের একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করেছে।”

স্টিল দেখেছেন, দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমগুলো কীভাবে সেলফ-সেন্সরশীপের মাধ্যমে সরকারবিরোধী সংবাদ প্রকাশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সম্পাদকীয় অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হতে পারে বা সরকারকে ক্ষুব্ধ করতে পারে— সাংবাদিকরা এমন খবরগুলো এড়িয়ে যেতেন। তবে নিজেরা যেগুলো প্রকাশ করতে পারতেন না, সেই ধরনের প্রতিবেদনের কথা মালয়েশিয়াকিনির বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দিতেন। তাছাড়া মালয়েশিয়াকিনি যখন সরকারি প্রেস কনফারেন্সে নিষিদ্ধ ছিল বা ডাকা হতো না তখন অন্য সাংবাদিকরা তাদের অডিও রেকর্ডিংগুলো মালয়েশিয়াকিনির সাংবাদিকদের সঙ্গে শেয়ার করতেন।

স্টিল উল্লেখ করেন, “মালয়েশিয়াকিনি কখনই সরকার বা বিরোধী দলের পক্ষ নেয়নি। এটি স্বাধীন। সব পক্ষ নিয়ে প্রতিবেদন করে।”

তিনি আরও বলেন, “দূর থেকে হয়তো সহজ মনে হতে পারে, তবে অগণতান্ত্রিক মিডিয়া আবহে মালয়েশিয়াকিনির স্বাধীন, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করাটা সত্যিই বিপ্লবী।”

তিনি আরো যোগ করেন, “পাঠকই তাদের শক্তি, যাঁরা মালয়েশিয়াকিনিকে নিয়ে গর্ব করে ও নিজেদের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেয়। স্বাধীন সাংবাদিকতা আর মত প্রকাশের স্বাধীনতার মাধ্যমে আমরা যে মালয়েশিয়া গড়তে চাই— তা অনুপ্রেরণাদায়ক ও সংক্রামক।”

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ২০২২ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মালয়েশিয়াকিনির সমালোচনামূলক সাংবাদিকতার প্রশংসা করেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

“একটা সময় যখন আমাদের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা ছিল, তখন নিরবিচ্ছিন্ন প্রচারণার একটি হাতিয়ার ছিল গণমাধ্যম, তখন ছিল মালয়েশিয়াকিনি। [আমি এ কথা বলছি] শুধু এজন্য নয় যে তাঁরা আমার প্রতি সদয় ছিল—তারা আমার বিরুদ্ধেও কঠোর ছিল—কিন্তু গণতন্ত্রের একটি স্তম্ভ হিসেবে, স্বাধীন মিডিয়ার উচিৎ এভাবেই কাজ করা।”—  ২০১৮ সালে মালয়েশিয়াকিনির সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন আনোয়ার।

মালয়েশিয়াকিনি দলের 1MDB কেলেঙ্কারির নিয়ে করা প্রতিবেদনের একটি ছবি। ছবি: স্ক্রিনশট

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের জটিল চিত্র

এশীয় মহাদেশের স্বৈরাচারী সরকারগুলো যেখানে নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, মালয়েশিয়া সেখানে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ভালো অবস্থানে রয়েছে।

সম্প্রতি রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা সূচকে মালয়েশিয়ার অবস্থান ৭৩ থেকে নেমে ১০৭ হয়েছে।  আরএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশটির সরকার এখনও “গণমাধ্যমকে সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কাজ করা বা রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সমালোচনা করা থেকে বিরত রাখার জন্য অনেক রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে।”

বিশেষ করে, মালয়েশিয়ার অনলাইন মিডিয়া ঘিরে কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ বাড়ছে। আরএসএফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর থেকে সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশকারী বার্তাকক্ষের বিরুদ্ধে সরকারের বাধা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

আরএসএফের তাইপে-ভিত্তিক উপদেষ্টা  ব্যবস্থাপক অ্যালেকসান্দ্রা বিয়েলাকোভস্কা বলেন, “আমাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এটি  ঘটেছে মালয়েশিয়ার সমাজে ‘ট্যাবু’ হিসেবে বিবেচিত বিষয়গুলো বৃদ্ধির কারণে।”

Malaysia World Press Freedom Index ranking

এশীয় মহাদেশের স্বৈরাচারী সরকারগুলো যেখানে নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, মালয়েশিয়া সেখানে প্রেস স্বাধীনতা সূচকে ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা সূচকে দেশটি ৩৪ ধাপ নিচে নেমেছে। ছবি: স্ক্রিনশট, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স।

জিআইজেএনকে বিয়েলাকোভস্কা বলেন, “গত কয়েক বছরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার নিয়ে উদ্বেগজনক অবনতি আমাদের চোখে পড়েছে । এই অঞ্চলের সাংবাদিকরা বাড়তে থাকা চাপের মধ্যে কাজ করছেন। আইনি হয়রানি, শারীরিক নির্যাতন এবং অনলাইন সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন। এর ফলে জনস্বার্থ নিয়ে রিপোর্ট করার সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”

সূচকে অবনতির বিষয়ে সরকারী প্রতিক্রিয়া হিসেবে মালয়েশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্নয়নের জন্য “টেকসই উদ্যোগ নেওয়ার” প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

যদিও মালয়েশিয়ার সাংবাদিকেরা কালেভদ্রেই শারীরিক হামলার শিকার হন। তবু্ও তাদের এখনও গুরুতর চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হয়। এরমধ্যে রয়েছে শাস্তিমূলক জরিমানা থেকে শুরু করে সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করার আইনি চ্যালেঞ্জ। এছাড়া বিদেশী সাংবাদিকদের কাজের অনুমতি বাতিলের ঘটনাও সেখানে ঘটেছে

বছরের পর বছর বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে মালয়েশিয়াকিনি। সিপিজে বার্তাকক্ষটির কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানির অনেক ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট জুলকিফ্লি আনোয়ার উলহকের ঘটনা, যিনি জুনার নামে বেশি পরিচিত। রয়েছেন রিপোর্টার সুসান লুন। বিরোধীদলীয় এক নেতাকে আটক অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা নিয়ে সমালোচনা করে প্রতিবেদন লেখার কারণে পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

“টেসি দ্য ডাক”। ছবি: মালয়েশিয়াকিনির সৌজন্যে

বিভিন্নভাবে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে মালয়েশিয়াকিনিকে। রাজনৈতিক কর্মসূচী থেকে শুরু করে নির্বাচনের সময় সাইবার আক্রমণ, ভাংচুর চালানো, অফিসের দেয়ালে লাল রঙ লাগানো, কালোযাদুর প্রক্রিয়া হিসেবে অফিসের দরজার বাইরে বক্সে করে রাইস নুডলস ও প্রায় মৃত হাঁস রেখে দেওয়া। এইসব হুমকির বিরুদ্ধে সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে, হাঁসটিকে তারা দত্তক নেন। মৃত প্রায় হাঁসটির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য যত্ন নিতে শুরু করেন। মালয়েশিয়াকিনি পাঠকদের কাছে হাঁসটির একটি নাম সুপারিশেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। (পাখিটি নাম রাখা হয় “টেসি”, হাঁসটি পাঁচ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিল।

টেকসই স্বাধীন রিপোর্টিং

অনেকটা অনাড়ম্বরভাবেই  রাজধানী কুয়ালালামপুরের বাইরে পেটালিং জায়ায় একটি সাদামাটা অফিসে স্বল্পসংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করে মালয়েশিয়াকিনি।

এখন তাদের অফিসে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন সাংবাদিক, গ্রাফিক ডিজাইনার আর ভিডিও নির্মাতার একটি দল কাজ করে। যাঁরা ইংরেজি, বাহাসা মালয়শিয়া, চাইনিজ এবং তামিল—এই চারটি ভাষায় মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন তৈরির পাশাপাশি  ভিডিও বানায়।

২০১৪ সালে মালয়েশিয়াকিনির ১৫তম বার্ষিকীতে উন্মোচন করা হয় @Kini ভবন। নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের পাশাপাশি পাঠক টেকসই স্বাধীন সাংবাদিকতার সমর্থনে নিজেদের পকেট থেকে পয়সা বের করতে কতটা প্রস্তুত তা বোঝার জন্য ”বাই আ ব্রিক” প্রচারণা চালানো হয়। এর মাধ্যমে ১ হাজার রিংগিতের (তখনকার সময়ে ২৬০ ডলার) বিনিময়ে ভবনের একটি ইটের ওপর পাঠক নিজের নাম খোদাই করার সুযোগ পান।

“আমরা একটি মশার মতো — খুব ছোট, যা বড় কোনো হুমকি তৈরি করতে পারে না, কিন্তু সবসময় উড়ে বেড়াচ্ছে, কঠিন প্রশ্ন করছে এবং সরকারের জন্য বিরক্তির কারণ হচ্ছে,” বলেন চন্দ্রান। মালয়েশিয়াকিনি নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে টিকে আছে— যেমন ডটকম বাবলের বিষ্ফোরণ (ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা বৃদ্ধি), এবং দুই প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলে একজনের কাছ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী অপবাদ শোনা, অন্যজনের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার প্রচেষ্টা।

আগে থেকেই গান ও চন্দ্রান বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁরা কড়া ও জবাবদিহিতামূলক সাংবাদিকতা করতে নামছেন। আর সেজন্য তাদের একটি মাত্র ব্যবসায়িক মডেলের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। তাঁরা দুইজনই এখন রোজকার রুটিনমাফিক কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। গান সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। আর চন্দ্রান কাজ করছেন নির্বাহী পরিচালক এবং পরিচালনা পর্ষদে। নিজেদের উত্তরাধিকার নির্বাচন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবং ভবিষ্যতেও মালয়েশিয়াকিনি যেন স্বাধীন সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে পারে তা নিশ্চিতে তাঁরা নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে কিছু শেয়ার হস্তান্তর করেছেন।

বিশ বছরেরও বেশি সময় আগে যে ধারণার ওপর ভিত্তি করে শুরু করেছিলেন, সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাব ও অনলাইন নিউজ আউটলেটের মধ্যে প্রতিযোগিতার এই যুগে তাঁরা এখনও সেই সত্যকেই আকঁড়ে আছেন। ২০২৪ সালে রয়টার্স ইনস্টিটিউটের ডিজিটাল নিউজ রিপোর্ট র‌্যাংকিংয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটির সবচেয়ে বেশিবার দেখা অনলাইন নিউজ আউটলেট মালয়েশিয়াকিনি। ৬০ শতাংশ মানুষ তাদের আস্থার কথা জানিয়েছেন।

তবে সতর্ক করে দিতে চন্দ্রান বলেন যে, অনলাইন সংবাদমাধ্যমের বিকশিত হওয়ার প্রক্রিয়া জারি রাখতে হবে: “ওয়েবসাইটগুলো ছাপানো পত্রিকার জায়গা নিয়ে নিচ্ছে। মালয়েশিয়াকিনির ব্র্যান্ড-ঐতিহ্য আছে। তবে আমরা যদি পরিবর্তন না আনি, সেক্ষেত্রে নোকিয়া কিংবা কোডাকের মতো ঐতিহ্যবাহী ব্র্যান্ডের পরিণতি ঘটতে পারে।”

মালয়েশিয়াকিনির বর্তমান ব্যবসায়িক মডেল হচ্ছে পাঠক সাবস্ক্রিপশন, ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপন এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে পেইড কনটেন্টের বিনিময়ে অর্থ আয়। এটি রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের প্রবণতার বিরুদ্ধে টেকসই অবস্থান তুলে ধরে, বলেন মালয়েশিয়াকিনির পরিচালনা প্রধান সীনহাউ থাম। ২০২২ সালে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে অব্যহতি নেন চন্দ্রান। এরপর ব্যবসায়িক দিকটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন সীনহাউ থাম।

রাজনৈতিক রিপোর্টিং আর নির্বাচন ঘিরে করা পুরস্কারজয়ী প্রতিবেদন ছাড়াও লিঙ্গ বৈষম্য ও পরিবেশের মতো বিষয়গুলো ঘিরে অনুসন্ধানী মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন তৈরি মালয়েশিয়াকিনির সংবাদে বৈচিত্র্য এনেছে। পাশাপাশি বাড়িয়েছে খ্যাতি।

“বাই আ ব্রিক” প্রচারণার মাধ্যমে পাঠকদের কাছে মালয়েশিয়ার “স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের জন্য একটি বাড়ি নির্মাণে” সহায়তার অনুরোধ করা হয়। ছবি: মালয়েশিয়াকিনি

মালয়েশিয়াতে বর্তমানে মালয়েশিয়াকিনি-ই  একমাত্র নিউজ আউটলেট যেটি চারটি ভাষায় রিপোর্ট করে। চন্দ্রান ও থাম জোর দিয়ে বলেন যে, বিভিন্ন ভাষায় রিপোর্টিং মানে শুধু অনুবাদ করা নয়, বরং প্রত্যেক শ্রোতার চাহিদা অনুসারে সেরা মাধ্যম খুঁজে বের করাও।

মালয়েশিয়াকিনি যখন তামিল ভাষায় সংবাদ করা শুরু করে, তখন তামিল শ্রোতাদের প্রয়োজন মেটাতে ভিডিও দিয়ে শুরু করা হয়। কীভাবে তামিল ভাষার ব্যবহার হয়—তা বিবেচনায় নেওয়া হয়। “তামিলের রয়েছে নিজস্ব বর্ণমালা। লোকের মুখে মুখে যেভাবে ভাষাটি বলা হয়, ততটা ঠিক পড়া হয় না,” ব্যাখ্যা করেন চন্দ্রান।

সংবাদ মাধ্যমের পরিবর্তিত পরিবেশে মালয়েশিয়াকিনি সবসময় পাঠকের প্রয়োজনের সঙ্গে খাপখাইয়েছে। রাজনৈতিক পরিসরের বাইরে গিয়েও তুলে এনেছে গুরুত্বপূর্ণ গল্প।

মালয়েশিয়াকিনির বিশেষ প্রতিবেদন সম্পাদক আইদিলা রাজক। তিনি জানিয়েছে যে, তাঁরা কীভাবে বোর্নিও  দ্বীপের  সাবাহে অঞ্চলের আদিবাসী বাজাউ লাউট জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বঞ্চনার সূত্র ধরে ওই অঞ্চলের শিশু চুরির ঘটনাকে সামনে আনেন। তাঁরা যখন আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন ঘুরেফিরেই একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য বারবার উঠে আসছিল। প্রতিবেদনটি পরবর্তীতে পুরস্কার জয় করে।

আইদিলা রাজক বলেন, “মায়েরা হাসপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন। ঝুঁকি থাকলেও বাড়িতেই সন্তান জন্ম দিতে আগ্রহী ছিলেন। কেননা তাঁরা অন্য মায়েদের কাছ থেকে জেনেছেন, জন্মের পরই তাদের কাছ থেকে শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” কীভাবে পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীর মায়েদের সম্মতি ছাড়াই তাদের কাছ থেকে শিশুদের সরিয়ে ফেলা ও দত্তক দেওয়া হচ্ছিল— প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশের প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে আইদিল বলেন, “ অনেক বেশি মায়েরা এখন তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। তাঁরা জানে যে জনকল্যান বিভাগের কর্মকর্তারা এখন আর তাদের অযোগ্য মা হিসেবে ঘোষণা করে তাদের সন্তানদের নিয়ে যেতে পারবে না।”

মালয়েশিয়াকিনির স্বাধীন সাংবাদিকতার আরো একটি উদাহরণ; মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় জনবহুল রাজ্যে জোহরের রাজপুত্রের দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনা। বলা হয়, কানে শুনতে পায় না এমন একজন  রাইড-হেইলিং (রাইড শেয়ার পরিষেবা) চালককে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন তিনি। লোকটি যেহেতু শ্রবণ প্রতিবন্ধী, তাই গাড়ি সরিয়ে জায়গা করে দেওয়ার জন্য রাজকীয় দলের নির্দেশনা শুনতে পাননি। গাড়ির ড্যাশক্যামে ধারণ করা ভিডিওটি সংবাদ সম্মেলনে দেখানো হয়। ঘটনটি ঘটে এ বছরের শুরুতে।

এরপর ক্রাউন প্রিন্স বিবৃতি প্রকাশ করে চালকের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করেন এবং তদন্তে বাধা না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বেশিরভাগ সংবাদপত্র ঘটনাটি চেপে যায়। কারণ তারা ক্রাউন প্রিন্সকে ভয় পাচ্ছিলো এবং তাকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছিল না। এছাড়া অল্পকিছু সাইটে এ ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট করা হলেও রাজ পরিবারের প্রতি সংবেদশীলতার কারণে তা মুছে ফেলে।

এখানে মালয়েশিয়াকিনি কী করেছে ? “মালয়েশিয়াকিনি স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে,” বলেন আইদিলা।


আনা পি. সান্তোস একজন সাংবাদিক, যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য, এইচআইভি এবং যৌন সহিংসতার ওপর লিঙ্গ বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরির দশ বছরের বেশি কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। পুলিৎজার সেন্টার ২০১৪ পার্সেফোন মাইল ফেলো গ্র্যান্টি হিসাবে তিনি ইউরোপ মধ্য প্রাচ্যে শ্রম অভিবাসন নিয়ে রিপোর্ট করেছেন। তার কাজ র‌্যাপলার, ডয়চে ভেলে জার্মানি, দ্য আটলান্টিক, এবং দ্য লস এঞ্জেলেস টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে।

 

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

সদস্য প্রোফাইল

আমি যা শিখেছি: দ্য ক্যারাভানের বিনোদ কে. যোশির শিক্ষা ও পরামর্শ

বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে নতুন একটি ধারাবাহিক শুরু করেছে জিআইজেএন। ’১০ প্রশ্ন’ শীর্ষক এই ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে আছে ভারতের প্রথম সারির লং-ফর্ম সাংবাদিকতা সাময়িকী, দ্য ক্যারাভানের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সম্পাদক বিনোদ কে. যোশির সাক্ষাৎকার। এখানে তিনি জানিয়েছেন তাঁদের অনুসন্ধান, এর প্রভাব, ভুলভ্রান্তি ও চ্যালেঞ্জগুলোর কথা। এবং দিয়েছেন কিছু শিক্ষণীয় পরামর্শ।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

জিআইজেএন রিসোর্স সেন্টারের ২০২৪ সালের সেরা গাইড ও টিপশিট

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপে ধাপে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সাংবাদিকদের। তথ্য সংগ্রহ, অংশীদারত্বমূলক কাজ, প্রকল্পের অর্থ যোগান , পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা জ্বালানী বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার রসদ পেতে বেশ কিছু গাইড প্রকাশ করেছে জিআইজেএন। দেখুন এই প্রতিবেদন।

পরামর্শ ও টুল সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

জিআইজেএনের ২০২৪ সালের সেরা অনুসন্ধানী টুল

কৌতূহল, সাহস ও অংশিদারত্ব বছরজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিয়েছে। এই সাংবাদিকতাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে দারুন কিছু টুল। একনজরে দেখে নিন চলতি বছরের সাড়া জাগানো অনুসন্ধানে ব্যবহৃত টুল ছিল কোনগুলো।

সম্পাদকের বাছাই

প্রাণঘাতী আন্দোলন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি অনুসন্ধান: ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

আরও স্থান পেয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে অনুসন্ধান, জনসংখ্যার ডেটা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গরমিল ও ক্ষমতাধর পুলিশ প্রধানের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রসঙ্গ।