প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Protest against violence by the Venezuelan government, 2017
Protest against violence by the Venezuelan government, 2017

Image: Shutterstock

লেখাপত্র

বিষয়

‘অন্ধকারে আলো জ্বালো’: সঙ্কটাপন্ন ভেনেজুয়েলায় স্বাধীন নিউজ সাইট 

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

Protest against violence by the Venezuelan government, 2017

ছবি: শাটারস্টক

“এক টুকরো তথ্য পারে অন্ধকারে আলো জ্বালতে।” এটাই ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা ভেনেজুয়েলার স্বাধীন নিউজ সাইট ইফেক্তো কোকুইয়োর (ইংরেজি অর্থ “জোনাকির প্রভাব”) মূলমন্ত্র। এই অন্ধকারের সঙ্গে দেশটিতে চলমান অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটের সম্পর্ক আছে, যার শুরু ২০১৪ সালে, সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঢেউকে সহিংসতার মাধ্যমে দমনের চেষ্টার মধ্য দিয়ে।

সাইটটির সহপ্রতিষ্ঠাতা লুজ মেলি রেইয়েস দেখতে পাচ্ছিলেন, ভেনেজুয়েলায় “ভালো সাংবাদিকতার ক্ষেত্র” ছোট হয়ে আসছে। টাকার অভাব এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণের কারণে সংবাদপত্রগুলি পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ ছাপানোর মত পর্যাপ্ত কাগজ পাচ্ছে না; একই সময় সরকারের সমর্থনপুষ্ট ব্যবসায়ীরা প্রধান গণমাধ্যমগুলো কিনে ফেলার পর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আরও বেশি সংকুচিত হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে আন্দোলন ও রাজনৈতিক বিরোধীদের খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে।

অন্যদিকে তখন জনসাধারণের মধ্যে তথ্যের চাহিদা বাড়ছিল। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যাঁরা ঘটনাস্থলে বা তার কাছাকাছি ছিলেন, তাদের উদ্দেশ্য করে আন্দোলনের আপডেট চেয়ে একটি টুইট করেন রেইয়েস। সেই আন্দোলনে তিন জন মারা গিয়েছিলেন এবং সংবাদসূত্রগুলো পর্যাপ্ত কভারেজ দিচ্ছিল না। এর চার দিনের মাথায় তাঁর টুইটার অনুসারীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ১৭,০০০ থেকে ৩৪,৫০০-এ পৌঁছে যায়।

রেইয়েস, ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে ভেনেজুয়েলায় রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন। জাতীয় দৈনিক উলতিমাস নোতিসিয়াসের রাজনীতি সম্পাদক এবং দিয়ারিও ২০০১ এর প্রধান সম্পাদকের মতো বড় সংবাদ মাধ্যমের উঁচুপদে দায়িত্ব পালন শেষে, তিনি তখন নতুন পেশাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি ছিলেন।

তিনি বলেন, “এই শিল্প নিয়ে অসন্তুষ্ট সাংবাদিক হিসেবে তখন একটা কিছু করার সুযোগ ছিল। কাজটি ডিজিটাল মাধ্যমে হলে খরচ কম হবে এবং ছোট কিন্তু কার্যকর কিছু গড়ে তোলা যাবে। এটাই ছিল বিশ্বাসের জোর। আমরা জানতাম না এই ছোট গণমাধ্যমের প্রভাব কী হবে, আমরা কেবল সাংবাদিকতা করতে চেয়েছি এবং আমরা যেভাবে বিশ্বাস করেছি সেভাবে করার সুযোগ পেয়েছি।” 

ইফেক্তো কোকুইয়োর “স্বপ্ন” দানা বাঁধে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি – একটি ক্যাফেতে সহকর্মী ও বন্ধু লরা ওয়েফার ও হোসেফিনা রুইয়েরো এবং তিন তরুণ সাংবাদিকের প্রাথমিক আলোচনার মধ্য দিয়ে। দলটিকে পরিচালন ও ব্যবসায়িক মডেল ডিজাইন করতে সাহায্য করেছিল একটি ইনকিউবেটর কর্মসূচি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ইফেক্তো কোকুইয়োর জন্ম। প্রথম যাত্রা টুইটারে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে অনুসারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ হাজারে। যখন লিখছি, তখন এটি ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি

ছয় বছর পরে এসে, ২৫ জনের সম্পাদকীয় ও পরিচালনা দল সঙ্গে নিয়ে এবং মূল ইনকিউবেটর সহযোগীর সহায়তায় ভেনেজুয়েলা থেকে বিনামূল্যে দৈনিক সংবাদ এবং অর্থনীতি, রাজনীতি, স্বাস্থ্য ও খেলাধুলার মত বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করে যাচ্ছে ইফেক্তো কোকুইয়ো। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যযাচাই শাখা কোকুইয়ো চেকেয়া, পাঠকদের পাঠানো ভাইরাল হোয়াটসঅ্যাপ চেইন মেসেজ ও সামাজিক মাধ্যমের বিতর্কিত পোস্ট অনুসন্ধান করে। রেইয়েস বলেন, সম্পাদকীয় থেকে পরিচালনা পর্যন্ত –  তা সে খবর পরিবেশন ও টিকে থাকা হোক, স্থানীয়দের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন বা ভেনেজুয়েলার সাংবাদিকদের পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে তোলা – এমন সব ক্ষেত্রে পত্রিকাটির লক্ষ্য হল “জানানো ও শেখানো।”

Cocuyo Chequea

ইফেক্তো কোকুইয়োর তথ্য যাচাই কলাম, কোকুইয়ো চেকেয়া-  ভাইরাল হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চেইন মেসেজ এবং বিতর্কিত সামাজিক মাধ্যম পোস্ট অনুসন্ধান করে। ছবি: স্ক্রিনশট

স্থানীয় পর্যায়ে কাজ

ক্রাউডফান্ডিং ও পাঠক তৈরির সরাসরি প্রচেষ্টার প্রথম দিককার ভিডিওগুলোতে ইফেক্তো কোকুইয়ো দলকে দেখা যায় বাসে, বাজারে ও রাস্তায় তহবিল সংগ্রহ করছেন আর সেই পাঠক গোষ্ঠীর কাছে সংগঠনটির ধারণা তুলে ধরছেন, যাদের কাছে তারা পৌঁছাতে এবং সেবা দিতে চান।

রেইয়েস বলেন, “ভেনেজুয়েলার জনগণ আমাদের পাঠক এবং আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে নিবেদিত।”

এই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের সন্ধান মিলবে আসন্ন আঞ্চলিক নির্বাচনে ইফেক্তো কোকুইয়োর পরিকল্পনায়, যা তাঁদের কভারেজকেও প্রভাবিত করছে: “নির্বাচনে প্রার্থীই সব নয়; গণমানুষের সাথে কী হচ্ছে, সেটিও নির্বাচনের বিষয়বস্তু। তাঁরা কী ভাবছেন এবং করছেন? এরপর আশ্বাসের সঙ্গে তুলনা করুন। ভেনেজুয়েলায় নির্বাচন (কভার করা) মানে মানুষের প্রয়োজন ও চাওয়াগুলোকে বলার জায়গা করে দেওয়া।”

এই সময়টাতে সাধারণ মানুষ দল ও প্রার্থী নিয়ে রাজনৈতিকভাবে একরকম “বীতশ্রদ্ধ” থাকে বলে মনে করেন রেইয়েস: “আমার বিশ্বাস, (এ সময়) মানুষ নিজেদের অভিভাবকহীন বলে মনে করে। আমরা তাঁদের বলতে চাই, ‘আপনাদের কথা শোনার জন্য আমরা আছি।’”

স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছাকাছি যেতে বেশ কিছু পণ্য তৈরি করেছে ইফেক্তো কোকুইয়ো। যেমন: “কোকুইয়োর সঙ্গে গুয়াইয়োইয়ো।” সকালের মাঝামাঝি বা মধ্য বিকেলে একধরনের হালকা কফিকে ভেনেজুয়েলায় গুয়াইয়োইয়ো বলা হয়। পাঠক ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে এধরনের অনানুষ্ঠানিক, সরাসরি জানাশোনার আয়োজন ইফেক্তো কোকুইয়োর দলকে নতুন স্টোরি খুঁজে পেতে সাহায্য করে এবং শ্রোতাদের অভিজ্ঞতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী রিপোর্ট তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানো, ভেনেজুয়েলার লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের অভিজ্ঞতা ও গল্প নিয়ে এখন একটি অভিবাসন-বিষয়ক ধারাবাহিক চলছে ইফেক্তো কোকুইয়োর। এর প্রথম দিককার পর্বগুলো এসেছে আমেরিকাজুড়ে বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে অংশীদারিত্বে তৈরি করা কয়েকটি “গুয়াইয়োইয়ো” সেশন থেকে। এই প্রকল্প, অভিবাসন নিয়ে সরকারি ভাষ্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানায় এবং রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডকেও জবাবদিহি করে। রেইয়েস বলেন, মানুষ যে সঙ্কটের কারণে ভেনেজুয়েলা ছাড়ছে, এমন অভিযোগ রাষ্ট্র অস্বীকার করছিল। ২০১৮ সালে তিনি আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন এবং সম্প্রতি কলাম লেখক হিসেবে ওয়াশিংটন পোস্টে যোগ দিয়েছেন। 

Efecto Cocuyo Migration series

ইফেক্তো কোকুইয়োর চলমান অভিবাসন ধারাবাহিকে আমেরিকায় অভিবাসনপ্রত্যাশী লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুত ভেনেজুয়েলাবাসীর গল্প তুলে ধরা হয়। ছবি: স্ক্রিনশট

ভেনেজুয়েলায় গণমাধ্যমের প্রতিকূলতা

সাংবাদিক হিসেবে কাজ করার জন্য ভেনেজুয়েলা মোটেও সহজ জায়গা নয়। আর্ন্তজাতিক অলাভজনক সংগঠন রিপোর্টারস্ উইদাউট বর্ডারের ২০২১ সালের বিশ্ব গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে ১৮০ টি দেশের মধ্যে দেশটির অবস্থান ১৪৮তম। বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে স্বাধীন সংবাদ প্রতিষ্ঠানের কণ্ঠরোধ ও হেনস্তা, এবং সংবাদ কাভারেজ নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে। তার প্রশাসনের সমালোচনা করায় বিভিন্ন গণমাধ্যম কার্যালয়ে অভিযান এবং কার্যক্রম বন্ধেরও ঘটনা ঘটেছে।

রিপোর্টারস্ উইদাউট বর্ডার্সের মতে, ২০০৭ সাল থেকে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। ২০১৭ সালে, মাদুরোর সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে সংবাদ করায় ইফেক্তো কোকুইয়োর সাংবাদিকরা আক্রমণ ও হুমকির মুখে পড়েছেন।

অনুসন্ধানী সাইট (এবং জিআইজেএনের সদস্য সংগঠন) আরমান্দো ডট ইনফোর সাংবাদিক এবং বর্তমানে কলম্বিয়ায় নির্বাসনে থাকা রবার্তো ডেনিজের উদাহরণ টেনে রেইয়েস বলেন, “পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমাদের কয়েকজন সহকর্মীকে দেশ ছাড়তে হয়েছে এবং তাঁরা আর ফিরে আসতে পারেননি। তাঁরা বিদেশে অবস্থান করছেন, কারণ সরকার-ঘনিষ্ট লোকজন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আর আপনি জানেন, মামলায় আপনার পরাজয় নিশ্চিত।”

Reporters Without Borders 2021 World Press Freedom Index ranking, Venezuela

বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সবচেয়ে বাজে অবস্থায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভেনেজুয়েলার অবস্থান অন্যতম। ছবি: স্ক্রিনশট

দেশটি সাত বছর ধরে সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং “জটিল মানবিক পরিস্থিতির কারণে একই সীমাবদ্ধতায় ভুগছে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম,” বলেন রেইস। “ভেনেজুয়েলায় এখন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কঠিন, কিন্তু সেখানে অনেক সাংবাদিক মাঠে কাজ করছেন। তারা যা করছেন তার প্রতি অত্যন্ত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই আমরা ভেনেজুয়েলায় থেকে গোপনে কাজ করা ব্যক্তিদের জন্য প্রবাসীদের সমর্থন জোটানোর চেষ্টা করি।”

পাঠকদের কাছে দায়বদ্ধতা এবং তাঁদের মতামত ও প্রয়োজনের প্রতি মনোযোগই ইফেক্তো কোকুইয়োকে তার স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে এমন একটি দেশে, যেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।

স্বাধীনতাকে আরও সুরক্ষিত রাখতে ইফেক্তো কোকুইয়ো ভেনেজুয়েলার সরকার থেকে কোন তহবিল নেয় না। সংগঠনটির অর্থদাতাদের বেশিরভাগই আর্ন্তজাতিক সংগঠন, যারা বিশ্বজুড়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার সমর্থক হিসেবে সুপরিচিত। রেইয়েস কোন নির্দিষ্ট অর্থদাতার কথা  খুলে বলেননি, কারণ  দেশটিতে এধরনের জনকল্যাণমূলক কাজকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনার চল আছে। দলটি এখন আর ক্রাউডসোর্সিংয়ের উপর নির্ভর করে না। তারা ২০১৮ সাল থেকে কঠোর নিয়ম মেনে বিজ্ঞাপন নেয়া শুরু করেছে, আর এখন একটি মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম তৈরির কাজ করছে। এটি ইফেক্তো কোকুইয়োর লক্ষ্য এবং ভেনেজুয়েলার অনেকের জীবনের বাস্তবতাকে সরাসরি প্রতিফলিত করবে বলে তাদের আশা। 

রেইয়েস আরও বলেন, “আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠান হতে চাই, যার একটি সামাজিক লক্ষ্য আছে, এবং যার কর্মপদ্ধতি [ভেনেজুয়েলার প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলো থেকে] আলাদা, কারণ আমরা অলাভজনক সংগঠন।”

“আমরা সাবস্ক্রিপশন মডেল বেছে নেইনি, কারণ আমরা গড়েই উঠেছি সবাইকে তথ্য জানানোর জন্যে। ভেনেজেুয়েলায় অনুদানের সংস্কৃতি নেই, এবং এই মুহূর্তে টিকে থাকাই ভেনেজুয়েলার মানুষের জন্য মুখ্য বিষয়। যারা আমাদের সহায়তা করতে সক্ষম, তারা যেন ভেনেজুয়েলার অন্যদেরও সহায়তা করতে পারেন- এমন একটি মডেল আমরা তৈরি করতে চাই।”

“চাইলেই একটি পণ্য বাজারে ছাড়ার মতো অবাধ প্রতিযোগিতার কাঠামো ভেনেজুয়েলায় নেই, কারণ আমাদের স্বাধীনতা নেই। আমাদের মতো করে মেম্বারশিপ তৈরির জন্য শ্রোতাদের প্রয়োজন নিয়ে ভাবতে হবে এবং সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে।” 

পরবর্তী অধ্যায়

গণমাধ্যম উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করা এবং ক্ষুদ্র পদক্ষেপ থেকে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা – রেইয়েস ও তাঁর সহকর্মীদের পেশাজীবনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

রেইয়েস বলেন, “আমাদের এমন একটি সংগঠন গড়ে তুলতে হয়েছে, যেখানে সাংবাদিকেরা তাঁদের সাধ্যের সেরা সাংবাদিকতা করতে পারেন। “শুধু স্থায়িত্ব এবং তহবিল খোঁজার ক্ষেত্রেই নয়, ব্যবস্থাপনা এবং সম্পাদকীয় দলের মধ্যে ব্যবধান কমানোর ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ আছে। আমরা সবার আগে, এটি এড়ানোর চেষ্টা করেছি, কারণ আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল – আমাদের সাংবাদিকতা, যেটা আমরা সবচেয়ে ভালো পারি।”

একইসঙ্গে একটি সংগঠন ও সংবাদ প্রতিষ্ঠান হওয়ার মধ্য দিয়ে ইফেক্তো কোকুইয়ো ভেনেজুয়েলার ভবিষ্যৎ সাংবাদিকতায় সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলতে পারবে বলে বিশ্বাস করেন রেইয়েস। সম্পাদকীয় দৃষ্টিতে এটি নিজেকে এমন এক সংবাদ সংগঠন হিসেবে দেখে থাকে, যেখানে অভিবাসন ও তথ্য যাচাইকেন্দ্রিক ইউনিট, বার্ষিক উৎসব, এবং শিক্ষাবিষয়ক শাখাসহ বেশ কিছু স্বতন্ত্র কার্যক্রম আছে। কোকুইয়ো স্কুল শুরু থেকেই এই প্রকল্পের অংশ। এটি তরুণ সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দেয়, কীভাবে নতুন টুল ও বর্ণনাকৌশল ব্যবহার করে ভেনেজুয়েলার মানুষের জন্য অপরাধ থেকে অভিবাসন পর্যন্ত জটিল সব বিষয় কভার করতে হয়। “ডিজিটাল মানসিকতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো, নতুন পেশাগত সুযোগ তৈরি এবং ভেনেজুয়েলার প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা ধরে রাখার” চেষ্টা করছেন যেসব মাঝ-ক্যারিয়ার সাংবাদিক, তাদেরও সহায়তা করে এই উদ্যোগ।

এই দলটি প্রতিকূলতা সম্পর্কে সজাগ। সেই প্রতিকূলতা ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি থেকে কম নয়। কিন্তু এই দল এখনো স্বপ্ন দেখে। বিশেষ করে, ভেনেজুয়েলার বাইরে আঞ্চলিক পাঠকদের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা থেকে তারা সরে আসেননি। “আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং আমরা এটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কিন্তু আমরা যা করতে চাই, তার জন্য আমাদের মূল্য দিতে হয়। স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করার অধিকারও আমাদের আছে।”

মূল স্টোরি দ্য রয়টার্স ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজমে প্রকাশিত হয় এবং অনুমতিক্রমে এখানে পুনরায় প্রকাশিত হলো।

আরও পড়ুন

হাও আরমান্দো ডট ইনফো’জ এক্সাইলড রিপোর্টার্স কিপ রিপোর্টিং অন ভেনেজুয়েলা

কোলাবোরেশন হেল্প স্ট্রেনদেন জার্নালিজম ইন ভেনেজুয়েলা

হাও টু স্টার্ট আপ এ ফ্যাক্ট-চেকিং গ্রুপ


লরা অলিভার যুক্তরাজ্যভিত্তিক একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তিনি গার্ডিয়ান, বিবিসি, দ্য উইক ও অন্যান্য গণমাধ্যমে লিখেছেন। তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অনলাইন সাংবাদিকতা কোর্সে ভিজিটিং লেকচারার এবং অনেক সংবাদকক্ষের জন্য শ্রোতা কৌশল পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। এখানে আপনি তাঁর কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন।

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

টেকসইতা পদ্ধতি

সাংবাদিকতার প্রভাব পরিমাপ — আমরা নতুন যা জানি

সব সংবাদমাধ্যমই চেষ্টা করে তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরির জন্য। কিন্তু এই প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে একেক ধরনের সূচক। পড়ুন, এ নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন কী জানা গেছে।

কেস স্টাডি সংবাদ ও বিশ্লেষণ

অবরুদ্ধ সাংবাদিকতা: অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ভারত ও হাঙ্গেরির সম্পাদকদের পাঁচ পরামর্শ

গণতন্ত্রের বহিরাবরণের আড়ালে ক্রমেই স্বেচ্ছাচারী ও দমনমূলক হয়ে উঠছে ভারত ও হাঙ্গেরির মতো দেশগুলো, যেখানে ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। এমন পরিবেশে সাংবাদিকেরা কীভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন এবং সংবাদমাধ্যম টিকিয়ে রাখতে পারেন— তা নিয়ে পাঁচটি কার্যকরী পরামর্শ পড়ুন এই লেখায়।

يبحث الفيلم الوثائقي الذي تنتجه هيئة الإذاعة البريطانية "تحت سماء مسمومة" في تأثير حرق حقول النفط العراقية على المجتمعات المجاورة وعلى البيئة. الصورة: لقطة الشاشة، بي بي سي

কেস স্টাডি

ইরাকি জনগোষ্ঠীর ওপর গ্যাস ফ্লেয়ারিংয়ের প্রভাব যেভাবে উঠে এসেছে বিবিসির অনুসন্ধানে 

২০৩০ সালের মধ্যে সব শীর্ষ তেল কোম্পানি ও অনেক দেশ নিয়মিত গ্যাস ফ্লেয়ারিং বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইরাকের মতো দেশগুলোতে এখনও ফ্লেয়ারিং হচ্ছে। এবং এতে পরিবেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। দক্ষিণ ইরাকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর গ্যাস ফ্লেয়ারিংয়ের প্রভাব অনুসন্ধান করেছে বিবিসি আরবি সংস্করণের একটি দল। পড়ুন, কীভাবে হয়েছে এই পুরস্কারজয়ী অনুসন্ধানটি।

কেস স্টাডি

নতুন বা নারাজ সোর্সকে কথা বলাবেন যেভাবে

এমন অনেক কর্মকর্তা, ভুক্তভোগী ও সম্ভাব্য হুইসেলব্লোয়ার সোর্স আছেন যারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারেন, কিন্তু রিপোর্টারেরা তাদের নাগাল পান না। কীভাবে তাদের সন্ধান পেতে পারেন এবং কথা বলতে নারাজ— এমন ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে পারেন, তা নিয়ে কার্যকরী কিছু পরামর্শ পাবেন এই লেখায়।