প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Gulf Guide Digital Buying
Gulf Guide Digital Buying

Illustration: Marcelle Louw for GIJN

রিসোর্স

» গাইড

অধ্যায় ৬: মানব পাচারের কেস স্টাডি 

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)ভুক্ত দেশে মানব পাচার ও বলপূর্বক শ্রমের যেসব সাধারণ চিত্র দেখা যায়, তেমন কিছু প্রতিবেদনের উদাহরণ আমরা নিচে তুলে ধরেছি।

গৃহকর্মী : পাচার ও অনৈতিক নিয়োগ

দালাল চক্রের ফাঁদে ভারতীয় নারীরা। সংযুক্ত আরব আমিরাত দিয়ে ভারতীয় নারীদের নিয়মিত পাচার করে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে নিয়ে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। তাঁরা দূতাবাসের মাধ্যমে নিবন্ধিত নন। ফলে শ্রম পরিবেশসংক্রান্ত শর্তগুলো তাঁদের জন্য প্রযোজ্য হয় না। এখানে পাবেন আরেকটি উদাহরণ

ওমানে গৃহকর্মী বিক্রি। ওমানের একটি শহরে দালালেরা অবৈধভাবে গৃহকর্মীদের বিক্রি করে দেন চার হাজারের কম ডলারে। এটি আরেকটি উদাহরণ যে, কীভাবে নারীদের পাচার করে আনা হয় জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে এবং আনুষ্ঠানিক নিয়োগপ্রক্রিয়াকে পাশে সরিয়ে পাচার করে আনা এসব নারীকে নিয়োগ করা হয় গৃহকর্মী হিসেবে।

টুইটারে কেনাবেচা। যেসব নিয়োগদাতা গৃহকর্মীদের দেশে ফেরার টিকিটের টাকা পরিশোধ করতে চান না কিংবা গৃহকর্মীকে আরেকজনের কাছে হস্তান্তর করে মুনাফা করতে চান; তাঁদের জন্য আছে জমজমাট এক অনলাইন বাজার। যাঁরা কোনো গৃহকর্মী নিতে চান এবং নিয়োগসংক্রান্ত মোটা অর্থ ব্যয় করতে চান না, তাঁরাই এই বাজারের ক্রেতা। এসব লেনদেনের সময় যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা এই ভিসা ব্যবসার দাসসুলভ মনোভাবকেই ফুটিয়ে তোলে। 

আটকা পড়া

আটকা পড়া নেপালি অভিবাসী শ্রমিক। ২০ হাজার নেপালি নাগরিক আটকা পড়েছিলেন কাতারে। কাজের শর্তে রাজি না হওয়ায় তাঁদের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। কীভাবে শ্রমিকেরা গন্তব্যের দেশে পৌঁছানোর পর নিরুপায় হয়ে বলপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত হন, এটি তার একটি আদর্শ উদাহরণ। এবং স্পন্সরশিপ আইনের ফলে শ্রমিকদের জন্য এসব পরিস্থিতি এড়ানো খুবই কঠিন হয়ে যায়।  

সৌদি অর্থনৈতিক সংকটের ভিকটিমদের কোনো মাফ নেই। সৌদি আরবের বৃহৎ নির্মাণপ্রতিষ্ঠান ওগার এবং অন্য আরও কিছু কোম্পানির আর্থিক বিপর্যয়ের পর সেখানে আটকা পড়েছিলেন শত শত শ্রমিক। তাঁদের অনেকেই মাসের পর মাস পার করেছেন বেতন না পেয়ে। কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন শ্রম শিবিরে। 

আটকা পড়া প্রবাসীদের সাহায্যের আকুতি। স্পন্সরশিপ ব্যবস্থা সংস্কারের পরও অভিবাসী শ্রমিকেরা ভীষণভাবে নির্ভরশীল থাকেন তাঁদের স্পন্সরদের ওপর। যদি কোনো স্পন্সর শ্রমিকের ভিসা নবায়ন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সেটির দায়ভারও এসে পড়ে শ্রমিকের ওপর। তাঁকেই অপরাধী বানানো হয় এবং “অবৈধ” ঘোষণা করা হয়। দূতাবাসগুলো এত বিপুল পরিমাণ কেস দ্রুত সমাধান করতে পারে না। ফলে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকেরা প্রায়ই এভাবে আটকা পড়েন। নিজ দেশে ফিরতে পারেন না। 

ঋণ ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি

Gulf Guide - passport confiscation

ইলাস্ট্রেশন: জিআইজেএন-এর জন্য মার্সেল লো

মানব পাচারকারীরা কিভাবে নারীদের গৃহ দাসত্বের জালে আটকে ফেলছে। লাখো নারীকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির লোভ দেখিয়ে কাজের জন্য আনা হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলে। বাস্তবে তাদেরকে এমন দশায় ফেলা হয়েছে, যা আধুনিক দাসত্বের সামিল। কিভাবে মানব পাচারকারীরা নারীদের এভাবে শোষণ বঞ্চনার মুখে ফেলছে এবং এটি রোধ করতে কী করা যায়? 

আবুধাবির বেকারিতে উগান্ডার আটকা পড়া অভিবাসীরা। বেশি বেতন ও ভালো কাজের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে প্রায়ই মোটা অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করেন অভিবাসী শ্রমিকেরা। চুক্তির শর্ত বদলানোর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন থাকলেও প্রায়ই দেখা যায়: গন্তব্যের দেশে গিয়ে শ্রমিকেরা আবিষ্কার করেন তাঁদের সম্মত হওয়া শর্ত থেকে পরিস্থিতি পুরোপুরি আলাদা। কিন্তু সেখানেই তাঁদের কাজ করে যেতে হয়। স্পন্সরশিপ আইন, আমলাতান্ত্রিক বাধা এবং নিয়োগজনিত ঋণের কারণে এসব কাজ ছেড়ে দেওয়াও কঠিন হয়ে যায় অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য। 

ফেরার পথ নেই: বেরোনোর অনুমতি ও জব্দ করা পাসপোর্ট

সৌদিতে আটকা পড়া ভারতীয় চিকিৎসক। কিছু দেশে অভিবাসী শ্রমিকদের দেশ ত্যাগ করতে হলে স্পন্সরদের অনুমতি প্রয়োজন হয়। তা সে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফিরে যাওয়ার প্রশ্নেই হোক কিংবা কোনো ছুটির ক্ষেত্রেই হোক। এসব দেশে দেশে অভিবাসী শ্রমিকেরা বেশি দুরবস্থার মুখে পড়েন। বিশেষভাবে স্পন্সরটি যদি নিপীড়ক মনোভাবের হয় বা বিষয়টি গুরুত্ব না দেয়। আলোচ্য এই প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে দেখা যায়: অসুস্থ এক অভিবাসী শ্রমিক ভারতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁর স্পন্সর তাঁকে অনুমতি দেয়নি এক বছরের বেশি সময়। 

চাপের মুখে লেবাননের অভিবাসী শ্রমিকেরা। উপসাগরীয় অঞ্চল, জর্ডান ও লেবাননে পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা অবৈধ। কিন্তু এখনো এটি একটি সাধারণ চর্চা হিসেবে থেকে গেছে। অন্যদিকে নিয়োগকারীদের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থাটি খুবই ঢিলেঢালা। পাসপোর্ট ছাড়া অভিবাসীরা তাঁদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন না কিংবা অনেক জায়গায় স্পন্সরশিপ আইনের কারণে অন্য কোনো কাজেও ঢুকতে পারেন না।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

জিআইজেএন রিসোর্স সেন্টারের ২০২৪ সালের সেরা গাইড ও টিপশিট

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপে ধাপে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সাংবাদিকদের। তথ্য সংগ্রহ, অংশীদারত্বমূলক কাজ, প্রকল্পের অর্থ যোগান , পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা জ্বালানী বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার রসদ পেতে বেশ কিছু গাইড প্রকাশ করেছে জিআইজেএন। দেখুন এই প্রতিবেদন।

পরামর্শ ও টুল সংবাদ ও বিশ্লেষণ সম্পাদকের বাছাই

জিআইজেএনের ২০২৪ সালের সেরা অনুসন্ধানী টুল

কৌতূহল, সাহস ও অংশিদারত্ব বছরজুড়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিয়েছে। এই সাংবাদিকতাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে দারুন কিছু টুল। একনজরে দেখে নিন চলতি বছরের সাড়া জাগানো অনুসন্ধানে ব্যবহৃত টুল ছিল কোনগুলো।

সম্পাদকের বাছাই

প্রাণঘাতী আন্দোলন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি অনুসন্ধান: ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

আরও স্থান পেয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে অনুসন্ধান, জনসংখ্যার ডেটা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গরমিল ও ক্ষমতাধর পুলিশ প্রধানের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রসঙ্গ।

অনুসন্ধান পদ্ধতি শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণ

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ‘হাব’ যেভাবে একটি প্রজন্মের রিপোর্টারদের তৈরি করেছে

মেক্সিকো সীমান্তে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য তাঁদের পেশাটা ছিল যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। কেন্দ্রে যাঁরা সাংবাদিকতা করেন, তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব তো ছিলই, ছিল সার্বক্ষণিকি নিরাপত্তাহীনতাও। সাংবাদিকেরা একজোট হয়ে এই দূরত্ব ঘুঁচিয়ে আনতে গড়ে তোলেন একটি সংগঠন। প্রয়োজনীয়ল প্রশিক্ষণ শেষে হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁরা অনুসন্ধান করে তুলে আনেন বেশ কিছু প্রতিবেদন।