প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Gulf Guide - Kuwait
Gulf Guide - Kuwait

Illustration: Marcelle Louw for GIJN

রিসোর্স

» গাইড

অধ্যায় ১১: কুয়েতের জন্য রিপোর্টিং গাইড

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

গণমাধ্যম পরিস্থিতি

কুয়েতে সংবিধানের ৩৬ ও ৩৭ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বাক্‌স্বাধীনতা সংরক্ষণ করা হয়েছে, যদিও এই স্বাধীনতা “সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা” সীমাবদ্ধ।

কুয়েতে আমিরের সমালোচনা করা বেআইনি, এবং করলে পাঁচ বছরের বেশি কারাদণ্ড, শারীরিক নির্যাতন, মারাত্মক পর্যায়ের জিজ্ঞাসাবাদ বা নির্বাসন পর্যন্ত হতে পারে। ২০২০ সালে নতুন আমির শাসনভার গ্রহণ করেছেন। ফলে এখন শ্রমবাজার ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে নতুন আইন বা চর্চা শুরু হয় কি না, সেদিকে নজর রাখা জরুরি।

ইসলাম ধর্ম, নবী কিংবা সৃষ্টিকর্তাকে অসম্মান করে, এমন কোনো কিছু প্রকাশ করা বেআইনি। এই বিষয়গুলোকে নেতিবাচকভাবে দেখায়, এমন কিছু প্রকাশ করলে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি জরিমানা এবং এক বা তার বেশি বছরের জন্য কারাদণ্ড হতে পারে। ক্ষমতাধর কাউকে নিয়ে রিপোর্ট করা বেআইনি না হলেও আপনাকে আটক বা দেশত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষ করে কুয়েতের মাবাহেথ নামক গুপ্ত গোয়েন্দা সংস্থার আন্ডারকভার এজেন্টদের মাধ্যমে শারীরিক নির্যাতন এবং হুমকির শিকার হন সাংবাদিকেরা।

Kuwait World Press Freedom Index Ranking

মেনা অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা) কুয়েতই অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ২০২০ সালের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে। এখানে তাদের অবস্থান ১০৫। ছবি: স্ক্রিনশট

“নৈতিকভাবে আক্রমণাত্মক” কনটেন্টের জন্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়। কুয়েতের ২০১৬ সালের ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন গণমাধ্যম এবং সংবাদ ব্লগের ওপর বাড়তি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। আইনত, তাদের লাইসেন্স থাকা আবশ্যক। অবশ্য বিদেশি রিপোর্টারদের চেয়ে কুয়েতের স্থানীয় রিপোর্টারদের সমালোচনা করার স্বাধীনতা বেশি। মেনা অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা) কুয়েতই অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ২০২০ সালের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে। এখানে তাদের অবস্থান ১০৫তম।

কোথায় পাবেন খবর?

কুয়েতে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা পাচার হওয়া এবং দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের সহায়তা দেয়। তারা আপনাকে অভিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবে। অভিবাসী নেতা এবং সমাজসেবকেরা বেশ পরিশ্রমী। তাঁরা আপনাকে শ্রমিকদের ক্যাম্প বা আবাসস্থলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারে। হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন ফর লিগ্যাল এইড, কুয়েত হিউম্যান রাইটস সোসাইটি বা সোশ্যাল ওয়ার্ক সোসাইটির মতো আইনবিষয়ক বা আইনজীবীদের সংগঠন আপনাকে আইনি পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি তারা আপনাকে স্টোরি খুঁজতে বা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে সহায়তা করতে পারে।

নিচের এই প্রতিষ্ঠানগুলো অভিবাসন বিষয় নিয়ে কাজ করে:

বৈঠক ও সাক্ষাৎকার

যখন কোনো মন্ত্রণালয় বা সরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, সশরীরে যান। সম্ভব হলে দলগতভাবে এবং অবিশ্বাস বা সন্দেহ এড়াতে, স্থানীয় কাউকে সঙ্গে নিন। সাংবাদিক পরিচয় জানালে তা সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত আপনি যখন স্পর্শকাতর তথ্য চাচ্ছেন। কোনো প্রকল্প বা গবেষণায় কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিলে তুলনামূলক বেশি সহায়তা পাওয়া যায়। মাথায় রাখুন: যে তথ্য আপনি পেতে যাচ্ছেন, সেটি মৌখিক হতে পারে; কারণ, সরকারি কার্যালয়গুলো সব তথ্য নথি বা অনলাইনে সংরক্ষণ করে না।

যে জায়গাগুলোতে যেতে পারেন:

  • ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স ডিপার্টমেন্ট ইন আল দাজিজ। এখানকার কর্মচারীদের কাছ থেকে খুব বেশি সহায়তা না-ও পেতে পারেন। কারণ, সেখানে ‘ইকামাতে’ স্বাক্ষরের কাজে স্থানীয় শ্রমিকদের লম্বা লাইন লেগেই থাকে।
  • ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স শেল্টার। নির্যাতনের শিকার হয়ে বা পারিশ্রমিকের অভাবে যে স্থানীয় শ্রমিকেরা মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন, সরকার তাঁদের (এবং তাঁদের সন্তানদের) জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে। আপনি যদি কর্তৃপক্ষের সাক্ষাৎ না পান, তাহলে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্য নিন।
  • রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়। সংসদ সদস্যরা সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন।
  • উৎস দেশের দূতাবাস তথ্য জানার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক। তারা অভিবাসী শ্রমিক-সম্পর্কিত আইন সম্পর্কে ব্যাখ্যা ও তথ্যের প্রয়োজনীয় উৎস।

সংসদের কিছু সদস্য যেহেতু বহিরাগত এবং স্থানীয়দের মধ্যে বিভাজনকে উৎসাহ দেন, তাই দেশটিতে বহুত্ববাদিতা নিয়ে আলোচনা যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অভিবাসী শ্রমিকদের কথাগুলো তুলে ধরা, সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই এবং অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর বিষয়ে অনুসন্ধান কুয়েতে খুবই জরুরি। মনে রাখা ভালো: শুধু প্রবন্ধ দিয়ে বেশি দর্শক বা পাঠকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তাই এসব বিষয়ও মাথায় রাখুন:

  • ভিডিও শুট করুন। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য সাক্ষাৎকারদাতার মুখ অস্পষ্ট করে দিন এবং অভিবাসীদের কথাগুলো মানুষকে শুনতে দিন।
  • স্টোরির ফলোআপ করুন। প্রকাশ করুন, কীভাবে অভিবাসীদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের পরিবার বা তাঁদের আগের পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে কথা বলুন। মানুষকে সম্পূর্ণ স্টোরিটা জানান।
  • মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করুন।
  • আপনার বক্তব্য টিভিতে ও কর্মশালায় তুলে ধরুন।
  • সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয় কুয়েতি নাগরিকদেরকে অনুরোধ করুন, যেন আপনার কাজগুলো তুলে ধরেন। তাহলে বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। তাঁদের অনেকেই সাহায্য করতে আগ্রহী হবেন।

সাধারণ রিপোর্টিং পরামর্শ

  • যখন অভিবাসী শ্রমিকদের বিষয় নিয়ে লিখবেন, মনে রাখুন, অভিবাসীদের স্থান হওয়া উচিত স্টোরির একদম কেন্দ্রে।
  • আপনার আলোচনার উদ্দেশ্যটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন এবং অভিবাসীদের তথ্য প্রকাশ করার আগে তাঁদের অনুমতি নিন।
  • আপনি নিয়োগদাতার উপস্থিতিতে স্থানীয় শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না। তার বদলে, তাঁরা যখন একা কোথাও যান, যেমন মসজিদে যাওয়ার সময়–তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করুন।
  • সব অভিবাসী যে কুয়েতের স্থানীয় কারও সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলতে স্বস্তি অনুভব করবেন, এমনটা না-ও হতে পারে।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

অনুসন্ধান পদ্ধতি শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণ

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ‘হাব’ যেভাবে একটি প্রজন্মের রিপোর্টারদের তৈরি করেছে

মেক্সিকো সীমান্তে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য তাঁদের পেশাটা ছিল যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। কেন্দ্রে যাঁরা সাংবাদিকতা করেন, তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব তো ছিলই, ছিল সার্বক্ষণিকি নিরাপত্তাহীনতাও। সাংবাদিকেরা একজোট হয়ে এই দূরত্ব ঘুঁচিয়ে আনতে গড়ে তোলেন একটি সংগঠন। প্রয়োজনীয়ল প্রশিক্ষণ শেষে হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁরা অনুসন্ধান করে তুলে আনেন বেশ কিছু প্রতিবেদন।

অনুসন্ধান পদ্ধতি গবেষণা

ডেনমার্কের কল্যাণ সংস্থার অ্যালগরিদমপদ্ধতি নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধান

কল্যাণ সহায়তা বণ্টন পদ্ধতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে অ্যালগরিদমভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করছিল ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান। অনুসন্ধানে দেখা গেল, বৈষম্য বিলোপে নেওয়া এই উদ্যোগে উল্টো বাড়ছে বৈষম্য।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

২০২৪ ডাবল এক্সপোজার ফেস্টিভ্যাল: সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব না পাওয়া কিংবা অন্যায্যতার মতো ইস্যু নিয়ে অনুসন্ধান

জিআইজেএন সদস্য ও অলাভজনক অনুসন্ধানী বার্তাসংস্থা 100Reporters আয়োজিত চার দিনের ২০২৪ ডাবল এক্সপোজার চলচ্চিত্র উৎসব ও সিম্পোজিয়ামে (৭-১০ নভেম্বর) ২৩টি পূর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়ে গেল। দেখে নিন কী কী বিষয় নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন নির্মাতারা।

পরামর্শ ও টুল

দেখুন, ওয়েবসাইট কনটেন্ট ও মেটাডেটা বিশ্লেষণে ওপেন সোর্স টুল ‘ইনফরমেশন লন্ড্রোম্যাট’ কীভাবে কাজ করে

বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মধ্যকার যোগসূত্র, মালিকানা চিহ্নিত করা এবং কনটেন্টের ধরন ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণের জন্য সবচেয়ে নতুন ও মজার টুলগুলোর মধ্যে ইনফরমেশন লন্ড্রোম্যাট একটি। কোনো পয়সাকড়ি খরচা না করেই আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন। জর্জ মার্শালের অর্থায়নে টুলটি বানিয়েছে অ্যালায়েন্স ফর সিকিউরিং ডেমোক্রেসি (এএসডি)।