প্রবেশগম্যতা সেটিংস

গ্লোবাল লাইট শাইনিং অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা। ছবি: সুজান লি।

লেখাপত্র

বিষয়

জিআইজেসি গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড জিতে নিলো মেক্সিকো, পেরু, নাইজেরিয়া ও মিশরের সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

মালয়েশিয়ায় কুয়ালালামপুরে ১৪তম বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সম্মেলনে (জিআইজেসি২৫) গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড (জিএসএলএ)  জিতে নিয়েছে মেক্সিকোর অভিবাসী হয়রানির ঘটনা, আমাজনের আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ, রাশিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ বৈদেশিক যোদ্ধা নিয়োগ, এবং আফ্রিকার তথাকথিত ধর্মগুরুকে নিয়ে সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।

এই অনন্য পুরস্কারের মাধ্যমে এমন সব দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে সম্মান জানানো হয় যেখানে সাংবাদিকদের ভয় বা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত প্রকাশিত জনস্বার্থমূলক অনুসন্ধানী প্রকল্পগুলোর জন্য এই প্রতিযোগিতাটি উন্মুক্ত ছিল। এবার  ৯৭টি দেশ থেকে মোট ৪১০টি প্রকল্প জমা পড়ে।

পাঁচটি মহাদেশের অনুসন্ধানী সম্পাদকদের নিয়ে গঠিত জিএসএলএর পাঁচজনের পুরস্কার কমিটি বাছাইকৃত ১৩ জন অসাধারণ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে বৃহৎ সংবাদমাধ্যম (লার্জ আউটলেট) বিভাগে দুইজন বিজয়ী, ছোট ও মাঝারি সংবাদমাধ্যম (স্মল ও মিডিয়াম আউটলেট) বিভাগে একজন বিজয়ী (২০ জনের কম কর্মীসহ প্রতিষ্ঠান ও ফ্রিল্যান্সাররা), এবং আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পকে বিশেষ স্বীকৃতি প্রদান করেন।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাবাইল সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের পরিচালক ও পুরস্কার কমিটির আহ্বায়ক শিলা কোরোনেল বলেন, “এই বছরের পুরস্কারপ্রাপ্তদের প্রতিবেদনের মান ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে কাজ করছেন। তারা তথ্য, নথি, ওপেন সোর্স অনুসন্ধান, মাঠ পর্যায়ের ধৈর্যশীল অনুসন্ধান এবং সৃজনশীল গল্প বলার ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকার, সেনাবাহিনী, সংগঠিত অপরাধী চক্র এবং খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য  ব্যক্তিদের দায়বদ্ধ করেছেন। তারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন সংবাদমাধ্যম এবং গণতন্ত্র হুমকির মুখে।”

“গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ডসে জমা জমা পড়া প্রতিবেদনগুলো দেখে আমরা অনুপ্রাণিত,” বলেন গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক এমিলিয়া ডিয়াজ-স্ট্রাক। “এই গল্পগুলি হুমকি এবং ঝুঁকির মুখোমুখি থাকা সাংবাদিকদের করা শক্তিশালী এবং অপরিহার্য কাজ। এখানে জনস্বার্থের গল্পগুলি উন্মোচন করা হয়েছে এবং কাজগুলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পদ্ধতি ব্যবহার করে করা অসাধারণ কাজের উদাহরণ। সকল বিজয়ীদের জানাই অভিনন্দন।”

অন্যরা অনুসন্ধান করতে প্রায় সাহসই করছিল না, তেমন সব বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন ২০২৫ সালের জিএসএলএ পুরস্কারজয়ীরা। যেমন মানবপাচারের বিপজ্জনক গতিপথ অনুসরন; রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণে আরব পুরুষদের সৈন্য হিসেবে নিয়োগ; নির্যাতক ধর্মীয় গুরুর ক্ষতিকর প্রভাব এবং মাদক পাচার ও আদিবাসী নেতাদের হত্যার সংযোগ।

জিআইজেসির গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ডসজয়ী প্রকল্প:

গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড (বিজয়ী – লার্জ আউটলেট)

ট্রেইলারেস, ট্রামপা পারা মিগ্রান্তেস (কার্গো ট্রাক: অভিবাসীদের ফাঁদ) (মেক্সিকো)

নোটিসিয়াস টেলেমুন্ডো অ্যান্ড দ্য ল্যাটিন আমেরিকান সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (এল ক্লিপ)-এর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে ইন কলাবোরেশন উইথ আইসিআইজে, বেলিংক্যাট, পিয়ে দে পাগিনা, চিয়াপাস প্যারালেলো (মেক্সিকো), এন উন ২×৩ তামাউলিপাস (মেক্সিকো), প্লাজা পাবলিকা (গুয়াতেমালা), অ্যান্ড কন্ট্রাকোরিয়েন্টে (হন্ডুরাস)

Trailer, Traps for Migrants investigation

ছবি: স্ক্রিনশট, নোটিশিয়াস, তেলেমুন্ড

সাত মাসের এই যৌথ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মেক্সিকোর মাধ্যমে অভিবাসী ও আশ্রয় প্রার্থীদের পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত কার্গো ট্রাকগুলোতে প্রাণঘাতী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত ১১১ জন অভিবাসী শ্বাসকষ্ট বা ট্রাফিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, যেখানে এই পদ্ধতিতে ১৯,০০০ জনকে পরিবহন করে আনা হয়। পাশাপাশি সরকারী নীতি ও অপরাধগোষ্ঠীদের মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালানের কৌশলও উন্মোচিত হয়েছে।

যখন পারস্পরিক আন্ত:সীমান্ত সহযোগিতা তৈরি নিয়ে কাজ করা হচ্ছিল তখন প্রতিবেদকরা জানতে পারেন যে মেক্সিকোয় অভিবাসী পাচার ও মানবপাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত সড়ক দুর্ঘটনার সরকারি কোনো তথ্যই নেই। শেষ পর্যন্ত, দলটি এই বিষয়টিতে প্রথম ডেটাবেস তৈরি করে, যা অভিবাসীদের জন্য একটি লুকানো, প্রাণঘাতী নিরাপত্তা হুমকিকে সামনে নিয়ে আসে। অনুসন্ধানে নতুন পাচার রুট, ট্র্যাক্টর-ট্রেইলারের বাড়তি ব্যবহার, অপরাধী চক্রগুলোকে শাস্তির আওতায় না আনা, ট্রাক চালকদের ওপর জোরপূর্বক প্রভাব এবং মেক্সিকোর জেলা আদালতে মানবপাচার মামলায় বিস্ময়করভাবে কম দণ্ড প্রাপ্তির তথ্যও উন্মোচন হয়েছে।

তাদের কাজের পদ্ধতি ছিল মাঠ পর্যায়ের সাহসী রিপোর্টিং। যেখানে তথ্য চেয়ে ৭০টিরও বেশি  অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি নিঁখুত ডেটা বিশ্লেষণ, বেঁচে থাকা ব্যক্তি, চালক, পরিবার ও কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মেক্সিকোতে অনুসন্ধানী কাজ করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত সাধারণ ঝুঁকি ছাড়াও, তামাউলিপাস এবং চিয়াপাস রাজ্যে যারা কাজ করছিলেন, তাদের কয়েকজনকে হুমকির বিপরীতে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল।

পুরস্কার কমিটির পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়: “কোনো কিছু নিয়ে সত্যিকার অর্থে লেগে থাকার অনন্য উদাহরণ এই প্রতিবেদন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনুসন্ধানী দলটি নিরসলভাবে সবকিছু অনুসরণ করেছে। এমন সব টুল ব্যবহার করেছে, যা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে বিশেষ করে তুলেছে।” অন্য একজন বিচারক বলেন: “এখানে এমন একটি গল্প বলা হয়েছে, যা আগে কখনো বলা হয়নি। প্রতিবেদনটি ভীষণ সংবেদনশীল ও প্রাসঙ্গিক।”

গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড (বিজয়ী – লার্জ আউটলেট)

লস ভুয়েলোস দে লা মুয়ার্তে: লিডারেস ইন্দিজেনাস আসেসিনাদোস এন উন তের্রিতোরিও ইনভাদিদো পোর ৬৭ নারকোপিস্তাস (ডেথ ফ্লাইটস: ৬৭টি মাদক এয়ারস্ট্রিপ থেকে আক্রমণে আদিবাসী নেতাদের হত্যা) (পেরু)

মঙ্গাবে লাটাম, আর্থ জেনম

Mongabay Latam narco airstrips in Peru

ছবি: স্ক্রিনশট, মঙ্গাবে লাটাম

অ্যামাজনের দুর্গম অঞ্চলের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কীভাবে সেখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব ফেলছে—এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে অন্য কোথাও তেমন উঠে আসেনি। এক বছরের গভীর, গোছানো আর সাহসী অনুসন্ধানে মঙ্গাবে লাটাম পেরুর তিনটি অ্যামাজন অঞ্চলে মাদক পাচারের জন্য ব্যবহৃত উড়োজাহাজ নামার গোপন স্থানের (এয়ারস্ট্রিপ) একটি বিশাল নেটওয়ার্ক উদ্ঘাটন করে। এসব পাচার পথের সঙ্গে স্থানীয় আদিবাসী নেতাদের হত্যা ও সহিংসতার সরাসরি যোগসূত্র তুলে ধরে।

তথ্য সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক দলটি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন, সরেজমিন রিপোর্টিং আর প্রচলিত সোর্স ব্যবহার করে। আর্থ জিনোমের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত সার্চ টুল ব্যবহার করে এয়ারস্ট্রিপ নির্মাণের সঙ্গে বন উজাড় ঘটনার সম্পর্ক খুঁজে পায়। ওপেনস্ট্রিটম্যাপ ও স্যাটেলাইট ছবির সাহায্যে তা যাচাই করে। অনুসন্ধানী দলটি পেরুর তিনটি অঞ্চল—উকায়ালি, হুয়ানুকো এবং পাসকো—নিয়ে কাজ করে। যেখানে এরই মধ্যে ১৫ জন আদিবাসী নেতা হত্যার শিকার হয়েছেন। আরও ২৮ জনের জীবন হুমকিতে রয়েছে। কঠোর যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাদকপাচারের ৬৭টি গোপন এয়ারস্ট্রিপ শনাক্ত করা হয়। যার মধ্যে ৩০টি সরাসরি আদিবাসীদের জমিতে তৈরি। প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়েছে: “বিশেষ করে সাতটি আদিবাসী এলাকা শুধু এয়ারস্ট্রিপ দিয়ে দখল করা হয়নি, বরং চারপাশ থেকেও ঘিরে ফেলা হয়েছে।”

একটি ডেটাবেস তৈরি করা হয়। যেখানে প্রতিটি ‘নার্কো-এয়ারস্ট্রিপ’-এর অবস্থান, ব্যবহার, চালুর তারিখ, সড়ক বা নদী থেকে দূরত্ব এবং তা সংরক্ষিত এলাকার ভেতরে রয়েছে কিনা—এসব তথ্য রয়েছে।

সাংবাদিক ও সোর্সদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর সতর্কতা নেওয়া হলেও মাফিয়াদের পক্ষ থেকে সবসময়ই বড় ধরনের হুমকি আসার ঝুঁকি ছিল।

গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড (বিশেষ স্বীকৃতি)

ডিসাইপলস: দ্য কাল্ট অব টি বি জোশুয়া

বিবিসি আফ্রিকা আই এবং ওপেনডেমোক্রেসি (নাইজেরিয়া)

BBC Africa Eye Disciples of TB Joshua

ছবি: স্ত্রিনশট, বিবিসি নিউজ, ইউটিউব

তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরা হয়েছে: “এই অনুসন্ধানে এমন সব ভয়ংকর অপরাধ সামনে এসেছে, যা কল্পনাও করা কঠিন। বিশেষ করে সেই মানুষটির বিরুদ্ধে, যাকে একসময় ভবিষ্যতের সন্ত হিসেবে ভাবা হতো।

আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্ম যাজক ও তার প্রতিষ্ঠিত ‘সিনাগগ চার্চ অব অল নেশনস’ নিয়ে টানা তিন বছর ধরে অনুসন্ধান চালায় বিবিসি আফ্রিকা আই। অনলাইনে এই গির্জার ভিডিও এক বিলিয়নেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। বিশ্বের নানা দেশের লাখ লাখ অনুসারী তাকে অন্ধের মতো পূজা করতো—এমনকি তাঁর ভক্তের তালিকায় কয়েকজন রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকা যাজক টি.বি. যোশুয়ার নির্দোষ ভাবমূর্তি এই অনুসন্ধান প্রকাশের পর ভেঙ্গে পড়ে।

অনুসন্ধানী দলটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়াসহ অন্তত এক ডজন দেশে এমন অনেক ভুক্তভোগীকে খুঁজে পায়, যাঁরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন—কিছু ক্ষেত্রে তা ছিল সহিংসও। তবে এই কাজের মূল ভরসা ছিল গির্জার ভেতরের লোকদের স্বীকারোক্তি—টি.বি. যোশুয়ার সাবেক “শিষ্যরা” প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। কীভাবে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তা স্পষ্টভাবে বলেছেন। প্রামাণ্যচিত্রের মতো করে তৈরি এ প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের ধরন এবং গল্প বলার ভঙ্গি এতটাই শক্তিশালী যে, জিএসএলএ পুরস্কার কমিটির অনেকেই এক বাক্যে বলেছেন: “অসাধারণ গল্প!” একজন যোগ করেছেন: “এটি মহাদেশজুড়ে বিশাল প্রভাব ফেলেছে; তারা এমন মানুষকে খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে যারা কথা বলতে পারে।”

গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড (বিজয়ী – স্মল মিডিয়াম আউটলেট)

রাশিয়ার ফাঁদ: অর্থ নাগরিকত্বের প্রলোভনে মিশরীয়দের নিয়োগ

মাসরাওয়ি (মিশর)

Masrawy Egypt The Russian Trap

ছবি: স্ক্রিনশট, মাসরাওয়ি

মাঝে মাঝে কিছু অনুসন্ধানী গল্প দর্শকদের এমন সব তথ্য দিয়ে হতবাক করে দেয়, যা খুব কম মানুষেরই মাথায় আসে। এই প্রকল্পটি কেবল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে তরুণ আরব পুরুষ, বিশেষ করে মিশরীয় ছাত্রদের গোপন নিয়োগের বিপজ্জনক দিকটি-ই উন্মোচন করেনি, বরং দেখিয়েছে রাশিয়া কীভাবে বিদেশে জন্ম নেওয়া পুরুষদের প্রাণঘাতী ঝুঁকি গ্রহণে প্রলুব্ধ করার জন্য নিয়োগের মানদণ্ড পর্যন্ত পরিবর্তন করেছে।

প্রতিবেদনটি তুলে ধরে যে, স্বেচ্ছাসেবীদের কোন কোন আর্থিক ও অভিবাসন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, রাশিয়া ও মিশরীয় দালালদের ভূমিকা কী ছিল এবং যেসব মিশরীয় যুবকদের খুব দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মুখসারিতে পাঠানো হয়েছিল যথেষ্ট প্রশিক্ষণও না দিয়ে। তবে জেএসএলএস প্যানেল এ ধরনের গভীর গল্প বলার ক্ষমতার প্রশংসা করে। প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়, যেসব সৈন্যের পরিবারের সদস্যরা  প্রায়শই তাদের প্রিয়জনের ভাগ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন—তারা কতটা কষ্টের মধ্যে ছিলেন।

বিভিন্ন গোষ্ঠীর তরফ থেকে আসা হুমকির মুখে, প্রধান প্রতিবেদককে সোর্স, প্রতিবেদন সম্পর্কিত তথ্য এবং সম্পাদকীয় দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিস্তারিত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হয়। এছাড়া প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর নজরদারি ও হয়রানিও সহ্য করতে হয়েছে।

দলটি তাদের অনুসন্ধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও দুষ্প্রাপ্য নথি সংগ্রহ করেছে, যার মধ্যে ছিল তরুণ মিশরীয়দের রাশিয়ার দালাল এবং সামরিক ইউনিটের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি, নিখোঁজ ব্যক্তি সম্পর্কে মিশরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়ের করা অভিযোগপত্র, এবং সম্ভাব্য নিয়োগপ্রার্থীদের জন্য রাশিয়ার সরকার অনুমোদিত ভিসা—কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ পর্যটক ভিসা দেওয়া হয়।

পুরস্কার কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়: “প্রতিবেদনটি যত্ন নিয়ে করা হয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত তাদের নাম ও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে—যা অত্যন্ত উচ্চ প্রোফাইল বিষয় এবং মানুষ কীভাবে রাশিয়ার ভাড়াটে সৈন্য হয়ে যায় সে সম্পর্কে অত্যন্ত স্পষ্ট ধারণা তুলে ধরা হয়েছে।”


Rowan Philp, senior reporter, GIJN

রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমসের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। একজন বিদেশী সংবাদদাতা হিসেবে তিনি বিশ্বের দুই ডজনেরও বেশি দেশের সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি এবং সংঘাতের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

যোগাযোগ ও নেটওয়ার্কিং

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে শক্তিশালী করতে গড়ে তুলুন পেশাদারদের নিয়ে নিজের কমিউনিটি

একজন সাংবাদিক হিসেবে নেটওয়ার্ক তৈরির প্রথম ধাপ হলো, আপনি কে এবং কী ধরনের কাজ করছেন— তা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক সাংবাদিক নিয়মিত তাদের কাজগুলোকে অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি বা শেয়ার করেন না এবং তাদের আগ্রহ ও দক্ষতাকে শানিত করেন না। ডিজিটাল নেটওয়ার্কিংয়ের প্রথম ধাপ হলো একটি সঙ্গতিপূর্ণ প্রোফাইল তৈরি করা যা আপনার পেশাগত পরিচয়কে দারুণভাবে তুলে ধরে।