ছবি: পেক্সেল ডট কমের পিক্সাবে থেকে
প্রোপাবলিকার অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা কোথায় খুঁজে পান এত আইডিয়া?
ছবি: পেক্সেল ডট কমের পিক্সাবে থেকে
সম্পাদকের নোট: প্রোপাবলিকা ইলিনয় একটি স্বাধীন অলাভজনক গণমাধ্যম। এর জন্ম হয়েছে নিউইয়র্কের পুলিৎজার জয়ী প্রতিষ্ঠান প্রোপাবলিকা থেকে। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের সবচে বড় নগরী এবং সংবাদপত্রের শহর বলে খ্যাত, শিকাগোতে তাদের প্রধান কার্যালয়। ২০১৭ সালে তারা যাত্রা শুরু করে, মূলত প্রোপাবলিকার সহযোগিতামূলক (কোলাবরেটিভ) সাংবাদিকতার মডেলটিকে আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিবেদক, সম্পাদক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মিলে কাজ করেন মাত্র ১২জন। কঠিন ও সাড়াজাগানো সব অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে জবাবদিহি করার চেষ্টা, তাদেরকে এরিমধ্যে খ্যাতি এনে দিয়েছে।
প্রোপাবলিকা ইলিনয় পাঠকদের কাছে জানতে চেয়েছিল, গণমাধ্যমের কাজ সম্পর্কে তাদের মনে কোন প্রশ্ন আছে কি না। তারপর থেকে পাঠকরা প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন। ধারাবাহিক কলামের মাধ্যমে তাদের কঠিন ও সুচিন্তিত সব প্রশ্নের উত্তরও দিয়ে যাচ্ছে গণমাধ্যমটি। এই লেখা, সেই ধারাবাহিকের অংশ, যেখানে তাদের রিপোর্টার জোডি এস. কোহেন উত্তর দিচ্ছেন, প্রোপাবলিকা ইলিনয় কীভাবে ঠিক করে, তারা কোন কোন স্টোরি নিয়ে কাজ করবে।
প্রশ্ন: আমি জানতে চাই, আপনারা নতুন নতুন যত বিষয়ে প্রতিবেদন লিখেন, তার আইডিয়া কোথায় পান? নিউইয়র্কের আবর্জনা অপসারণ কোম্পানিগুলোকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখেছি। আরেকটি পড়েছি মানবদেহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্পর্কে… শিকাগো পুলিসের অসদাচরণ তদন্তে ব্যর্থতার মত কিছু রিপোর্টও আছে। আরেকটির বিষয় ছিল, দুর্ঘটনার ঝুঁকি সমান হওয়া সত্ত্বেও শিকাগোতে সাদা নাগরিকদের চেয়ে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে কীভাবে বাড়তি ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম আদায় করা হচ্ছে। আপনারা নতুন এসব আইডিয়া কোথা থেকে পান? আলোচনা করে, নাকি কারো পরামর্শে? আমি জানতে চাই। – আলি ফ্লেই
কী দারুণ প্রশ্ন! আমিও মাঝে মাঝে অবাক হই কীভাবে আমাদের সহকর্মীরা এসব আইডিয়া বের করেন। একটা সুযোগ পেয়ে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লাম।
প্রতিবেদনের আইডিয়া আসে আমাদের চারপাশ থেকে। কখনো আসে টিপস থেকে, যেমনটা ঘটেছে শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় অনিয়ম নিয়ে আমার করা এই রিপোর্টে। কোথাও অনিয়ম দেখেলে হুইসেলব্লায়ার বা গোপন পরামর্শদাতারা আমাদেরকে জানান আর আমরা সেটা অনুসন্ধান করি। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনতে আমরা তাদের সাহায্যের ওপর নির্ভর করি।
রিপোর্টাররা স্বভাবজাতভাবেই অনুসন্ধিৎসু এবং সন্দেহপ্রবণ। আমরা চারপাশেই স্টোরি দেখতে পাই। কখনো কখনো প্রতিবেদনের বিষয় পড়ে থাকে আমাদের চোখের সামনেই। ২০০৪ সালে শিকাগো সান টাইমস “ভাড়ার ট্রাক” নিয়ে একটি ধারাবহিক প্রকাশ করেছিল। তাদেরই এক রিপোর্টার টিম নোভাক প্রতিদিন অফিস যাওয়ার পথে লাল রঙের একটি ট্রাককে পরিত্যাক্ত একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতেন। সেখান থেকেই এই প্রতিবেদনের শুরু। ট্রাকটির গায়ে লেখা ছিল, এই গাড়ী শহরের ‘হায়ার্ড ট্রাক’ কর্মসূচির কাছে বন্ধক দেয়া হয়েছে। নোভাকের মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে কেন ট্রাকটি অলস বসে থাকে। কারণ জানতে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন। সেই দেখা থেকে একটি অনুসন্ধান শুরু হয়। তারা বের করেন, নগর কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী যত কোম্পানিকে টাকা দিচ্ছে তারা ঠিক মত কাজ করছে না। এই প্রতিবেদনের কারণে ৪৯ জনের বিচার হয়েছিল।
আমরা যে জগতে বাস করি তার তথ্য বা অনিয়মের খবরাখবর মানুষকে জানানোর কোনো না কোনো উপায় সব সময়ই খুঁজতে থাকেন রিপোর্টাররা। এজন্য আমরা সব ধরনের সভা সমাবেশে যাই – হোক তা স্কুল বোর্ড, নগর কর্তৃপক্ষ বা পার্ক পরিচালনার – আর সেখান থেকে আমরা শুধু দিনের ঘটনাই তুলে আনি না; ঘটনার প্রবণতা, প্রশ্নবিদ্ধ ব্যয়, এমন আরো অনেক বিষয়ে বড় খবরও খোঁজাখুঁজি করি। আমরা প্রচুর প্রশ্ন করি।
কখনো কখনো আইডিয়া আমাদের ঠিক সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে। পরিত্যাক্ত পেট্রল পাম্পের সামনে অবহেলায় পড়ে থাকা ট্রাকও বড় খবরের দিকে নিয়ে যায় আমাদেরকে।
প্রোপাবলিকায় আমরা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করি, নৈতিক শক্তির জোরে। আমরা ক্ষমতার অপব্যবহারকে উন্মোচন করি; অনিয়ম বের করি ব্যক্তি, সংস্থা আর প্রতিষ্ঠানের। আমরা কাজ করি বিশ্বটাকে আরো ভালো জায়গা হিসেবে বদলে দেয়ার জন্যে। অনেক সময় কোন রিপোর্টের পেছনে ছুটবো সেই সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তখন সম্পাদক, সহকর্মী, স্বামী আর বন্ধুদের সাথেও আইডিয়া নিয়ে কথা বলি। সবসময় সম্ভাব্য রিপোর্টের একটা তালিকা সাথে রাখি আর ভাবি – কোনটা আমাকে টানে, কোনটা নিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলে মজা পাওয়া যাবে। প্রায়ই ভাবি, “এই খবরটা কি আমি নিজে পড়তে চাই?”
চারপাশে কী দেখছি, কী শুনছি – এসব নিয়ে আমরা সহকর্মীরা একে অন্যের সাথে কথা বলি। প্রোপাবলিকা ইলিনয়ে প্রতিদিন দুপুরে খাবার সময়ও আমরা নানান বিষয় নিয়ে আলাপ করি। আর নিয়মিত কথাবার্তা তো হতেই থাকে। এমনকি এই লেখাটা শুরু করার আগেও সহকর্মী মেলিসা সানচেজের সাথে আমি কথা বলেছি। সে-ই আমাকে জানিয়েছে, একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে কেউ যত কাজ করে, তাঁর স্টোরি খোঁজার ধরণও ততই বদলাতে থাকে। কারণ, তখন ওই বিষয় সম্পর্কে তাঁর ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয়, নতুন নতুন সোর্স নতুন সব তথ্য নিয়ে হাজির হন। তখন এমন অনেক প্রবণতা চোখে পড়ে, যা বিষয় সম্পর্কে কম জানার কারণে আগে নজর এড়িয়ে যেত।”
প্রো-পাবলিকায় আামরা পাঠকদেরকেও নিয়মিত বলি আমাদের রিপোর্টিংয়ের সাথে আরো বেশি সংশ্লিষ্ট হতে। এটাও আমাদের প্রতিবেদনকে প্রভাবিত করে। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কাজে অনিয়ম নিয়ে আমার প্রথম স্টোরিতে উঠে এসেছিল একজন অধ্যাপকের ব্যর্থতা আর কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত নজরদারির বিষয়টি। কিন্তু রিপোর্টিং সেখানে থেমে থাকেনি। আমরা পাঠকদের কাছেও জানতে চেয়েছিলাম, তারা বা তাদের কোনো স্বজন, সেই ডাক্তারের রোগী বা গবেষণার বিষয়বস্তু ছিলেন কি না। প্রায় এক ডজন মানুষ সাড়া দিয়েছিলেন। সেখান থেকে একটি পরিবারের অভিজ্ঞতা আমরা তুলে ধরেছিলাম ফলোআপ স্টোরিতে।
আলি আমাদের কাছে তিনটি প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। সেগুলো আমরা কীভাবে পেয়েছি, তার নেপথ্যের কিছু তথ্য এখানে তুলে ধরছি।
ঋণের ফাঁদ ধারাবাহিকে উঠে এসেছে, ট্রাফিক জরিমানা কীভাবে শিকাগোর অধিবাসীদের দেউলিয়া করছে।
“মার্কিন দেউলিয়া ব্যবস্থা কীভাবে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকারদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তা নিয়ে নিউইয়র্কের সহকর্মীরা রিপোর্ট করেছিলেন। তা দেখেই আমি বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাটি শুুরু করি,” বলছিলেন মেলিসা। সেই স্টোরি ছিল জাতীয় পর্যায়ের। শিকাগোতে কীভাবে দেউলিয়া হবার ঘটনা বাড়ছে এবং ট্রাফিক জরিমানা তাতে যে বড় ভূমিকা রাখছে – এমন একটি ছোট্ট রিপোর্টও সেখানে ছিল। আমি এই আইডিয়া একটু যাচাই করে দেখার সিদ্ধান্ত নিই। খুঁজতে থাকি, শিকাগোতে এমন কী হচ্ছে, যে কারণে দেউলিয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এই রিপোর্ট করতে গিয়ে আমার চোখের সামনে আরো বেশ কিছু স্টোরি উঠে আসে। এর মধ্যে ছিল লাইসেন্স বাতিলে বৈষম্য, দেউলিয়া আইনজীবীদের টাকা আয়ের পদ্ধতি এবং নগর কর্তৃপক্ষ কীভাবে ট্রাফিক অধ্যাদেশ অমান্য করে নাগরিকদের জরিমানা করছে।
একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে কেউ যত কাজ করে, তাঁর স্টোরি খোঁজার ধরণও ততই বদলাতে থাকে। কারণ, তখন ওই বিষয় সম্পর্কে তাঁর ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয়, অনেক সোর্স ও নতুন নতুন প্রবণতা নজরে আসে।
মেলিসা কাজ করছিল ডব্লিউবিইযি রেডিওর এলিয়ট রামোসের সাথে। তারা হাল ছাড়েনি। ট্রাফিক টিকিটিং ব্যবস্থা সম্পর্কে গভীর ধারণা পেতে তারা আরো তথ্য, নথি এবং সাক্ষাৎকার তারা সংগ্রহ করতে লাগলো। তারা দেখলো, অন্তত ২০ হাজার ঘটনায় একজনকে একাধিকবার জরিমানার টিকিট ধরিয়ে দেয়া হয়েছে, যা কি না শহরের নিজস্ব আইনের লংঘন। তারা এও খুঁজে বের করলো, কোনো কোনো এলাকার মানুষ কেন অন্যদের চেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো, ট্রাফিক আইন লংঘনের জরিমানা বাড়িয়ে নগরের আয় বাড়ানোর যে পরিকল্পনা ছিল, তা কাজে আসেনি। বরং নিম্ন আয়ের অনেক কৃষ্ণাঙ্গ গাড়ী-মালিক আটকা পড়েছেন ঋণের ফাঁদে।
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর শিকাগোর স্টিকার কর্মসূচিতে কিছুটা সংষ্কার আনা হয়, যাতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সহজেই জরিমানার টাকা শোধ করতে পারেন। একইসাথে আইনের অনুচ্ছেদ সাত অনুযায়ী দেউলিয়া গাড়ী মালিকদের কিছু ঋণ মওকুফের ব্যবস্থা করা হয়। আগে তাদের ঋণ মওকুফের সুযোগ ছিল না। এখন শিকাগোর নগর কর্তৃপক্ষ আরো পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে, যাতে জরিমানার টাকা শোধ করতে না পারা মানুষদের প্রতি নগরীর আচরণ আরো সহনশীল হয়।
লিভার প্রতিস্থাপন নিয়ে স্টোরি দেখিয়েছে কিছু মার্কিন হাসপাতাল নিজ দেশের রোগীদের অপারেশনে গুরুত্ব দিচ্ছে না
প্রোপাবলিকার সিনিয়র এডিটর চার্লস ওর্নস্টেইন হলেন মার্কিন যুক্তারষ্ট্রের সবচে অভিজ্ঞ স্বাস্থ্য বিষয়ক রিপোর্টারদের একজন। তিনি বলেছেন, এই স্টোরির পেছনে ছোটা শুরু হয় মূলত অজ্ঞাত এক ব্যক্তির পাঠানো চিঠি থেকে। তাতে বলা হয়, নিউ অরলিন্সের ওশনার হাসপাতালে কত জন বিদেশীর যকৃত প্রতিস্থাপন হচ্ছে, তা খোঁজখবর করে দেখতে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক ডেটাবেইস, পরিসংখ্যান, বিশেষজ্ঞ এবং অারো অনেক কিছুর সন্ধান পাবেন জিআইজেএন এর স্বাস্থ্য বিষয়ক রিসোর্স পেইজে।
তিনি জানান, “অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে আমার আগ্রহ অন্তত এক দশকের। আমি এই বিষয়ে অসংখ্য রিপোর্ট করেছি লস এঞ্জেলেস টাইমসে থাকা অবস্থাতেই। চিকিৎসা সেবার অন্যান্য ক্ষেত্রের চাইতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ। কারণ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাওয়া বেশ কঠিন। আমি ইউনাইটেড নেটওয়ার্ক ফর অরগান শেয়ারিং সাইট থেকে খুব সহজেই বের করে ফেলি, ওশনারসহ কিছু হাসপাতাল বিদেশীদের যত অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছে, তা (অল্প হলেও) অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ঘটনার প্রাসঙ্গিকতাও ছিল। কারণ ওই সময়, যকৃতের বন্টন কীভাবে সুষম করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল দেশের ট্রান্সপ্ল্যান্ট রেগুলেটর। এরপর আমরা লী জুরিক এবং ফক্স এইট নিউ অরলিন্সকে এই প্রতিবেদনে অংশীদার হতে বলি। আমাদের সেই প্রতিবেদন এই ব্যবস্থার ন্যায্যতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন জন্ম দেয়।”
শিকাগো পুলিশের জবাবদিহি নিয়ে আমাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে অসদাচরণের পরও কর্মকর্তারা কীভাবে শাস্তি থেকে রেহাই পেলেন
আমরা শিকাগো ট্রিবিউনের রিপোর্টার জেনিফার স্মিথ রিচার্ডসের সাথে কাজ করছিলাম শিকাগো পুলিশ বিভাগের অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে। তখনই পুলিশের অসদাচরণের কয়েকটি ফাইল দেখে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে। সেখানে দেখা যায়, চাকরি থেকে অব্যাহতির তারিখ লেখা থাকার কথা যে ঘরে, তা ফাঁকা। মামলাগুলোর ফাইলে ‘অমীমাংসিত’ লিখে রাখা। এভাবেই ঝুলে আছে বছরের পর বছর ধরে।
আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন করতে থাকি এবং আরো অনেক নথিপত্র চেয়ে আবেদন করি। দেখতে পাই, যাদের নজরদারি করার কথা তারা আসলে শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনাগুলো নিয়ে বেশি দূর এগোয়নি। ফলে যেসব কর্মকর্তার শাস্তি পাওয়ার কথা, তারা চাকরি করে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। আমরা এমন কিছু ঘটনাও খুঁজে বের করেছি, যেখানে শ্লথ গতির আপিল প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত যে রায় দেয়া হয়েছে, তা প্রথম আদেশ থেকে আলাদা। দেখা যায়, যে অফিসারই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, তিনিই জিতেছেন। এই রিপোর্ট বের করা সম্ভব হয়েছিল, কারণ আমরা নথিপত্রে কিছু অসংগতি দেখে তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের ধারণাই ছিল না, পুলিশ বিভাগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে অনুসন্ধান এমন দিকে মোড় নেবে। অজানা এই বাঁকগুলো ধরা দিয়েছে, ঘটনার আরো গভীরে যাওয়ার জন্য খোঁড়াখুড়ি শুরু করার পরই।
এই লেখা প্রথম প্রকাশিত হয় প্রোপাবলিকা ইলিনয়ের সাইটে। অনুমতি নিয়ে এখানে পুনঃপ্রকাশ করা হলো।
জোডি এস. কোহেন রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন প্রোপাবলিকা ইলিনয়ে। এর আগে শিকাগো ট্রিবিউনে ১৪ বছরের কর্মজীবনে তিনি উন্মোচন করেছেন – প্রভাবশালীদের জন্য ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপন ভর্তি ব্যবস্থা, কলেজ দ্যুপেজে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যায়, শিকাগো স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে অব্যবস্থাপনা এবং শিকাগো পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ব্যর্থতা।