প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Posters in memory of the late Chinese doctor Li Wenliang, who warned authorities about the coronovirus outbreak, pictured in Melbourne, Australia. Photo: Adli Wahid/ Unsplash

লেখাপত্র

কোভিড-১৯: আপনার জন্য যে ৯টি পরামর্শ দিয়েছেন চীনা সাংবাদিকরা

English

চীনের চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং, কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন করোনাভাইরাস সম্পর্কে। মৃত এই চিকিৎসকের স্মরণে তৈরি পোস্টার। ছবিটি তোলা হয়েছে মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া থেকে। ছবি: আদলি ওয়াহিদ/ আনস্প্ল্যাশ

দমনপীড়নের মধ্যেও চীনের সাংবাদিকরা কোনো রকমে টিকিয়ে রেখেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে। কিন্তু কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার একে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলেছে। উহান শহর থেকে এই মহামারী গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে চীনের সংবাদমাধ্যমে এত বেশি মানসম্পন্ন অনুসন্ধান প্রকাশিত হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি।

জিআইজেএন-এর রিসোর্স সেন্টারে দেখুন কোভিড-১৯ কাভারের রিপোর্টিং গাইড এবং অন্যান্য আরো রিসোর্স।

এর পেছনে অবশ্য কিছু কারণ আছে। চীনা গণমাধ্যমগুলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশের জন্য “ক্ষণস্থায়ী সুযোগের” সদ্ব্যবহার করেছে। এতে চীনা কর্তৃপক্ষেরও প্রশ্রয় ছিল। দেশটির সরকার কখনো কখনো গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল করে দেয়। সেসময় তারা জনমতকে খুব কঠোর পর্যবেক্ষণে রাখে এবং নিজেদের প্রচারণা কৌশল ঠিক করে। গত বছর হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের সঙ্গে এই সময়ের মিল নেই। সেই পরিস্থিতির সঙ্গে রাজনীতির সংযোগ ছিল, যা চীনের জন্য খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। কিন্তু কোভিড-১৯ সবাইকেই আক্রান্ত করছে। কে কোন ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তা এখানে কোনো ব্যাপার নয়। রাজনীতির চেয়ে পরিবেশগত ও জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে ঐক্যমত্যে পৌঁছানোটা মানুষের জন্য প্রায়ই সহজ হয়।

এত কিছুর পরও, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এই হঠাৎ ও  উদ্দীপনাময় জাগরণের জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে চীনের সাংবাদিকদের অসামান্য উদ্যোগকে। নির্ভুল ও প্রমাণ-নির্ভর এসব প্রতিবেদন তৈরির পেছনে আছে তাদের কঠোর পরিশ্রম। নিয়ন্ত্রণ বা সেন্সরশিপ মোকাবিলার নানা কায়দাকানুনও তারা বের করেছেন একই সময়ে। কিছু প্রতিবেদন ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। কিন্তু চীনের পাঠক-দর্শকও দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে জানেন, কোন প্রতিবেদন রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ফলে তারা আগেই প্রতিবেদনগুলো আর্কাইভ করে ফেলেন, নতুন করে প্রকাশ করেন নোশন ও এভারনোটের মতো প্ল্যাটফর্মে, এবং শেয়ার করেন সামাজিক মাধ্যমে।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এই হঠাৎ ও  উদ্দীপনাময় জাগরণের জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে চীনের সাংবাদিকদের অসামান্য উদ্যোগকে।

ছোঁয়াচে একটি রোগ, যার সম্পর্কে কারোই তেমন কিছু জানা নেই, সরকারও সব কিছু গোপন রেখেছে – চীনের সাংবাদিকদের জন্য সংকটের এই স্বরুপ  ছিল একেবারেই অজানা, অপ্রত্যাশিত। কোভিড-১৯ কাভার করতে গিয়ে তারা ৩২০০-র বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন, যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল হুবেই প্রদেশ।  তাদের সামনে ছিল ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি, নির্ভরযোগ্য তথ্যের অভাব, ব্যাপক মানসিক চাপ, আর কোয়ারেন্টিনে থাকা ৫ কোটি মানুষ।

এখন কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। চীনা সাংবাদিকরা যে পরিস্থিতিতে রিপোর্ট করেছেন, বিশ্বের অনেক দেশের সাংবাদিকরাই ঠিক সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। জিআইজেএন-এর চীনা ভাষা সম্পাদক জোয়ি চি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, সামনে থেকে কোভিড-১৯ কাভার করা সেই সব সাংবাদিকদের; জানতে চেয়েছেন, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সহকর্মীদের জন্য তাদের পরামর্শ। এদের প্রায় সবাই কথা বলেছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে, কিন্তু পরামর্শ দিয়েছেন অকপটে। এখানে তার সারসংক্ষেপ:

মৌলিক বৈশিষ্ট্য ও রীতিনীতি সম্পর্কে জানুন

আপনি যদি স্বাস্থ্যবিষয়ক রিপোর্টার না হন, তাহলে রিপোর্টিংয়ে যাবার আগে জেনে নিন ছোঁয়াচে রোগের মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট্য ও রীতিনীতি সম্পর্কে। একই সঙ্গে জানুন এটি প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে। যেমন, কোভিড-১৯ সনাক্ত করা হচ্ছে কিভাবে? রোগবালাই নিয়ে রিপোর্টিংয়ের পদ্ধতিগুলো কী? এই রোগ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি কী? এই তথ্যগুলো পেলে আপনি ছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার গোটা ব্যবস্থাটি বুঝতে পারবেন। এবং এটি আপনার কাজে লাগবে রিপোর্টিংয়ের সময়জুড়ে।

নীতিগুলো বিশ্লেষণ করুন

সব নিউজরুমই কোভিড-১৯ কাভার করছে। ফলে নতুন কোনো দৃষ্টিকোন থেকে প্রতিবেদন তৈরির কথা ভাবতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য-বিষয়ক অনলাইন হেলথ ইনসাইটের রিপোর্টার উ জিং বলেছেন, রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কী ধরণের নীতিমালা গ্রহণ করা হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে সাংবাদিকরা প্রতিবেদন তৈরির ধারণা পেতে পারেন। “উদাহরণ দেওয়ার জন্য বলি, উহানকে যখন লকডাউন করার নীতি গ্রহণ করা হলো, তখন আপনাকে ভাবতে হবে সেখানকার বাসিন্দারা কী ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন,” বলেন জিং। “যাদের হাসপাতালে যাওয়ার দরকার, তাদের জন্য কী শাটল সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে? এই নীতি গ্রহণ করার সময় স্থানীয় সরকার কি ব্যাপারটি বিবেচনায় নিয়েছিল?” এমন বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে আপনি অনেক অপ্রকাশ্য বিষয় সামনে নিয়ে আসতে পারবেন।

ছোট হাসপাতালকে অবহেলা করবেন না

নতুন কোনো ভাইরাসের আবির্ভাব হলে, দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া খুবই জরুরি: এই নতুন ভাইরাসটি কেমন এবং এটি কোথা থেকে এসেছে? চীনের বিজ্ঞানীরা দ্রুতই প্রথম প্রশ্নের উত্তরটি জানতে পেরেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর রহস্য হয়েই ছিল। পরবর্তীতে উহানের বন্যপ্রাণীর বাজার, হুয়ানান সিফুড মার্কেট-কে সনাক্ত করা হয়েছে সেই জায়গা হিসেবে, যেখান থেকে কোভিড-১৯ এর বিস্তার শুরু হয়েছিল। হেলথ ইনসাইটের উ জিং বলেছেন, সাংবাদিকরা বেশি মনোযোগ দিয়েছিল বড় বড় হাসপাতালগুলোর দিকে। কিন্তু এই বন্যপ্রাণীর বাজারের আশেপাশের ছোট হাসপাতালগুলোর কথা অগ্রাহ্য করা উচিৎ নয়। কারণ এখান থেকেই হয়তো পেতে পারেন সবচে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

“উহানকে যখন লকডাউন করার নীতি গ্রহণ করা হলো, তখন আপনাকে ভাবতে হবে সেখানকার বাসিন্দারা কী ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।”— উ জিং, হেলথ ইনসাইটের রিপোর্টার

শুধুই বড় বড় বিশেষায়িত হাসপাতাল বা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার নিয়োজিত বিশেষজ্ঞদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার বদলে ছোট ছোট স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিৎ, বলেছেন উ জিং। বড় হাসপাতালগুলোতে যাওয়ার আগে অনেক রোগীই প্রথমে এসব ছোট জায়গায় যায় চিকিৎসার জন্য। জিং বলেছেন, “করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে শুরুর দিকে সাধারণত কাশি বা জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়। তার জন্য বড় বা বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে যাওয়ার চেয়ে স্থানীয় বা আঞ্চলিক হাসপাতালেই যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনাকে কতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, সে কথা না বললেও চলে।”

কমিউনিটির আশপাশেই থাকুন

চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার থেকে অপ্রত্যাশিত তথ্য পেয়েছেন অনেক চীনা রিপোর্টার। এটি তাদের রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রেও অনেক কাজে এসেছে।

তাই, এমন কোনো জায়গায় থাকা জরুরি যেখান থেকে যাতায়াতের সুবিধা পাওয়া যাবে এবং আক্রান্ত কমিউনিটির মানুষদের সঙ্গেও নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ হবে। উ জিং যে হোটেলে ছিলেন, তার খুব কাছেই ছিল কোভিড-১৯ চিকিৎসার দুটি হাসপাতাল। সেখান থেকে বন্যপ্রানীর বাজারটিও খুব বেশি দূরে নয়। ফলে সেই অঞ্চলের মানুষদের অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার নেওয়া তাঁর জন্য সহজ ছিল। সেই হোটেলে থাকা চিকিৎসকদের কাছ থেকেও তিনি পেয়েছেন নানান তথ্য।

­­সোর্স খুঁজে নিন সামাজিক মাধ্যম থেকে

যখন কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে, তখন হাসপাতালগুলোতে সম্পদের সংকট ছিল। স্বাভাবিকভাবেই অনেক রোগী কোথায় পরীক্ষা করবেন জানতে চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছিলেন। চীনে টুইটারের মত একটি প্লাটফর্ম আছে, যার নাম সিনা ওয়েইবো; আর আছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট উইচ্যাট। সেখান থেকে তথ্য নিয়েই সাংবাদিকরা দেশটির সবচেয়ে আলোচিত কয়েকটি স্টোরি জন্ম দিয়েছেন। যেমন: কোয়ারেন্টিনে যেভাবে মারা গেলেন মা। এটি প্রকাশ করেছিল চীনা ভাষার সাইট নেটইজ। অনেকেই গণমাধ্যমগুলোর অফিসিয়াল উইচ্যাট পেইজে বার্তা পাঠিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করছিলেন।

সামাজিক মাধ্যমে রোগীরা যেসব পোস্ট দিয়েছেন, সেখান থেকে তথ্য নিয়ে সাংবাদিকরা বেশ কিছু আলোচিত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। ছবি:স্ক্রিনশট/নেটইজ

সহানুভূতিশীল হোন, আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলুন, এবং কখন হাল ছাড়তে হবে জানুন।

এই রোগের কারণে সবাই গভীর মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও যারা নিজে থেকে আপনাকে সাক্ষাৎকার দিতে চাইছেনি, তাদের প্রতি সহনুভূতিশীল হোন, এবং মানবিক আচরণ করুন। প্রয়োজনে তাদেরকে সার্জিক্যাল মাস্ক, জীবানুনাশক এবং সাহায্য সংস্থার সাথে যোগাযোগের উপায় বাতলে দিয়ে সাহায্য করুন। “এককথায়, ঐ মূহূর্তে তাদের জন্য যা সবচেয়ে দরকারি, সেটি দিয়ে পারলে তাদের পাশে দাঁড়ান।” বলেন উ। এই সহানুভূতিই পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক এবং ভালো রিপোর্টিংয়ের ভিত তৈরি করে।

কেউ যদি সাক্ষাৎকারের অনুরোধ ফিরিয়ে দেয়, অথবা আপনার পাঠানো বার্তার উত্তর না দেয় – মেনে নিন। এসব প্রত্যাখ্যান ভুলে যেতে শিখুন। উ বলেন: “সব সময় নিজেকে মনে করিয়ে দিন – যে কেউ, যে কোনো সময় সাক্ষাৎকারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।”

সম্পাদকের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করুন

শক্তিশালী অনুসন্ধান বা সিরিজ নিয়ে কাজে  প্রচুর পরিকল্পনা ও সহযোগিতা দরকার হয়। আর মাঠে আপনি যত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন, সেখানে একাই এত কিছু করা সম্ভব নয়। তাই বার্তাকক্ষে আপনার সম্পাদকের সাথে মিলে কাজ করুন। এ ধরণের পরিস্থিতিতে রিপোর্টার মানুষের সাক্ষাৎকার বা তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের কাজে এতই ব্যস্ত থাকে যে, তার পক্ষে চারপাশে কি হচ্ছে বা মানুষের আগ্রহ কোন দিকে যাচ্ছে, সেদিকে নজর রাখা সম্ভব হয় না। এই জায়গায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়, সম্পাদকের পরামর্শ। কারণ, তিনিই তখন আপনাকে বলতে পারেন, গল্পটি কোন দিকে নিতে হবে।

সহানুভূতিই পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক এবং ভালো রিপোর্টিংয়ের ভিত তৈরি করে, মানুষকে খোলামেলা কথা বলতে উদ্বুদ্ধ করে।

একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিস্থিতিকে দেখতে হবে সম্পাদকের। বড় ঘটনায় তারাই মূলত সাংবাদিকদের অ্যাসাইনমেন্ট দেন এবং কী ছাপা হবে তা ঠিক করেন। এর পাশাপাশি, মাঠের রিপোর্টারদেরকে মানসিক সমর্থন এবং বাস্তব পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা উচিত বার্তাকক্ষের।

পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা করুন

যেসব রিপোর্টার সংক্রামক রোগ কাভার করছেন, তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিশেষ জানাশোনা থাকতে হয়। তথ্য ও প্রমাণ-নির্ভর সাংবাদিকতার পাশাপাশি, পাঠকের বোঝার স্বার্থে জটিল বৈজ্ঞানিক পরিভাষা এবং দরকারি তথ্য ব্যাখ্যা করে বলতে হয়। কেবলমাত্র তখনই সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নিতে পারেন পাঠক।

নিজের আবেগের প্রতিও যত্নশীল হোন

বৈশ্বিক মহামারি কাভারের সময় প্রতিদিনের ঘটনার খোঁজ-খবর রাখতে গিয়ে সাংবাদিকরাও অনেক সময় ট্রমা বা গভীর মানসিক চাপে ভোগেন। তাই নিজের আবেগের প্রতিও যত্নশীল হতে হবে আপনাকে। চীনের উহানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ কাভার করা সাংবাদিকরা এ ধরণের পরিস্থিতিতে নিজের যত্ন নেয়ার উপায় সম্পর্কে কিছু পরামর্শ  দিয়েছেন। পড়ে নিতে পারেন তাদের টিপসগুলো:

সারাদিন নিজেকে বদ্ধ ঘরে আটকে রাখবেন না। বাইরে বেরোন, বন্ধুদের সাথে দেখা করুন, কথা বলুন। এমন হোটেল রুম বাছাই করুন, যেখানে পর্যাপ্ত আলো আছে এবং যেখান থেকে বাইরের দৃশ্য ভালোমত দেখা যায়। কারণ, চারপাশের পরিবেশ আপনার মনের অবস্থার ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। নিজেকে শুধু রোগ-শোকের খবরে ডুবিয়ে ফেলবেন না। এর বাইরে অন্য বিষয় নিয়েও পড়ুন, ভিডিও দেখুন, মনোযোগ সরিয়ে রাখুন। যখন খুব বেশি চাপ মনে হবে, একটু কেঁদে নিন। তাতে কোনো সমস্যা নেই। কান্না অনেক সময় ভারমুক্ত করে, আবেগ প্রকাশ করতে সাহায্য করে। শরীর ঠিক রাখলে মনও ভালো থাকে, নেতিবাচক আবেগ সামাল দেয়া যায়। একটু মেডিটেশনও করে দেখতে পারেন। যোগ ব্যায়্যাম বা অন্য যে কোনো ধরণের শরীর চর্চা আপনাকে সবল এবং ভালো থাকতে সাহায্য করবে।

জোয়ি চি জিআইজেএন চাইনিজ-এর সম্পাদক। সাংবাদিকতায় তাঁর আছে সাত বছরের অভিজ্ঞতা। এর মধ্যে তিন বছর তিনি কাজ করেছেন মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে। তিনি ইনিশিয়াম মিডিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এখানে তিনি প্রতিদিনের নিউজ সেকশনের পরিকল্পনা ও দল তৈরি করতেন। 

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

GIJN এর সদস্যপদ জিআইজেসি২৫

মালয়েশিয়াকিনি: স্বাধীন বার্তাকক্ষ যেভাবে ইটের পর ইট গেঁথে ক্ষমতাবানদের “গলার কাঁটা” হয়ে ওঠে

“মালয়েশিয়াকিনি সবচেয়ে জরুরী কাজটি করেছে। বার্তাকক্ষটি সরাসরি এবং সুস্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে ক্ষমতাবানদের কর্তৃত্বকে। সাধারণ মালয়েশিয়ানদের জন্য নিষিদ্ধ বিষয় যেমন জাতি, রাজপরিবার এবং ধর্ম নিয়ে মতামত প্রকাশের একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করেছে।”

অনুসন্ধান পদ্ধতি পরামর্শ ও টুল

নির্বাসিত লোকেদের ওপর রাষ্ট্রের হামলা: ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধানী সিরিজ “দমন নীতির দীর্ঘ হাত” থেকে আমরা যা শিখতে পারি

দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী দল রিপ্রেশন’স লং আর্ম ধারাবাহিকে তুলে ধরেছে, কীভাবে নিজ দেশের সীমানার বাইরে থেকেও নিশানা হচ্ছেন ভিন্ন মতাবলম্বীরা।

প্রতিবেদন প্রকাশ বণ্টন ও প্রচার

সাংবাদিকতায় আস্থা ধরে রাখতে ভ্রাম্যমান অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষ কীভাবে কাজ করছে

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে ভ্রাম্যমান অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষ। উত্তর মেসিডোনিয়ায় এমন একটি বার্তাকক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থা অর্জন করেছে। তাঁরাই বার্তাকক্ষে ছুটে যাচ্ছেন সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে। সম্পৃক্ত হচ্ছেন নিজেরাও।

Toxic Waste Pollution Factory Bank

পরিবেশ ধ্বংসের পেছনে বিনিয়োগ করছে কারা-বিনিয়োগকারীদের খোঁজ করবেন যেভাবে : দ্বিতীয় পর্ব

ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি করছে বা দূষণে ভূমিকা রাখছে—সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের এমন অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা বা প্রণোদনা দেওয়া হয়ে থাকে। লক্ষ্য, নিজ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও যেসব দেশে তাঁরা বিনিয়োগ করছে সেসব দেশের টেকসই উন্নয়ন। অনেক সময় খনিজ উত্তোলন ও বন উজাড় করার কাজেও বিনিয়োগ করে থাকে তারা। আর প্রচারণা চালায় উন্নয়ন বিনিয়োগ বলে। এই নিবন্ধটি পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।