প্রবেশগম্যতা সেটিংস

রিসোর্স

» গাইড

অধ্যায় ৫: বিশেষজ্ঞ গাইড

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

বলপূর্বক শ্রম, মানব পাচার, অবৈধ অভিবাসী ইত্যাদি বিষয়ে বলতে গেলে বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (মেনা) অঞ্চলের কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা করিডরের দিকে মনোযোগ দেন। এখানে অভিবাসনের উৎস ও গন্তব্য; দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেই কথা বলার জোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ, দুই পক্ষ থেকেই আপনি অভিবাসন প্রক্রিয়ার ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারবেন।

শ্রমসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক গ্রুপ

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন

আইএলওর প্রতিবেদনগুলোতে মানব পাচার ও বলপূর্বক শ্রমসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়। আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে প্রতিবেদনগুলোর লেখকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন। আরব দেশগুলোর জন্য আইএলওর আঞ্চলিক দপ্তরটি বৈরুতে অবস্থিতমধ্যপ্রাচ্যে তাদের চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে রিজিওনাল ফেয়ার মাইগ্রেশন প্রজেক্ট অন্যতম। আইএলওর কর্মকর্তারা আপনাকে অন্যান্য যোগাযোগের অনেক সূত্র ধরিয়ে দিতে পারেন। পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন অন্যান্য গবেষক, অধিকারকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে।

২০১৭ সালে কাতারের সঙ্গে একটি টেকনিক্যাল কো-অপারেশন প্রোগ্রাম চালু করেছিল আইএলও। প্রোগ্রামটির উদ্দেশ্য ছিল: কাতারের আইনকানুন যেন আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী তৈরি করা হয়, তা নিশ্চিত করা এবং ধীরে ধীরে শ্রমিকদের অধিকার-সম্পর্কিত মৌলিক বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া। প্রকল্পটির মেয়াদ প্রাথমিকভাবে তিন বছর ধরা হলেও সেটি এখনো চলমান আছে। ২০২০ সালে তারা সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অন মাইগ্রেশন 

কয়েকটি গন্তব্য দেশে আইওএমের আঞ্চলিক দপ্তর আছে। কখনো কখনো তারা পাচার করে আনা অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে। এসব দপ্তরের কর্মকর্তা ছাড়াও আপনি তাঁদের প্রকাশনাগুলোর লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাঁরাও হতে পারেন উপকারী রিসোর্স। 

অন্যান্য সংগঠন

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের অভিবাসী করিডর নিয়ে কাজ করা আরও কিছু সংগঠনের তালিকা আমরা এখানে এক জায়গায় করেছি

বেশির ভাগ উপসাগরীয় দেশে নাগরিক সংগঠনগুলোর আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিধিনিষেধ আছে। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও এই অঞ্চলের কিছু গ্রুপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছে। এসব সংগঠনের সন্ধান ও নিয়মিত খবরাখবর পেতে নজর রাখতে পারেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। সেখানে অনেক ধরনের অ্যাডভোকেসি ও তথ্য আদান-প্রদান হয়।

একাডেমিক ও গবেষক

উৎস ও গন্তব্যের অনেক দেশে শ্রম অভিবাসন নিয়ে ভালো ভালো গবেষণা হয়েছে। স্থানীয় গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের কমিউনিটিগুলোতে অভিবাসন ও মানব পাচারের চর্চা পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে এগুলোর বিশেষ বিশেষ দিক ভালোভাবে তুলে ধরেছেন। তেমন কিছু গবেষকের পরিচিতি:   

কে. রঞ্জু রঙ্গন জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ানদের শ্রম অভিবাসন নিয়ে সক্রিয়ভাবে গবেষণা করছেন স্বাধীন গবেষক ও এক্সোডাস রিসার্চের এই প্রতিষ্ঠাতা। 

ড. ওমর আলশেহাবি কুয়েতের গাল্ফ ইউনিভার্সিটি ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক। তিনি উপসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক অর্থনীতি ও অভিবাসন নিয়ে লেখালেখি করেন।  

ড. জাহরা বাবর কাতারে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির CIRS-এর গবেষণা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর। তাঁর গবেষণার প্রধান বিষয়বস্তু এই অঞ্চলের অভিবাসন। · 

ড. শাইবান তাকা লিখেছেন এই বই: “দ্য লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অব মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স রাইটস ইন দ্য আরব কান্ট্রিজ।”

ড. বিনা ফার্নান্দেজ অভিবাসন ও শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। যেগুলোর মধ্যে আছে “মাইগ্র্যান্ট ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স ইন দ্য মিডল ইস্ট: দ্য হোম অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড”, “ইরেগুলার মাইগ্রেশন ফ্রম ইথিওপিয়া টু দ্য গাল্ফ স্টেটস”এবং “ট্রাফিকারস, ব্রোকারস, এমপ্লয়মেন্ট এজেন্টস অ্যান্ড সোশ্যাল নেটওয়ার্কস: দ্য রেগুলেশন অব ইন্টারমিডিয়ারিজ ইন দ্য মাইগ্রেশন অব ইথিওপিয়ান ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স টু দ্য মিডল ইস্ট”।

রুজা বজ্রাচার্য ও বন্দিতা সিজাপতি। তাঁরা লিখেছেন এই বই: “দ্য কাফালা সিস্টেম অ্যান্ড ইটস ইমপ্লিকেশস ফর নেপালি ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স”।

ড. রে জুরেইদিনি মেনা অঞ্চলে অভিবাসন বিষয়ে অন্যতম প্রধান বিশেষজ্ঞ। সম্প্রতি তিনি লেবাননের অভিবাসী গৃহকর্মীদের নিয়ে একটি গবেষণা শুরু করেছেন। এই অঞ্চলে অভিবাসী শ্রমিকদের নানা ইস্যু নিয়ে তিনি নিয়মিত লেখাপত্র প্রকাশ করেন। 

ড. নাসরা শাহ কুয়েতভিত্তিক পপুলেশন স্টাডিজ-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। জিসিসি দেশগুলোতে অভিবাসন ও মানব পাচার নিয়ে তিনি বেশ কিছু গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।

খলিল বুহাজা জিসিসির কাউন্সিল অব মিনিস্টারস অব লেবারের শ্রমসংক্রান্ত বিষয়াবলির ব্যবস্থাপক। তিনি বলপূর্বক শ্রম নিয়ে পিএইচপি গবেষণা করছেন। 

উৎস দেশের গ্রুপ

লেবার অ্যাটাশে

 লেবার অ্যাটাশেরা তাঁদের নির্দিষ্ট দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যাপারে অনেক তথ্য দিতে পারেন। শ্রমিকেরা যে ধরনের সাধারণ সমস্যার মুখোমুখি হন এবং সেগুলো সমাধানের পথে থাকা বাধাবিপত্তি ইত্যাদি অনেক বিষয়েই সজাগ থাকেন লেবার অ্যাটাশেরা। 

দূতাবাসের সমাজসেবা কর্মী

কিছু দূতাবাস তাদের কমিউনিটির মানুষদের স্বার্থে কাজ করার জন্য বা কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে কাজ করার জন্য সমাজসেবা কর্মী নিয়োগ দেয়। তাঁদের কাছে মানব পাচার, বলপূর্বক শ্রমের শিকার মানুষদের সম্পর্কে অনেক তথ্য থাকে। তাঁরা এমনকি আপনাকে সরাসরি সেসব শ্রমিকের সঙ্গেও যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেন। 

লেবার অ্যাটাশে ও সমাজসেবা কর্মী; দুই ধরনের মানুষের কাছেই আপনি পৌঁছাতে পারেন অভিবাসীদের উৎস দেশগুলোর দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য অনলাইনে খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এটি মাথায় রাখুন যে, সামনাসামনি গিয়ে দেখা করলে তা অনেক বেশি কাজে দেয়। কারণ, মেইল বা ফোন যোগাযোগ সব সময় নির্ভরযোগ্য হয় না। 

যদি গন্তব্যের দেশে কোনো নির্দিষ্ট দূতাবাস না থাকে, তাহলে অভিবাসী কমিউনিটি গ্রুপগুলোতে খোঁজ করা যেতে পারে। বা সেই অঞ্চলে সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা দূতাবাসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। হয়তো তারা সেই অভিবাসী গন্তব্যের দেশে এই কমিউনিটির দেখভালের জন্য কাউকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। 

অভিবাসী সিভিল সোসাইটি সংগঠন

মাঠপর্যায়ের সংগঠনগুলোর কাছে অভিবাসীদের ব্যাপারে এমন অনেক তথ্য থাকে, যা অনলাইনে প্রকাশিত হয়নি। অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে, এমন জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সংগঠনের খোঁজ করুন। তাদের সবার কাছে ভিন্ন ভিন্ন গল্প ও অভিজ্ঞতার কথা শুনতে পাবেন। কিছু উদাহরণ:

আঞ্চলিক উদাহরণ

গন্তব্য দেশের গ্রুপ

অভিবাসী সিভিল সোসাইটি সংগঠন

স্থানীয় কিছু সংগঠন হয়তো বিস্তৃতভাবে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে পারে। কিছু সংগঠন হয়তো নির্দিষ্টভাবে কাজ করে অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে। দুই ক্ষেত্রেই, আপনি তাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন: মানব পাচারের হটস্পট, আইনি ও সামাজিক ব্যবস্থার ঝুঁকি এবং আরও নানা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। ক্রস রিজিওনাল সেন্টার ফর রিফিউজিস অ্যান্ড মাইগ্র্যান্টস, সাংবাদিকদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারে গন্তব্য দেশের বিভিন্ন সংগঠন ও কর্মীদের সঙ্গে। 

অভিবাসী নেটওয়ার্ক ও কমিউনিটি

এই ধরনের সংগঠন বিভিন্ন আকারে থাকতে পারে। কিছু হয়তো নিবন্ধিত কমিউনিটি সংগঠন, যেমন সামাজিক ক্লাব বা সমিতি হিসেবে কাজ করে। আবার কোনো ক্ষেত্রে, তাদের হয়তো একধরনের নেটওয়ার্ক আছে, যার মাধ্যমে তারা দুর্দশায় থাকা কোনো স্বদেশিকে সাহায্য-সমর্থন জোগায়। আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত গ্রুপগুলো খুঁজে পাওয়া যায় সহজে। অনেক বড় উৎস দেশের এমন সংগঠনের বিভিন্ন বৈশ্বিক শাখাও থাকে। অনানুষ্ঠানিক গ্রুপগুলো খুঁজে পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। তবে দূতাবাসে বন্ধুসুলভ কোনো কর্মকর্তা চাইলে আপনাকে এসব গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেন। নিবন্ধিত কিছু কমিউনিটির উদাহরণ:

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

গবেষণা ডেটাবেজ

বেসরকারি ডেটার বিকল্প উৎস ও আর্কাইভের তালিকা দেখুন এখানে

পরিসংখ্যানের জন্য সরকারি উৎসগুলো এককথায় অতুলনীয়। সেই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলোও ডেটার ভালো উৎস। বেশ কিছু সাংবাদিক সংগঠনও ডেটা সংরক্ষণ করে থাকে এবং দলের সদস্যদের কাছে প্রয়োজনমাফিক তথ্য যোগায়। এই প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যবিষয়ক ডেটার খোঁজ কোথায় পাবেন তার সন্ধান থাকল।

সাক্ষাৎকার

কলকারখানার দূষণ উন্মোচন এবং বিট হিসেবে ‘ফরএভার কেমিকেলস’ এর জন্ম হলো যেভাবে

পিএএফএসকে বলা হয় ফরএভার কেমিক্যালস। একাধারে তেল ও তাপ প্রতিরোধী। বছরের পর বছর প্রকৃততি মিশে থেকে দূষণ ঘটায়। দূষণের মতো অদৃশ্য একটা বিষয়কে সবার সামনে দৃশ্যমান করে তোলার প্রক্রিয়াটি সত্যিই রোমাঞ্চকর।

পরামর্শ ও টুল

কীভাবে যেকোনো রিপোর্টারই এখন পৃথিবীর যেকোনো জায়গার মানসম্পন্ন ও বিনামূল্যের স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করতে পারেন

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ এখন গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। মজার ব্যাপার হলো এই ইমেজ বেশিরভাগক্ষেত্রে পাওয়া যায় বিনামূল্যে। স্যাটেলাইট ইমেজের উৎসগুলো কি, কীভাবে ব্যবহার করবেন দেখে নিন এই প্রতিবেদনে।

অনুসন্ধান পদ্ধতি ডেটা সাংবাদিকতা

ইউরোপীয় সীমান্তে অজ্ঞাতনামা অভিবাসীদের গণকবর নথিভুক্ত করা 

ভ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় কত তরুণই না দেশ ছাড়েন প্রতিনিয়ত। তাঁদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না। প্রাণ হারিয়ে অজ্ঞাতনামা হিসেবে কবরস্ত হন। দেখুন সাংবাদিকদের একটি দল ১০ বছর ধরে কীভাবে খুঁজে বের করেছেন সহস্রাধিক বেনামী কবর।