BBC Newsnight editors put together a dedicated NHS unit with a brief of investigating stories about failures of care. Image: Screenshot, BBC iPlayer
যেভাবে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যসেবা কেলেঙ্কারির স্বরূপ উন্মোচন করেছে বিবিসি নিউজনাইট
প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত নিজস্ব সমস্যা রয়েছে — যেমন প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি, দরিদ্রতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য বৈষম্য, অথবা স্বাস্থ্যখাতে বেসরকারি খাতের উপস্থিতির প্রভাব। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে গড়ে বৈশ্বিক জিডিপির ১১ শতাংশে পৌঁছেছে। কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জগুলোও প্রভাবিত করেছে আমাদের সবাইকে। তাই বিশ্বব্যাপী নিউজরুম ও সাংবাদিকেরা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক অনুসন্ধানের জন্য অসংখ্য ঘটনা খুঁজে পাবেন।
বিবিসি নিউজনাইট, প্রতিদিনকার সংবাদ ও চলতি ঘটনার ওপর আলোকপাত করে। অনুষ্ঠানের সম্পাদকেরা, ২০২২ সালের জুনে কয়েকজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক, একজন সংবাদদাতা, এবং একজন জ্যেষ্ঠ ক্যামেরাম্যানকে নিয়ে ছোট একটি দল গঠন করেন। দলটির কাজ ছিল ইংল্যান্ডের অধিবাসীদের করের টাকায় পরিচালিত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) বিপর্যস্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং রোগী, রোগীর পরিবার ও এনএইচএসের কর্মীদের ওপর তার প্রভাব নিয়ে অনুসন্ধান করা।
আমরা তথ্য খুঁজতে শুরু করার এক মাসের মধ্যে অনুসন্ধানটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি শেষ করতে করতে বছর গড়ায় এবং এই সময়ে আমরা বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আবেদন করি, হাসপাতাল ও জরুরী অ্যাম্বুলেন্স সেবার পেছনে থাকা লোকেদের সঙ্গে কথা বলি, এবং চিকিৎসকদের কাজ সম্পর্কেও খোঁজখবর নিই। অনুসন্ধানটি মেডিকেল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ডের বর্ষসেরা ফিচারসহ বিভিন্ন পুরস্কার জিতেছে।
নিচে বিবিসি নিউজনাইটের জন্য করা আমাদের সাড়া জাগানো এ অনুসন্ধানটির নেপথ্যের কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি।
হাসপাতালের সংস্কৃতি ‘অনেকটা মাফিয়া’ ধাঁচের
২০২২ সালের ডিসেম্বরে আমরা ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের অন্যতম বৃহৎ— কিন্তু সবচেয়ে বাজে সেবা প্রদানকারী একটি হাসপাতালের ওপর অনুসন্ধান চালাই। একজন হুইসেলব্লোয়ার বিবিসিকে বলেন, হাসপাতালগুলো “অনেকটা মাফিয়া” ধাঁচে চলে, যেখানে কর্মীদের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ রোগীদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে। অন্য একজন হুইসেলব্লোয়ার বলেন, জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের মধ্যে যোগাযোগ ও রোগীদের ‘যত্ন নেওয়ার’ ঘাটতি ছিল। এর মানে, তাদের অভিযোগমতে, কিছু ক্ষেত্রে রোগীরা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরো একজন হুইসেলব্লোয়ার দাবি করেন যে, অসঙ্গতির বিষয়টি নিয়ে যারাই কথা বলেছেন, প্রতিশোধ হিসেবে তাদের নামে দেশটির চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিলের (জিএমসি) কাছে অভিযোগ করা হতো। নার্স সঙ্কটের কারণে অপারেশনে সমস্যা হচ্ছে বলে এই ব্যক্তি ২০১৭ সালে উদ্বেগ জানানোর কয়েকমাসের মধ্যেই তার নামে জিএমসির কাছে অভিযোগ জানানো হয়। একজন বাবার মৃত্যুর পর তার মেয়ে অভিযোগ করেন, শরীরে পচনশীল ক্ষত ছড়িয়ে মৃত্যুর আগে হাসপাতালের কর্মীরা জানতেন যে রোগীকে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হচ্ছে না, কিন্তু হাসপাতালটির কর্ম পরিবেশের কারণে কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে ভয় পেয়েছেন।
নিউজনাইটের এই অনুসন্ধানের জের ধরে হাসপাতালে রোগীর নিরাপত্তা, চিকিৎসা সংস্কৃতি এবং নেতৃত্ব নিয়ে তিনটি বড় ধরনের পর্যালোচনা হয়। আমাদের প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের সময় যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা প্রতিনিধি মন্তব্য করেন, হুইসেলব্লোয়ারদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে অবশ্যই কাজ করতে হবে। রোগীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রথম পর্যালোচনায়, “নিউজনাইটের অনুষ্ঠানে উঠে আসা কিছু উদ্বেগকে সঠিক বলে নিশ্চিত করা হয়।” কর্ম সংস্কৃতি নিয়ে আরেকটি পর্যালোচনায় বলা হয়, সংস্থাটির ৫০ শতাংশেরও বেশি কর্মী হয়রানির শিকার হয়েছেন, তবে রোষানলে পড়ার ভয়ে মুখ খোলেননি।
পরামর্শ
- ডেটা দিয়ে শুরু করুন। অনুসন্ধানের শুরুতে আমরা সরকারি তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে খারাপ সেবা প্রদানকারী হাসপাতালগুলো পরীক্ষা করি এবং বার্মিংহামেই কেন এত ঘটনা ঘটেছে, তা খুঁজতে শুরু করি। এনএইচএস ডিজিটাল সহ বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও থিংক ট্যাঙ্ক যেমন হেলথ ফাউন্ডেশন, নাফিল্ড ট্রাস্ট এবং দ্য কিং’স ফান্ড, ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত ডেটা প্রকাশ করে।
- স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিন: এই অনুসন্ধানী কাজে আমরা বিবিসি মিডল্যান্ডস টুডের একজন সংবাদ প্রতিনিধির সঙ্গে কাজ করেছি, যিনি আমাদের তার পূর্ব পরিচিত সূত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন, এবং বিদ্যমান পরিস্থিতিসহ নেপথ্যের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেন।
- সোর্সদের নিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করুন: এমন অনেক সূত্র রয়েছে যারা আমাদের সঙ্গে অফ দ্য রেকর্ড কথা বলেছেন। এটি আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় তুলে ধরতে সাহায্য করেছে যেগুলোর ওপর আলোকপাত করাটা খুব জরুরি ছিল। এছাড়া আমরা এনএইচএসের কর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছি। তারা ফোয়া অনুরোধের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যগুলো আমাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন। নির্দিষ্ট ডেডলাইন ধরে কাজের সময় এগুলো আমাদের ভীষণ উপকারে লেগেছে।
- প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাকি সূত্রগুলো অনুসরণ করুন: প্রথম রিপোর্ট প্রকাশের পরে কয়েক মাস ধরে আমরা অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গেছি: কারণ আমরা প্রতিটি গল্প থেকে আসা লিড বা সূত্রগুলো অনুসরণ করেছি। অতিরিক্ত তথ্য অনুসরণের জন্য একটি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা এবং অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়াটা অপরিহার্য।
অ্যাম্বুলেন্স থেকে রোগী নামাতে বিলম্ব
এনএইচএসের ভেতরকার ব্যক্তিরা আমাদের প্রথম যে সমস্যাগুলো সম্পর্কে বলেছিলেন তার মধ্যে একটি হল অ্যাম্বুলেন্সে আসা রোগীকে হস্তান্তরে বিলম্ব। যখন একজন রোগী ইংল্যান্ডে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পৌঁছান, এনএইচএসের মানদণ্ড অনুসারে তাদের ১৫ মিনিটের মধ্যে জরুরি বিভাগে পাঠাতে হয়। কর্মীরা আমাদের জানান যে অতিরিক্ত ভিড় ও শয্যার অভাবের কারণে রোগীদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে অনেক বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফলস্বরূপ, প্যারামেডিকেরা গুরুতর অসুস্থ অনেক রোগীকে সেবা দিতে পারেননি।
অপ্রকাশিত ডেটা ব্যবহারের সময় আমরা একমত হই যে, কেবলমাত্র সরেজমিনে গিয়েই আমরা বুঝতে পারব আসলে কত দেরি হচ্ছে এবং সমস্যাটি কতটা ব্যাপক। স্থানীয় সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীরা তাদের ফোন ও একটি ফর্ম হাতে অ্যাম্বুলেন্সের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য ছয়টি হাসপাতালে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কখন এগুলো এসেছে এবং কখন তারা জরুরি বিভাগ থেকে বেরিয়েছে তা টুকে রাখেন।
ফলাফল থেকে স্পষ্ট হয়, দেশজুড়ে রোগী হস্তান্তরে দেরির মাত্রা কতটা ভয়াবহ। আমরা দেখেছি, কিছু অ্যাম্বুলেন্স রোগীর ছাড়পত্র নিতে ১১ ঘন্টা ধরে লাইনে অপেক্ষা করছে। কিছু হাসপাতালে একই সময়ে ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স অপেক্ষা করেছে। কয়েক মাস পরে যখন আমরা পর্যবেক্ষণটি পুনরাবৃত্তি করি, তখন রোগীকে হস্তান্তরের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সকে দীর্ঘ ২১ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্যারামেডিক নিউজনাইটকে বলেন, “আমরা এখন বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। লোকেরা ফোন করছে এবং তাদেরকে বলা হচ্ছে যে তারা ছয় বা নয় ঘন্টার আগে অ্যাম্বুলেন্স পাবেন না।”
পরামর্শ:
- সরেজমিন অনুসন্ধানে সময় দিন: যদি ডেটার অভাব হয়, তাহলে মাঠে নামুন এবং বিশেষ করে সাংবাদিকতার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করুন। আমরা দেখতে পেয়েছি যে, তাদের ধারণ করা ভিডিওগুলো বেশ কার্যকর ছিল, যদিও সেগুলো ফোনে নেওয়া হয়েছে।
- ভেতরের খবর জানা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলুন: নেপথ্যের তথ্যের জন্য সংস্থার ভেতরের বিশস্ত কর্মীদের সঙ্গে অফ দ্য রেকর্ড কথা বলুন। সবার জন্য উন্মুক্ত নয়, এমন অভ্যন্তরীণ ডেটাও তারা সরবরাহ করতে পারে।
- ফোয়া অনুরোধ: ফোয়া অনুরোধ থেকে যতটা সম্ভব অতিরিক্ত ডেটা সংগ্রহ করুন। একটি অনুরোধের কল্যাণে আমরা দেখতে পেয়েছি যে একটি অঞ্চলে অ্যাম্বুলেন্সের দেরির কারণে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় লাফিয়ে বেড়ে এক থেকে ৩৭-এ গিয়ে ঠেকেছে।
- সাংবাদিকদের যথাযথভাবে বুঝিয়ে বলুন: কোনো নির্দিষ্ট স্থানে চিত্রধারণের সময় নিশ্চিত করুন যে, সেখানে কোন বিধিনিষেধ নেই (যেমন, হাসপাতালের মাঠের চেয়ে পাবলিক ফুটপাথ থেকে চিত্রধারণ করাটা সুবিধাজনক)। রোগীর গোপনীয়তা বিষয়ক ঝুঁকির কথা মাথায় রাখুন এবং অবস্থান ত্যাগ করতে বলা হলে কী করণীয়, তা সাংবাদিকদের যথাযথভাবে বুঝিয়ে বলুন।
সুবিধাবঞ্চিত এলাকাগুলোতে চিকিৎসকদের উপস্থিতি
আমাদের নিজস্ব ডেটা এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পৃথক ডেটাসেট বিশ্লেষণ করে আমরা দেখতে পেয়েছি, একেকটি এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভেদে সাধারণ চিকিৎসক (জিপি) নিয়োগে বড় ধরনের বৈষম্য ছিল। দরিদ্র এলাকাগুলোতে মাথাপিছু জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসকদের সংখ্যা কম ছিল। নিয়োগের ক্ষেত্রে অবস্থাপন্নদের তুলনায় অন্যদের অভিজ্ঞতা বাজে ছিল।
আমাদের বিশ্লেষণের জন্য, আমরা জিপি পেশেন্ট সার্ভের (রোগীর অভিজ্ঞতা সমীক্ষা যা ইংল্যান্ডের দুই মিলিয়নেরও বেশি লোকের কাছে পাঠানো হয়) সঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত এলাকার জাতীয় সার্বজনীন ডেটা মিলিয়ে দেখি। এক্ষেত্রে আমরা প্রধান তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেখার সিদ্ধান্ত নিই: সামগ্রিক অভিজ্ঞতা, ফোনে চিকিৎসকদের (জিপি) সঙ্গে যোগাযোগ করা কতটা সহজ ছিল এবং সাক্ষাতের জন্য সময় নেওয়াটা কঠিন ছিল কিনা। আমরা দেখতে পাই, দারিদ্র্যপীড়িত বা সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় বসবাস করেন এমন বাসিন্দারা এক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট ছিলেন।
কেমব্রিজ গবেষকরা একটি ইন্টারেক্টিভ ড্যাশবোর্ড তৈরি করেন, যেটি চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা প্রাপ্তির আঞ্চলিক বৈষম্যগুলো তুলে ধরে। এটি দরিদ্রতম অঞ্চলের ১০,০০০ রোগীর বিপরীতে প্রতিজন চিকিৎসকের সেবা প্রদানের হার বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এলাকাগুলোতে চিকিৎসকদের সংখ্যা কমেছে, এবং সমৃদ্ধ এলাকাগুলোতে বেড়েছে। আমরা দেশের অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল ব্ল্যাকপুলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলি— তারা জানান, চিকিৎসকদের ঘাটতির কারণে শিশু চিকিৎসায় অযোগ্য তরুণ কর্মীদের শরণাপন্ন হতে তারা বাধ্য হয়েছেন।
পরামর্শ:
- শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা নিন: দুর্বোধ্য ডেটা কিংবা যেগুলো নিয়ে এরইমধ্যে শিক্ষাবিদেরা কাজ করেছেন, এমন ডেটা নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা নিন বা তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করুন। সেক্ষেত্রে আপনার দলের সম্পূর্ণ নতুন ডেটা প্রাপ্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে।
- কেস স্টাডি হিসেবে ছোট এলাকার ওপর কাজ করুন: আমরা যেমন যুক্তরাজ্যের অন্যতম দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল ব্ল্যাকপুলকে বেছে নিয়েছি। আমার জানতাম এখানে যারা বাসবাস করছেন তারা অনেক বেশি জটিল ও গভীর স্বাস্থ্যগত সমস্যায় আক্রান্ত (যেমন গর্ভাবস্থায় ধূমপানের উচ্চ হার)— এটিকে আমরা কেসস্টাডি হিসেবে ব্যবহার করেছি। চিকিৎসক, রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাদের নিশ্চিত করেন ডেটাতে আমরা যে সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করেছি তারাও তা মোকাবেলা করেছেন।
- তত্ত্বগত ধারণা নির্মাণ করুন: তথাকথিত “ইনভার্স কেয়ার ল”— যেখানে “সামাজিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত লোকেরা প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কম ও নিম্নমানের স্বাস্থ্যসেবা পায়“— কয়েক দশক ধরে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু আমরা এ তত্ত্বগত ধারণা নিয়ে অগ্রসর হই যে, গত কয়েক বছর ধরে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ব্যবধান অনেক বেশি বেড়েছে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের পাশাপাশি মানুষের দরজায় কড়া নাড়ুন: আমরা এমন রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি যারা চিকিৎসকদের কাজ নিয়ে গুগলে রিভিউ দিয়েছেন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে আলোচনা করেছেন, কিন্তু ব্ল্যাকপুলের স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখ থেকে তা শোনার জন্য আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়েও কথা বলেছি। ডিজিটাল স্বাক্ষরতা জ্ঞান ও তা ব্যবহারের সীমিত সুযোগ রয়েছে এমন লোকেদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ আমাদের ডেটার বৈচিত্র্যতা বাড়িয়েছে।
এমিলি ও‘সুলিভান জিআইজেএনের সম্পাদকীয় বিভাগের সহকারী হিসেবে কর্মরত। তিনি বিবিসি প্যানোরামার জন্য অনুসন্ধানী গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে বিবিসি নিউজনাইটের এনএইচএস ইউনিটের একজন সহকারী প্রযোজক। তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর এমএ করেছেন।
শার্লট রোলস বিবিসি নিউজনাইটের একজন প্রযোজক। তিনি বিবিসি প্যানোরামা এবং চ্যানেল ফোর ডিসপ্যাচসের হয়ে বিভিন্ন অনুসন্ধানী কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে জটিল অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির জন্য মেডিকেল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার পেয়েছেন।
শন ক্লেয়ার নিউজনাইটের জ্যেষ্ঠ অনুসন্ধানী প্রযোজক। পাশাপাশি তিনি একজন পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সাংবাদিক। এনএইচএসের ওপর করা তার কাজ রয়্যাল টেলিভিশন সোসাইটি কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। বিবিসিতে তিনি বিভিন্ন প্রযোজনা ও রিপোর্টিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।