

মুক্ত সাংবাদিকতার তিউনিসিয় মডেল ইনকিফাদা
ইনকিফাদার অফিসে একটি কর্মশালায় সমবেত সাংবাদিকরা। ছবি কৃতজ্ঞতা: ইনকিফাদা
২০১১ সালে তিউনিসিয়া বিপ্লবের তিন বছর পর, যাত্রা শুরু করে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ইনকিফাদা। সেসময় দেশটিতে দেখা গিয়েছিল মুক্ত মতপ্রকাশের এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। নানা রকম টক শো হচ্ছে, টেলিভিশনে ডার্টি লন্ড্রি দেখানো হচ্ছে এবং সবাই কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই মতপ্রকাশ করছে।
কিন্তু এসময়েও তিউনিসিয়াতে প্রয়োজনীয় সব তথ্যের ঘাটতি দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইনকিফাদার পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা মালেক খাদরাউই। তিনি বলেছেন, “সবাই কথা বলতে পারে, অনেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্পাদকীয় লিখছে। কিন্তু চারদিকে আসলেই কী ঘটে চলেছে এবং এই ব্যবস্থাটি যে ধ্বসে পড়ছে, তা নিয়ে খুব কম কথাবার্তা দেখা গেছে।”
জিআইজেএনএর এই সিরিজে, আমরা তুলে ধরছি আমাদের সদস্য সংগঠনগুলোর পরিচিতি। তাদের দারুন সব কাজ ও মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোর কথা, অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকা থেকে শুরু করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হামলা পর্যন্ত।
তিউনিসিয়ার আরব বসন্ত পরবর্তী রাজনীতিতে তৈরি হয়েছিল ইসলামপন্থী ও ধর্ম-নিরপেক্ষতাবাদের বিভাজন। সংবাদমাধ্যমেও ছিল এই ন্যারেটিভের প্রভাব। এমন একটি অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন ইনকিফাদার প্রতিষ্ঠাতারা। গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য ঘাটতির বিষয় উপলব্ধি করে যে কয়েকজন সাংবাদিক ইনকিফাদা প্রতিষ্ঠা করেন, তাঁরা এর আগে একসঙ্গেই কাজ করতেন আরেকটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম, নাওয়াত-এ। সংবাদ আর মতামতের বাইরে এসে, যেসব বিষয় মানুষের জীবনে সত্যিকারের প্রভাব ফেলছে, সেগুলো নিয়ে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন ইনকিফাদার সাংবাদিকরা। যেমন, দুর্নীতি, কর ফাঁকি, সন্ত্রাস, মানবপাচার ও পানি প্রাপ্যতার মতো বিষয়।
এই লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা গড়ে তোলেন আল খাত নামের একটি অলাভজনক সংগঠন, যেখানে “প্রতিফলিত হবে ডিজিটাল যুগে সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ।” ২০১৪ সালে, আল খাত, তাদের প্রাথমিক প্রকল্প হিসেবে শুরু করে ইনকিফাদা।
গল্প বলতে হবে, ছোট হোক বা বড়
নতুন এই নিউজরুমের প্রথম বড় অগ্রাধিকার ছিল গল্প বলার ধরনে আধুনিকতা আনার জন্য বিনিয়োগ, বলেছেন আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা সানা সোবুই। তিনি বর্তমানে স্বাধীন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন তিউনিসে।
এই নতুন ধরনের গল্প বলার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ছিল ইলাস্ট্রেশন, ভিডিও ও অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে ব্যক্তিগত কাহিনীগুলো তুলে আনা। যেমন আইভোরিয়ান দুই অভিবাসীর কাহিনী তারা তুলে আনেন এভাবে। তাদের একজন ছিলেন পাচারকারী, অন্যজন পাচারের শিকার। ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন ও ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যবহার করেও নানা কাহিনী বর্ণনা করে ইনকিফাদা। যেমন, একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ ম্যাপের মাধ্যমে তারা দেখিয়েছিল বিপ্লবের পর থেকে তিউনিসিয়াতে কতগুলো সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে এমন বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনকিফাদা। ২০১৬ সালে তারা অনুসন্ধান চালিয়েছিল চিকিৎসক, আইনজীবীদের মতো উদার পেশাজীবীদের কর ফাঁকি নিয়ে। এর প্রভাবে দেশটির সংসদে নতুন আইন প্রণয়ন নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। ২০১৮ সালে, ইমপ্ল্যান্ট ফাইলস অনুসন্ধানেও কাজ করেছিল ইনকিফাদা। ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছিল এই বৈশ্বিক অনুসন্ধান। সেখানে ইনকিফাদা দেখিয়েছিল কিভাবে তিউনিসিয়াতে চিকিৎসা করতে আসা পর্যটকদের ত্রুটিপূর্ণ ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট অপারেশন করা হচ্ছে এবং এই পদ্ধতির ঝুঁকি সম্পর্কে স্বচ্ছতার অভাব আছে।
করোনাভাইরাস মহামারি বিস্তারের পর, তারা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের মাধ্যমে দেখিয়েছে, তিউনিসিয়াতে এই ভাইরাসের সম্ভাব্য গতিপথ কেমন হতে পারে। এজন্য তারা নিজ দেশের আক্রান্তের সংখ্যা তুলনা করেছিল অন্য দেশগুলোর সঙ্গে। দেখিয়েছিল আইসিইউ বেডের স্বল্পতার বিষয়টিও। তাদের ম্যাপ থেকে দেখা যায় ঐতিহাসিকভাবে বেশি সুবিধাভোগী উত্তর ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা বেশি। এই প্রতিবেদনটি অনেকে শেয়ার করেন। মহামারির এই সময়ে তারা আরো দেখিয়েছে অভিবাসী শ্রমিক ও অভ্যন্তরীন নানা বিষয়ের ওপর কেমন প্রভাব পড়ছে।
মার্চের মাঝামাঝিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে তিউনিসিয়াতে কারফিউ জারি করা হয়। তখন সন্ধ্যা ৬টা বাজতেই সব রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। এখন সেসব সীমাবদ্ধতা কিছুটা কমেছে। কিছু দোকানপাটও খুলতে শুরু করেছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা এখনো জারি আছে। ফলে যেসব অনুসন্ধানী প্রকল্পের (যেমন প্রশিক্ষণ) ক্ষেত্রে এরকম দূরপাল্লার যাতায়াত প্রয়োজন, সেগুলো আপাতত স্থগিত রেখেছে ইনকিফাদা। তবে তারা দূরে বসেই নিজেদের অন্যান্য কর্মকাণ্ড চালু রেখেছে ডিসকর্ড, স্ল্যাক ও জিটসির মতো যোগাযোগের টুল ব্যবহার করে।
ইনকিফাদার এডিটরিয়াল ডিরেক্টর মোনিয়া বিন হামাদি। ছবি কৃতজ্ঞতা: ইনকিফাদা
স্বাধীন সাংবাদিকতার মডেল
অন্যান্য নিউজরুম থেকে ইনকিফাদা নিজেদের আলাদা করেছে এর স্বাধীনতার জায়গায়, বলেছেন এডিটরিয়াল ডিরেক্টর মোনিয়া বিন হামাদি।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য দাতাদের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানো এবং আয়ের উৎস আরো বৈচিত্র্যময় করে তোলার চেষ্টা করছে সংগঠনটি। ২০১৯ সালে, ইনকিফাদার মালিকানা প্রতিষ্ঠান আল খাত, তাদের মোট বাৎসরিক বাজেটের (প্রায় ৫২৪,০০০ ডলার) ৬৫ শতাংশ আয় করেছিল অন্যান্য সংবাদমাধ্যম ও এনজিওকে বিভিন্ন সেবা দেওয়ার মাধ্যমে। যেমন ওয়েবসাইট তৈরি, গ্রাফিক ডিজাইন ও সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ। বাকি ৩৫ শতাংশ এসেছে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া সাপোর্টের মতো প্রতিষ্ঠানের অনুদান থেকে। তারা কোনো বিজ্ঞাপন বা বাণিজ্যিক স্পন্সরশিপ নেয় না।
আল খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন দল, ইনকিল্যাব তাদের নিউজরুমের জন্য নানাবিধ অনুসন্ধানী টুল তৈরি করে এবং পরবর্তীতে এগুলো অন্যান্য মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে আয়ের জন্য। এটি তাদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের আরেকটি উপায়। নিজেদের স্টোরিগুলো আরো ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য নানা রকম স্টোরি লেআউট তৈরি করে তাদের-ই কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ইনকু.বি। তারা অন্যান্য সংগঠনের প্রয়োজন অনুযায়ীও নানা রকম টুল তৈরি করে। এখন তারা এমন একটি প্রোগ্রাম বানাচ্ছে, যেটি দিয়ে যেকোনো নথিপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে ফেলা যাবে এবং সেখান থেকে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য (যেমন কোম্পানির নাম) বের করে আনা যাবে।
ইনকিফাদার ১৮ সদস্যের এই দলে নানান ধারার মানুষ কাজ করে। আটজন আছেন সম্পাদকীয় কর্মী। অন্য ১০ জনের দলে আছেন ডেভেলপার, গ্রাফিক ডিজাইনার, ইলাস্ট্রেটর ও ডেটা বিজ্ঞানী। এবং তারা সবাই সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করেন একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে।
“[ইনকিফাদা] তাদের সততা ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে পেরেছে এবং এটি তারা করেছে রাজনীতির সাথে না জড়িয়ে।” — রোক্সান ফারমানফারমাইয়ান, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক
বেন হামাদি বলেছেন, এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটি ইনকিফাদা বুঝতে পেরেছে পানামা পেপার্স অনুসন্ধানের সময়। আইসিআইজের সঙ্গে জোট বেঁধে তারাও নেমেছিল বিদেশে টাকা পাচারের এই বৈশ্বিক অনুসন্ধানে। এই কাভারেজের সময় দেশটির অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ইনকিফাদার পার্থক্য আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। “যেমন, মিডিয়াগুলো তিউনিসিয়ার রাজনীতিবিদ মোহসেন মারজোক ও অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করেছিল। কিন্তু তারা দেশটির ব্যবসায়ীদের তথ্য নিয়ে রিপোর্ট করতে পারেনি। কারণ এই ব্যবসায়ীরাই সংবাদমাধ্যমে বিনিয়োগ করে, এবং এতে তাদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে,” বলেছেন হামাদি।
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক রোক্সান ফারমানফারমাইয়ান বলেছেন, ইনকিফাদার এই ব্যবসায়িক মডেলের কারণেই তারা কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক স্বার্থের দ্বন্দ্ব ছাড়াই বিভিন্ন অনুসন্ধান চালাতে পারে।
অন্যান্য অনেক দেশের মতো, সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতির মিলমিশ দেখা যায় তিউনিসিয়াতেও। যেমন, নেসমা টিভির মালিক, নাবিল কারোউই ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্টপ্রার্থী হয়েছিলেন। এবং এখন তিনি দেশটির রাজনৈতিক দল কালব তৌনেসের নেতা। ফারমানফারমাইয়ান বলেছেন, “[ইনকিফাদা] তাদের সততা ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে পেরেছে এবং এটি তারা করেছে রাজনীতির সাথে না জড়িয়ে।”
পডকাস্ট দিয়ে ভাষা বিভক্তির সমাধান
ফারমানফারমাইয়ান ইনকিফাদাকে বর্ণনা করেছেন “পকেট অব মিডিয়া হিসেবে। যেটি আরব বসন্ত পরবর্তী সময়ে তরুনদের সহনশীলতাকে তুলে ধরে।” তিনি “পকেট” শব্দটি বেছে নিয়েছেন কারণ ইনকিফাদার পাঠক-দর্শকের আকার ও পরিসর এখনো সীমিত। তবে নতুন মাধ্যম নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেই পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করছেন ইনকিফাদার সম্পাদকরা। যেমন, গত বছর থেকে তারা পডকাস্ট শুরু করেছে।
গুগল অ্যানালিটিকসের তথ্য অনুসারে, ইনকিফাদার বেশিরভাগ পাঠকের বয়স ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। তাদের বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত এবং তিউনিসিয়ার সবচে বড় তিন শহর, তিউনিস, সোউসে ও স্ফাক্স-এর বাসিন্দা। তাদের ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ পাঠক তিউনিসিয়ার। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পাঠক আসে ফ্রান্স থেকে।
ইনকিফাদা এখন প্রকাশিত হয় ফরাসি ও আরবি ভাষায়। দ্রুতই তারা ইংরেজিতেও প্রকাশ করবে তাদের প্রতিবেদনগুলো। খাদরাউই জানিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগ পাঠকই ফরাসী ভাষী। পডকাস্টগুলো সম্প্রচারিত হয় তিউনিসিয়ান আরবিতে। এতে করে এটি ফরাসী ও আরবি জানা সব ধরনের তিউনিসিয়ান শ্রোতার কাছেই পৌঁছাবে বলে আশা ইনকিফাদার। ইনকিস্টোরিজ নামের এই পডকাস্ট সিরিজের জন্য আরবিতে থাকা কিছু প্রতিবেদনকে তিউনিসিয়ান ভাষায় অনুবাদের পরিকল্পনা আছে তাদের। এভাবে তারা নিজেদের সব প্রতিবেদনকেই নিয়ে আসতে চায় অডিও ফরম্যাটে। “এটি ভাষাগত সমস্যা সমাধান করার একটি ভালো উপায়। এভাবে আমরা একই প্রতিবেদন দিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছি,” বলেছেন খাদরাউই।
.
ইনকিস্টোরিজ নামের এই পডকাস্ট সিরিজের প্রথম পর্বে তারা তুলে এনেছিল তিউনিসিয়ার #মিটু আন্দোলনের চিত্র। তুলে ধরেছিল তিউনিসিয়ায় যৌন হয়রানির নানা ব্যক্তিগত কাহিনী। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তিউনিসিয়ার এক রাজনীতিবিদকে দেখা গিয়েছিল একটি স্কুলের বাইরে হস্তমৈথুন করতে (তিনি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন)। এই ঘটনার পর থেকে পুরো দেশজুড়ে যৌন হয়রানি নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক উঠেছিল। তবে অডিও নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা তাদের এটিই প্রথম নয়। ২০১৭ সালে তারা একটি অডিও ডকুমেন্টরি তৈরি করেছিল কিছু বেকার তরুনের অবস্থান ধর্মঘট নিয়ে। তারা মরুভূমির মাঝখানে একটি গ্যাসক্ষেত্রের সামনে এই আন্দোলন করছিলেন।
এবছর, তিউনিসিয়ার বিপ্লবের নবম বার্ষিকীতে, ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারির নানা ঘটনা নিয়ে একটি সিরিজ তৈরি করেছে ইনকিফাদা। সেই ঘটনাগুলো কিভাবে অনেক মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে, তা উঠে এসেছিল এই পডকাস্টে। কোভিড-১৯ কাভারেজের অংশ হিসেবে তৈরি সাম্প্রতিক একটি পডকাস্টে উঠে এসেছে একদম একা একা কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা। এই পডকাস্ট থেকে দেখা যায় কিভাবে এক ব্যক্তি একটি পার্টিতে যাওয়ার পর থেকে এভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকছেন। সেই পার্টিতে আসা আরেকজনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন দেশটির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চতুর্থ ব্যক্তি।
নতুন পাঠক-দর্শক আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এই পডকাস্ট সিরিজ কতটা সফল হচ্ছে, তা হিসেব করার সময় এখনো আসেনি বলে মনে করছেন বেন হামাদি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, “এমনকি দর্শনের ওপর তৈরি নানা পডকাস্টও অনেককে আকৃষ্ট করছে, যদিও বিষয়টিতে সবাই আগ্রহ পাবে না। পডকাস্টের মাধ্যমে কোনো অভিজ্ঞতা আরো প্রগাঢ় হয়ে ওঠে; কোনো বিষয়কে গভীরভাবে বোঝার ক্ষেত্রে যা অনেক বেশি কার্যকরী।”
লায়লি ফোরোউদি তিউনিস ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তিনি দ্য টাইমস, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, রয়টার্সসহ আরো অনেক সংবাদমাধ্যমের জন্য লেখালেখি করেন। এর আগে তিনি কাজ করেছেন আল জাজিরার মিডিয়া বিশ্লেষণী অনুষ্ঠান, দ্য লিসেনিং পোস্টে।