কীভাবে যেকোনো রিপোর্টারই এখন পৃথিবীর যেকোনো জায়গার মানসম্পন্ন ও বিনামূল্যের স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করতে পারেন
মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে, বিশেষ কোনো দক্ষতা ছাড়াই সংবাদকর্মীরা একদম বিনামূল্যে এখন পৃথিবীর প্রায় যে কোনো স্থানের স্যাটেলাইট ছবি উদ্ধারের পাশাপাশি তা ডাউনলোড করতে পারেন। ছবিগুলো উচ্চ রেজ্যুলেশনের। এ থেকে এমনকি আপনি আলাদা করে প্রতিটি ভবন চিহ্নিত করতেও সক্ষম হবেন।
যদিও কিছু বিষয় নিশ্চিত হবার উপায় নেই। যেমন, আপনার ঠিক যে তারিখের স্যাটেলাইট ছবির প্রয়োজন, ছবিগুলো ওই তারিখের হবে কিংবা সবকিছু স্পষ্টভাবে দেখা যাবে, বা মেঘের কারণে তা অস্পষ্ট হবে না।
তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সংবাদকর্মীর ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজেই যে কোনো স্থানের ছবি সংগ্রহ করতে পারার বিষয়টি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন এনে দিয়েছে, বিশেষ করে স্বল্প সামর্থ্যের বার্তা কক্ষগুলোর জন্য।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জিআইজেএনের একটি ওয়েবিনারে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। “আপনার অনুসন্ধানের জন্য কীভাবে বিনামূল্যের স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করবেন” শিরোনামের এই ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে ছিলেন অভিজ্ঞ সাংবাদিকেরা। আলোচনা করেন দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের গ্রাফিক্স রিপোর্টার কার্ল চার্চিল, মালয়েশিয়ার পুরস্কারজয়ী পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিক ইয়াও-হুয়া ল এবং ডেকার্তস ল্যাবসের সাবেক অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ার ও ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন বিশেষজ্ঞ লরা কার্টজবার্গ।
সহজে স্যাটেলাইট ছবি পাওয়ার কৌশলগুলো সম্পর্কে জানার আগ্রহের কারণে ওয়েবিনারটি সাংবাদিকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এতে ১১৪টি দেশ থেকে ৬১৬ জন সাংবাদিক অংশ নেন। জিআইজেএনের ইতিহাসে এটি অন্যতম জনপ্রিয় ওয়েবিনার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
চলমান নতুন বাস্তবতাকে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চার্চিল বলেন: “বেশিরভাগ স্যাটেলাইট ডেটা বিনামূল্যের, উন্মুক্ত এবং বৈশ্বিক।” তবে সাংবাদিকদের জন্য দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি ছিল, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্যয়বহুল উচ্চ-রেজ্যুলেশনের স্যাটেলাইট ছবি পাওয়ার বিষয়টি জানা। যেগুলো এতটাই পরিচ্ছন্ন যে একেকটি গাড়ি পর্যন্ত চিহ্নিত করা সম্ভব। আর কোনো পয়সা খরচ না করেই আপনি ছবিগুলো পেতে পারেন—যদি জানেন কীভাবে অনুরোধ জানাতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, স্বল্প লোকবলের বার্তাকক্ষগুলোর মধ্যে একটি ভুল ধারণা প্রচলিত। তাঁরা মনে করেন, কেবলমাত্র একচেটিয়া চুক্তি বা উন্নত ওপেন সোর্স ডেটা নিয়ে কাজের দক্ষতা থাকলেই এ ধরনের ফরেনসিক প্রমাণ হাতে পাওয়া যায়। আবার অনেকেই মনে করেন বেসরকারি স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলো অপরিচিত সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিনামূল্যে ছবি চেয়ে অনুরোধকে উৎসাহিত করে না।
এ নিয়ে কার্ল চার্চিল জানান, “আমরা একটি বড় মার্কিন সংবাদমাধ্যমে কাজ করি বলে অনেকে মনে করেন যে আমাদের স্যাটেলাইট ছবি পাওয়ার জন্য গোপন ও ব্যয়বহুল টুল রয়েছে। আসলে তা নয়। আমরা যে টুলগুলো ব্যবহার করি, সেগুলোর বেশিরভাগই সবার জন্য উন্মুক্ত।”
যদিও নাসা ওয়ার্ল্ডভিউ এবং ইও ব্রাউজারের মতো আরও কিছু ভালো পাবলিক পোর্টাল রয়েছে। লরা কার্টজবার্গ আরো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন, তবে সহজে ব্যবহার করা যায় এমন দুটি উপযোগী ওপেন সোর্স টুলের মধ্যে রয়েছে গুগল আর্থ প্রো এবং কোপার্নিকাস ব্রাউজার। বিশেষ করে নতুন আসা টুল কোপার্নিকাস। এ টুলগুলো সাংবাদিকদের স্যাটেলাইট ছবির প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
(যাঁরা ইও ব্রাউজারের সঙ্গে পরিচিত তাঁরা এ লিঙ্কে ক্লিক করে দেখতে পারেন যে, কোপার্নিকাসের নতুন ব্রাউজারের সঙ্গে এটির পার্থক্যগুলো কী।)

বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন স্যাটেলাইট ডেটার বৈশ্বিক পরিধি কতটা প্রশস্ত, তা এই মানচিত্রে দেখানো হয়েছে। সবুজ রঙের (উপরে) অংশগুলো দিয়ে ওইসব স্থানকে বোঝানো হয়েছে যেখানে সেনটিনেল-২ স্যাটেলাইট মধ্যম থেকে উচ্চ-রেজ্যুলেশনের ছবি তুলতে সক্ষম। এছাড়া এখানে প্রতি পাঁচ থেকে ছয় দিন পর পর একই জায়গায় ছবি তোলা হয়। ছবি: ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি
কার্ল চার্চিল উল্লেখ করেন যে, গুগল আর্থ থেকে জোড়া লাগানো খন্ড খন্ড যে ছবিগুলো আমরা পাই, সেগুলোর মধ্যে অনেক সময় উচ্চ রেজ্যুলেশনের ছবিও থাকে। যা ভূ-পৃষ্ঠের খুঁটিনাটি বৈশিষ্ট্য ও সময়ের সাথে সাথে কোন জায়গাতে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে তা বুঝতে সহায়তা করে। তবে, গুগল আর্থ আপনাকে এককভাবে স্যাটেলাইট ছবির ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দেয় না।
চার্চিলের উপস্থাপনাটি মূলত ছিল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির কোপার্নিকাস টুল নিয়ে, কারণ এটি গুগল আর্থের মতো নয়—এটি ব্যবহারকারীদের পৃথক স্যাটেলাইট ছবি ডাউনলোডের সুযোগ দেয়।
তিনি সেনেগাল-মালি সীমান্তে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি স্বর্ণখনির কেস স্টাডি ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের ছবি সংগ্রহের বিষয়টি দেখান:
- কোপার্নিকাস সেন্টিনাল-২ স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক স্বয়ক্রিয়ভাবেই দুর্দান্ত কাজ করে। মাঝারি থেকে উচ্চ, ১০-মিটার রেজ্যুলেশনের ছবি সরবরাহ করে এবং প্রতি সপ্তাহে একই জায়গার ছবি তোলে। সাধারণত স্থানীয় সময় সকালে ছবিগুলো তোলা হয়। এই টুলটি ব্যবহার করতে স্যাটেলাইট সম্পর্কে আলাদা করে বিশেষ কোনো প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। চার্চিল মন্তব্য করেন, “১০ মিটার প্রতি পিক্সেলের চেয়ে বেশি যে কোনো ছবি বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। এ ছবিগুলো ব্যবহার করে আপনি ভবনগুলো আলাদা করতে পারবেন এবং ওই জায়গায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের কি কাজ চলছে তাও বুঝতে পারবেন।”
- যদি আপনি কোপার্নিকাসের মেনুতে থাকা ক্লাউড আইকনে ক্লিক করেন, তাহলে একটি ম্যাক্স ক্লাউড কভারেজ (Max Cloud Coverage) স্লাইডার বার পাবেন। ডিজিটাল ক্যালেন্ডার ডিসপ্লের মাধ্যমে আপনি দেখতে পাবেন ওই জায়গায় কখন সেন্টিনেল স্যাটেলাইট ছবি তুলেছে। সেই দিনের মেঘের ঘনত্ব কতটা ছিল, দেখতে পাবেন তাও। (স্লাইডারের বাম পাশে আরো পরিচ্ছন্ন দিনের ছবি আছে কিনা তা দেখার মাধ্যমে আপনি আপনার ভাগ্য পরীক্ষাও করতে পারেন।) সঠিক তারিখে ক্লিক করে কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করলে ডাউনলোডযোগ্য ছবি লোড হবে।
- মেন্যুতে থাকা ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি বারগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ভিজুয়াল ইফেক্ট (যেমন- কৃত্রিম রঙ) সহজে বিশ্লেষণ করতে পারেন।
- নাম দিয়ে কিংবা নিজে নিজে সমন্বয়ের মাধ্যমে জায়গা চিহ্নিত করার পর, আপনি জুম ইন করতে পারেন—এবং ডানদিকে থাকা লেবেল ট্যাবের সাহায্যে আলাদা আলাদা জায়গার, যেমন আপনি রাস্তার ছবি চাচ্ছেন নাকি দুটি জায়গার সীমান্তবর্তী অবস্থানের তা ঠিক করতে পারবেন।
- কোপার্নিকাসের ডান দিকের মেন্যুতে গিয়ে ডাউনলোড আইকনে ক্লিক করে আপনি জেপিজি (JPG) ফাইল আকারে ছবিগুলো ডাউনলোড করতে পারেন। ছবির সাথে সময়, সূত্র এবং লেবেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে ছবিগুলো প্রকাশের সময় সূত্র উল্লেখ করতে ভুলে যাবেন না। চার্চিল উল্লেখ করেন যে, আরও উন্নত বিশ্লেষণের জন্য কোপার্নিকাসে যদি নিজের একটি একাউন্ট তৈরি করেন, তাহলে অ্যানালিটিক্যাল ট্যাবে ক্লিক করে একটি তথ্যসমৃদ্ধ টিফ ফাইল তৈরি করতে পারবেন। যা আপনি কিউজিআইএসের (QGIS)- এর মতো ডেটা সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করতে পারেন।
মাঠ পর্যায়ে রিপোর্টিং কৌশল হিসেবে স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার
তিনি আরো বলেন, যতটা সাধারণভাবে যুদ্ধ বা বন উজাড়ের মতো খবরের জন্য স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার করা হয়, বিনামূল্যে পাওয়া ওই ছবিগুলো আপনি এছাড়াও আরো বিভিন্নভাবে কাজে লাগাতে পারেন। যেমন রিপোর্টিং কৌশল হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি উপেক্ষিত ঘটনাগুলো নিয়ে কাজের জন্যও তা ব্যবহার করতে পারেন।
যেমন, অপরিচিত বা অচেনা জায়গায় যাওয়ার আগে সাংবাদিকরা কোপার্নিকাস ব্রাউজার ব্যবহার করে সেই জায়গার ছবি দেখে নিতে পারেন। জায়গাটি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। মাঠের অবস্থা দেখতে পারেন। অপ্রত্যাশিত কোনো গল্প তুলে আনার সুযোগ রয়েছে কিনা তা অনুমান করতে পারেন। অথবা কীভাবে ওই জায়গাতে পৌঁছাবেন বা ফিরে আসবেন তাও বুঝে নিতে পারেন।
মালয়েশিয়ায় একটি বনাঞ্চল দেখতে গিয়েছিলেন ইয়াও-হুয়া ল। জায়গাটি গুগলম্যাপে ছিল না, কিন্তু কোপার্নিকাস ব্যবহার করে সেখানের পথ, প্রতিবন্ধকতা আর সঠিক দূরত্ব সম্পর্কে ধারণা করাটা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল।
“আমি আমার স্থানীয় গাইডকে বললাম: ‘সামনে আমাদের এই এই বিষয়গুলো মোকাবেলা করতে হবে,’ [যাওয়ার সময়]। আমি কীভাবে এ সবকিছু জানি—আমার কথা শুনে তিনি খুব অবাক হয়েছিলেন,” তিনি স্মরণ করেন। আরো বলেন যে, “এ টুলটি আমার জন্য বেশ সহায়ক। আমি যদি কোনো অচেনা জায়গায় যাই, তাহলে অবশ্যই প্রথমে স্যাটেলাইট ইমেজে জায়গাটি দেখব।”
আরো কিছু সৃজনশীল কাজেও আপনি টুলটিকে ব্যবহার করতে পারবেন:
দাবি যাচাই: “কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যখন দাবি করা হয় যে, তাঁরা দূরের একটি এলাকাতে বিভিন্ন কাজ করেছে, স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে আমরা ওই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারি, ইয়াও-হুয়া ল ব্যাখ্যা করেন।
- ভূমির ঢাল পরিমাপ: কোপার্নিকাসে রয়েছে চমৎকার এলিভিশন প্রোফাইল ফিচার। ছবির ওপর লাইন টানলে দ্বিমাত্রিক গ্রাফ ফুটে ওঠে, যেটির মাধ্যমে উঁচু-নীচু ঢাল, উপত্যকা এবং সমতল পথ চিহ্নিত করা যায়। টপোগ্রাফিক্যাল (ভূসংস্থান সংক্রান্ত) বিশ্লেষণের মাধ্যমে যেমন নিশ্চিত করা যায় যে, এটি কী বালির স্তূপ, নাকি গর্ত।
- বড় কোনো জায়গার ভিজ্যুয়াল ট্যুর: গুগল আর্থ এবং হাতে আঁকা রেখা ব্যবহার করে ইয়াও-হুয়া ল হাতে কলমে দেখিয়েঝেন কীভাবে স্যাটেলাইট ইমেজ কাজ করে। ধরুন সরকারের পক্ষ থেকে প্রকৃতির সুরক্ষার জন্য সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে নদীর দুই পাশে ৫০ মিটার করে সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হলো। স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে আপনি জানতে পারবেন, ঠিক কতগুলো ব্যবসা ও অবকাঠামো এর আওতায় পড়বে।
- ভূমির ব্যবহার কেমন বদলেছে তা পর্যবেক্ষণ করা: অংশগ্রহণকারীদের ২০১৭ সালের একটি ছবির ওপর ২০২৪ সালের ছবি বসিয়ে দেখানো হয় যে, উপকূল ক্ষয়ের কারণে মালয়েশিয়ার একটি উপকূলের ১৫ মিটার জায়গা হারিয়ে গেছে।

কোপার্নিকাস ইমেজারি টুল মূলত ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সিন্টিনাল-২ স্যাটেলাইট থেকে ছবি ব্যবহার করে। ছবি: স্ক্রিনশট, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি, ইএসএ
বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট ছবি সরবরাহকারীদের কাছে কীভাবে অনুরোধ জানাবেন
আপনার অনুসন্ধানের জন্য যদি নির্দিষ্ট সময়ের কোনো ছবি কিংবা গাড়ি বা গাড়ির আকারের মতো কোনো বস্তুর ছবির প্রয়োজন হয়, তাহলে এক মিটার বা এর কম রেজোলিউশনের ছবি লাগবে। সাধারণত অর্থ খরচ করে তাদের কাছ থেকে ওই ছবি আপনাকে নিতে হবে। সামরিক উপগ্রহ ছাড়া এমন উচ্চ-রেজ্যুলেশেনর ছবি কেবল বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোই সংগ্রহ করে, যেমন প্ল্যানেট ল্যাবস, ম্যাক্সার টেকনোলজিস, এয়ারবাস আর্থ অবজারভেশন এবং ব্ল্যাকস্কাই।
বড় ধরনের বৈশ্বিক কোনো ঘটনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছায় সাংবাদিকদের জন্য বিনামূল্যে উচ্চ-রেজ্যুলেশনসমৃদ্ধ কিছু প্রাথমিক ছবি পাঠায়। তবে এসব ছবি পেতে হলে রিপোর্টারদের আগে থেকেই ওই কোম্পানিগুলোর প্রেস তালিকায় সাইন আপ করতে হয়।
“প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো না জানলেও সমস্যা নেই। অনেক সময় এসব প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা সাংবাদিকদের জন্য কাটখোট্টা ওই বিষয়গুলো বিশ্লেষণে সহায়তা করেন,” বলেন লরা কার্টজবার্গ, ডেসকার্টেস ল্যাবসের সাবেক অ্যাপ্লিকেশন ইঞ্জিনিয়ার
অন্যান্য ক্ষেত্রে, বিনামূল্যে ছবি পেতে হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিপণন বা যোগাযোগ বিভাগের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এই খাতে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে কার্টজবার্গ পরামর্শ দেন: “আপনি অবশ্যই যোগাযোগ করুন!”
কার্টজবার্গ বলেন যে, “একটি ইমেল পাঠানো বা তাদের যোগাযোগ ফর্ম পূরণ করাটা কাজে দেয়। কারণ অনেক সময় কোম্পানিগুলো চায় যে ছোট, স্থানীয় এবং বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকরা তাদের ছবি ব্যবহার করুক। কেননা এটি কোম্পানির পরিচিতি বাড়াতে এবং ভালো ভাবমূর্তি গড়তে সাহায্য করে।”
তিনি আরো পরামর্শ দেন যে, প্রাথমিক অনুরোধে প্রযুক্তিগত বিস্তারিত বিষয়গুলো উল্লেখ না করাই শ্রেয়। যেমন নির্দিষ্ট রেজ্যুলেশন বা মেঘের ঘনত্বের হার, উল্লেখ না করাই ভালো।
“বিনয়ের সাথে অনুরোধ করুন, আপনি এই ছবিগুলো দিয়ে কী করতে চান তা ব্যাখ্যা করুন, আপনার বার্তাকক্ষ এবং আপনি দারুণ যে প্রকল্পটি নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছেন তা বর্ণনা করুন, তবে ইমেলটি সংক্ষিপ্ত রাখুন,” তিনি বলেন। এ সময় তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, “প্রযুক্তিগত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত না জানলেও সমস্যা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা প্রায়ই তা ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করেন।”
এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে জিআইজেএনের “টিপশিট ফর অ্যাকয়ারিং ফ্রি স্যাটেলাইট ইমেজেস” গাইডের “ডিলিং উইথ কমার্শিয়াল প্রোভাইডারস” অংশটি দেখুন। যেখানে কার্টজবার্গ ও ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ড্যানিয়েল ওলফের বিভিন্ন পরামর্শ পাবেন। আরো রয়েছে দরকারি ইমেল এবং স্যাটেলাইট “টাস্কিং” সম্পর্কিত তথ্য।
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমসের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। একজন বিদেশী সংবাদদাতা হিসেবে তিনি বিশ্বের দুই ডজনেরও বেশি দেশের সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি এবং সংঘাতের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং আফ্রিকার নিউজরুমের জন্য।