

Image: Shutterstock
ঘুরে আসুন ২০২৩ সালের বাছাই করা অনুসন্ধানী পডকাস্টের জগত থেকে
আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:
বৈশ্বিক পডকাস্টের জগৎ অনেক বছর পর এক ধরনের নিয়ন্ত্রিত ও সংযত সময় পার করছে।
অনেক প্রযোজকই অনুষ্ঠানের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাই করেছেন। পডকাস্ট ডাটাবেস লিসেন নোটসের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে নতুন পডকাস্টের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ভালচারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সাংবাদিক নিকোলাস কোয়ো বলেন, কোনো ধরনের ভনিতা না করে খোলামেলাভাবে বললে পডকাস্টের জন্য ২০২৩ সালটি ছিল বাজে একটি বছর। অথবা পডকাস্ট বিশেষজ্ঞ রেজি আগৌ নিউ ইয়র্ক টাইমসে যেমনটা উল্লেখ করেছেন যে, বসে বসে টাকা কামানোর যুগ শেষ।
আচ্ছা, তাহলে কী কয়েক বছরের প্রাচুর্য্যতার পরই খরা আসে? অনেকটা এমনই তো মনে হচ্ছে।
চলতি বছরটি নিয়ে আসতে পারে আরো অনেক চ্যালেঞ্জ। অ্যাপল রেকর্ডের পডকাস্ট ডাউনলোড পদ্ধতির পরিবর্তনের বিষয়টিই ধরা যাক— অনিয়মিত শ্রোতাদের ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয় ডাউনলোড বন্ধ করা হলে রাতারাতি বড় সংখ্যক শ্রোতা হারিয়ে যাবেন। সেমাফোর নিউজের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যাপল রেকর্ডের পরিবর্তনের ফলে ”বিশ্বের বড় কয়েকটি পডকাস্ট প্লাটফর্মের শ্রোতার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।” যা কিনা অর্থায়নকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি নতুন সিরিজ তৈরিকে ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা বন্ধও করে দিতে পারে।
তবে খানিকটা আশা আর প্রতিশ্রুতি এখনো রয়েছে। রয়টার্স ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে, পডকাস্টের গ্রহণযোগ্যতা এখনো স্থিতিশীল, কারণ ২০টিরও বেশি দেশে এক তৃতীয়াংশ বা ৩৪ শতাংশ অনুগত শ্রোতা প্রতিমাসে পডকাস্ট শোনে। এরমধ্যে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সের শ্রোতাদের সংখ্যা ৫৬ শতাংশ। প্রচলিত মাধ্যমগুলো যখন রীতিমতো দর্শক ও শ্রোতা টানতে লড়ছে, পডকাস্ট সেখানে তরুণ শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি ধরে রেখেছে। তাছাড়া আফ্রিকাতে পডকাস্টে নতুন জোয়ার এসেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেখানে ভিডিও-প্রধান বা হাইব্রিড পডকাস্ট ঘিরে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নতুন মাত্রা তৈরিতে প্রতিশ্রুতিশীল। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক ভয়েস ট্রান্সলেশন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে স্পটিফাই, যেখানে প্লাটফর্মটির বেশিরভাগ জনপ্রিয় পডকাস্টগুলো বিভিন্ন ভাষায় শোনার সুযোগ থাকছে। তবে এগুলো এআইয়ের তথাকথিত যান্ত্রিক ভয়েজের মতো নয়, মূল পডকাস্টটির কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন না ঘটিয়ে শব্দগত পরিবর্তন করতে সক্ষম এ পদ্ধতিটি। ডিজিডে বলছে, অন্যান্য নেটওয়ার্কগুলোও এভাবে এআই-নির্ভর অনুবাদ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে। এটা যদি সম্ভব হয়, তাহলে ইংরেজির গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য অঞ্চল ও ভাষাভাষী শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
আইহার্টমিডিয়া ডিজিটাল অডিও গ্রুপের প্রধান কোনাল বার্ন ডিজিডেকে বলেছেন, “আমি মনে করি পডকাস্টকে বৈশ্বিক শিল্পে পরিণত করার এইটাই সেরা সুযোগ হতে পারে — বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য তাদের স্থানীয় ভাষায় আমরা পডকাস্ট নিয়ে হাজির হতে পারি।”
এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে অনুবাদক ও কণ্ঠ শিল্পীদের ভবিষ্যৎ বিষয়ক খানিকটা শংকা নিয়েই আমরা এখানে এআইয়ের সহযোগিতা ছাড়াই বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সাংবাদিক ও পডকাস্ট কর্মীদের করা কয়েকটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরছি: ২০২৩ সালে সম্প্রচার হওয়া এ পডকাস্টগুলো জিআইজেএনের বৈশ্বিক দলের মাধ্যমে বাছাই করা হয়েছে।
আমরা এখানে এমন ধরনের পডকাস্ট বেছে নিয়েছি, যেগুলো অনুসন্ধানী, পরিবেশবিষয়ক দুর্নীতি নিয়ে কাজ করে, কিংবা দীর্ঘদিনের ধামাচাপা দেওয়া কুকীর্তি, যৌন নিপীড়নের অভিযোগসহ একটি দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা। নরডিক দেশ, মেক্সিকো, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে করা অনুসন্ধানী গল্পগুলোতে হাইতি, কিউবা ও সিরিয়ার রহস্যময় ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে। আমাদের বাছাইকৃত ২০২৩ সালের সেরা পডকাস্টের তালিকা এখানে তুলে ধরা হলো।
কোল্ড ফ্রন্ট, ডিআর, এনআরকে, এসভিটি ও ওয়াইএলই
- ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড
- ভাষা: ইংরেজি
ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তঃসীমান্ত সহযোগীতার মাধ্যমে তৈরি পডকাস্ট প্রতিবেদনটি নরডিক দেশগুলোতে রাশিয়ার ইন্ধনে বিভ্রান্তি ছড়ানো, গুপ্তচরবৃত্তি ও সমুদ্রতলের যুদ্ধসহ জটিল “হাইব্রিড” যুদ্ধের বিশদ বিররণ উন্মোচন করে। ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের অনুসন্ধানী দলটি গোয়েন্দা সূত্রের সঙ্গে গোপন বৈঠক, ওপেন সোর্স থেকে প্রাপ্ত তথ্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ, মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ, এমনকি একজন ব্রিটিশ নৌ গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যিনি রাশিয়ার ট্রলারের রেডিও যোগাযোগ ট্র্যাক করতেন তার সঙ্গে কথা বলেন। কোল্ড ফ্রন্ট অনুসন্ধানী সিরিজে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত ঘটনাগুলো ঘিরে সাংবাদিক দলটি তাদের গভীর তদন্তের মাধ্যমে বিস্ফোরণের সময়কালে পাইপলাইনের কাছাকাছি পানির নীচে ম্যাপিং এবং সমুদ্রতল অপারেশন করতে সক্ষম রাশিয়ান জাহাজগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম হন। অসংখ্য উপ-গল্পসহ তৈরি এ পডকাস্টটি নরডিক অঞ্চলে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের জটিল চিত্র তুলে ধরে। আমরা বিভিন্ন ধাপে গল্পের মোড় পরিবর্তিত হতে দেখি। তবে পর্দার পিছনের ঘটনা বলার পদ্ধতির আলোকে এতোটা চমৎকারভাবে এ সিরিজটিকে তুলে ধরা হয়েছে যে, গল্পের বর্ণনাশৈলী ও উপস্থাপন ভঙ্গি শ্রোতাদের নিমগ্ন করে রাখে। — জিআইজেএন সম্পাদকীয় সহকারী এমিলি ও‘সুলিভান
টেসলার অন্দরমহল, স্টার্ন ইনভেস্টিগেটিভ/আরটিএল+
- জার্মানি
- ভাষা: জার্মান
পাঁচ-পর্বের পডকাস্ট সিরিজটি জার্মানির ব্র্যান্ডেনবার্গ অঞ্চলে টেসলার গিগাফ্যাক্টরির কর্মপরিবেশের ওপর পরীক্ষা চালায়। ইউরোপে প্রথম প্ল্যান্টের জায়গা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বহুজাতিক বৈদ্যুতিক গাড়ি জায়ান্ট টেসলা বেছে নেয় জার্মানিকে। উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসাবে নাম লেখানোর জন্য যা ছিল জার্মানির ইচ্ছাপূরণের পক্ষে একটি বড় বিজয়, দেশটির দলমত নির্বিশেষে সব রাজনীতিবিদরাই “টেসলা জ্বরে” আক্রান্ত হয়েছিলেন। টেসলার এ কারখানায় হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়। সুতরাং স্টার্ন ইনভেস্টিগেটিভ এর প্রতিবেদক দল, পডকাস্ট উপস্থাপক মানকা হাইসার এবং ক্রিশ্চিয়ান এসার ও তার সহকর্মী টিনা কায়সার খুঁজতে শুরু করেন কর্মীদের জন্য সেখানে কী ধরনের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় সরকার এবং টেসলার প্রেস অফিস থেকে যখন সাংবাদিকদের অনুরোধের বিপরীতে কোনো ধরনের তথ্য দিতে অস্বীকার করা হয়, তখন দুইজন সাংবাদিক তাদের পরিচয় গোপন করে কারখানায় কাজ করার জন্য অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে অপেক্ষারত লাইনে দাঁড়ান (এবং মাঝে মাঝে গোপনে ভিডিও ধারন করেন)। প্রেসের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলা যাবে না, কর্মীদের প্রতি এমন “নিষেধাজ্ঞা” জারি করা থাকলেও অনুসন্ধানী দলটি কারখানার সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া বিভিন্ন কাগজপত্র যেমন কাজের সময় আঘাত পাওয়া এবং টেসলার সঙ্গে স্থানীয় শ্রমিক কর্তৃপক্ষের ইমেইল আদান-প্রদানের মতো নথিপত্রও তারা হাতে পান। তদন্তের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অজানা উদঘাটনও উন্মোচিত হতে থাকে। কর্মীদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কারখানার কর্মপরিবেশগত প্রভাব নিয়ে তৈরি প্রতিবেদনটি টেসলা প্ল্যান্টের কর্মসংস্কৃতির যে চিত্র তুলে ধরে সেখানে কেবলমাত্র পণ্য উৎপাদন সম্পর্কিত অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোই উঠে আসে। — আলেক্সা ভ্যান সিকল, জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক
ঐতিহাসিক মিথ্যা: কলোসিও কেস, পোডিমোর জন্য লা মালদিতা
- মেক্সিকো থেকে
- ভাষা: স্প্যানিশ
লুইস ডোনাল্ডো কলোসিও নামটি মেক্সিকো জুড়ে সুপরিচিত, তিনি ছিলেন একজন প্রতিশ্রুতিশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের জন্য প্রচারণা চালাতেন। তাকে ১৯৯৪ সালে সীমান্ত শহর টিয়ুয়ানাতে একটি সমাবেশ চলার সময়ে হত্যা করা হয়। তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রতিবেদক লরা সানচেজ লে নিজের কর্মজীবন উৎসর্গ করেছেন ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারকারী ব্যক্তি মারিও আবুরতোর শাস্তিকে ঘিরে থাকা অসঙ্গতি ও অনিয়ম খুঁজে বের করার কাজে। ছয়টিও বেশি পর্বজুড়ে শ্রোতারা আবুরতোর নিজ কণ্ঠে তার জীবন ও কাজের গল্প শুনেছেন, এর মধ্যে কারাগার থেকে করা তার ফোন কলের রেকর্ডিংও রয়েছে। সানচেজ লে খুব আকর্ষণীয়ভাবে ঘটনাটি তুলে ধরেছেন, যা এই ঝামেলাপূর্ণ মামলার তদন্তকারী সাংবাদিক হিসাবে তার কর্মজীবনের স্মৃতি ও স্বীকারোক্তিসহ বিভিন্ন প্রমাণ একত্রে উপস্থাপন করে। তিনি এই মামলা নিয়ে একটি বইও প্রকাশ করেছেন। — আন্দ্রেয়া আরজাবা, জিআইজেএন স্প্যানিশ সম্পাদক
কমরেড বিশপের শূন্য সমাধি, ওয়াশিংটন পোস্ট
- যুক্তরাষ্ট্র/গ্রানাডা
- ভাষা: ইংরেজি
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের ছয় পর্বের পডকাস্টটি ৪০ বছরের পুরোনো রহস্যে ঘিরে অনুসন্ধান চালায় যা স্নায়ুযুদ্ধের সময়কে মনে করিয়ে দেয়। ১৯৮৩ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান দ্বীপ গ্রানাডা আক্রমণ করার ছয় দিন আগে, বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সমর্থকের মৃতদেহের পাশাপাশি দেশটির জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী মরিস বিশপের খুন হওয়া মৃতদেহটিও গায়েব করে ফেলা হয়। দুই বছর ধরে করা অনুসন্ধানে, পোস্টের পডকাস্ট হোস্ট মার্টিন পাওয়ারস কয়েক ডজন সূত্রের সাক্ষাৎকার নেন ও অসংখ্য নথি হাতড়ে বের করেন। যেখানে শুধুমাত্র মৃতদেহের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা-ই অনুমান করা যায় না, বরং — দ্বীপবাসী তাদের জনপ্রিয় নেতার করুণ পরিণতি ঘিরে আজো কতটা শোকাহত তা-ও উঠে আসে। এছাড়া বিশপের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব পশ্চিমা সরকারগুলোকে কতটা হুমকিতে ফেলেছিল এবং ওই বিপ্লবী নেতৃত্বের অন্তর্ধানের রহস্য ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী ছিল, তা সামনে আনে। নিউজরুমগুলোর জন্য পাওয়ারের এ পডকাস্টটি অন্যন্য একটি উদাহরণ— তিনি কোনো সিরিজের রিপোর্টার হিসেবে অনুসন্ধানী দলের সদস্য ছিলেন না, কিন্তু তার পারিবারিক শিকড় গাঁথা গ্রানাডায়, জনমুখে বিশপের ঘটনা সম্পর্কে শুনে তিনি তা নিয়ে অনুসন্ধানে উদ্যোগী হন। সম্প্রতি জিআইজিএনকে ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধান বিভাগের প্রধান জেফ লিন বলেন, পডকাস্টটি নিউজরুমের ভেতরের উপেক্ষিত শক্তিকে চিত্রিত করে। এখানে কর্মরত যে কেউ— তা তিনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা প্রুফ রিডার কিংবা ডেলিভারি ড্রাইভার হন না কেন অনুসন্ধান কাজে অবদান রাখতে পারেন। অনুসন্ধানী সম্পাদকদের সবসময়ই বিভিন্ন ধারণা খোঁজা, প্রতিভা-সন্ধান ও সূত্রের জন্য দরজা খুলে রাখা উচিত।— রোয়ান ফিলিপ, জিআইজেএনের সিনিয়র রিপোর্টার
ভূগর্ভে লুকানো জায়গা, বিবিসি
- যুক্তরাজ্য/ইতালি
- ভাষা: ইংরেজি
মৃত্যুশয্যায় ধারনকৃত একটি টেপ রেকর্ডারের তথ্য দুইজন সাংবাদিককে একটি অনুসন্ধান পরিচালনা করতে উৎসাহিত করে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডেরির সন্নিকটে স্থাপিত এক মিলিয়ন টনের বিষাক্ত আবর্জনা ফেলার গোপন স্থান (ডাম্প), যাকে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে কুৎসিত পরিবেশগত অপরাধের একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। টেপ রেকর্ডারে যে লোকটি কথা বলেছেন, তিনি কী এসব জানতেন?
লোকটির বয়ান অনুসরণ করে এই আট-পর্বের পডকাস্টটি তুলে ধরে অপরাধী চক্র কীভাবে এটিকে বৈধ ব্যবসা হিসাবে জাহির করে উত্তর আয়ারল্যান্ডের স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছিল। যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তারা আবর্জনা অপসরণের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, তা সঠিকভাবে করার পরিবর্তে ৪৬ হেক্টর জায়গাজুড়ে একটি গোপন ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করেন। যাকে ইউরোপের বৃহত্তম অবৈধ ডাম্পগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়। এ ডাম্প থেকে আসা বিষাক্ত পদার্থ ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে নদীতে প্রবাহিত হয়, যা পানীয় জল নিয়ে উদ্বেগ তৈরির পাশাপাশি বন্যপ্রাণী ও খামারের প্রাণীদের স্বাস্থ্যের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। রাজনীতিবিদরা এ পরিস্থিতিটিকে টিকিং টাইম বোমা হিসাবে আখ্যায়িত করেন। অ্যাসবেস্টস থেকে আর্সেনিক পর্যন্ত প্রায় সব ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ এখানে রয়েছে, যা পরিষ্কার করতে খরচ হবে লাখ লাখ ডলার। শুধু এতটুকুই নয়, আরো রয়েছে। ইউরোপ জুড়ে বর্জ্যের অবৈধ ডাম্পিং কার্যক্রমে যুক্ত আছে অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠীগুলোও। এই পডকাস্টটির তদন্তকারী রিপোর্টার ড্যান অ্যাশবি ও লুসি টেলর হাতির দাঁতের ব্যবসা থেকে শুরু করে ডিনামাইট ফিশিং গ্যাং ও রোজউডের চোরাচালান নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এবার তারা অনুসন্ধান চালিয়েছেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের অবৈধ বর্জ্য ব্যবসা নিয়ে। সিরিজ প্রতিবেদনটি তৈরি করতে তাদের উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে ইতালি পর্যন্ত ছুটে বেড়াতে হয়েছে। সংগঠিত অপরাধ ও প্রত্যাখ্যানের মধ্যকার যোগসূত্র থেকে “ইকোমাফিয়া” নামে নতুন একটি শব্দের জন্ম হয়েছে। — পিনার দাগ, জিআইজেএনের তুর্কি সম্পাদক
আপনি চুপ করে থাকবেন না (তু নে তে তাইরাস পয়েন্ট), প্যারাডিসো মিডিয়া, স্লাগ নিউজ
- ফ্রান্স
- ভাষা: ফরাসি
প্যারাডিসো মিডিয়া ও স্লাগ নিউজ থেকে এ পডকাস্টটি প্রথম যখন সম্প্রসারিত হয়, তখন ফরাসি অর্থোডক্স ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য দ্রুতই এ ঘটনাটিকে এক রকমের #মিটু পরিস্থিতি হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়। সালোমে প্যারেন্ট-রাচডি ও লিলা বারডুগো নামের দুইজন নারী সাংবাদিক এ অনুসন্ধানটির পেছনে দেড় বছর সময় ব্যয় করেছেন। তদন্ত চলাকালীন যৌন সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত তিনজন ইহুদি আধ্যাত্নিক নেতাকে শনাক্ত করা যায়, যদিও ছয় পর্বের সিরিজ চলার সময়ে তাদের শুধুমাত্র সংখ্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য সংগ্রহ ছাড়াও এই দুই সাংবাদিক উন্মোচন করেছেন নীরবতার কোড বা “ওমের্তা” কীভাবে কাজ করে: তারা যে নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ওই নারীরা তাদের জানান ইহুদিবিদ্বেষ ছড়ানোর ভয়ে তারা চুপ করে ছিলেন। পডকাস্ট হোস্টদের একজন ইহুদি। তারা শ্রোতাদের সঙ্গে তাদের নিজস্ব সন্দেহ ও উদ্বেগগুলো ভাগাভাগি ও তা বুঝতে “ওমের্তা” পদ্ধতিটি কীভাবে কাজ করে তা তুলে ধরেন। অতিরিক্ত দুটি পর্বে, হোস্টরা তাদের তদন্তের পটভূমির বিশদ বিবরণসহ মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত ভুক্তোভোগীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও তা যাচাই সংক্রান্ত অসুবিধা এবং তাদের কাজের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়েছে বিস্তারিতভাবে তা তুলে ধরেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে ঘটনাটি নিয়ে লেখা হলে ভুক্তভোগী অনান্য নারীরাও এগিয়ে আসেন। — অ্যালসিওন ওয়েমার, জিআইজেএনের ফরাসি সম্পাদক
রাদারফোর্ড কাউন্টির কিশোরেরা, ডব্লিউপিএলএন/ন্যাশভিল পাবলিক রেডিও, সিরিয়াল/দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ও প্রোপাবলিকা
- যুক্তরাষ্ট্র
- ভাষা: ইংরেজি
চার-পর্বের এ পডকাস্টটি তৈরি করেছেন ন্যাশভিল পাবলিক রেডিওর রিপোর্টার মেরিবাহ নাইট। ২০২১ সালে প্রোপাবলিকা রিপোর্টার কেইন আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গে মিলে করা তাদের পূর্ববর্তী একটি তদন্তের ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়। তারা টেনেসি কাউন্টিতে ন্যায়বিচার ও নাগরিক অধিকারের চরম বিপর্যয়ের ঘটনা উন্মোচিত করেন, যেখানে সাত বছরের কম বয়সী নাবালক শিশুদের গ্রেপ্তার এবং কখনও কখনও সম্পূর্ণভাবে সাজানো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল।
পডকাস্টে, নাইট শ্রোতাদের রাদারফোর্ড কাউন্টির কিশোর বিচার ব্যবস্থার কাফকায়েস্ক জগতের (দুঃস্বপ্নের মতো জটিল জগৎ) সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। যেখানে এককভাবে একজন নারী বিচারক, যিনি নিজেকে “রাদারফোর্ড কাউন্টির মা” বলে উল্লেখ করতেন, এবং সামান্য কিংবা খুবই নগন্য ভুলের জন্য শিশুদের গ্রেপ্তারের ও নিয়মিত জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিতেন। কখনও কখনও ওই শিশুদের কাউন্টির কিশোর আটক কেন্দ্রের নির্জন কারাকক্ষ প্রেরণ করা হতো। বছরের পর বছর ধরে, রাদারফোর্ড কাউন্টিতে ব্যাপক সংখ্যক সংখ্যালঘু শিশুকে এমন একটি ব্যবস্থার অধীনে অন্যায়ভাবে আটক করা হতো, যা প্রকাশ্যে আসার পর একাধিক রাষ্ট্রীয় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। পডকাস্টের স্টোরিলাইন অনেকটা আইনি লড়াইয়ের মতো পর্যায়ক্রমে ত্রুটিগুলোকে তুলে ধরে এবং তা সংশোধন করার জন্য আইনি লড়াইয়ের মতো করে উপস্থাপন করে। সিরিজটি কাউন্টির বিরুদ্ধে একটি সফল ক্লাস অ্যাকশন মামলার মাধ্যমে শেষ হয়। কিন্তু শেষটা তিক্তই রয়ে গেছে। কেননা নাইটের রিপোর্টিং তুলে ধরে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রকৃত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পদ্ধতিগত অন্যায়ের জন্য যারা সত্যিকার অর্থে দায়ী তাদের দায়বদ্ধ করাটা এখনো কতটা কঠিন। — রিড রিচার্ডসন, জিআইজেএনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
কোস্টা নস্ট্রা, লা মালদিতা ফর অ্যামাজন মিউজিক
- স্পেন
- ভাষা: স্প্যানিশ
স্পেনের কোস্টা দেল সলকে বলা হয় পর্যটন স্বর্গ। জায়গাটা সমুদ্র সৈকত, স্ফটিক নীল জল আর রাত্রিযাপনের জন্য বিখ্যাত। তবে সাংবাদিক আন্তোনিও পাম্পলিগার তার পডকাস্ট সিরিজে প্রসারিত এই উপকূলরেখার “অন্ধকার দিক”টি তুলে ধরেছেন, যেখানে ৫০টিরও বেশি দেশের সংগঠিত অপরাধ গোষ্ঠী অবৈধ উপকরণ পরিবহন ও ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণের জন্য একে অপরের সঙ্গে লড়াই করে।
১০টিরও বেশি পর্বে প্রতিবেদক মাদক পাচারকারী, গ্যাংস্টার ও পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে দেখা করেন যারা বিশ্ব বিখ্যাত এই সমুদ্র সৈকতের বাসিন্দা ও এখানে কর্মরত। মাদ্রিদ ও বুয়েনস আইরেসভিত্তিক চলচ্চিত্র, পডকাস্ট ও ডকুমেন্টারি-বিষয়ক আউটলেট লা মালদিতা থেকে এটি তৈরি করা হয়।— আন্দ্রেয়া আরজাবা, জিআইজেএনের স্প্যানিশ সম্পাদক
দ্য সাউন্ড: হাভানা সিনড্রোম রহস্য, প্রজেক্ট ব্রজেন
- যুক্তরাষ্ট্র/কিউবা
- ভাষা: ইংরেজি
২০১৭ সালের গ্রীষ্মের শেষ দিকে যখন খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, সন্দেহভাজন সনিক অস্ত্র থেকে সৃষ্ট উচ্চ-শব্দের কারণে মস্তিষ্কের সম্ভাব্য ক্ষতি ও অন্যান্য ব্যাখ্যাতিত বিভিন্ন উপসর্গের কারণে কিউবার হাভানার মার্কিন দূতাবাসের কয়েক ডজন কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তখন মনে হয়েছিল এটি হয়তো কোনো গোয়েন্দা উপন্যাসের পটভূমি। এরপর তা “অ্যানোমালাস হেলথ ইনসিডেন্ট” বা অস্বাস্থ্যকর ঘটনা বলে অ্যাখ্যায়িত করা হয় এবং পর্যায়ক্রমে সারা বিশ্বের কূটনৈতিক কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, এবং রীতিমতো গণ হিস্টিরিয়ায় নতুন তত্ত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়। গার্ডিয়ানের সাবেক সাংবাদিক নিকি উলফ আট পর্বের সিরিজের মাধ্যমে রহস্যে ঘেরা এ ঘটনার সুলুক সন্ধানের লক্ষ্যে পটভূমির গভীরে ডুব দেন। যা শীতল যুদ্ধের গোয়েন্দা কৌশল থেকে শুরু করে ক্যারিবিয়ান কীটতত্ত্ব ও মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কিত সব কিছু তুলে আনে। শেষ পর্যন্ত, উলফ একটি চিত্তাকর্ষক গল্প উন্মোচন করেন যা প্রস্তাবিত তত্ত্বের সঙ্গে কোনোভাবেই মানানসই নয়। তার প্রতিবেদনটি জোর দেয় যে, কিছু জঘন্য ঘটনা ঘটছে, অন্তত একজন ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। যদিও মার্কিন সরকার ” বিকট-শব্দ” সম্পর্কিত ওই ঘটনার সম্পর্কে আর কিছু্ই শুনতে চায়নি।— রিড রিচার্ডসন, জিআইজেএনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
নিরবতা: রেডিও সম্প্রচারকারীদের হত্যাকাণ্ড, আইহার্টরেডিও ও ক্যালিডোস্কোপ
- যুক্তরাষ্ট্র/হাইতি
- ভাষা: ইংরেজি
লাতিন আমেরিকার মাদক ব্যবসার ও অপরাধ-বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরিতে পারদর্শী পুরস্কার বিজয়ী সংবাদিক অ্যানা আরানা তার তিন দশক আগে করা তার প্রথম অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি পুনরায় সামনে আনেন এই পডকাস্টের মাধ্যমে। যার বিষয় ছিল: হাইতির অভিবাসী সম্প্রদায়ের তিনজন রেডিও সম্প্রচারকের হত্যাকাণ্ড, যারা নিজ দেশে পরিবর্তন আনার জন্য তাদের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করেছিলেন। সহ-হোস্ট ওজ ওলোশিনের সঙ্গে মিলে এই জুটি আর্কাইভগুলো পুনরায় নাড়াচাড়া করেন: এফওআইয়ের মাধ্যমে তথ্য চেয়ে অনুরোধ করেন, সম্প্রদায়ের সদস্য এবং মৃত মানুষগুলোর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন, একজন বিচারক ও পুলিশ অফিসারকে খুঁজে বের করেন, যারা এই মামলায় কাজ করেছিলেন। এছাড়া আদালতের নথি ও পুলিশ রিপোর্টগুলো যাচাই করেন। মিয়ামির লিটল হাইতির পাড়ায় কে এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা করেছিল এ সম্পর্কিত সত্যটি নব্বইয়ের দশকে যেমন অস্পষ্ট ছিল, ২০২৩ সালে এসেও তেমনই অন্ধকারাচ্ছন্ন। তবে সমাধান না হওয়া এ মামলা ঘিরে তাদের অনুসন্ধান এমনই একটি ঐতিহাসিক আখ্যান বুনেছে যেখানে জানতে চাওয়া হয়, গণতন্ত্রপন্থি অভিবাসীদের ওপর গুরুতরভাবে আঘাত হানে এমন একটি মামলার তদন্ত কেন স্থগিত রয়েছে। ঔপন্যাসিক উইলিয়াম ফকনারের উদ্ধৃতি টেনে, হোস্টরা একটি পর্বে বলেন যে, “অতীত কখনোই পুরোপুরি অতীত হয় না,” এরপর তারা ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন যে, কেন ঐতিহাসিক পটভূমিগুলো খনন করা গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলেন যে, সেই সময়ে হাইতিতে যা ঘটেছিল– সেটিকে একটি “সংকেত হিসেবে দেখা যায় হাইতিতে এখন ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর জন্য।” — লরা ডিক্সন, জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক
গে গার্ল গন, সিবিসি
- কানাডা/ সিরিয়া
- ভাষা: ইংরেজি
২০১১ সালে আরব বসন্ত যখন সিরিয়ায় পৌঁছে, তরুণ বিপ্লবীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমিনা আরাফও দাঁড়িয়েছিলেন তাদের সঙ্গে। সমকামিতা অবৈধ– এমন একটি দেশ থেকে আমিনা তার ব্লগ গে গার্ল ইন দামেস্ক-এ একজন লেসবিয়ান নারী ও অ্যাক্টিভিস্ট হিসাবে নিজের গল্পগুলো নথিভুক্ত করেন। এই পডকাস্টের হোস্ট যেমনটা বলেছেন, সেই সময়ে, এটি ছিল “কারাগারে প্রবেশের টিকিট।” সিরিয়ার রাজধানীতে যাপিত জীবন সম্পর্কে তার পোস্টগুলো তখন আন্তর্জাতিক পাঠকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে শুরু করে, কিন্তু তারপরেই একটি পোস্টে দেখা যায় যে আমিনাকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে তার পাঠকরা একত্রিত হয়েছিলেন, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সব কিছু যেমনটা মনে হচ্ছে ঠিক তেমন নয়। ছয় পর্বের পডকাস্ট সিরিজে ইরানী সাংবাদিক সামিরা মোহাইদ্দিন ঘটনাটি তদন্ত করতে গিয়ে কথা বলেন সান্দ্রা নামে একজন তরুনীর সঙ্গে। আমিনার সঙ্গে তার অনলাইনে যোগাযোগ হয় এবং একটি ঘনিষ্ঠ ভার্চুয়াল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তদন্তকারী সাংবাদিকেরা ব্লগের নেপথ্যের ব্যক্তির পরিচয় উন্মোচন করেন এবং সাইবারস্পেসে পরিচয় সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন উত্থাপন করেন যে, আমরা কতটা জানি এবং আমরা কার সঙ্গে কথা বলছি বলে মনে করি। — মাজদোলিন হাসান, জিআইজেএন আরবি সম্পাদক
দ্য লাস্ট আফটারনুন ইন দ্য গার্ডেন, ডেভেলপ অডিও
- দক্ষিণ আফ্রিকা
- ভাষা: ইংরেজি
সাব-সাহারান আফ্রিকায় এখনো অন্যান্য মাধ্যমগুলোর মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে রেডিও। যা কিনা মহাদেশটির উন্নত বিভিন্ন অঞ্চলে পডকাস্টিং সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নের আভাস ছড়ায়। যদিও অনুসন্ধানী পডকাস্টিং এখনও অনেকটাই সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র হিসেবেই বিবেচিত। তবে খুব কম মানুষই দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবাদিক ও মিডিয়া উদ্যোক্তা পল ম্যাকন্যালির মতো ওয়াচডগ পডকাস্টিংকে গ্রহণ এবং এর উপযুক্ত ব্যবহার করতে সমর্থ হয়েছেন। আলিবি ইনভেস্টিগেশন প্রতিষ্ঠার পর তিনি ডেভেলপ অডিও শুরু করেন। ম্যাকনালি আফ্রিকা জুড়ে অনুসন্ধানী পডকাস্টারদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রচুর পরিমাণ সময়ও ব্যয় করেন এবং তার প্রশিক্ষণার্থীরা কাজের ক্ষেত্রে কতটা নৈপুণ্য প্রদর্শন করছেন তা দেখতে পছন্দ করেন। হেনরি এনক্সুমালো ফাউন্ডেশনের অনুদান সহায়তায় ডেভেলপ অডিওর একটি দলের মাধ্যমে তৈরি চার পর্বের পডকাস্ট সিরিজে, ম্যাকনালি স্থানীয় নেতা এবং ভূমি অ্যাক্টিভিস্ট আয়ন্দা এনগিলার হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত করেন। বিস্তারিত সরেজমিন রিপোর্টিং এবং বর্ণনামূলক গল্পের মাধ্যমে ম্যাকনালি দক্ষিণ আফ্রিকায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কিভাবে হত্যাকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি ঘটছে তা সামনে আনেন। ম্যাকন্যালির পডকাস্টের শেষ অংশে যেন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দেন। এটি আমাদের সামনে জমির মালিকানা নিয়ে সামাজিক ন্যায়বিচারের জটিল পরিস্থিতিকে তুলে, যা এখনও বিচ্ছিন্ন বর্ণবাদ ব্যবস্থার অসুস্থতা থেকে মুক্তিলাভের চেষ্টা করছে। “আমার তদন্ত শুরু হয়েছিল একটি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ঘটনা নিয়ে, পরবর্তীতে আমরা সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকায় জমির মালিকানা সম্পর্কিত বিষয়গুলো খুঁজে পাই,” ইমেলের মাধ্যমে দ্য মেইল ও গার্ডিয়ান পত্রিকাকে এ কথা লিখেন ম্যাকনালি, যারা তার পডকাস্টটিকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছে। “শক্তিশালী ও প্রতিষ্ঠিত শক্তির বিরুদ্ধে ছোট বিজয় অর্জন করতে কতটা পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, কাজটি করতে গিয়ে তা আমি পর্যায়ক্রমে জেনেছি।” — বেনন হারবার্ট ওলুকা, জিআইজেএনের আফ্রিকা সম্পাদক
লরা ডিক্সন জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তিনি কলম্বিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে কাজ করেছেন। তার লেখা দ্য টাইমস, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য আটলান্টিকে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আইডব্লিইএমএফ এবং পুলিৎজার সেন্টার থেকে ফেলোশিপ প্রাপ্ত।