প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

সম্পাদকের বাছাই: চীন ও তাইওয়ান থেকে ২০২০ সালের সেরা অনুসন্ধান

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

চীনে, এবছরও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতিতে তেমন উন্নতি হয়নি। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)-এর ২০২০ সালের প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে দেশটির অবস্থান ছিল শেষ থেকে চতুর্থ। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য সেখানকার অন্তত তিনজন নাগরিক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেসব নাগরিক সংগঠন অনুসন্ধান ও জবাবদিহিতার দাবি জানাচ্ছে, তাদেরও চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

আবার একই সময়ে, চীনের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় নতুন এক ঢেউ তুলেছে কোভিড-১৯ মহামারি। উহানে প্রথম করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ার পর থেকে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো অনেক উঁচু মানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যেমনটি গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি। মহামারির সময়, অনেক অনুসন্ধানী সাংবাদিকই নজর দিয়েছিলেন দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাতের দিকে। যে হাসপাতালে এই ভাইরাসটি প্রথম সনাক্ত হয়, যে হুইসেলব্লোয়ারদের কল্যাণে প্রকাশ পায় উহানের হাসপাতালগুলোর ভেতরে কী ঘটে চলেছে, এবং তারা কিভাবে মহামারি মোকাবিলা করেছে – এমন নানা বিষয় উঠে এসেছে আমাদের সেরার তালিকায়। 

মহামারির এই প্রতিবেদনগুলোর বাইরে, চীনের অন্যতম শীর্ষ অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম তলিয়ে দেখেছে একটি বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কারখানা থেকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঘটনা। দেখা গেছে: সরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা যত বলা হয়েছিল, প্রকৃত সংখ্যাটি তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। এছাড়াও ঘরোয়া সহিংসতা, শ্রম অধিকার লঙ্ঘন ও ভুয়া সংবাদের বিস্তার নিয়ে করা হয়েছে দারুন কিছু অনুসন্ধান। 

২০২০ সালে সম্পাদকের বাছাই সিরিজের অংশ হিসেবে, এই লেখায় থাকছে চীন ও তাইওয়ানের সেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কথা। এগুলো বাছাই করেছে জিআইজেএন-এর চীনা ভাষার দল। 

কোভিড-১৯ নির্ণয়ের মানদণ্ড বদল (ফ্রিজিং পয়েন্ট উইকলি)

সংক্রমণের শুরুতেই কেন কোভিড-১৯ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি? নিঃসন্দেহে, এর কারণ নিহিত আছে প্রথম দিকে হাসপাতালগুলো যেভাবে আক্রান্তের ঘটনাগুলো রিপোর্ট করেছে, তার মধ্যে। ফ্রিজিং পয়েন্ট উইকলি’র এই অনুসন্ধান থেকে উন্মোচিত হয়েছে: গোড়ার দিকে “অজানা কারণে দেখা দেয়া নিউমোনিয়া” রোগীদের চিকিৎসায় দুটি মানদণ্ড তৈরি করে উহান মিউনিসিপ্যাল হেলথ কমিশন। সংক্রমণ রিপোর্টিং করার জন্য তৈরি প্রথম মাণদণ্ডটি কঠোর হওয়ায়  শুরুতে অনেক আক্রান্তের ঘটনা ঠিকভাবে নথিভুক্তই করা যায়নি। রোগ নির্ণয়ের এমন মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় উহান হাসপাতালের একটি সাদা লগবুকে। দুই ধরনের মানদণ্ড অনুসরণের বিষয়টি করোনা সংক্রমণের উৎস সনাক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রতিবেদন থেকে আরো ধারণা পাওয়া যায়: কিভাবে চীনা আমলাতন্ত্র এই পরিস্থিতি সামাল দেয়।

অ্যালগোরিদমের ফাঁদে সরবরাহ কর্মী (রেনউ ম্যাগাজিন)

মেইটিউয়ানের এক সরবরাহ কর্মী। স্ক্রিনশট

চীনে, পণ্য সরবরাহের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি বিপজ্জনক পেশা। কত দ্রুত পণ্যটি সরবরাহ করা হচ্ছে, তা দিয়ে বিচার করা হয় এই পেশায় জড়িত কর্মীদের কর্মদক্ষতা। পণ্য সরবরাহে সময় বেশি লাগলে খারাপ রিভিউ, কম আয়, এবং এমনকি চাকরি হারানোরও আশঙ্কা থাকে। এই কর্মীদের কোনো ট্রেড ইউনিয়ন না থাকায়, ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মের অ্যালগোরিদমের বেঁধে দেওয়া সময়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কোনো সুযোগ নেই। ফলে সময়মতো পণ্য সরবরাহের জন্য তাদের দ্রুত যাতায়াত করতে হয়। এ কারণে অনেক সময়ই ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা, যার কিছু কিছু হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী। কিন্তু মানুষ ও অ্যালগোরিদমের মধ্যে এই সম্পর্কটি ঠিক কেমন? ছয় মাস ধরে অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে মাসিক নিউজ ম্যাগাজিন, রেনউ। এজন্য তারা সাক্ষাৎকার নিয়েছে পণ্য সরবরাহের প্রতিটি পর্যায়ের সঙ্গে জড়িত কর্মী ও সমাজবিজ্ঞানীদের। গত সেপ্টেম্বরে, প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর মেইটিউয়ান ও ইলে ডট মি’র (খাবার সরবরাহের জন্য এগুলো পুরো চীনজুড়েই জনপ্রিয়) মতো পণ্য সরবরাহের প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক সামাজিক বিতর্ক। এই অনুসন্ধানের পর সরবরাহ কর্মীদের কর্ম পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। 

লানজোউয়ের রোগীরা (কাইক্সিন)

কাইক্সিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। স্ক্রিনশট

চীনের অগ্রণী অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম, কাইক্সিনের এই প্রতিবেদনটি আমাদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে আরেকটি ভিন্ন ধরনের জনস্বাস্থ্য সংকট নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য। এটি ছিল: ব্রুসেলার সংক্রমণ নিয়ে। ছোঁয়াচে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মানুষ ব্রুসেলোসিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে, যে কারণে জ্বর ও নানা ধরনের অসুস্থতা দেখা যায়। এই সংক্রমণ শুরু হয়েছিল লানজোউ বায়োফার্মাসিউটিক্যাল প্ল্যান্ট থেকে। এটি চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চায়না এনিমেল হাসবেন্ড্রি ইন্ডাস্ট্রির অংশ। সেখানে, ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা ব্যবহার করছিলেন মেয়াদোত্তীর্ণ হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যার ফলে এই ব্যাকটেরিয়া কারখানার বাইরে চলে যায় এবং আশেপাশে বসবাস ও কর্মরত মানুষদের আক্রান্ত করে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত, এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০৩ জন। কিন্তু তারপর থেকে আরো কতজন আক্রান্ত হয়েছেন, তার কোনো আনুষ্ঠানিক রেকর্ড ছিল না এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত। এতো বড় একটি জনস্বাস্থ্য সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও আইনের আওতায় আনা হয়নি। কাইক্সিনের সাংবাদিকরা দেখেছেন: সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা যা বলা হয়েছে, আসল সংখ্যা তার চেয়ে ১০ গুনেরও বেশি।  যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারাও জানতেন না যে তারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ব্রুসেলোসিস হয়েছে কিনা, তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কিনা, এবং ব্যাকটেরিয়াটি এখনো তাদের শরীরে আছে কিনা। প্রতিবেদনটি ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ার পর, লানজু হেলথ কমিটি নিশ্চিত করেছে: ৩,২৪৫ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

উহানের আক্ষেপ: যেভাবে চীন করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ সময়টি নষ্ট করেছে (চায়না নিউজ উইকলি)

উহানে লকডাউন ঘোষণা করা হয় ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি। তার আগপর্যন্ত, কিভাবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়েছে, তার একটি বিস্তারিত টাইমলাইন তৈরি করেছে চায়না নিউজ উইকলি। এই প্রচ্ছদ প্রতিবেদন নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন তোলে: কিভাবে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের সবচে গুরুত্বপূর্ণ সময়টি নষ্ট হয়েছে; করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর প্রথম কয়েক সপ্তাহে স্থানীয় সরকার, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা কিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করেছেন; এবং এই সংক্রমণের বিস্তারকে ছোট করে দেখার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিনা। প্রতিবেদনটি প্রকাশের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই এটি সরিয়ে দেওয়া হয় ম্যাগাজিনের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও চীনের অন্যান্য নিউজ পোর্টালগুলো থেকে। কিন্তু চীনের বাইরের কিছু নিউজ এগ্রিগেটর এটির একটি কপি সংরক্ষণ করতে পেরেছে। আমরা এখনো জানি না ঠিক কবে কোভিড-১৯-এর প্রথম কেসটি দেখা গিয়েছিল। ফলে কেউ যদি এই মহামারির একদম শুরুর দিনগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করতে চান, তাহলে এই প্রতিবেদনটি অনেক কাজে লাগবে। 

প্রথম হুইসেলব্লোয়ার (রেনউ ম্যাগাজিন)

উহান কেন্দ্রীয় হাসপাতালের চিকিৎসক, আই ফেন। স্ক্রিনশট

উহানের সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক, আই ফেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যখন অজানা রোগে (পরবর্তীতে যেটি সনাক্ত হয় কোভিড-১৯ হিসেবে) আক্রান্ত হয়ে কিছু মানুষ হাসপাতালে আসা শুরু করে, তখন তিনি ছিলেন সেখানকার অন্যতম চিকিৎসক। ডিসেম্বরের ৩০ তারিখে, তিনি এক কোভিড আক্রান্ত রোগীর স্বাস্থ্য-পরীক্ষার রিপোর্ট দেখান সেই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ, লি ওয়েনলিয়াংকে। লি সেই রিপোর্টটি আরো কয়েকজনের সঙ্গে শেয়ার করেন মেসেঞ্জিং অ্যাপ উইচ্যাটের মাধ্যমে। সেখান থেকে এটি আরো ছড়িয়ে পড়লে, আই ফেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কিভাবে প্রথম করোনাভাইরাসের কেস সামনে এসেছিল, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, রেনউ ম্যাগাজিনের এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে: কিভাবে আই ফেন হয়ে উঠেছিলেন প্রথম হুইসেলব্লোয়ার। প্রতিবেদনটি প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এটি সেন্সরশিপের মুখে পড়ে। কিন্তু চীনের “নেটিজেনরা” শুরু করেন “হুইসেল রিলে”। প্রতিবেদনটি তারা নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে পুনঃপ্রকাশ করতে শুরু করেন। এটি অনুবাদও করা হয়েছে ইংরেজি, জার্মান, জাপানি, ইমোজি, ব্রেইল, মোর্স, এবং এমনকি একটি প্রাচীন চিনা লিপিতেও। এই পেজে পাবেন এমন কিছু উদাহরণ। 

সীমান্ত পেরুনো ট্রোল কারখানার নেপথ্যে (দ্য রিপোর্টার)

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সাইবার ট্রোল বাহিনীর বিস্তার ঘটছে দ্রুত। যারা অনলাইনে পোস্ট করছেন বিদ্বেষপূর্ণ, সহিংস ও অযাচিত সব কন্টেন্ট। কারা এগুলি পরিচালনা করছে? কিভাবে তারা ইন্টারনেটে জনমত নিয়ন্ত্রণ করছে? নিজেদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোদ সেই ট্রোলদের ভাবনা কী? এবং সমাজ ও পুরো বিশ্বে এর কেমন প্রভাব পড়ছে? বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য, তাইওয়ান-ভিত্তিক অলাভজনক সংবাদমাধ্যম দ্য রিপোর্টার (জিআইজেএন-এর সদস্য সংগঠন) গিয়েছিল উত্তর মেসেডোনিয়ায়। ছোট্ট এই দেশটি থেকেই পরিচালিত হয় বেশ কিছু ভুয়া খবর ও ট্রোলিং সাইট। সেখানে তারা সাক্ষাৎকার নিয়েছে অনলাইন যোদ্ধাদের এই “নতুন প্রজন্ম” ও তাদের প্রশিক্ষকদের। এই প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে ইন্দোনেশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ। এখান থেকে দেখা গেছে: দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলগুলো একে অপরকে মোকাবিলার জন্য অনলাইন বাহিনী নিয়োগ দিয়েছে । প্রতিবেদনটির জন্য আরো সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়নের বিশেষজ্ঞ এবং ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত “নেটিজেনদের”। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সাইবার-ট্রোল ইন্ডাস্ট্রির গভীর বিশ্লেষণ, কিভাবে এর মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে এবং কিভাবে তা মোকাবিলা করা যায়। ভুয়া তথ্য নিয়ে কাজ করছেন এমন যে কোনো সাংবাদিকের জন্য এটি হতে পারে উপকারী রেফারেন্স। 

প্রাক্তন স্বামীর হাতে পুড়ে মরা নারীর গল্প (গুইউ স্টোরি ল্যাব)

ঘরোয়া সহিংসতা, চীনের একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু যখন সহিংসতার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, তখন কর্তৃপক্ষ সেখানে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী হয় না। তারা বলে: পারিবারিক সমস্যা সমাধান করার কাজটা তাদের জন্য কঠিন। এই প্রতিবেদনটিতে, গুইউ স্টোরি ল্যাব বলেছে এমনই এক ঘটনার কথা, যেখানে ৩০ বছর বয়সী সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার লামু, আগুনে পুড়ে মারা যান। তাঁর প্রাক্তন স্বামী, ট্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ট্যাং যখন লামুর মা-র বাড়িতে এসে তাঁর খোঁজ করছিলেন, তখন বেশ কয়েকবার পুলিশে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন লামু। কিন্তু পুলিশ কোনো হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ফলে শেষপর্যন্ত এই ট্র্যাজিক ঘটনাটি ঘটেছে। ট্যাং-কে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক আলোড়ন তোলে। “লামু বিল” নামের একটি অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে পুলিশের জবাবদিহিতার দাবি জানানো হয় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুরো প্রচারণাটি ডিলিট করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট থেকে। 

হাংজুর নিখোঁজ নারী (সানলিয়ান লাইফ ম্যাগাজিন)

সানলিয়ান লাইফ ম্যাগাজিন

২০২০ সালের ৫ জুলাই, হাংজুর বাসিন্দা লাই হুইলিকে (৫৩) ঘুমের ভেতরে হত্যা করা হয়। তার মৃতদেহটি ফেলে দেওয়া হয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। জুলাইয়ের ২৫ তারিখে স্থানীয় পুলিশ জানায়, সেই নারীর স্বামীকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংবাদ ও সংস্কৃতি বিষয়ক সাপ্তাহিক প্রকাশনা, সানলিয়ান লাইফ ম্যাগাজিন বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে। এই দম্পতি কোথায় কোথায় থেকেছেন ও বেড়ে উঠেছেন, সেসব জায়গায় যায়। এর মাধ্যমে তারা এই দম্পতির বেড়ে ওঠার চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন। পাঠককে বোঝাতে চেয়েছেন: তারা আসলে কেমন ছিলেন। সত্যিকারের এই অপরাধ তদন্তের সঙ্গে মিল আছে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসন্ধানী পডকাস্ট, সিরিয়াল-এর। একটি পরিবারের গল্পের মাধ্যমে এখানে খতিয়ে দেখা হয়েছে চীনের দ্রুত নগরায়িত অঞ্চলগুলোতে কিভাবে মানুষের জীবনের উত্থান-পতন ঘটছে।


জোয়ি চি জিআইজেএন চাইনিজ-এর সম্পাদক। সাংবাদিকতায় তাঁর আছে সাত বছরের অভিজ্ঞতা। এর মধ্যে তিন বছর তিনি কাজ করেছেন মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে। তিনি ইনিশিয়াম মিডিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এখানে তিনি প্রতিদিনের নিউজ সেকশনের পরিকল্পনা ও দল তৈরি করতেন। 

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

Hong,Kong,taipo,2020mar8,under,Wuhan,Plague,Outbreak,Emergency,media,Press,Journalist,Wear,Mask

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

গত তিন বছরে সাংবাদিকেরা যেভাবে কোভিড-১৯ মহামারির প্রতিটি দিক অনুসন্ধান করেছেন

কোভিড-১৯ নিয়ে কয়েকশ’ দুর্দান্ত অনুসন্ধান থেকে দশটি বাছাই করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের সৃজনশীলতা, অঞ্চলের ভিন্নতা এবং কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট  বিষয়গুলোর বৈচিত্র্য বিবেচনায় নিয়ে মহামারি বিষয়ক উল্লেখযোগ্য অনুসন্ধানগুলো থেকে আমাদের করা সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে তুলে ধরা হল।

বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান

কেস স্টাডি সংবাদ ও বিশ্লেষণ

সম্পাদকের বাছাই: ২০২১ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান

অনেক প্রতিবন্ধকতার সত্ত্বেও গত ১ বছরে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, মুদ্রা পাচার, অনিয়ম ও প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলার মত ঘটনা উন্মোচনের চেষ্টা করে গেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা। বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রধান বিষয় ছিল, যথারীতি দুর্নীতি। কিন্তু ২০২১ সালের সেরা স্টোরি বাছাই করতে গিয়ে শুধু অনুসন্ধানের গভীরতা বা কৌশল নয়; বিষয়বস্তুর নতুনত্ব, প্রভাব এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ মনোযোগের মতো বিষয়কেও আমরা আমলে নিয়েছি।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

মানব পাচার ও জোরপূর্বক শ্রম নিয়ে সাংবাদিকতার টিপস

দাসপ্রথা নিছক অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো বিষয় নয়। দাসত্ব, জোরপূর্বক শ্রম ও মানব পাচার এখন শুধু চর্চাই হচ্ছে না, এটি খুব লাভজনক অপরাধও বটে। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের জন্যও এটি হয়ে উঠেছে একটি গুরুতর বিষয়। জিআইজেসি২১-এর একটি সেশনে এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করেছেন পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক ও বিশেষজ্ঞরা। যেখানে উঠে এসেছে এ সংক্রান্ত কাজের কেস স্টাডি ও পরামর্শ।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

মহামারি-পরবর্তী সময়ের জন্য ৫ ধরনের ডেটাভিত্তিক স্টোরির আইডিয়া

ডেটা সাংবাদিকতায় নবজোয়ার এনেছে কোভিড মহামারি। নানান আঙ্গিকে মহামারির পরিস্থিতি ও প্রভাব তুলে এনেছেন ডেটা সাংবাদিকরা। তবে শুধু এটুকুই নয়, রিপোর্টিংয়ের কাজে ডেটার ব্যবহার করা যায় আরও নানাভাবে। মহামারির শেষপর্যায়ে এসে সাংবাদিকরা ডেটা দিয়ে করতে পারেন আরও অনেক অনুসন্ধান। খুঁজতে পারেন অনেক প্রশ্নের উত্তর। তেমনই কিছু ডেটা-ভিত্তিক প্রতিবেদনের ধারণা পাবেন এই লেখায়।