Image: Shutterstock
বিশ্বের সব সংবাদমাধ্যম তাদের কাজের প্রভাব মূল্যায়নের চেষ্টা করে। কীভাবে এই প্রভাবকে সংজ্ঞায়িত করা যায়– তা নিয়ে প্রতিটি সংগঠনেরই পৃথক ধারণা থাকতে পারে, এবং বিভিন্ন ধরনের সূচক ব্যবহার করে তারা তাদের রিপোর্টিংয়ের প্রভাব পরিমাপ করতে পারে।
কীভাবে এই প্রভাব পরিমাপ করা যায়– তা নিয়ে আমরা গত কয়েক বছর ধরে কাজ করছি। এজন্য আমরা সাংবাদিকদের মধ্যে জরিপ চালিয়েছি এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের প্রভাব সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কী মনে করে তাও জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের গবেষণায় প্রভাব পরিমাপ করার জন্য প্রায় ৯০টি ভিন্ন ভিন্ন পরিমাপক চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও বাস্তবতা হচ্ছে নিউজরুমগুলো সাধারণত মাত্র কয়েকটির দিকেই নজর দেয়।
ব্রাজিলের এজেন্সিয়া মুরাল ডি জর্নালিসমো দাস পেরিফেরিয়াস তাদের পরিমাপকগুলোকে চারটি বিভাগে বিভক্ত করেছে: বাস্তব জীবনের পরিবর্তন; অন্যান্য আউটলেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া; পাঠক-দর্শকের সম্পৃক্ততা; এবং জনপরিসরে তর্ক-বিতর্কের ওপর প্রভাব। অলাভজনক সংবাদ সংস্থা দ্য মার্শাল প্রজেক্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফৌজদারি বিচার ও বর্ণবাদ নিয়ে কাজ করে এবং নিচের তিনটি মানদণ্ড ব্যবহার করে রিপোর্টিংয়ের প্রভাব পরিমাপ করে।
- নীতিনির্ধারকদের ওপর প্রভাব: প্রতিবেদনটি কি প্রচলিত আইন, নীতি বা চর্চা পরিবর্তনে কোনো অবদান রেখেছে?
- অ্যাডভোকেট ও বিশেষজ্ঞ: প্রতিবেদনটি কি অ্যাডভোকেটদের জন্য দরকারী তথ্য প্রদান করেছে?
- অন্যান্য মিডিয়া: মার্শাল প্রজেক্ট কি একটি উঁচু মানদণ্ড নির্ধারণ করছে এবং অন্যান্য মিডিয়াগুলোকে অনুপ্রাণিত করছে আরও ভালোভাবে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা কাভারের জন্য?
পাঠকদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়ের ওপর প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের দিকে মনোযোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার ডেইলি ম্যাভেরিক। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ আফ্রিকাতে মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব একটি বড় সমস্যা। তাই ডেইলি ম্যাভেরিক যৌথভাবে কাজ করে রিপোর্ট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড (আরএফডব্লিউ)-এর সঙ্গে। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের যে সব সাংবাদিক শিক্ষা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু নিয়ে কাজ করেন, প্রতিষ্ঠানটি তাদের তহবিল প্রদান ও প্রশিক্ষণে সহায়তা প্রদান করে।
সংস্থাটি ডেইলি ম্যাভেরিকের শিক্ষা বিটের একজন রিপোর্টারের জন্য তহবিল সংগ্রহে সাহায্য করেছে। এবং সম্পাদক জিলিয়ান গ্রিন বলেছেন, এই কাভারেজ সেসব পাঠক-দর্শকের জন্য জরুরী, যারা স্থানীয় স্কুলগুলোর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। “সুশীল সমাজ এই এলাকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানে এবং তা সমাধানের জন্য লড়াই করছে। তাদের এ লড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য আমরা সরবরাহ করছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে প্রত্যেক পিতামাতা যেন প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে পারেন এবং সরকারকে জবাবদিহি করতে পারেন”, একটি সাক্ষাৎকারে বলেন গ্রিন।
আমরা যে আউটলেটগুলোতে জরিপ চালিয়েছি, তাদের বেশিরভাগই নীতি ও আইনের ওপর প্রভাব পরিমাপের পাশাপাশি, প্রতিবেদনের প্রভাব পরিমাপের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া বা গুগল অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে, তবে প্রত্যেকের কারণগুলো অবশ্য আলাদা। ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার যেমন পাঠকের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেয়— এ আউটলেটটি মিয়ানমার জুড়ে সংবাদ, সংঘাত, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে গভীর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারা সংখ্যার মাধ্যমে সহজে এই সম্পৃক্ততার বিষয়টি পরিমাপ করতে পছন্দ করে। পডকাস্টের মতো মাধ্যমগুলোর অডিয়েন্স সাধারণত প্রচলিত সংবাদমাধ্যমের তুলনায় কম হয়ে থাকে। যেকারণে শুধুমাত্র পেজভিউ বা শ্রোতার সংখ্যা দিয়ে তাদের কাজের প্রভাব পরিমাপ করা কঠিন হয়।
ধীরগতিতে হলেও, সরকারি নীতি পরিবর্তন
সাংবাদিকতার প্রভাবের ঐতিহ্যগত সংজ্ঞার মধ্যে রয়েছে সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করা বা কর্মকর্তাদেরকে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য প্ররোচিত করা। তবে জনগনের মধ্যে ক্ষোভ কিংবা প্রশাসনিক জবাবদিহিতা তৈরির জন্য প্রায়ই দীর্ঘ সময় জুড়ে ধারাবাহিক রিপোর্টিংয়ের প্রয়োজন হয়।
এই ধরনের ধীর গতি সম্পন্ন প্রভাব সাধারণত তিনটি পর্যায়ে ঘটে: ব্যক্তিপর্যায়, সুচিন্তিত এবং মৌলিক। “দ্য জার্নালিজম অব আউটরেজ” এবং “ডেমোক্রাসি’স ডিটেক্টিভ” বইয়ে লেখক যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, ব্যক্তিপর্যায়ের প্রভাব হিসেবে কোনো একজন দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হতে পারে। সুচিন্তিত প্রভাব হিসেবে সংসদীয় তদন্ত বা কংগ্রেসের শুনানি হতে পারে। আর মৌলিক প্রভাবের ফলাফল হিসেবে আইন বা নীতির পরিবর্তন হতে পারে।
তবে ইতিহাস জুড়ে বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা দেখেছেন যে, সাংবাদিকতার মাধ্যমে প্রভাব তৈরির জন্য নাগরিক সমাজের সমর্থন একটি মূল শর্ত। “সুশীল সমাজের সমর্থন বা অংশীদারিত্ব না থাকলে মোবিলাইজেশন মডেল কাজ করে না। পরিবর্তন সবসসময় ধীর গতিতে আসে আর কাঙ্খিত ফলাফল অর্জনও সময়সাপেক্ষ এবং সুশীল সমাজের জোরালো অবস্থান ছাড়া পরিবর্তন ঘটে না।” মার্ক লি হান্টার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
তথাকথিত ডেমোক্রেটাটরদের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকতার ওপর আক্রমণ বেড়েছে। এবং নীতিগত অবক্ষয় বা সরকারী কর্মকর্তাদের অন্যায়কে তুলে ধরে জবাবদিহিমূলক প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া আদায়ের কাজকেও কঠিন করে তুলেছে।
ভারতে যেমন মোদি সরকার মিডিয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। দেশটির একজন সম্পাদক আমাদের বলেন যে, ২০ বছর আগের তুলনায় এখন যে কোনো ঘটনায় সরকারকে জবাবদিহি করাটা অনেক কঠিন। “সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমরা আগে যেমন “গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড” প্রভাব তৈরির জন্য অপেক্ষা করতাম, তেমনটা আর ঘটে না। সরকার বা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখন আর কেউ আমাদের কাজের বিপরীতে প্রতিক্রিয়া দেখায় না।”
পাঠক-দর্শকের ওপর বিস্তৃত পরিসরের প্রভাব উপলব্ধি
সংবাদ মাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতাদের ওপর “যেকোনো সুস্পষ্ট প্রভাব” অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কেউ কেউ প্রভাবের সংজ্ঞাকে আরো বিস্তৃত করেছেন। এর মধ্যে আসতে পারে সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতা এবং আরও ভাল বোঝাপড়া তৈরি। অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বৃহৎ ডেটাসেট এবং সহজাত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, নিউজ আউটলেটের উপস্থিতি সুশাসনকে সমুন্নত, দুর্নীতি হ্রাস, ভোটারদের ভোটদানকে প্রভাবিত এবং সম্পদের সরকারী বন্টন ব্যবস্থাকে পুনর্নিধারিত করে। তবে কাঙ্ক্ষিত এ প্রভাবগুলো মিডিয়া আউটলেটের নজরদারির ভূমিকার সঙ্গে যুক্ত, কারণ এর মাধ্যমে কোনো ঘটনার ওপর আলোকপাত করার পাশাপাশি স্বতন্ত্র ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নীতি বিরুদ্ধ আচারণের সমালোচনা করা যায়।
ইউক্রেনের অন্যতম বৃহৎ স্বাধীন সংবাদ সংস্থা ইউক্রেনস্কা প্রাভদার নির্বাহী পরিচালক আন্দ্রে ববোরিকিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের তুলনায় ইউক্রেনিয়ানদের জন্য অবশ্যই বেশি আগ্রহের বিষয় হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের চলমান যুদ্ধের খবর। তিনি উল্লেখ করেন বৈশ্বিক উষ্ণতা সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন ঘিরে তারা খুব বেশি মনোযোগী নাও হতে পারেন। “যুদ্ধের কারণে জাতীয় উদ্যানের ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার ঘটনা পড়া এবং তা সবার সঙ্গে শেয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা এ ধরনের নিবন্ধ তাদের জীবন ও আবেগকে প্রভাবিত করে। এটি পড়তে পড়তে তারা ক্ষুব্ধ বোধ করেন আর এ গল্পগুলো তাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে,” একটি সাক্ষাৎকারে বলেন ববোরিকিন।
প্যানডোরা পেপারস প্রতিবেদন তৈরির বিষয়ে আমরা যখন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-এর যৌথ সমন্বয় প্রসঙ্গে জানতে চাই, তখন আমাদের বলা হয় যে, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে তাদের প্রতিবেদনটি নাগরিক বিশ্বাস ও মনোভাবকে প্রভাবিত করে। ৩৯টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে ৩৩টি (৮৫ শতাংশ) আইসিআইজের এ প্রতিবেদনটি ঘিরে দর্শকদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া ও প্রতিক্রিয়া পাওয়ার কথা জানায়। এ ৩৩টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে, ২৩টি আউটলেট দর্শকের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া (যা মোট প্রতিক্রিয়ার ৭০ শতাংশ ) প্রাপ্তির কথা বলেছে। বিপরীতে ৪টি আউটলেট বলেছে যে, প্রতিবেদনটি কিছুটা জনসমালোচনা বা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে (যা মোট প্রতিক্রিয়ার ১২ শতাংশ)। আমরা রিপোর্ট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড আউটলেটের যে সমীক্ষাটি করেছি তাতেও একই রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। ৭০ শতাংশ বলেছেন যে, তাদের রিপোর্টিং শ্রোতাদের বোঝাপড়ার পরিবর্তন এনেছে। আর ৮৫ শতাংশ জানিয়েছে, প্রতিবেদনের মাধ্যমে তারা তাদের দর্শকদের বিচার-বুদ্ধিকে বিকশিত করতে সমর্থ হয়েছে।
নিউজরুমের ভেতরে
আমরা প্রথমবার যখন আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার দিকে দৃষ্টি দিতে শুরু করি, তখন নিউজরুমগুলোতে এর অভ্যন্তরীণ প্রভাব সম্পর্কে ততটা ভাবিনি। এরপর আমরা বুঝতে পারি যে, কোনো নিউজ আউটলেটের জন্য আইসিআইজে বা রিপোর্ট ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের মতো সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব মানেই নতুন নতুন উদ্ভাবনে যুক্ত হওয়া।
“আরএফডব্লিউর একজন রিপোর্টার থাকার ফলে সংবাদ সংস্থা এজেনসিয়া মুরালের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে,” বলেন ইজাবেলা মোই। তিনি এজেন্সিয়া মুরাল ডি জর্নালিসমো দাস পেরিফেরিয়াসের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। সংস্থাটি ব্রাজিলের সাও পাওলোর উপেক্ষিত এলাকাগুলো নিয়ে কাজ করে।
প্রকৃতপক্ষে, আইসিআইজে সদস্য এবং আরএফডব্লিউ সম্পাদকদের নিয়ে করা আমাদের সমীক্ষায় দেখা যায় সহযোগিতামূলক প্রকল্পগুলো সাংবাদিকদের নথি বিশ্লেষণ, ডেটা স্ক্র্যাপিং, ডাটাবেস বিশ্লেষণ এবং আন্তর্জাতিক সমন্বয়সহ নতুন দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে। তাছাড়া আমরা খুঁজে পেয়েছি যে সহযোগিতা আরও সহযোগিতার পথ উন্মোচন করে।
উদাহরণস্বরূপ, আইজিআইজের সঙ্গে প্যানডোরা পেপারস নিয়ে কাজ করেছে এমন ৫৫টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে ৩৭টি (৬৯ শতাংশ) তদন্তের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা বেশি বা অনেক বেশি সহযোগিতা করেছিল। ৫৫টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে ৫২টি (৯৫ শতাংশ) জানিয়েছে, আইসিআইজের অংশীদারিত্ব অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।
প্রভাবের অন্ধকার দিক: রিপোর্টারের নিরাপত্তা ঝুঁকি, সুযোগ ব্যয়
ধারণা করা যায়, সংবেদনশীল অনুসন্ধানে অংশগ্রহণ সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। ৫৫টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে ৫টি (মোট ৯ শতাংশ) রিপোর্ট করেছে যে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা তাদের কাজের কারণে আইনি বা শারীরিক হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। একটি আউটলেট জানায় তাদের অংশগ্রহণকারী সাংবাদিককে প্যান্ডোরা পেপারস প্রকাশের পর সাময়িকভাবে আত্মগোপনে যেতে হয়েছিল। অন্য আউটলেটগুলো মৃত্যুর হুমকি, আইনি হুমকি এবং তাদের সাংবাদিকদের নামে কুৎসা রটানোর খবর পেয়েছে।
বৃহৎ আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার কারণে তৈরি হওয়া সুযোগ ব্যয়ের দিকেও আমরা নজর দিয়েছি এবং জানতে চেয়েছি একটি আইসিআইজে অনুসন্ধানে সময় দেওয়ার ফলে কোন ধরনের প্রতিবেদনগুলো বাদ পড়ে যাচ্ছে। ৫৫টি মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে ১৬টি (২৯ শতাংশ) ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা প্যান্ডোরা পেপারের জন্য উৎসর্গ করা সময় এবং সংস্থানের কারণে অন্য কিছু প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেনি। যেমন তারা কয়লা, বন উজাড়, স্থানীয় দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানব পাচারের প্রতিবেদনগুলো কাভার করতে সমর্থ হয়নি।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রভাব বিশ্লেষণের পদ্ধতিগুলো অনেক বেশি পরিশীলিত হয়ে উঠেছে। অর্থনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মিডিয়ার প্রভাব জানতে গবেষণার প্রশ্নগুলোতে পদ্ধতিগত জ্ঞানের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে উপলব্ধ বিশ্লেষণগুলো যুক্ত করেছেন। আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, অনুসন্ধানমূলক এবং সহযোগিতামূলক প্রতিবেদনের প্রভাব সাংবাদিক সম্প্রদায়ের ওপর আরও সুদূরপ্রসারী, যেমনটা কয়েক দশক আগে প্রকল্পগুলো শুরু হওয়ার সময়ও আমাদের কল্পনাতে ছিল না।
ড. আনিয়া শিফ্রিন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক ও পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের মিডিয়া, প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক।
ড. ডিলান গ্রোভস লাফায়েট কলেজের ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পিএইচডি করেছেন।
আন্ডারস্ট্যান্ডিং জার্নালিজম ইমপ্যাক্ট গবেষণাপত্রে তাদের সহ-লেখকদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাডজানক্ট অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর আন্দ্রে কোরিয়া ডি’আলমেইডা, ড. লিন্ডসে গ্রিন-বারবার, অড্রে হ্যাটফিল্ড (কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর, ২০২৩), এবং পিএইচডি প্রার্থী অ্যাডেলিনা ইয়ানকোভা। আনিয়া শিফ্রিন বর্তমানে এসআইপিএ শিক্ষার্থী রানিয়া ইতানি, প্রীতি নাল্লু এবং রাঘবী শর্মার সঙ্গে একটি ফলো-আপ প্রকল্পে কাজ করছেন।