প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

মানুষ, নথি আর তথ্য নিয়ে নিরন্তর লড়াইয়ে যে জাপানি সাংবাদিক 

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

২০১৬ সালে নেপালে আনকভারিং এশিয়া সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ইয়াসোমি সাওয়া। ছবি: জিআইজেএন

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছেন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস, তথা আইসিআইজের একশরও বেশি সদস্য। মিট দ্য ইনভেস্টিগেটরস নামের মাসিক সিরিজে, তারা প্রতি মাসে তুলে আনে সেসব অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের দারুন সব কাজের কথা।

এবারের লেখা ইয়াসোমি সাওয়াকে নিয়ে। তিনি জাপানের সবচে বড় সংবাদ সংস্থা, কিয়োদো নিউজ-এর অনুসন্ধানী দলের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। উন্মুক্ত নথি ও তথ্যের স্বাধীনতা নিয়ে সোচ্চার ইয়াসোমি, টোকিওতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাও শেখান। সম্প্রতি তিনি আইসিআইজের সিকিউর ডকুমেন্ট রিসার্চ প্লাটফর্ম, ডেটাশেয়ার অনুবাদ করেছেন জাপানি ভাষায়

সাংবাদিকতা, বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দিকে আসলেন কিভাবে? 

আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীকে আরো ভালো অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যোগাযোগের ক্ষমতা, গল্প বলা, তথ্য আদানপ্রদান – এসবের ভূমিকা আছে। আমাদের জানতে হয়, পৃথিবীতে খারাপ কিছু হচ্ছে কিনা।

তিন দশক আগে, খসড়া গোপনীয়তা আইনের প্রতিবাদে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা অনশন শুরু করেছিল। আমি তাদের সমর্থনে প্রচারপত্র বিলি করছিলাম শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কিন্তু তারা কোনো আগ্রহই দেখায়নি। এই রাজনৈতিক আন্দোলন ও প্রচারপত্রকে পাত্তাই দেয়নি। এটা ১৯৮০-র দশকের শেষদিকের কথা। তখন জাপান ছিল খুবই উদ্দীপনাময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায়।

কিন্তু জাপানের প্রধান দৈনিক, আসাহি শিমবুন (আইসিআইজে-র সদস্য সংগঠন) এই অনশন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রচারপত্রের খোঁজ করতে থাকে। এই আন্দোলনের প্রতি আগ্রহ দেখাতে থাকে। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। ভাবতেও পারিনি, সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন এতটা পরিবর্তন আনতে পারে। আমি আধা শঙ্কা, আধা শ্রদ্ধা নিয়ে সাংবাদিকতার এই প্রভাব দেখছিলাম।

একই সময়ে, আমি সাংবাদিকতার আরেকটি দিক সম্পর্কেও সচেতন হয়ে উঠছিলাম। সংবাদমাধ্যম আমাকে প্রায়ই হতাশ করত। কারণ মনে হতো, তারা তাদের কাজটা ঠিকমতো করছে না। সংবাদমাধ্যম  ক্ষমতাহীন মানুষদের কথা শোনার বদলে মনোযোগ দিয়েছে ক্ষমতাবানদের কণ্ঠ প্রচারে। সব ঘটনা তুলে এনেছে তাদের আঙ্গিক থেকে।

আমার মনে হয়েছিল, সাংবাদিকতা হওয়া উচিৎ মানুষের স্বার্থে। বিশেষ করে যাদের সেটা বেশি প্রয়োজন। আমার বয়স কম ছিল, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলাম। ফলে নিজেই রিপোর্টার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এভাবেই অবদান রাখতে পারব সাংবাদিকতাকে সঠিক পথে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে।

এখন, ৩০ বছর পর, আমি সেই কাজটি কেমন করেছি, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। হয়তো যথেষ্ট করতে পারিনি। কিন্তু এখনো নিজের সেরাটা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এখন পর্যন্ত কোন প্রজেক্টে কাজ করে আপনার সবচে ভালো লেগেছে? কেন?

২০১৮ সালে আইসিআইজে-র চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি নিয়ে অনুসন্ধান, ইমপ্ল্যান্ট ফাইলসের এশিয়ার প্রতিনিধিদের সভায় ইয়াসোমি সাওয়া (ওপরে মাঝে)। ছবি কৃতজ্ঞতা: আইসিআইজে

২০১৬ সালে পানামা পেপার্স অনুসন্ধানটি ছিল দারুন অভিজ্ঞতা। আইসিআইজের সঙ্গে এটিই ছিল আমার প্রথম প্রজেক্ট। তার আগপর্যন্ত আমি আন্তসীমান্ত সহযোগিতা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। কী আসতে যাচ্ছে, তা না জেনেই আমি এখানে কাজ শুরু করি।

অবাক হতে শুরু করি, এই প্রতিবেদন প্রকাশের তিন দিন পর থেকে। আমাদের নিউজরুমের মূল জায়গা, “নিউজ সেন্টারের” সহকর্মীরা উচ্ছসিত হয়ে জানান, আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন।

এই খবরে জাপানের সংবাদমাধ্যমগুলোতেও আগ্রহ তৈরি হতে শুরু করে। তারা তখন পর্যন্ত অতো পাত্তা দেয়নি। কিন্তু এরপর পানামা পেপার্স ও আইসিআইজের কথা আসতে থাকে বারবার। আমাদের চার সদস্যের অনুসন্ধানী দলের সঙ্গে অনেকে দেখা করতে আসে। আমরা অনেক ফোন পাই এ ব্যাপারে বিশেষ প্রতিবেদন বা আর্টিকেল লেখার জন্য, টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের জন্য, সাংবাদিকদের সামনে বিশেষ প্রেজেন্টেশন, বক্তৃতা, ইত্যাদি আয়োজনের জন্য। একটি সংবাদ সংস্থা হিসেবে আমরা কখনোই রাতারাতি স্পটলাইটে আসার চিন্তা করিনি। পর্দার আড়াল থেকে পত্রিকা ও টিভিগুলোকে সহায়তা করে গেছি মাত্র। কিন্তু পানামা পেপার্সের পর আমরা অনেক সম্মানিত ও গর্বিত বোধ করেছি।

জাপানে এই প্রজেক্টের প্রভাব ছিল ব্যাপক। জাপানের সরকার অবশ্য নিষ্পৃহ একটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। কিন্তু দারিদ্র ও বৈষম্য নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা প্রতিবেদনগুলোর প্রশংসা করেছিল।

সম্প্রতি আপনারা দারুন ফল পেয়েছেন আপনার নেতৃত্বাধীন আরেকটি অনুসন্ধান থেকে। সেটি নিয়ে কিছু বলুন। 

এই অনুসন্ধানের বিষয় ছিল আদালতের নথিপত্র বিধিবহির্ভূতভাবে নষ্ট করে ফেলা। এখান থেকে বেরিয়ে আসে, জাপানের আদালত কত বাজেভাবে নথিপত্র সংরক্ষণ করছে। তারা বেশিরভাগ বেসামরিক মামলার নথি নষ্ট করে ফেলে, সেটি নিস্পত্তি হওয়ার পাঁচ বছর পর। আমরা দেখেছি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমতা এবং সাংবিধানিক কেসবুকে উল্লেখ আছে, এমন আরো কিছু বিষয়ে ১৩৭টি উল্লেখযোগ্য মামলার মধ্যে ১১৮টি মামলারই নথিপত্র নেই। রায়ের কপি আছে। তাতে আদালতের সিদ্ধান্ত আছে। কিন্তু বাকি রেকর্ড না থাকায় বিচার প্রক্রিয়ার গভীরে গিয়ে তা খতিয়ে দেখার সুযোগ ছিল না।

আমাদের এই প্রতিবেদন অনেক মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে জাপানের সংসদ সদস্যও আছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এখন নথিপত্র সংরক্ষণের নতুন নিয়মকানুন তৈরির আগ পর্যন্ত আদালত এই নথিপত্র নষ্ট করে ফেলা স্থগিত ঘোষণা করেছে।

এমন কোনো অভিজ্ঞতার কথা বলুন যা আপনার অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে? অন্যভাবে ভাবতে শিখিয়েছে?

আমার এক অনুসন্ধানী সাংবাদিক বন্ধু, সাতোশি কুসাকাবে একবার বলেছিলেন, যখন আমরা রিপোর্টিংয়ের কাজে উন্মুক্ত নথিপত্র ব্যবহার করি, তখন আমাদের অন্য কারো ওপর নির্ভর করতে হয় না। সোর্সের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার কথা সবসময় ভাবতে হয় না।

আমার জন্য এটি ছিল চোখ খুলে দেওয়ার মতো ব্যাপার। জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত, এমন নথিপত্র ব্যবহারের জন্য কোনো মানুষের সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজন নেই। আপনি এখানে পরিস্কার থাকতে পারবেন। আপনার কাউকে গিয়ে বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করতে হবে না কোনো তথ্যের জন্য। কারণ সব কিছুই সবার জন্য উন্মুক্ত। ডেটা-ভিত্তিক এধরনের অনুসন্ধান সাংবাদিকদের স্বাধীন করে দিয়েছে।

এখনকার উচ্চাকাঙ্ক্ষী সাংবাদিকরা ইমেইল বা অন্যান্য ডিজিটাল যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার বদলে। এভাবে যোগাযোগ করাটা সহজ। কিন্তু এতে করে মানুষের সঙ্গে ভালো জানাশোনা হয় বলে আমার মনে হয় না।

২০১৫ সালে, আমি জাপানের বড় বড় পৌরসভাগুলোতে অভিবাসী শিশুদের আবাসস্থল ও স্কুলে ভর্তির বিষয়ে পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা শুরু করি। এই ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখতে পেয়েছি, আবাসস্থল নিবন্ধনের সংখ্যা ও স্কুল ভর্তির সংখ্যার মধ্যে বেশ বড় একটা ব্যবধান আছে।

এই অনুসন্ধান থেকে এটিও দেখা গেছে যে, এর মধ্যে বড় একটা সংখ্যা, ১০ হাজারেরও বেশি শিশুকে স্থানীয় স্কুলগুলো অগ্রাহ্য করেছে। অভিবাসী শিশুদের স্কুলে ভর্তির বিষয়টি তারা বিবেচনা করেনি। কিন্তু জাপানি শিশুদের ক্ষেত্রে এমন হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য আবাসস্থল নিবন্ধনের সংখ্যা বেশি হতে পারে। কারণ কিছু পরিবার হয়তো স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই জাপান ছেড়ে গেছে। কিন্তু জাপানি ও অভিবাসী শিশুদের মধ্যকার বিশাল ব্যবধান থেকে এটি স্পষ্টই বোঝা যায় যে, অভিবাসী শিশুরা স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষের কাছে উপেক্ষিত হয়েছে।

প্রতিবেদনকে শক্তপোক্ত করার জন্য ডেটার ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এর বাইরে আরেকটি জিনিস ছাড়া প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আর সেটি হলো “মানবীয় উপাদান।”

“প্রতিবেদন অবশ্যই হতে হবে মানুষকে নিয়ে,” ব্রিটিশ এক সাংবাদিক বলেছিলেন আমাকে। তিনি একটি ট্যাবলয়েডের অপরাধ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু তাঁর এই কথা আমার মনে গেঁথে গেছে। তখন থেকে আমি চেষ্টা করছি আমার প্রতিবেদনগুলোকে মানবীয় করে তুলতে।

আপনি জাপানের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা শেখান। পড়ালেখা শেষ করে কোনো সংবাদ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাওয়ার সময় আপনি শিক্ষার্থীদের কোন শিক্ষাটা নিয়ে যেতে বলবেন?

আমি তাদের শেখাই মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। আমি চাই তারা যেন আত্মবিশ্বাসের সাথে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান করতে পারে এবং তাদের নিজস্ব সংবাদবোধ কাজে লাগাতে পারে। সাংবাদিকতার কোনো চাকরি পাওয়ার পর তাদের হয়তো পুলিশ বা নগর কর্তৃপক্ষের মত নির্দিষ্ট বিটে নিয়োগ দেওয়া হবে।

সাংবাদিকতায় ফাইভ ডব্লিউয়ের (কে, কখন, কোথায়, কী, কেন) মধ্যে, সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো: “কেন”। কেন এক দুর্ঘটনায় আহত এই অভিবাসী শ্রমিক আমার দেশে এসেছে? কেন এই অদ্ভুত গাড়ি দুর্ঘটনাটি ঘটেছে? কেন এই বৃদ্ধ মানুষটিকে অল্প কিছু খাবার চুরির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে? এসব প্রশ্নের মধ্যেই হয়তো কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার কথা লুকিয়ে আছে।

এখনকার উচ্চাকাঙ্ক্ষী সাংবাদিকরা ইমেইল বা অন্যান্য ডিজিটাল যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার বদলে। আমি ভাবি যে, এটি শুধু জাপানের অতি লাজুক তরুনদের সঙ্গেই ঘটে কিনা… এভাবে যোগাযোগ করাটা সহজ। কিন্তু এতে করে মানুষের সঙ্গে ভালো জানাশোনা হয় বলে আমার মনে হয় না। আপনি আপনার সোর্সের ভ্রুকুটি বা হাসি দেখতে পারবেন না। তার গলার স্বরটা কেমন ছিল জানতে পারবেন না। যার ফলে আপনি হয়তো একজন সম্ভাব্য হুইসেলব্লোয়ারের সঙ্গে আরো আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ হারাবেন।

জাপানে ইন-ডেপথ, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জগুলো কী?

প্রথমত, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত, এমন তথ্য সম্পর্কে ধারণার অভাব। জাপানে একটি তথ্য অধিকার আইন আছে। কিন্তু এটি যেভাবে কাজ করা দরকার, সেভাবে করে বলে আমার মনে হয় না। অনেক দায়মুক্তির ব্যাপার এর কার্যকলাপ ক্ষতিগ্রস্থ করে। কয়েক বছর আগে, আমি অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছিলাম একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বেশি মাত্রার বিদেশী শিক্ষার্থীদের নিয়ে। কমতে থাকা তরুনদের হার নিয়ে ভুগছে জাপানের অনেক বেসরকারী স্কুলই। কেউ কেউ চেষ্টা করছে অনেক বেশি পরিমাণে বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর।

যতক্ষণ পর্যন্ত তারা শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে শিক্ষা দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অবশ্যই এটি ভালো ব্যাপার যে, স্কুলগুলো আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে। কিন্তু যদি দেখা যায় যে, স্কুলগুলোতে ঝড়ে পরার হার সন্দেহজনকভাবে বেশি? তাহলে কি স্কুলগুলো প্রকৃত শিক্ষা দেওয়ার বদলে শুধু ভিসা পাওয়ার প্রকল্প হয়ে যাচ্ছে?

আমাদের প্রতিবেদনগুলো যেন কারো জন্য খুব বেশি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না করে, তা বিবেচনায় রাখার কথা আমাদের শেখানো হয়। এই ব্যাপারটি এসেছে “মিওয়াকু” বা নুইসেন্স সংক্রান্ত জাপানিজ ধারণা থেকে। সম্প্রীতির এই সংস্কৃতিতে ব্যক্তির গোপন জীবনাচরনকে গোপন রাখাকেই ভালো বলে মনে করা হয়।

ঝরে পড়ার হার কেমন, তা দেখানোর জন্য আমার কিছু নথিপত্র দরকার ছিল। সেগুলোর জন্য আমি তথ্য চেয়ে আবেদন করি। কিন্তু সরকার সেগুলো দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ, তাদের ভাষায়, এটি “বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতির কারণ হতে পারে।” এটি জাপানের তথ্য অধিকার আইনের দায়মুক্তির একটি উদাহরণ। আমি এরপর আপিল করেও হেরে যাই। সবার কাছে তথ্য উন্মুক্ত করে সেটি নিয়ে জনপরিসরে আলাপ-আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ার বদলে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির কথা ভেবে তথ্য গোপন করাকেই শ্রেয় মনে করছে।

জাপানের সংবাদমাধ্যমগুলোর দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো: ইন-ডেপথ সাংবাদিকতার চেয়ে প্রায়ই “স্টোরিটা আগে পাওয়াকে” বেশি মূল্যায়ন করা হয়। যার ফলে, কোনো স্টোরি আগে পাওয়ার জন্য রিপোর্টারদের সেসব সোর্সের ওপর অনেক নির্ভর করতে হয়, যারা কোনো তথ্য সঙ্গে সঙ্গে দিতে পারবে। একারণে সাংবাদিকরা সন্দেহ-সংশয় করার বদলে সোর্সদের সঙ্গে “ভালো সম্পর্ক” বজায় রাখা নিয়েই বেশি চিন্তা করে।

জাপানে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চর্চা বাড়ছে। কিন্তু ততটা দ্রুত নয়। জাপানে সমাজের অন্যান্য অংশগুলোর মতো, সম্পাদকরাও কিছুটা রক্ষণশীল। এবং তারা নিরাপদে থাকতেই পছন্দ করে।

জাপান সম্প্রতি একটি রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন পাস করেছে, যেটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করবে। কিভাবে এই ধরনের আইনগুলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর প্রভাব ফেলছে?

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই আশঙ্কা করছি। আইনের একটি ধারায় অবশ্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ২২ নং ধারায় বলা হয়েছে, “এই আইনের ব্যাখ্যা এমনভাবে করা যাবে না যাতে নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার অন্যায্যভাবে লঙ্ঘিত হয়।” এবং “রিপোর্টিংয়ের স্বাধীনতার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে” কারণ এটি “নাগরিকদের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করতে অবদান রাখে।” কিন্তু এই আইনে হুইসেলব্লোয়ারদের সাহায্যের ব্যাপারে কিছু বলা নাই। অথচ এই হুইসেলব্লোয়ারই রিপোর্টারকে দিতে পারে জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট তথ্য। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নিয়ে আমার যেসব  সহকর্মী কাজ করছেন, তাঁরা বলছেন, এই আইনের ফলে তাদের অনেক সোর্সই ভয় পাচ্ছে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন [২০০৩ সালে পাস করা হয়েছে] আরো বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপরে। আইনটি যখন প্রণয়ন করা হয় তখন “ব্যক্তিগত তথ্য” এবং এর সুরক্ষার বিষয়টি বারবার আসতে থাকে। প্রায়শই এটিকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে প্রাইভেসির সঙ্গে। এখন সন্দেহের মুখে পড়া থেকে বাঁচার জন্য হরহামেশাই এটি ব্যবহার করা হচ্ছে, অনেকটা ম্যাজিক ফর্মুলার মতো।

আপনি বিশেষভাবে আদালত নিয়ে রিপোর্টিং করেছেন। আদালতের নথিপত্র প্রকাশ ও ডেটা উন্মুক্ত করা নিয়ে লড়ছেন। বর্তমান এই সিস্টেমে কী ভুলত্রুটি আছে বলে আপনি মনে করেন?

জাপানের সংবিধানে বলা আছে যে, “বিচারকার্য এবং আদালতের রায় জনসম্মুখে ঘোষণা করতে হবে।” আমরা আদালতে যেতে পারি আর সেগুলো দেখতে পারি। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো। আদালতের নথিপত্র সবার জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু এসব শুধু কাগজে-কলমে। বাস্তবে, জাপানে আদালতের দলিলপত্র নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

বেসামরিক মামলার নথিপত্র দ্রুত নষ্ট করে ফেলা হয়। কোনো মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু এই পাঁচ বছরের মধ্যেও আপনি সেই কাগজপত্র ফটোকপি করতে পারবেন না। যদি না সেই মামলায় আপনার বিশেষ স্বার্থ থাকে। যেমন মামলা সংশ্লিষ্ট কোনো মানুষের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করতে যাচ্ছেন। সাংবাদিকরাও আলাদা কোনো সুবিধা পান না।

“ফাইভ ডব্লিউয়ের (কে, কখন, কোথায়, কী, কেন) মধ্যে, সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো: ‘কেন?’”

ফৌজদারি আদালতের নথিপত্র নিয়ে আরেকটি ব্যাপার হলো: এই নথি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করে কৌঁসুলিরা, আদালত নয়। আইনে বলা আছে যে, সেগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কিন্তু এখানে দায়মুক্তির ব্যাপারও আছে। কোনো মামলা নিস্পত্তি হয়ে যাওয়ার তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কৌঁসুলিরা সাংবাদিকদের কাছে সেই সংক্রান্ত নথিপত্র সরবরাহ করতে অস্বীকৃতিও জানাতে পারেন।

ওম শিনরিকিও নামের এক কাল্ট গ্রুপকে নিয়ে লাগাতার রিপোর্টিংয়ের জন্য ভালো পরিচিতি পেয়েছেন সাংবাদিক শোকো এগাওয়া। টোকিওর সাবওয়েতে এই গ্রুপের সারিন গ্যাস হামলা নিয়েও রিপোর্ট করেছিলেন তিনি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলায় এই কাল্ট গ্রুপের সদস্যদের সম্পৃক্ততার নথিপত্র চেয়েও পাননি এগাওয়া। এই বিষয়ের সবচে জানাশোনা সাংবাদিককে তারা “তিন বছরের” দোহাই দিয়ে দায় সেরেছিল।

একবার আমি জাপানের প্রথম হেট স্পিচ মামলার নথি হাতে পাই। সেই মামলায় সাজাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নথি থেকে প্রায় সব নাম মুছে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার শিকার ব্যক্তি, তার পরিবার, আইনজীবী; সবার নাম মুছে দেওয়া হয়। এমনকি তিনি কোন ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করতেন, সেটিও। আমি খুবই রেগে গিয়েছিলাম।

এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য, তিন বছর আগে এগাওয়াসহ আরো কিছু বন্ধুর সঙ্গে মিলে শুরু করেছি একটি ডিসকাশন গ্রুপ। নাম “রিয়েল ওপেন কোর্ট প্রজেক্ট।” আমরা এখানে আলাপ করি, গবেষণা করি যে, আমাদের কোন অধিকারগুলো দরকার। এবং সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি অন্য সাংবাদিক ও আইনজীবীদের সঙ্গে।

সম্প্রতি আপনি জে-ফোরাম নামে আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে বলুন।

জে-ফোরাম বা জার্নালিজম প্র্যাকটিশনার্স ফোরাম একটি ইভেন্ট। সাংবাদিকদের, বিশেষভাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি আয়োজিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টার্স অ্যান্ড এডিটরস, গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ককে দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমার বহুদিনের বন্ধু ও আইসিআইজের সদস্য তোশি ওকুয়ামার মাথায় প্রথম এই চিন্তা আসে।  তিনি জাপানেও এরকম সম্মেলন আয়োজন করার কথা বলেছিলেন।

২০১৮ সালে টোকিওতে আয়োজিত জার্নালিজম প্র্যাকটিশনার্স ফোরাম (জে-ফোরাম)। ছবি কৃতজ্ঞতা: আইসিআইজে

২০১৭ সালের মে মাসে, সাপ্তাহিক এক ছুটির দিনে, আমরা প্রথম সম্মেলনটি আয়োজন করি। সেবার ছিল ১০০ জনের উপস্থিতি ও আটটি সেশন। আমাদের অবাক করে দিয়ে, সম্মেলনের টিকিট দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। তারপর পুরো জাপান থেকে অনেক অনেক সাংবাদিক জে-ফোরাম নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। ২০১৮ সালে আমাদের সেশন ছিল ১৫টি। উপস্থিতি ছিল ২৫০ জনের। ২০১৯ সালে ৩৫০ জনের উপস্থিতিতে আয়োজিত হয়েছিল ৩০টি সেশন। এটি এখন জাপানে সাংবাদিকতার অন্যতম বড় ইভেন্ট।

জাপানের সংবাদেপত্রের প্রচারসংখ্যার হার বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম। কিন্তু সেটি সেভাবে পরিচিতি পায়নি “সাহসী” বা “আগ্রাসী” সাংবাদিকতা হিসেবে। জাপানে থাকার সময় (২০০৭ থেকে ২০১৪) আমি খেয়াল করেছিলাম, তথাকথিত ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার মধ্যে সেল্ফ সেন্সরশিপের প্রবণতা বেশি। কর্পোরেট বিজ্ঞাপন ও সরকারী চাপের ব্যাপারে তারা খুবই সংবেদনশীল। এখনকার পরিস্থিতিও কি এমনই? 

আপনার সঙ্গে একমত হয়ে বলছি, এখানে মোটা দাগে দুই ধরনের মিডিয়া আছে। দৈনিক সংবাদপত্র বা সম্প্রচার মাধ্যমগুলোতেও অনেক বিষয় উন্মোচিত হওয়ার মতো প্রতিবেদন দেখা যায়। আমার বিশ্বাস, তারা আরো বেশি করতে পারে। তবে দৈনিক পত্রিকা বা টেলিভিশনের কারণে নয়, সম্প্রতি রাজনীতিবিদদের সরে দাঁড়াতে হচ্ছে সাপ্তাহিক ট্যাবলয়েড ধরনের ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনের কারণে।

টেলিভিশনের সাংবাদিকরা অনেক পরিশ্রম করেন। কিন্তু কখনো কখনো তাদের মধ্যে এক ধরনের অভিজাত বা মার্জিত ভাব দেখা যায়। আমাদের প্রতিবেদনগুলো যেন কারো জন্য খুব বেশি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না করে, তা বিবেচনায় রাখার কথা আমাদের শেখানো হয়। এই ব্যাপারটি এসেছে “মিওয়াকু” বা নুইসেন্স সংক্রান্ত জাপানিজ ধারণা থেকে। সম্প্রীতির এই সংস্কৃতিতে ব্যক্তির গোপন জীবনাচরনকে গোপন রাখাকেই ভালো বলে মনে করা হয়। স্বাধীন গণমাধ্যমও এমন বিষয় নিয়ে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করে।

আমি বলছি না যে আমাদের কোনো সংবেদনশীলতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু গার্ডিয়ানের এক সম্পাদকীয় থেকে উদ্ধৃত করে বলি: “জাপানের মূলধারার সাংবাদিকতা দুর্নীতিপরায়ন নয়। বরং এটি তার চারপাশের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল… কিন্তু এমনও হয়ে যেতে পারে যে, এই শ্রদ্ধা, ক্ষমতার প্রতি কৌতুহলহীন বশ্যতায় পর্যবসিত হয়েছে। যার কারণে বিভিন্ন কেলেঙ্কারি বেশি করে দেখা যাচ্ছে।”

এই ধরনের পরিস্থিতির ফলে মিডিয়ার ওপর থেকে মানুষের আস্থা কমতে পারে। এক্ষেত্রে মিডিয়ার দায়িত্ব কী? কিভাবে তারা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে পারে? 

২০১৯ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রয়টার্স ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজম এক গবেষণায় দেখায় যে, ৪৮টি দেশের মধ্যে, জাপানের মিডিয়া ট্রাস্ট স্কোর ৩৫। এটি নিশ্চিতভাবেই ভালো অবস্থা নয়। কিন্তু সবচে সমস্যাদায়ক বিষয় ছিল: গবেষণা থেকে দেখা গেছে, ওয়াচডগ হিসেবে সাংবাদিকরা নিজেদের যে ভূমিকার কথা বিবেচনা করেন এবং সেটি নিয়ে পাঠক-দর্শকের মূল্যায়ন একেবারেই অন্যরকম। ৯১ শতাংশ সাংবাদিক বলেছেন, রাজনৈতিক নেতাদের চোখে চোখে রাখা এবং তাদের কর্মকাণ্ড সংশয়-সন্দেহের চোখে দেখার বিষয়টি “গুরুত্বপূর্ণ” বা “খুবই গুরুত্বপূর্ণ”। কিন্তু তাদের এই ওয়াচডগের ভূমিকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মাত্র ১৭ শতাংশ পাঠক-দর্শক।

ফলে, আমাদের সমাধানও খুব পরিস্কার: আরো বেশি বেশি স্বাধীন সাংবাদিকতা। আরো বেশি বেশি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা।

প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস-এর ওয়েবসাইটে। অনুমতি নিয়ে এখানে পুনঃপ্রকাশ করা হলো।

শিলা অ্যালেচি আইসিআইজে-র অনুসন্ধানী ও ভিডিও সাংবাদিক। তিনি আইসিআইজে-র এশিয়া ডেস্কের প্রধান। এশিয়ার সদস্যদের অনুসন্ধানী কর্মকাণ্ডগুলো তিনি সমন্বয় করেন। ২০১৬ সালে তিনি কাজ করেছেন জাপানিজ রিপোর্টিং দলের সঙ্গে। পানামা পেপার্স নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য তারা জিতেছিলেন পুলিৎজার পুরস্কার।

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

GIJN এর সদস্যপদ জিআইজেসি২৫

মালয়েশিয়াকিনি: স্বাধীন বার্তাকক্ষ যেভাবে ইটের পর ইট গেঁথে ক্ষমতাবানদের “গলার কাঁটা” হয়ে ওঠে

“মালয়েশিয়াকিনি সবচেয়ে জরুরী কাজটি করেছে। বার্তাকক্ষটি সরাসরি এবং সুস্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে ক্ষমতাবানদের কর্তৃত্বকে। সাধারণ মালয়েশিয়ানদের জন্য নিষিদ্ধ বিষয় যেমন জাতি, রাজপরিবার এবং ধর্ম নিয়ে মতামত প্রকাশের একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করেছে।”

অনুসন্ধান পদ্ধতি পরামর্শ ও টুল

নির্বাসিত লোকেদের ওপর রাষ্ট্রের হামলা: ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধানী সিরিজ “দমন নীতির দীর্ঘ হাত” থেকে আমরা যা শিখতে পারি

দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী দল রিপ্রেশন’স লং আর্ম ধারাবাহিকে তুলে ধরেছে, কীভাবে নিজ দেশের সীমানার বাইরে থেকেও নিশানা হচ্ছেন ভিন্ন মতাবলম্বীরা।

প্রতিবেদন প্রকাশ বণ্টন ও প্রচার

সাংবাদিকতায় আস্থা ধরে রাখতে ভ্রাম্যমান অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষ কীভাবে কাজ করছে

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে ভ্রাম্যমান অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষ। উত্তর মেসিডোনিয়ায় এমন একটি বার্তাকক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থা অর্জন করেছে। তাঁরাই বার্তাকক্ষে ছুটে যাচ্ছেন সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে। সম্পৃক্ত হচ্ছেন নিজেরাও।

Toxic Waste Pollution Factory Bank

পরিবেশ ধ্বংসের পেছনে বিনিয়োগ করছে কারা-বিনিয়োগকারীদের খোঁজ করবেন যেভাবে : দ্বিতীয় পর্ব

ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি করছে বা দূষণে ভূমিকা রাখছে—সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের এমন অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা বা প্রণোদনা দেওয়া হয়ে থাকে। লক্ষ্য, নিজ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও যেসব দেশে তাঁরা বিনিয়োগ করছে সেসব দেশের টেকসই উন্নয়ন। অনেক সময় খনিজ উত্তোলন ও বন উজাড় করার কাজেও বিনিয়োগ করে থাকে তারা। আর প্রচারণা চালায় উন্নয়ন বিনিয়োগ বলে। এই নিবন্ধটি পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।