Electron microscope image of the Monkeypox virus. Image: CDC
মাঙ্কিপক্স অনুসন্ধান: এক্সপ্লেইনার ও রিসোর্স টিপশিট
মাঙ্কিপক্স একটি সংক্রামক রোগ, যা মানবদেহে ছড়ায় মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের মাধ্যমে। ৭০ বছর আগে রোগটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। প্রাণী থেকে মানুষ এবং মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ফলে ভাইরাসটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, একদল অণুজীব গবেষক বাড়তে থাকা এই সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন, কিন্তু গেল মে মাসে যুক্তরাজ্যে এটি আঘাত হানার আগপর্যন্ত তাঁদের প্রতিবেদনগুলো তেমন খেয়ালই করা হয় নি।
৯০টির বেশি দেশে এখন এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
“কয়েক দশক ধরে ভাইরাসটি [আফ্রিকার] প্রান্তিক ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মাঝে ছড়িয়েছে, আর এ নিয়ে আমরা কিছুই করিনি,” গত জুলাইয়ে এনপিআরকে বলেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের এপিডেমিওলজির (রোগতত্ত্ব বিদ্যা) অধ্যাপক ডক্টর অ্যান রিমোইন।
২০২২ সালের জুলাই মাসে নেচার রিভিউস মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত একটি মন্তব্যধর্মী নিবন্ধে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব নাইজেরিয়া ইন ইয়োলার দুই গবেষক লিখেছেন: যে দেশগুলোতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এন্ডেমিকে রূপ নেয়নি, সেসব দেশে মাঙ্কিপক্সের বর্তমান প্রাদুর্ভাব খুব সম্ভবত “আফ্রিকার আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে কয়েক দশক ধরে এই রোগের চলমান প্রাদুর্ভাব ঠেকানোয় ব্যর্থতার পরিণতি।”
এ বছরের এপ্রিল ও জুনের মধ্যে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন (এনইজেএম)-এ প্রকাশিত মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ে একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, “মাঙ্কিপক্স ভাইরাস কয়েক দশক ধরে কিছু অঞ্চলে এমনভাবে ছড়িয়েছে যে সেটি স্থায়ী রূপ (এন্ডেমিক) পেয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও মাঙ্কিপক্স নিয়ে গবেষণায় গুরুত্ব দেয়া হয়নি, পর্যাপ্ত অনুদানও আসেনি।”
২৩শে আগস্ট পর্যন্ত, ৯৪টি দেশে ৪১,০০০ জনেরও বেশি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছে এবং অন্তত এক ডজন মৃত্যুর খবর এসেছে, যার মধ্যে ৮৭ টি দেশে আগে কখনো মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটেনি। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর তথ্যানুযায়ী, কারো মৃত্যুৃর খবর না মিললেও যুক্তরাষ্ট্রে ১৪,১00 টিরও বেশি সংক্রমনের ঘটনা সনাক্ত হয়েছে।
২৩ শে জুলাই, যুক্তরাজ্য প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খবর জানানোর প্রায় দুই মাস পর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্সকে স্বাস্থ্য বিষয়ক বৈশ্বিক জরুরী অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করে – যেটিকে পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন, বা পিএইচইআইসি বলা হয়। সংস্থাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ও টিকা বিষয়ে প্রয়োজনীয় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি সনাক্ত হয় ১৮ মে, ম্যাসাচুসেটসে। এরপর দেশটি গত ৪ আগস্ট, দেশব্যাপী জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, যা প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ফেডারেল তহবিল ব্যবহারের অনুমতি দেয় প্রশাসনকে।
এই প্রাদুর্ভাব নিয়ে চলমান সাংবাদিকতায় সহায়তার জন্য আমরা মাঙ্কিপক্স বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য ও পিয়ার রিভিউড গবেষণা এক জায়গায় করেছি। যেমন, আপনি নিচে উলি্লখিত গবেষণাগুলোতে দেখতে পাবেন: বিজ্ঞানীরা চলতি এই প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্ক করে আসছেন; বছরের পর বছর ধরে আরও গবেষণা ও ভালো নজরদারির আহ্বান জানাচ্ছেন । যত নতুন নতুন তথ্য ও গবেষণা সামনে আসবে, আমরা লেখাটি ততই হালনাগাদ করতে থাকব।
প্রথমেই, মৌলিক বিষয়গুলো দিয়ে শুরু করা যাক।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: ১৯৫৮ সালে মাঙ্কিপক্স প্রথম সনাক্ত হয় বানরের মধ্যে। পোলিওর টিকা নিয়ে গবেষণার জন্য বানরগুলোকে সিঙ্গাপুর থেকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে পাঠানো হয়েছিল। তখন গবেষকেরা এটিকে বসন্তের মতো রোগ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। পরবর্তী বছরগুলোতে এটির “মাঙ্কিপক্স” নামকরণ করা হলেও, সিডিসির তথ্যানুযায়ী, রোগটির উৎস এখনও অজানা। আফ্রিকান ইঁদুর ও বানরের মতো অ-মানব কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীপ্রজাতির মধ্যে ভাইরাসটি বাসা বাঁধতে পারে এবং মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের প্রথম ঘটনা দেখা যায় ১৯৭০ সালে, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে। সেবার আক্রান্ত হয়েছিল নয় মাস বয়সী একটি শিশু।
ভাইরাস: মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি পক্সভিরিডি পরিবারের অর্থোপক্সভাইরাস গণের সদস্য এবং গুটিবসন্ত ও কাউপক্স ভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। মাঙ্কিপক্স, গুটিবসন্তের তুলনায় কম সংক্রামক এবং এতে অসুস্থতা তুলনামূলক কম গুরুতর হয়ে থাকে। (১৯৮০ সালে বিশ্বব্যাপী স্মলপক্স নির্মূলের ঘোষণা এসেছিল। চিকেনপক্স এসেছে হার্পিসভিরিডি নামের একটি ভিন্ন ভাইরাস পরিবার থেকে।)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাদুর্ভাবের ইতিহাস: আফ্রিকার বাইরে মাঙ্কিপক্সের প্রথম প্রাদুর্ভাব নথিভুক্ত হয়েছিল ২০০৩ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেসময় ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা, কানসাস, মিসৌরি, ওহাইয়ো এবং উইসকনসিনে ৮১টি ঘটনা সনাক্ত হওয়ার কথা জানা যায়। ঘানা থেকে আসা একটি পশুর চালানের সঙ্গে সংক্রমণটির সংযোগ টানা হয়েছিল। ২০২১ সালে, নাইজেরিয়া-ফেরত এক মার্কিন নাগরিক সংক্রমিত হন বলে নথিভুক্ত হয়েছিল।
সংক্রমণ: কোন প্রজাতিগুলোর মধ্যে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত বেঁচে থাকে ও বংশবিস্তার করে– তা এখনো গবেষকদের কাছে অজানা। তবে বেশ কয়েকটি প্রাণী প্রজাতি এই ভাইরাসের সহজ শিকার হতে পারে, যার মধ্যে আছে ডোরাকাটা কাঠবিড়ালি ও গাছে থাকা কাঠবিড়ালি, গাম্বিয়ান ধেঁড়ে ইঁদুর, ডর্মিস নামের ইঁদুর এবং অন্যান্য কিছু অ-মানব স্তন্যপায়ী প্রাণী-প্রজাতি (বানর)।
প্রাণী থেকে মানুষে ভাইরাসের সংক্রমণ – যেটিকে প্রাণিবাহিত সংক্রমণ বা জুনোটিক ট্রান্সমিশনও বলা হয় – ঘটতে পারে রক্ত, শারীরিক তরল বা সংক্রমিত প্রাণীর ক্ষতের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটতে পারে নাক ও মুখ দিয়ে নিঃসৃত জলীয় কণা বা ড্রপলেটের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ, সংক্রমিত ব্যক্তির ত্বকের ক্ষত বা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বিছানাপত্রের মতো জিনিস থেকে। সন্তান জন্মদানের সময় নাড়ির মাধ্যমে মা থেকে সন্তানের মধ্যেও এটি সংক্রমিত হতে পারে।
শ্বাসযন্ত্রের জলীয় কণার মাধ্যমে সংক্রমণের জন্য সাধারণত দীর্ঘ সময়ের মুখোমুখি অবস্থান থাকতে হয়। ফলে স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবারের সদস্য ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠজনেরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
সর্বশেষ তথ্য মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ সমকামী পুরুষ, উভকামী পুরুষ এবং পুরুষদের সঙ্গে যৌন মিলনে অভ্যস্ত পুরুষেরা। কিন্তু সিডিসির তথ্যানুযায়ী, যৌনাচার বা লিঙ্গ পরিচয় যাই হোক না কেন, যার সঙ্গেই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে – এমন যে কেউই ঝুঁকিতে রয়েছেন।
উপসর্গ: মাঙ্কিপক্সের চলমান প্রাদুর্ভাবের উপসর্গগুলোর মধ্যে একটি হলো: যৌনাঙ্গ বা মলদ্বারের উপর বা কাছাকাছি ফুসকুড়ি ওঠা। এটি হাত, পা, ঠোঁট, মুখ ও বুকেও হতে পারে। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে আছে: জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি, পেশী ব্যথা, মাথাব্যথা এবং গলা ব্যথা। অসুস্থতা দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয়।
মৃত্যুর হার: কয়েক দশক ধরে, মাঙ্কিপক্স সংক্রমণে মৃত্যুর হার শূন্য থেকে ১১% পর্যন্ত থাকে, তবে গবেষকদের হিসেবে, বর্তমান প্রাদুর্ভাবে মৃত্যুর হার প্রায় 0.0৩%।
চিকিৎসা: মাঙ্কিপক্সের জন্য কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে সিডিসির মতে, দুর্বল রোগ প্রতিরোধসম্পন্ন রোগীদের মতো যারা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় বেশি থাকে, তাদের জন্য টেকোভিরিম্যাট (টিপিওএক্সএক্স) এর মতো অ্যান্টিভাইরাল সুপারিশ করা যেতে পারে।
টিকা: মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটিবসন্তের টিকা ৮৫% কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একমাত্র এফডিএ- অনুমোদিত টীকা হলো ব্যাভারিয়ান নর্ডিক এ/এস উৎপাদিত জাইনিওস। (জাইনিওস ইউরোপে ইমভানেক্স এবং কানাডায় ইমভামিউন নামে পরিচিত।) গুটিবসন্ত ও মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই টিকা প্রথম অনুমোদিত হয়েছিল। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরাও এই টিকা নিতে পারেন। ভাইরাস সংক্রমণের চার দিনের মধ্যে টিকা দেয়ার পরামর্শ দেয় সিডিসি। এসিএএম২০০০ হলো গুটিবসন্ত প্রতিরোধে এফডিএ-অনুমোদনপ্রাপ্ত আরেকটি টীকা, তবে জাইনিওসের তুলনায় এই টীকার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বেশি। মাঙ্কিপক্স টীকার সহজলভ্যতা নিয়ে আরও জানতে, পড়ুন জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটিতে প্রকাশিত ১৭ই আগস্টের মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাব সতর্কতা। এসিএএম২০০০ বর্তমানে কেন ব্যবহার করা হয় না, তা নিয়ে ভক্স-এ প্রকাশিত কেরেন ল্যান্ডম্যানের লেখাতেও ভালো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আর রোগতত্ত্ববিদ ক্যাটলিন জেটেলিনার লেখা মাঙ্কিপক্স ভ্যাকসিন ১০১ – এ বিষয়ের ওপর একটি ভালো সামগ্রিক পর্যালোচনা।
কাইজার ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের জুলাই মাসের একটি প্রতিবেদনে খতিয়ে দেখেছে, স্থানীয় পর্যায় থেকে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত টীকা চাওয়া হচ্ছে কি না। সেখানে দেখা যায়, জাইনিওসের জন্য অনুরোধের হারে অঞ্চলভেদে ব্যাপক পার্থক্য আছে। বেশিরভাগ অঞ্চলই তাদের জন্য বরাদ্দকৃত টীকার পুরোটাই দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। অন্যদিকে কেউ কেউ সেখান থেকে একটি অংশ পাওয়ার আবেদন জানিয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় দশটি রাজ্য – ওয়াশিংটন, মিসৌরি, কানসাস, জর্জিয়া, নেভাডা, মন্টানা, সাউথ ডাকোটা, ওকলাহোমা, কেনটাকি এবং আরকানসাস – তাদের জন্য বরাদ্দকৃত টীকার ৫0% বা তার কম অংশের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল।
ভাইরাসের নাম বদল: জুন মাসে ২২ জন বিজ্ঞানীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠিসহ আরও অনেক গ্রুপের কাছ থেকে অনুরোধের পর ভাইরাসটির নাম বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
গ্রুপটি লিখেছে, “আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বৈজ্ঞানিক লেখালেখিতে আসা প্রচলিত ধারণা হল, এমপিএক্সভি [মাঙ্কিপক্স ভাইরাস] কিছু আফ্রিকান দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, প্রতিষ্ঠিত সত্য হলো, ২০২২ সালের আগে আফ্রিকাতে এমপিএক্সভি- এর প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে প্রাণী থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার ফলে। এবং খুব কম ক্ষেত্রে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ঘটনা জানা যায়। চলমান বৈশ্বিক মহামারীর প্রেক্ষাপটে, এই ভাইরাসের সূত্রপাত আফ্রিকায় হওয়ার কথা সবসময় চাউর করা এবং আফ্রিকান ভাইরাস নামকরণ কেবল ভুলই নয়, বৈষম্যমূলক এবং কলঙ্কিত করার চেষ্টাও বটে।”
ডব্লিউএইচও ইতিমধ্যে ভাইরাসের দুটি ভ্যারিয়েন্টের নাম পরিবর্তন করেছে। প্রাক্তন কঙ্গো বেসিন ভ্যারিয়েন্টের নাম বদলে রাখা হয়েছে ক্লেড ওয়ান (I) এবং পশ্চিম আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টটি ক্লেড টু (II)। ক্লেড একটি বৈজ্ঞানিক শব্দ যা একটি সাধারণ পূর্বসূরী থেকে বিবর্তিত জীবসত্তার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
গবেষণা সংকলন
ডেভিড ফিলপট; প্রমুখ। সিডিসির মরবিডিটি অ্যান্ড মর্টালিটি উইকলি রিপোর্ট, আগস্ট ২০২২।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালের ১৭ই মে, যুক্তরাষ্ট্রে মানবদেহে প্রথম সংক্রমণ সনাক্ত হওয়ার দিন থেকে ২২শে জুলাইয়ের মধ্যে দেশটিতে ১,১৯৫ জনের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। এদের ৯৯%-ই পুরুষ এবং তাদের মধ্যে ৯৪% লক্ষণ শুরু হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে সমকামী যৌন সংসর্গ করেছেন। তাদের প্রায় ৪১% শেতাঙ্গ, ২৮% হিস্পানিক বা লাতিন, ২৬% কৃষ্ণাঙ্গ এবং ৫% এশীয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, যৌনাঙ্গে ফুসকুড়ির লক্ষণ ছিল সাধারণ। যদিও এটি দেখা গেছে অর্ধেকের কম আক্রান্তদের ক্ষেত্রে। ৩৬% ব্যক্তির শরীরে চার বা ততোধিক জায়গায় ফুসকুড়ি ছিল। আর প্রায় ৪১% রোগী ছিলেন এইচআইভি আক্রান্ত।
“মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সনাক্ত হওয়াদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আগে এইচআইভি আক্রান্ত ছিলেন এবং এই ব্যক্তিদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের প্রভাব সনাক্তের চেষ্টা চলছে,” প্রতিবেদনটিতে লিখেছেন এর লেখকেরা। “মাঙ্কিপক্স বিষয়ক জানাশোনা, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে জড়িত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উচিত এইচআইভি সংক্রমণ, যৌন সংক্রমণ, মাদকাসক্তি এবং সংক্রামক হেপাটাইটিসসহ সমকামী ও উভকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে অন্যান্য যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়– সেসবের জন্যও সুপারিশকৃত পদক্ষেপ অন্তর্ভূক্ত করা।”
অমূল্য ভুসিরিকালা; প্রমুখ সিডিসির ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নাল, আগস্ট ২০২২।
লন্ডনের ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির গবেষকদের প্রকাশিত এই সমীক্ষা করা হয়েছে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ৪৫ জন রোগীর ফোন সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে। সমীক্ষার সময়কাল ছিল ২৫ থেকে ৩০ মে, ২০২২৷ সেখানে একজন বাদে বাকি সবাই সমকামী বা উভকামী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। প্রায় এক-চতুর্থাংশ এইচআইভিতে আক্রান্ত ও চিকিৎসাধীন আছেন। ৬৪ শতাংশ রোগী লক্ষণ প্রকাশের আগের তিন সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্যিক যৌনতার স্থানগুলোতে; যেমন বাথহাউস, বা উৎসব, ব্যক্তিগত সেক্স পার্টি বা ক্রুজিং গ্রাউন্ডে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। ক্রুজিংকে লেখকেরা সংজ্ঞায়িত করেছেন উন্মুক্ত স্থানে অপরিচিত মানুষের সঙ্গে যৌন কার্যকলাপ হিসেবে। তবে, ৩৬% উত্তরদাতা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন না। বরং তারা নতুন সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সংসর্গে জড়িয়েছিলেন বা ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিচিত হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, “আমাদের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ইংল্যান্ডে অন্তত ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ঘরোয়াভাবে নিয়মিত এমপিএক্সভি [মাঙ্কিপক্স ভাইরাস] সংক্রমণ হচ্ছে জিবিএমএসএম [সমকামী, উভকামী পুরুষ এবং পুরুষদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত পুরুষ] কমিউনিটির নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে। এবং ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও এটির ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য, যে জায়গাগুলোতে সংক্রমণ হয় এবং সেখানে যাতায়াতকারীদের জন্য পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। কাপড়চোপড়, আসবাব ইত্যাদি যেসব জিনিসের মাধ্যমে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে– সেগুলোর পরিচ্ছন্নতা বাড়ানো, সচেতনতা তৈরি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানাতে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচার, এবং জায়গাগুলোতে যাতায়াতকারীদের কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ে সহায়তার জন্য উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ উল্লেখযোগ্য।”
দুটি কাছাকাছি ধরনের গবেষণা: ২০২২ সালের জুলাইয়ে দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে প্রকাশিত নিকোলো গিরোমেটি প্রমুখের গবেষণা নিবন্ধ “ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড ক্লিনিকাল ক্যারেক্টারিস্টিকস অব কনফার্মড হিউম্যান মাঙ্কিপক্স ভাইরাস কেসেস ইন ইনডিভিজ্যুয়ালস অ্যাটেন্ডিং এ সেক্সুয়াল হেলথ সেন্টার ইন লন্ডন, ইউকে: অ্যান অবজারভেশনাল অ্যানালাইসিস,” এবং ২০২২ সালের জুলাইয়ে দ্য ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত অতীশ প্যাটেল প্রমুখের গবেষণা নিবন্ধ “ক্লিনিকাল ফিচারস অ্যান্ড নোভেল প্রেজেন্টেশনস অব হিউম্যান মাঙ্কিপক্স ইন এ সেন্ট্রাল লন্ডন সেন্টার ডিউরিং দ্য ২০২২ আউটব্রেক: ডেস্ক্রিপ্টিভ কেস সিরিজ।”
“টেকোভিরিম্যাট অ্যান্ড দ্য ট্রিটমেন্ট অব মাঙ্কিপক্স – পাস্ট, প্রেজেন্ট, অ্যান্ড ফিউচার কনসিডারেশন্স”
ড. অ্যাডাম শেরওয়াত, জন ব্রুকস, ডেবরা বার্নক্রান্ট এবং পিটার কিম। এনইজেএম, আগস্ট ২০২২।
সংক্ষিপ্ত এই নিবন্ধটি অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ টেকোভিরিম্যাট (টিপিওএক্সএক্স) ব্যবহারের সুক্ষ্ম বিষয় নিয়ে আলোচনা তুলে ধরে। “প্রাণী আইন” নামে পরিচিত একটি আইনে গুটিবসন্তের চিকিৎসার জন্য ঔষধটিকে অনুমোদন দেয়া হয় আর সেই সঙ্গে একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে: “মানবদেহের জন্য কতটা নিরাপদ ও কার্যকর, তা নিয়ে সংশয় থাকার পরও এমন একটি ঔষধের ব্যবহারে এতটা আকুলতা কীভাবে সামলানো যায়।”
“টেকনিকাল রিপোর্ট: মাল্টি-ন্যাশনাল মাঙ্কিপক্স আউটব্রেক, ইউনাইটেড স্টেটস, ২০০২”
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, জুলাই ২০২২।
এই প্রতিবেদনে ২৫শে জুলাই, ২০২২ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের একটি সামগ্রিক পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে ৪৫টি রাজ্য, ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া ও পুয়ের্তো রিকোতে সনাক্ত হওয়া ৩,৪৮৭ জনের তথ্য অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। রোগীদের বয়সের গড় ছিল ৩৫ বছর। জন্মের সময় লিঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য দেয়া হয়েছিল এমন ১,৩৮৩ জন রোগীর ৯৯% পুরুষ। যৌন কার্যকলাপ সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া ৬২৪ জনের মধ্যে ৯৯% পুরুষে-পুরুষে যৌন সংসর্গের কথা জানিয়েছেন। একটি বড় অংশের জাতিগত ও নৃতাত্ত্বিক তথ্য ছিল না, তবে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ৩৮% শ্বেতাঙ্গ, ৩২% হিস্পানিক এবং ২৬% কৃষ্ণাঙ্গ।
প্রাথমিক রোগীদের মধ্যে অনেকেই উপসর্গ দেখা দেয়ার ২১ দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কথা জানিয়েছেন, যেসব দেশে মাঙ্কিপক্স স্থায়ীভাবে ছড়ায়নি সেখানেও তারা গিয়েছেন। অনেকে বড় উৎসব ও অন্যান্য কার্যক্রমে অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন যেখানে ঘনিষ্ঠ, ব্যক্তিগত, ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শের আসার সম্ভাবনা আছে।
প্রতিবেদনটিতে বেশ কিছু অগ্রাধিকারভিত্তিক গবেষণা প্রশ্নের তালিকা করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে: কী কী চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে, কীভাবে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয় এবং কীভাবে ভুল- ও বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করা যায় এবং সেগুলো ঠেকানো যায়।
আইদা পেইরো-মেস্ট্রেস; প্রমুখ। ইউরোসার্ভেইলেন্স, জুলাই ২০২২।
১২ জন রোগীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সংগৃহীত ১৪৭টি ক্লিনিকাল নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিটি নমুনার থুতুতে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল। অনেক সময় মলদ্বারের সোয়াব, নাকের সোয়াব, বীর্য, প্রস্রাব ও মলেও এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটির লেখকেরা লিখেছেন, “আমাদের এই ফলাফলগুলো সম্ভাব্য জটিল এই সংক্রমণ সংক্রান্ত ধাঁধা আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। এবং গবেষণার জন্য অন্যান্য জরুরি খাতগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরবে। যেমন শারীরিক তরলের মাধ্যমে সংক্রমণ, সেকেন্ডারি ও উপসর্গবিহীন পর্যায়ে সংক্রমণের হার বা সংক্রমণ ত্বরান্বিত করে এমন সামাজিক ও আচরণগত প্রভাব।”
“দ্য চেঞ্জিং এপিডেমিওলজি অব হিউম্যান মাঙ্কিপক্স – এ পটেনশিয়াল থ্রেট? এ সিস্টেমেটিক রিভিউ”
এভিলিন বাঞ্জ; প্রমুখ। প্লোস নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজেস, ফেব্রুয়ারি ২০২২।
চলমান প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার কিছু আগে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে মাঙ্কিপক্স সংক্রান্ত বিদ্যমান গবেষণাগুলোর একটি পদ্ধতিগত পর্যালোচনা করা হয়েছিল। এটি ছিল সেসব গবেষণাগুলোর অন্যতম, যেগুলো মাঙ্কিপক্সের জনস্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল।
লেখকেরা এখানে লিখেছেন, “গুটিবসন্তের টিকা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর এ ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে, যা মাঙ্কিপক্সের মাথা চাড়া দেয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। মহামারির ঝুঁকির বর্তমান পরিবেশের প্রেক্ষিতে, মাঙ্কিপক্স রোগের জনস্বাস্থ্যগত গুরুত্বকে হেলাফেলা করা উচিত নয়। বারবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকা রোগটির ক্রমাগত পরিবর্তনশীল রোগতত্ত্ব বোঝার ক্ষেত্রে আবশ্যক টুল হল মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের ঘটনা সনাক্ত ও নজরদারি বাড়ানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তা।”
“হিউম্যান মাঙ্কিপক্স – আফটার ফোরটি ইয়ারস, অ্যান আনইনটেন্ডেড কনসিকুয়েন্স অব স্মলপক্স ইরাডিকেশন”
কার্ল সিম্পসন; প্রমুখ। ভ্যাকসিন, জুলাই ২০২০।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালে গুটিবসন্ত নির্মূলের পর থেকে, এখনকার বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় ৭0% আর গুটিবসন্ত থেকে সুরক্ষিত নয় এবং মাঙ্কিপক্স থেকেও সুরক্ষিত নয়, যেটি একই ভাইরাস পরিবারের একটি পুনরায় ফিরে আসা রোগ।
“মাঙ্কিপক্সকে ‘আরেকটি অবহেলিত রোগ’ হিসেবে দেখা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী নজরদারি বৃদ্ধির একটি কারণ হলো বৈশ্বিক ভ্রমণ এবং প্রত্যন্ত ও সম্ভাব্য মাঙ্কিপক্স-আক্রান্ত অঞ্চলে সহজ প্রবেশাধিকার,” লিখেছেন লেখকেরা। “মাঙ্কিপক্স এখন আর মোটেই বিরল কোনো রোগ নয়, ফলে ভাইরাস বহনকারী জীবদেহ, সংক্রমণের সম্ভাবনা ও মানুষের ক্ষেত্রে তীব্রতা’ ইত্যাদি নিয়ে আরও ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন আছে।”
ড. এসকিল্ড পিটারসেন; প্রমুখ। ইনফেকশাস ডিজিজ ক্লিনিক্স অব নর্থ আমেরিকা, ডিসেম্বর ২০১৯।
গবেষণাটি কয়েক দশক ধরে মাঙ্কিপক্স ও একই ধরনের সংক্রমণের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে এবং জোর দেয় যে, মাঙ্কিপক্স “এখন আর ‘কোনো বিরল ভাইরাল প্রাণীবাহিত রোগ নয়, যা কেবল মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইনফরেস্টের কাছে ছড়ায়’।”
এলেন বিয়ার ও ভি ভার্গবি রাও। প্লোস নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজেস, অক্টোবর ২০১৯।
এই প্রতিবেদনে ১৯৭২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকাশিত পরিস্থিতি ভিত্তিক প্রতিবেদন, অনুসন্ধান এবং কেস রিপোর্টসহ ৭১টি নথি পর্যালোচনা করা হয়েছে। গবেষণাটিতে প্রাপ্ত ডেটার বিশদ বিশ্লেষণ উঠে এসেছে।
লেখকেরা উল্লেখ করেছেন যে, অল্প কিছু গবেষণাই করা হয়েছে ভাইরাসের নমুনার ভিত্তিতে। “সামগ্রিকভাবে, নমুনার তথ্য কদাচিৎ নেওয়া হয়, এবং খুব অল্প কেসই পরীক্ষাগারে-নিশ্চিত করা হয়েছে,” তাঁরা লিখেছেন। “উপযুক্ত কেস ব্যবস্থাপনা ও জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে মাঙ্কিপক্স সংক্রান্ত গবেষণা পরিস্থিতি আরও উন্নত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রাদুর্ভাবের তথ্য সংগ্রহের উল্লেখযোগ্য মানোন্নয়ন প্রয়োজন।”
ডিমি ওগোইনা; প্রমুখ। প্লোস ওয়ান, এপ্রিল ২০১৯।
গবেষণাটিতে ২০১৭ সালে নাইজেরিয়ায় মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়েছে। ১৯৭০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে নাইজেরিয়ায় মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের তিনটি ঘটনার কথা জানা গেলেও ২০১৭ সালে বড় প্রাদুর্ভাবের ঘটনা ঘটে, যেখানে ২২৮টি কেস সনাক্ত করা হয়। গবেষকেরা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মধ্যে নাইজার ডেল্টা ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে ২১ টি ঘটনার ক্লিনিকাল বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করেছেন। ৬ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত, আক্রান্তদের গড় বয়স ছিল ২৯ বছর। প্রায় ৮0% ছিল পুরুষ ।
বেশিরভাগ রোগী, হাসপাতালের কর্মচারী, সমাজ ও পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে অপবাদ ও বৈষম্যের শিকার হওয়ার ভয় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, লেখক জানান।
হাসপাতালের সাড়াদানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেরি করা, কারণ প্রাদুর্ভাব শুরুর সময় নাইজেরিয়ার কোনও ল্যাব সংক্রমণের পরীক্ষা করতে পারেনি।
“নাইজেরিয়ায় প্রধান সংক্রমণ হয় তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে এবং ব্যক্তি-থেকে-ব্যক্তিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ হয়েছিল উল্লেখযোগ্যভাবে” লেখকের লেখায় উঠে আসে। “এই ফলাফল মাঙ্কিপক্সে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আগের প্রতিবেদনগুলো থেকে আলাদা … যেখানে ৮৩% ছিল ১০ বছরের কম বয়সী শিশু এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ছিল বিরল।”
লেখকেরা দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ বলতে শ্বাসযন্ত্র থেকে নির্গত জলীয় কনা, রোগীদের সংক্রমিত অংশের সংস্পর্শ অথবা বিছানার মতো রোগীর আক্রান্ত স্থানের সংস্পর্শ থেকে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমণকে বুঝিয়েছেন।
তাঁরা আরও জানান, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের যৌনাঙ্গে আলসার ছিল, যা আগের রিপোর্ট করা কেসগুলোর ক্ষেত্রে কম দেখা গেছে। “তবে মানুষের মাঙ্কিপক্স সংক্রমণে যৌনাঙ্গ থেকে নিঃসরণের ভূমিকা নিয়ে আরও গবেষণার দাবি রাখে।”
লেইশা ডায়ান নোলেন; প্রমুখ। সিডিসির এমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নাল, জুন ২০১৬।
গবেষণাটিতে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোয় মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে, যেখানে সংক্রমণটি স্থানীয় পর্যায়ে স্থায়ী রূপ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সনাক্ত হওয়া ১০৪টি কেসের তুলনা করা হয়েছিল ২০১২ সালের ১৩টি এবং ২০১১ সালের ১৭টি কেসের সঙ্গে। ৫0% ক্ষেত্রে ভাইরাসটি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। রোগীদের গড় বয়স ছিল ১০ বছর এবং তাদের বয়স ছিল ৪ মাস থেকে ৬৮ বছরের মধ্যে। প্রায় ৫৭% ছিল পুরুষ। সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়। সংক্রমণগুলো সম্ভবত বন্য প্রাণী বা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কারণে হয়েছিল।
“এই গবেষণায় আক্রান্ত ও সংক্রমণের উচ্চ হার নজরদারির গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয় এবং মাঙ্কিপক্স কেসের দ্রুত সনাক্তকরণে জোর দেয়,” লেখক বলেন। “প্রকোপের সময় এমপিএক্সভি সংক্রমণ রোধকল্পে গোষ্ঠীভিত্তিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।”
আরও যা পড়তে পারেন
- ২০২২ সালের জুনে স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হোয়াট ইউ নিড টু নো অ্যাবাউট দ্য হিস্ট্রি অব মাঙ্কিপক্স শীর্ষক নিবন্ধে মাঙ্কিপক্সের ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন সিমার বাজাজ।
- ২০২২ সালের আগস্ট মাসে স্ট্যাট-এ প্রকাশিত হোয়াট সায়েন্টিস্টস নো – অ্যান্ড ডোন্ট নো -অ্যাবাউট হাউ মাঙ্কিপক্স স্প্রেডস্, শীর্ষক নিবন্ধে ভাইরাস সংক্রমণের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা-অজানা বিষয়গুলো বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মেগান মোলতেনি। “এখন পর্যন্ত রোগতত্ত্বের তথ্যপ্রমাণ থেকে স্পষ্ট যে সাম্প্রতিক মাঙ্কিপক্স মহামারি বেশি ছড়িয়েছে [সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকের সংস্পর্শে] – বিশেষ করে যৌনসঙ্গীদের মধ্যে অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে,” লিখেছেন তিনি।
- ২০২২ সালের জুন মাসে সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত কাই কাপফারশ্মিটের লেখা হোয়াই দ্য মাঙ্কিপক্স আউটব্রেক ইজ মোস্টলি অ্যাফেক্টিং মেন হু হ্যাভ সেক্স উইথ মেন, শীর্ষক নিবন্ধে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, কীভাবে সমলিঙ্গের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত পুরুষদের মধ্যকার আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কগুলো ভাইরাসটিকে হয়তো এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা দিয়েছে, যা সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে সম্ভব হয় নি।
- ২০২২ সালের জুলাইতে এনপিআরে প্রকাশিত মাইকেলিন ডকলেফের লেখা হি ডিসকভার্ড দ্য অরিজিন অব দ্য মাঙ্কিপক্স আউটব্রেক অ্যান্ড ট্রাইড টু ওয়ার্ন দ্য ওয়ার্ল্ড শীর্ষক নিবন্ধে তিনি চিকিৎসক ডিমি ওগোইনার গল্প বলেছেন, যিনি ২০১৭ সালে বর্তমান এই মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের প্রথম সংক্রমণের ঘটনা সনাক্ত করেছিলেন ১১ বছর বয়সী এক ছেলের শরীরে।
- ২০২২ সালের আগস্টে মহামারি বিশেষজ্ঞ ক্যাটলিন জেটেলিনার সাবস্ট্যাকে প্রকাশিত হাউ ইজ মাঙ্কিপক্স স্প্রেড? শীর্ষক নিবন্ধে এ বিষয়ক ভালো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পাওয়া যায়।
- ২০২২ সালের জুলাই মাসে কাইজার হেলথ নিউজে প্রকাশিত লিজ সাবো ও লরেন ওয়েবারের লেখা ফাইটিং মাঙ্কিপক্স, সেক্সুয়াল হেলথ ক্লিনিক্স আর আন্ডারফান্ডেড অ্যান্ড ইল-ইকুয়িপ্ড, শীর্ষক নিবন্ধে বলা হয়: “যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে পরিচালিত ক্লিনিকগুলোর অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে, আক্রান্ত রোগীর সঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং তাদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো মৌলিক দায়িত্ব পালন করবে– এমন কর্মীরও ঘাটতি থাকে।”
- ২০২২ সালের আগস্ট মাসে স্ট্যাট-এ প্রকাশিত উষা লি ম্যাকফার্লিং, ক্যাথরিন গিলিয়ার্ড ও আকিলা মুথুকুমারের লেখা নিউ ডেটা ফ্রম সেভারেল স্টেটস শো রেসিয়াল ডিসপ্যারিটিস ইন মাঙ্কিপক্স ইনফেকশন্স, শীর্ষক নিবন্ধে মাঙ্কিপক্স ইস্যুতে চরম জাতিগত বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরে।
- ২০২০ সালের আগস্টে ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে প্রকাশিত তালহা বুরকির লেখা হোয়াট ডাজ ইট মিন টু ডিক্লেয়ার মাঙ্কিপক্স এ পিএইচইআইসি? নিবন্ধে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, ডব্লিউএইচও-এর জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি ঘোষণা কী করতে পারে আর কী পারে না। ২০২২ সালের আগস্টে ল্যানসেটে প্রকাশিত মাঙ্কিপক্স অ্যাজ আ পিএইচইআইসি: ইমপ্লিকেশনস ফর গ্লোবাল হেলথ গভর্ন্যান্স শীর্ষক অন্য একটি নিবন্ধে, ক্লেয়ার ওয়েনহাম ও মার্ক একলেস্টন-টার্নারও এই ঘোষণার প্রয়োগ ও প্রভাবের বিষয়টি তলিয়ে দেখেছেন।
সাংবাদিকদের জন্য রিসোর্স
- জামা, ন্যাচার জার্নাল, বিএমসি জার্নাল ও অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন সহ বেশ কয়েকটি জার্নাল তাদের মাঙ্কিপক্স সংশ্লিষ্ট কন্টেন্টগুলো বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।
- মাঙ্কিপক্স নিয়ে ডব্লিউএইচও-এর মূল পেজ পাবেন এখানে এবং সিডিসি-এর পেজ পাবেন এখানে।
- মাঙ্কিপক্স সংক্রান্ত জরুরী হালনাগাদ তথ্য জানানোর জন্য সাপ্তাহিক প্রতিবেদন আছে ডব্লিউএইচও-র।
- সিডিসি-এর “২০২২ মাঙ্কিপক্স আউটব্রেক গ্লোবাল ম্যাপ” আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিশ্চিত ঘটনা ট্র্যাক করে। এছাড়া ডব্লিউএইচও তাদের হেলথ ইমারজেন্সি ড্যাশবোর্ডে জানা ঘটনার ট্র্যাক রাখে। আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা এসব সংখ্যা জানার আরেকটি উৎস এবং তারা সাত দিনের গড় ও সাপ্তাহিক প্রবণতা নিয়ে প্রতিবেদন করে।
- মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটির আছে একটি সাপ্তাহিক অ্যালার্ট। এবং এখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সারা বিশ্বের সর্বশেষ অবস্থা ও গবেষণার একটি সামগ্রিক চিত্রও পাওয়া যায়।
- অ্যাসোসিয়েশন অব এলজিটিবিকিউ জার্নালিস্টসের স্পেশাল অ্যাডভাইজরি: কভারিং মাঙ্কিপক্স শীর্ষক নিবন্ধ সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমগুলোকে মাঙ্কিপক্স ইস্যু কভার করার সময় তাদের ব্যবহৃত ভাষার ব্যবহার নিয়ে নির্দেশনা দেয়। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে এনপিআর-এর অল থিংস কনসিডার্ড-নামের অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হাউ টু টক অ্যাবাউট মাঙ্কিপক্স ইফেক্টিভলি, উইদাউট স্টিগমাটাইজিং গে মেন-ও এ বিষয়ে একটি ভালো গাইড। আর মাঙ্কিপক্স নিয়ে স্টোরির জন্য ছবি বেছে নেয়ার বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ পরামর্শ দিয়েছেন সিএনএন-এর সারা অ্যাশলে ও’ব্রায়েন।
- রিডিউসিং স্টিগমা ইন মাঙ্কিপক্স কমিউনিকেশন অ্যান্ড কমিউনিটি এনগেজমেন্টে স্টিগমা শীর্ষক সিডিসি-র নথিতে আলোচনা করা হয়েছে: এজেন্সিটি কীভাবে মাঙ্কিপক্স নিয়ে তাদের যোগাযোগ কাঠামোবদ্ধ করছে যেন বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা গ্রুপগুলোর প্রতি কলঙ্ক আরোপ এড়ানো যায়।
- ২০২২ সালের আগস্ট মাসে অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ কেয়ার জার্নালিস্টের ব্লগ কভারিং হেলথ-এ প্রকাশিত মার্গারিটা বার্নবাউম ও বারা ভাইদার লেখা হাউ টু কভার হেলথ ইনইকুইটিস ইন ইউএস মাঙ্কিপক্স ডেটা ট্রেন্ডস, এমন একটি টিপশিট, যা মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের অসমতা ইস্যুতে আলোকপাত করতে সাংবাদিকদের কাজে আসে।
- এফডিএ মাঙ্কিপক্স রেসপন্স জনস্বাস্থ্য নিয়ে চলমান জরুরী পরিস্থিতিতে এফডিএ-এর ভূমিকা বিশদাকারে তুলে ধরে।
- মাঙ্কিপক্সের বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে কৌতূহলী হলে উন্মুক্ত সোর্স প্রকল্প নেক্সটস্ট্রেনে চোখ রাখুন। এখানকার ভিজ্যুয়ালাইজেশনসহ সব ধরনের ডেটা যে কারো ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত।
- কভারিং হেল্থ ব্লগেও প্রকাশিত মাঙ্কিপক্স এক্সপার্ট টু ফলো অন সোশ্যাল মিডিয়া শীর্ষক নিবন্ধে, বারা ভাইদা তাঁর মাঙ্কিপক্স বিশেষজ্ঞদের টুইটার তালিকা শেয়ার করেছেন।
সংবাদ স্টোরির জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য মাল্টিমিডিয়া রিসোর্স
- সিডিসি-তে মাঙ্কিপক্স নিয়ে এই গ্রাফিক্স, ছবি ও ভিডিওগুলো আছে। এখানে এজেন্সিটির ভবনের বি-রোলও আছে।
- ডব্লিউএইচও-র কাছে ছবির একটি বড় সংগ্রহ আছে, যার মধ্যে আছে টিকা নেওয়ার দৃশ্য ও মাঙ্কিপক্সের রোগীর ছবি।
- বাড়িতে থেকেই মাঙ্কিপক্স নিরাময় নিয়ে ডব্লিউএইচও-এর গ্রাফিক্সে দেখানো হয়েছে আক্রান্ত ব্যক্তিমানুষেরা কী পদক্ষেপ নিতে পারেন।
- আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স-ভিত্তিক সাংবাদিকদের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য পরিষেবা সাইলাইন-এ বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ আছে, যা আপনার স্টোরিতে যুক্ত করতে পারেন৷
পোস্টটি আদিতে প্রকাশিত হয়েছিল দ্য জার্নালিস্টস রিসোর্সে। অ্যাট্রিবিউশন-নোডিরাইভেটিভস ৪.০ ইন্টারন্যাশনাল (সিসি বিওয়াই-এনডি ৪.০) লাইসেন্স ব্যবহার করে এখানে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
জিআইজেএন হেলথ অ্যান্ড মেডিসিন রিপোর্টিং গাইড
হাও রিপোর্টার্স ক্যান ফ্ল্যাটেন দ্য স্ট্রেস কার্ভ হোয়াইল কাভারিং দ্য প্যানডেমিক
মহামারি কাভার করা সাংবাদিকদের জন্য স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও আইনি সুরক্ষার টিপস
নাসিম মিলার ২০২১ সালে দ্য জার্নালিস্টস রিসোর্সে যোগ দেন। এর আগে প্রায় দুই দশক তিনি স্থানীয় সংবাদপত্র ও জাতীয় চিকিৎসা বাণিজ্য বিষয়ক প্রকাশনাগুলোতে স্বাস্থ্য প্রতিবেদক হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি মূলত স্বাস্থ্য ও ঔষধ নিয়ে কাজ করেন, যেখানে তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু বৈষম্য। কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকেরা যে ট্রমার শিকার হন, তা নিয়ে তিনি যৌথভাবে একটি ফেসবুক পেজ চালু করেন ও দেখভাল করেন এবং ট্রমা ও ট্রমা-সম্পর্কিত তথ্যবহুল রিপোর্টিং নিয়ে প্রায়ই কথা বলেন।