

Patryk Szczepaniak went undercover to investigate a slaughterhouse in Warsaw, where he secretly recorded video. Image: Courtesy TVN Discovery Poland
আন্ডারকভার রিপোর্টিং: আমি যেভাবে কসাই হলাম
পোল্যান্ডের একটি কসাইখানায় কসাই ছদ্মবেশে অনুসন্ধান করেছেন প্যাট্রিক সেপানিয়াক। ছবি: টিভিএন ডিসকভারি পোল্যান্ডের সৌজন্যে
গবাদিপশুর ব্যবসা নিয়ে আমি আর সহকর্মী টমাস পাতোরা ঘাঁটাঘাটি শুরু করি, ২০১৮ সালের অক্টোবরে। গোপন খবর ছিল: পোল্যান্ডের একটি কসাইখানা অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি করছে, এমনকি কিছু মরা গরুও সেখানে আনা হয়েছে। এই ব্যবসা নিয়ে কিছুটা গবেষণা করে, আর রাতবিরেতে সেই কসাইখানার চারপাশে কয়েকদিন ঢুঁ মেরে – আমরা নিশ্চিত হই, সোর্স ঠিক বলেছে। কিন্তু ভেতরে ঢুকে পর্যাপ্ত প্রমাণ তুলে আনাই হয়ে দাঁড়ায় মূল সমস্যা।
আমরা কাজ করি অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান সুপারউইজিয়ারে। এটি প্রচারিত হয় টিভিএন ডিসকভারি পোল্যান্ডে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় আমাদের সম্পাদকের সাথে। আমরা সিদ্ধান্ত নিই, একজন ছদ্মবেশে সেখানে গিয়ে কসাইয়ের চাকরি নেবে। আনন্দের বিষয় হল, শেষ পর্যন্ত চাকরিটা জোটে আমার কপালেই।
কোথায় গেল মাংস?
কাজ শুরুর আগেই আমরা জানতাম, সেই কসাইখানা খামারীদের কাছ থেকে অসুস্থ এবং মৃত গরু কিনছে। একেকটি অসুস্থ গরুর জন্য তারা সর্বোচ্চ ২০০ ডলার দাম দিচ্ছে, যেখানে একটি সুস্থ গরু বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ১৪০০ ডলারে।
আমরা আরো জানতাম, কখনো কখনো সেই কসাইখানা বিনাপয়সায় রোগাক্রান্ত ও মৃত গরু সংগ্রহ করে। অনেকসময় সেসব গরুর পায়ের হাঁড় ভাঙ্গা থাকে। অসুস্থ গরুগুলো জবাইয়ের পর অপ্রয়োজনীয় দেহাবশেষ দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলা হয়, শরীরের রোগাক্রান্ত অংশটুকু কেটে ফেলে দেয়া হয়, তারপর অসুস্থ গরুর মাংস গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হয়। আমরা এও জানতাম – এত কিছু ঘটছে, কিন্তু সেখানে সরকারি পশুস্বাস্থ্য অফিসের কোনো নজরদারি নেই।
আমরা হিসাব করে দেখেছি, দিনে ২০টি অসুস্থ গরু বিক্রির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিখাদ ৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার মুনাফা করে, এক বছরে। শুধু সুস্থ গরুর মাংস বিক্রি করলে, তাদের মুনাফা হত মাত্র ৯১ হাজার ডলার।
২০১৮ সালেই পোল্যান্ড ৪ লাখ ৩৮ হাজার টন গবাদিপশুর মাংস উৎপাদন করেছে, যার দাম অন্তত ১৫o কোটি ডলার। এই মাংসের ৮০ শতাংশের বেশি রপ্তানি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার আশপাশে।
গবেষণা করে পাওয়া এসব তথ্য আমাদের হাতেই ছিল। এখন দরকার, অবস্থা কতটা খারাপ তা ভেতরে গিয়ে নিজ চোখে দেখা। কিন্তু তার আগে নতুন চাকরির জন্য তৈরি হওয়ার বিষয় ছিল।
যেভাবে কসাই হলাম
অ্যাসাইনমেন্টের প্রয়োজনে ছদ্মবেশ ধারণ করা আমার জন্য নতুন নয়। এর আগে নেদারল্যান্ডে অস্থায়ী শ্রমিক সেজে কাজ করতে গিয়ে মার খেয়েছি। উবার ড্রাইভার সেজে গাড়ী চালিয়ে প্রমাণ করেছি কোম্পানিটি কীভাবে করফাঁকি দিচ্ছে এবং শ্রম আইন লংঘন করছে। ওয়ারস’ শহরের স্ট্রিপ ক্লাবে ঘুরে ঘুরে বের করেছি কীভাবে বিদেশী পর্যটকদের সবকিছু লুটে নেয়া হচ্ছে। কসাই সাজার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আমার পুরনো এইসব অভিজ্ঞতা বেশ কাজে এসেছে।
ছদ্মবেশে কোথাও যাওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়াসহ ইন্টারনেটে আপনার সম্পর্কে যা আছে, তা যতটা সম্ভব মুছে ফেলুন। প্রোফাইলগুলোও মুছে ফেলুন, সম্ভব হলে নতুন প্রোফাইল তৈরি করুন।
ছদ্মবেশে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে আমি যা জেনেছি:
ঠিক করুন কী গল্প বলবেন। শক্ত একটা চরিত্র তখনই দাঁড়ায় যখন সেখানে সত্যি ঘটনা, আবেগ আর অতীত অভিজ্ঞতার মিশেল থাকে। আপনার নিজের স্মৃতি আর অভিজ্ঞতা দিয়ে গল্পটাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলুন। আমি জানতাম, চাকরি পেতে চাইলে ব্যাখ্যা করতে হবে, কেন আমি শহর ছেড়ে এত দূরের একটি গ্রামে কসাইয়ের কাজ করতে এসেছি। এজন্য আমি দুটি গল্প সাজিয়েছিলাম। ভেতরের অবস্থা বুঝে যে গল্পটা জমবে বলে মনে হবে, সেটাই বলার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু সাক্ষাৎকারের সময়ই বুঝতে পারি, দুই গল্পের কোনোটিই টিকবে না। তখন আমি মনে মনে তৃতীয় আরেকটি গল্প তৈরি করলাম। তাদেরকে বললাম, আমার বান্ধবী আরেক ছেলের সাথে প্রেম করছে এবং তার সন্তানের মা হতে চলেছে। সেই দুখে ঘর ছেড়ে আমি এতদূরে চলে এসেছি। গল্পটা সস্তা মনে হলেও, এর কল্যাণেই আমি চাকরিটি পেয়ে যাই।
মিথ্যা। ছদ্মবেশের কারণেই আপনাকে অনেক মিথ্যা কথা বলতে হবে। এজন্য আমার পরামর্শ হল, কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। যে গল্প ফেঁদে ভেতরে ঢুকেছেন, সেটি একদম মুখস্ত করে ফেলুন। মনে রাখবেন, যে কেউ যে কোনো সময় ঐ বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে। আপনার উত্তরে যেন হেরফের না হয়।
ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট। ছদ্মবেশে কোথাও যাওয়ার আগে ইন্টারনেটে আপনার সম্পর্কে যা আছে, তা যতটা সম্ভব মুছে ফেলুন। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলগুলোও মুছে ফেলুন, সম্ভব হলে নতুন প্রোফাইল তৈরি করুন। অ্যাসাইনমেন্টে যাওয়ার অনেক আগেই আপনাকে কাজটি করতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকেও চাইলে শিখতে পারেন: আমার নাম দিয়ে গুগলে ইমেজ সার্চ দিলে ষষ্ঠ পাতায় গিয়ে আমার প্রকৃত পরিচয়সহ একটি একটি ছবি পাওয়া যেত। সেটি আমি মুছতে ভুলে গিয়েছিলাম। এই ছবির কারণেই মধ্যরাতে কসাইখানায় ধরা পড়ে যাই। রাত তিনটায় আমাকে বসের অফিসে তলব করা হয়।
আপনার পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলুন। যদি সেটি একাডেমিক পরিবেশ হয়, তাহলে একজন শিক্ষকের মত আচরণ করুন, কথা বলুন। আর কসাইখানা হলে, চলুন কসাইয়ের মতই।
বেশভূষা বদলে ফেলুন। আপনার গল্পের সাথে মিলিয়ে নিজের বেশভূষা ঠিক করুন। চিন্তা করুন মাথা কি ন্যাড়া করে ফেলবেন, চুল ছাঁটবেন, নাকি চুলের রং বদলাবেন। ভাবুন, দাঁড়ি-গোঁফ রাখবেন, না কেটে ফেলবেন। চরিত্রের সাথে মিলিয়ে পোশাক ঠিক করুন। সেরকম পোশাক না থাকলে কিনে ফেলুন, এমনকি মোজা আর আন্ডারওয়্যারও। আমি সাধারণত রঙ্গিন মোজা পরি। কিন্তু একটা কসাইয়ের পায়ে তেমন মোজা কি চিন্তা করা যায়? সেখানে যাওয়ার আগে আমি চুল, দাঁড়ি, গোঁফ সব কামিয়ে ফেলি। আমার চেহারা এতটাই বদলে গিয়েছিল যে, অফিসের ভেতরে হেঁটে যাওয়ার সময় সহকর্মীরাই চিনতে পারছিল না। আমি বলব, “ব্ল্যাক লাইক মি” নামের বইটিও পড়ে নিন। জানতে পারবেন, ১৯৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত ডিপ সাউথ অঞ্চলে অনুসন্ধান করতে গিয়ে, সাংবাদিক জন হাওয়ার্ড গ্রিফিন কীভাবে নিজের গায়ের রং বদলে কালো করে ফেলেছিলেন।
ব্যক্তিত্বও বদলে ফেলুন। আপনার পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলুন। যদি সেটি একাডেমিক পরিবেশ হয়, তাহলে একজন শিক্ষকের মত আচরণ করুন। আর কসাইখানা হলে, চলুন কসাইয়ের মতই। সেটি যদি হয় কোনো অপরাধীর আস্তানা, তাহলে কথা বলুন একজন অপরাধীর মত করে। আমি পড়াশোনা করেছি পোল্যান্ডের একটি সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতবছর সেখানে পড়ে, আমি আদৌ কসাইয়ের মত আচরণ করতে পারব কিনা, এই নিয়ে আমার সহকর্মীরা চিন্তিত ছিলেন। একারণে কসাইখানায় গিয়ে আমি কারো সাথে নিজের সম্পর্কে খুব একটা কথাবার্তা বলিনি। ভাব নিয়েছি, আমি একটু আত্মকেন্দ্রিক। এই কৌশলই কাজে এসেছে।
গবেষণা করুন। আপনি কোথাও যাওয়ার আগে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে যতটা সম্ভব জেনে নিন। আমি এই কাজের জন্য লাইভলিক ও ইউটিউবে মাংস উৎপাদন এবং পশুর সাথে নির্মমতার প্রচুর ভিডিও দেখেছি। কসাই হওয়ার উপায় নিয়ে বইও পড়েছি কয়েকটি। শহরের কিছু কসাইখানায় গিয়ে দেখেছি, তারা কীভাবে কাজ করেন। অনেকেই পশু জবাই দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। আপনিও সেরকম কিনা, ছদ্মবেশ নেয়ার আগেই জেনে নেয়া ভালো।
.
পরিচয় পত্র। পোল্যান্ডে পরিচয়পত্র নকল করা আইনত অপরাধ। তাই আমরা সেটা করিনি। অবশ্য দরকারও হয়নি। কিন্তু যদি এমন কোনো অ্যাসাইনমেন্টে ছদ্মবেশে যেতে হয়, যেখানে হামলা বা প্রাণহানির ঝুঁকি আছে, তাহলে নকল পরিচয়পত্র দরকার হতে পারে। অবশ্য এটা নির্ভর করবে আপনি কোন অঞ্চলে, কী বিষয় নিয়ে কাজ করছেন, তারওপর। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বলে, অনেক দেশের আদালতই হয়তো বিষয়টিকে মেনে নেবে।
নিজের নিরাপত্তার জন্য আগেই পরিকল্পনা করে রাখুন। বিপদে পড়লে কোন পথ দিয়ে পালিয়ে যাবেন, সেটিও ঠিক করে রাখুন। নিরাপদে যোগাযোগ এবং বার্তা আদানপ্রদানের একটি ব্যবস্থাও তৈরি করুন।
পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণ সংগ্রহ। নৈতিকতার বিচারে এটাই আন্ডারকভার, তথা ছদ্মবেশে সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ। আপনি সেখানে গেছেন অব্যবস্থাপনা বা অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ করতে; ঘটনাকে উস্কে দিতে নয়। কসাইখানায় অসুস্থ গরু জবাই হত রাতে। যখন রাতের পালায় দায়িত্ব পড়ত, তখন আমি একজন একনিষ্ঠ কর্মীর মতই দড়ি বেঁধে অসুস্থ গরু টেনে এনেছি, মাথা কেটে আলাদা করেছি, চামড়া ছাড়িয়েছি, ময়লা পরিষ্কার করেছি। কাউকে বলিনি, পছন্দসই কোনো কাজ দিতে। আমি জানতাম, গোপন ক্যামেরায় অসুস্থ গরু কাটার যে ছবি ধরা পড়ছে, তার সংবাদমূল্য অনেক। এত ছবি নেয়ার মত সময়ও হাতে নেই। তাই আমি কাজের সাথে মিলিয়ে যখন যেভাবে পেরেছি, সেই ছবিই তুলেছি।
বিপদের প্রস্তুতি। নিজের নিরাপত্তার জন্য আগেই পরিকল্পনা করে রাখুন। বিপদে পড়লে কোন পথ দিয়ে পালিয়ে যাবেন, সেটিও ঠিক করে রাখুন। নিরাপদে যোগাযোগ এবং বার্তা বিনিময়ের ব্যবস্থাও তৈরি করুন। কর্মক্ষেত্রের অবস্থা নিয়ে প্রতিদিন সহকর্মীদের কাছে রিপোর্ট করুন। হয়তো তারা এমন কিছু খেয়াল করবেন, যা আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। যদি সম্ভব হয়, কর্মক্ষেত্রের আশপাশে একজন সহযোগী রাখুন, যেন আপনি বিপদে পড়লেই দ্রুত সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারেন। একদিন মাঝরাতে আমার পরিচয় ফাঁস হয়ে যায়। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা না হয় না-ই বললাম! কিন্তু আমার মনে সাহস ছিল। কারণ আমি জানতাম আশপাশেই সহকর্মীরা আমার দিকে নজর রাখছেন। এটা খুবই কাজে আসে।
অনুসন্ধানের প্রতিক্রিয়া
২০১৮ সালের নভেম্বরে একটানা তিন সপ্তাহ ধরে আমি সেই কসাইখানায় কাজ করেছি। তাদের স্বরুপ উন্মোচন করতে গিয়ে কসাইখানার ভেতরে মরা বা অসুস্থ গরু টেনে আনা; বিক্রির আগে অসুস্থ ও মৃত গরুর অবশিষ্ট পরিষ্কার করে নেয়া; পেটে বাচ্চা থাকা অবস্থায় গরু জবাই করা; মায়ের পেটেই মারা যাওয়া বাছুর বের করে, পরে ফেলে দেয়া; পশুর সাথে নির্দয় আচরণের আরো অনেক ঘটনা; পঁচা দেহাবশেষ বিক্রির জন্য ট্রাকে তোলা; সেই মাংস সরকারি পশুস্বাস্থ্য বিভাগ পর্যবেক্ষণ করেছে, এমন সিল মারা; শ্রমিক ও কোম্পানির প্রধানের সাথে কথাবার্তা – এসব কিছুই আমি ভিডিও করেছি। এই কয়দিনে আমি ১২০ ঘন্টার আন্ডারকভার ফুটেজ সংগ্রহ করি।
ছবি: টিভিএন ডিসকভারি পোল্যান্ডের সৌজন্যে।
জানুয়ারিতে আমাদের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, চারিদিকে সাড়া পড়ে যায়। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া:
সেই কসাইখানা ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার বন্ধ করে দেয়। পোল্যান্ডের প্রায় ৮০০ কসাইখানা কড়া সরকারি নজরদারিতে আসে। আমি যেখানে কাজ করি সেখানকার অপরীক্ষিত মাংস পাওয়া যায় ইউরোপের ১৪টি দেশের স্কুল, কিন্ডারগার্টেন, সামরিক ঘাঁটি, রেস্তোরাঁ আর দোকানে। পশুস্বাস্থ্য বিভাগের চীফ ডেপুটির চাকরি চলে যায়। পোল্যান্ডের সাথে চেক রিপাবলিকের বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়। চেক সরকার তার নাগরিকদের পোলিশ মাংস কেনা বাদ দিয়ে দেশী মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেয়। ধরা পড়ে, প্রাগ শহরের বড় বড় দোকানগুলো সেই কসাইখানার মাংস আর্জেন্টাইন বিফ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। ইইউ পরিদর্শকরা পোলিশ মাংস নিয়ে তদন্ত করেন, এবং তাদের রিপোর্ট আমাদের অনুসন্ধানকে সমর্থন করে। এক হিসাবে দেখা গেছে, এই রিপোর্টের কারণে পোলিশ মাংস শিল্প ২০১৯ সালে ১৫ কোটি ডলার আয় হারাবে। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, পোল্যান্ডের ৪৩% নাগরিক মাংস খাওয়া কমিয়ে অথবা একেবারে ছেড়ে দিয়েছে।
আস্থা রাখুন ডেটায়
এই স্টোরির আরো গভীরে যাওয়ার সুযোগ আছে। আমাদের ডেটা-পাগল সহকর্মী ইউলিয়া ডাউকসা পোল্যান্ডের কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি আধুনিকীকরণ সংস্থা এবং কৃষি ও খাদ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট থেকে আরো তথ্য সংগ্রহ করেন। তার বিশ্লেষণ থেকে বেরিয়ে আসে, ২০১৭ সালে পোল্যান্ডে ২০ লাখ গরু বধ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৫১৩টি, অর্থ্যাৎ মাত্র ০.২২%, অসুস্থ হিসেবে নথিবদ্ধ করেছে পশুস্বাস্থ্য দফতর। এখন এই পরিসংখ্যান নিয়েও তদন্ত হবে।
প্যাট্রিক সেপানিয়াক কাজ করেন টিভিএন ডিসকভারি পোল্যান্ডের জনপ্রিয় অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান সুপারউইজিয়েরে। জিআইজেএন সদস্য সংগঠন ফান্ডাসিয়া রিপোর্টেরোর এই সদস্য সাংবাদিকতা করেন ইউরোপের সংগঠিত অপরাধ, মানব পাচার এবং সামাজিক অন্যায়ের মত বিষয়ে; আর যখন তখন চলে যান ছদ্মবেশে। তাকে ইমেইল করতে পারেন এই ঠিকানায়: patryk_szczepaniak@tvn.pl।