প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

ফ্রান্সের সাংবাদিকতা জগত কাঁপিয়ে দিয়েছে যে ছোট অনুসন্ধানী দল

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

ছবি কৃতজ্ঞতা: ডিসক্লোজ

ফ্রান্সের অনুসন্ধানী গণমাধ্যম ডিসক্লোজের সহপ্রতিষ্ঠাতা জিওফ্রে লিভোলজি। তার বর্ণনায়, প্রতিষ্ঠানটির জন্য ২০২০ সাল ছিল “প্রায় হারিয়ে যাওয়া একটি বছর।” যে দলটি ২০১৯ সালে সৌখিন খেলার জগতে শিশু নিপীড়ন এবং ইয়েমেন যুদ্ধে ফ্রান্সে তৈরি অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারের মতো বড় বড় অনুসন্ধান করে সাড়া ফেলে দিয়েছিল, তারাই গোটা ২০২০ সাল বলতে গেলে বসে কাটিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে।

মহামারির গোড়ার দিকে গোটা ইউরোপ মহাদেশে সবচেয়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয় ফ্রান্সে। তখন থেকেই নিজেদের সব অনুসন্ধান স্থগিত রাখতে বাধ্য হয় ডিসক্লোজ। চলাচলের ওপর কড়া বিধিনিষেধ থাকায় একদিকে রিপোর্টাররা মাঠে যেতে পারছিলেন না, আর অন্যদিকে তাদের সোর্সরাও সাড়া দিচ্ছিলেন না। 

তাই বলে যে ডিসক্লোজের কর্মস্পৃহা হারিয়ে গেছে, এমন নয়। লকডাউনের সময়টাতে তারা ধারাবাহিকভাবে নিউজলেটার প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। সেই নিউজলেটারে পাঠকদের শেখানো হত, তারা নিজেরাই কিভাবে অনুসন্ধান শুরু করতে পারেন। ভুয়া তথ্য যাচাই থেকে শুরু করে গুগল রিভার্স-ইমেজ সার্চের মতো টুলের ব্যবহার, এমনকি পাবলিক ডেটাবেস ঘেঁটে তথ্য বের করার মতো বিভিন্ন কৌশল তুলে ধরা হতো সেখানে। 

ডিসক্লোজ অবশ্য এমনটা করতে পেরেছে, অনেকটা পাঠক-নির্ভর সাংগঠনিক মডেলের কারণে, যা ফরাসি সংবাদ জগতে সচরাচর দেখা যায় না। এই মডেলে পাঠকরা শুধু গণমাধ্যমটির সদস্যই হন না, অনুসন্ধানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মতামতও দিতে পারেন। ডিসক্লোজের সাংবাদিকরা কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন, তার পেছনের গল্প জানারও সুযোগ পান। 

এই অভিনব কাঠামোর কারণেই হয়তো ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে ডিসক্লোজকে “আধো এনজিও, আধো গণমাধ্যম,” অর্থ্যাৎ, এই দুইয়ের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন লিভোলজি।

২০১৮ সালে আরেক সাংবাদিক মাতিয়াস দেস্তালকে সঙ্গে নিয়ে ডিসক্লোজ প্রতিষ্ঠা করেন লিভোলজি। তাদের লক্ষ্য ছিল দু’টি। প্রথমত, বড় অনুসন্ধানের জন্য কর্পোরেট হস্তক্ষেপমুক্ত অর্থায়ন জোগাড়, এবং দ্বিতীয়ত, কনটেন্টগুলো সবাইকে বিনাপয়সায় পড়ার সুযোগ করে দেওয়া। 

ফ্রান্সে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। ২০২০ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে দেশটির অবস্থান ছিল ৩৪। কিন্তু এমন রিপোর্টিং সবার জন্য উন্মুক্ত অবস্থায় রাখার চল নেই সেখানে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে চলা অনুসন্ধানী সাপ্তাহিক, লে ক্যানা অশেনি (Le Canard Enchaîné) বা তুলনামূলক নতুন আসা মিডিয়াপার্ট – সবাই পে-ওয়ালের আড়ালে। ঠিক যেমনটি আছে অন্যান্য আরো অনেক সংবাদপত্র। 

লিভোলজি বলেছেন, “আজকের দিনে, আমরা রেডিও, ইন্টারনেট ও টিভির কল্যাণে অনেক সংবাদ পাই বিনামূল্যে। কিন্তু, দীর্ঘ সময় ধরে করা ভালো অনুসন্ধানগুলো বেশি পরিচালনা করে সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো। ফলে অনেক ভালোমানের তথ্য বিনামূল্যে পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় সাধারণ জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ।” 

অনুসন্ধানের স্বাধীনতা

ডিসক্লোজের দুই প্রতিষ্ঠাতা মাতিয়াস দেস্তাল (বামে) এবং জিওফ্রে লিভোলজি। ছবি কৃতজ্ঞতা: ডিসক্লোজ

ডিসক্লোজ প্রতিষ্ঠার আগে, লিভোলজি কাজ করতেন একটি কর্পোরেট মালিকানাধীন গণমাধ্যমে। স্বার্থের সংঘাত কাকে বলে, সেখানে তিনি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। তিনি তখন কাজ করছিলেন বড় একটি ফরাসী ব্যাংক নিয়ে। কিন্তু তার অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রটি শেষ পর্যন্ত আটকে দেন, সেই মিডিয়া সাম্রাজ্যের কর্তাব্যক্তিরা। এধরনের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য তিনি বেছে নেন অলাভজনক সংবাদমাধ্যমের মডেল।

ডিসক্লোজের জন্য প্রাথমিক টাকা যোগাড় শুরু হয় ২০১৮ সালে। সময়টা ছিল উত্তপ্ত, প্রতিষ্ঠানগুলো ভুগছিল আস্থার সংকটে, ফ্রান্সজুড়ে চলছিল তথাকথিত ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন। জ্বালানির ওপর কর আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে ফুঁসে ওঠা মানুষ ক্রমেই চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করেছিল প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নীতি ও কর্তৃত্বকে। সাধারণের অভিযোগ ছিল, ফ্রান্সের প্রথাগত গণমাধ্যমগুলো ম্যাক্রোঁর এজেন্ডার সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। আর এ কারণে বিক্ষোভের জায়গাগুলোতে সাংবাদিকরা গালি ও দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছিলেন, এমনকি কোথাও কোথাও মারও খাচ্ছিলেন। 

লিভোলজি বলেছেন, “আমাদের পুরো প্রচারণাটি চলেছে এমন এক পরিস্থিতিতে, যেখানে মূলধারার সংবাদমাধ্যম নিয়ে মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস ছিল। রাজনীতি ও সাংবাদিকতার অভিজাতদের প্রতি মানুষের সত্যিকারের ক্ষোভ ছিল।”

আর মোহভঙ্গ হওয়া এই মানুষদের অনেকেই আকৃষ্ট হয়েছিলেন ডিসক্লোজের দিকে। মিডিয়া জগতের দুইটি তুলনামূলক অনিশ্চিত বিষয়কে আশ্রয় করে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল। বড় সংবাদমাধ্যমের বাইরে নতুন ধারার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। এবং তার টাকা যোগাবে জনগণ।

প্রথম ইয়েলো ভেস্ট বিক্ষোভ নিয়ে, ২০২০ সালে, অর্থ্যাৎ ঘটনার দুই বছর পর  একটি অনুসন্ধান প্রকাশ করে ডিসক্লোজ। সেখানে দেখানো হয়: দক্ষিণের উপকূলীয় শহর মার্সেইয়ে, টিয়ার শেলের আঘাতে ৮০ বছরের বৃদ্ধ জিনেব রিদুয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় আসলে পুলিশই দায়ী।

হামলার মুহূর্তটি নতুন করে তৈরি করার জন্য একটি অনুসন্ধানী জোট গড়ে তুলেছিল ডিসক্লোজ ও ফরেনসিক আর্কিটেকচার। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি থ্রিডি ম্যাপিংয়ের মতো আধুনিক কৌশল ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে। তাদের অনুসন্ধান থেকে বেরিয়ে আসে: যে পুলিশ কর্মকর্তা টিয়ার শেলটি ছুঁড়েছেন এবং তিনি যার অধীনে কাজ করেন – দুজনই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। কারণ, সুরক্ষা নিশ্চিত করে লঞ্চার থেকে টিয়ার শেল ছোঁড়ার মতো পরিবেশ সেখানে ছিল না। কিন্তু পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বলা হয়েছিল, তাদের কোনো দোষ নেই।

ডিসক্লোজে, ব্যক্তি পাঠকদের কাছ থেকে আসা অর্থায়নের পরিমাণ সময়ের সাথে সাথে কমেছে। ২০১৮ সালে, তারা ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ৮২ হাজার ইউরো (প্রায় এক লাখ ডলার) সংগ্রহ করেছিল। ২০১৯ সালে, প্রতিষ্ঠানটির মোট বাজেটের ৪৯ শতাংশই এসেছিল এখান থেকে। বাকিটা এসেছিল ছোট ছোট অনুদান ও ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন থেকে।

বর্তমানে, সাইটটিতে ২,৭০০জন সদস্য আছেন, যারা নিয়মিত চাঁদা দেন। তারপরও ডিসক্লোজের মোট বাজেটের ৭২ শতাংশ আসছে জনহিতৈষী প্রতিষ্ঠানের অনুদান থেকে। লিভোলজি জানিয়েছেন, তারা এখন ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন ও যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক রেভা অ্যান্ড ডেভিড লোগান ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পাচ্ছেন। ২০২১ সালের জন্য তাদের অস্থায়ী বাজেট দাঁড়িয়েছে ৫১৭,০০০ ইউরোতে (প্রায় ৬২৭,০০০ ডলার)।

“পাঠকদের জন্যই আমরা টিকে আছি। কিন্তু এখন আমাদের বেশিরভাগ অর্থায়নই আসছে বিভিন্ন ফাউন্ডেশন থেকে,” বলেছেন লিভোলসি।

ফ্রান্সে দুইটি উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা পায় ডিসক্লোজ: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফ্রান্সউন মনডে পার তোউস ফাউন্ডেশন। ফ্রান্সে অবশ্য এ ধরনের অনুদান-নির্ভর মডেল এখনো খুব বিরল। একারণে অলাভজনক সংবাদমাধ্যম পরিচালনা করা বেশ কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন লিভোলসি। ডিসক্লোজ এভাবে সংগঠন পরিচালনার অনুপ্রেরণা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রোপাবলিকা, যুক্তরাজ্যের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম, ও জার্মানির কারেক্টিভ থেকে। দেশগুলোতে মিডিয়ার জন্য ফাউন্ডেশনের অনুদান গ্রহণ বেশ প্রতিষ্ঠিত একটি ব্যাপার। 

ডিসেক্লোজের নিয়মিত কর্মী মাত্র পাঁচজন। লিভোলজি, দেস্তাল এবং প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য আরো তিনজন। ১৩ সদস্যের একটি সম্পাদকীয় কমিটি অনুসন্ধানের বিষয় নির্বাচন করে এবং প্রতিটি অনুসন্ধানের জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে। গত বছরের অক্টোবরে জিআইজেএন-এর সদস্য হয়েছে ডিসক্লোজ।

যৌন নিপীড়নের অনুসন্ধান

ছবি কৃতজ্ঞতা: ডিসক্লোজ

ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা ছিল ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ডাফনি গ্যাস্টালডির। তাই ডিসক্লোজ তাকে নিয়োগ দিয়েছিল, অ্যামেচার স্পোর্টস বা সৌখিন ক্রীড়ায় একই ধরনের অপরাধের ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য। গ্যাস্টালডি বলেছেন, চার্চে অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি যে ধরনের বিষয় খেয়াল করেছিলেন, ফ্রান্সের স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনগুলোর ক্ষেত্রেও ঠিক একই বিষয় দেখা গেছে: এখানেও নিপীড়নের ব্যাপারে নিরব থাকার চল আছে, সব জায়গা নিপীড়নকারীরাই নিয়ন্ত্রণ করছে, ভুক্তভোগীদের চুপ করিয়ে রাখার পদ্ধতিও একই, এবং নিপীড়নকারীদের ক্যারিয়ার আরো দীর্ঘায়িত হয়েছে।

আট মাসের অনুসন্ধানের পর, গ্যাস্টালডি ও তাঁর রিপোর্টিং সঙ্গী ম্যাথু মার্টিনেয়ার (ডিসক্লোজের সম্পাদকীয় কমিটির সদস্য) এমন ২৭৬ জনকে খুঁজে পেয়েছিলেন যারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। এদের বেশিরভাগেরই বয়স ছিল ১৫ বছরের নিচে। ১৯৭০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৮টি ভিন্ন ভিন্ন খেলার ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তাঁরা খুঁজে বের করেন পুরোনো সব সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট ঘেঁটে। অনলাইন, টেলিভিশন ও পডকাস্টের মাধ্যমে অনুসন্ধানটি প্রকাশ করার জন্য ডিসক্লোজ জোট বেঁধেছিল আরো ১০টি ফরাসি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।

ইমপ্যাক্ট দিয়ে সফলতা যাচাই করে এমন একটি সংবাদমাধ্যমের জন্য এই অনুসন্ধানটি ছিল অনেক বড় সাফল্য। “Le Revers de la Médaille” (দ্য আদার সাইড অব দ্য মেডাল বা পদকের ওপিঠ) শিরোনামের অনুসন্ধানটি প্রকাশিত হওয়ার পর, ফ্রান্সের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ দল গঠন করে, যারা ৩০০-রও বেশি অপরাধ নিয়ে তদন্ত করেছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো ক্রমাগত ফলোআপ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল এই তদন্ত কর্মকর্তাদের, যেন নিপীড়নকারী কোনো ব্যক্তি চুপিসারে অন্য কোনো দেশে চলে যেতে না পারে।

সম্পাদকীয় মানদণ্ড ও প্রতিবেদনের প্রতি সাংগঠনিক দায়বদ্ধতার মতো বিষয়গুলোর বিচারে ডিসক্লোজের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের মতোই, বলেছেন গ্যাস্টালডি। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো: অনুসন্ধানের গোটা সময়জুড়ে নিয়মিত বেতন দেয় ডিসক্লোজ।

তিনি বলেছেন, “ফ্রান্সের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এমনটি দেখা যায় না। সেখানে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরই কেবল আমরা টাকা পাই।”

অন্যদিকে লিভোলজির জন্য ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কাজ করার একটি সুবিধা হলো: এখানে যে কোনো সময় গ্যাস্টালডি ও মার্টিনেয়ারের মতো বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগানো যায়। “এভাবে আমরা প্রতিটি অনুসন্ধানের জন্য সম্ভাব্য সেরা দলটি তৈরি করি”, বলেছেন লিভোলজি। আর অর্থ সাশ্রয় তো আছেই।

পাঠক বাড়ানোর জন্য ফ্রান্স এবং ফ্রান্সের বাইরের সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে নিয়মিত জোট বাঁধে ডিসক্লোজ। এখন পর্যন্ত, তারা কাজ করেছে দ্য ইন্টারসেপ্ট, বেলিংক্যাট, লাইটহাউজ রিপোর্টসদ্য গার্ডিয়ানের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। এবং ফ্রান্সের ভেতরে তাদের জোট ছিল ফ্রান্স ২, আরটে, ব্রুট ও মিডিয়াপার্টের সঙ্গে। ডিসক্লোজ তাদের ওয়েবসাইটে পাঠকদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে না। তবে লিভোলজি অনুমান করছেন, এ ধরনের পার্টনারশিপের কারণে একেকটি অনুসন্ধান সাধারণত ১০ লাখেরও বেশি পাঠক-দর্শকের কাছে পৌঁছায়। 

আরো বেশি প্রভাব তৈরি এবং আন্তর্জাতিক অনুদান আকৃষ্ট করার জন্য, ফরাসী ও ইংরেজি, দুই ভাষাতেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডিসক্লোজ।

২০২০ সালের বাধা কাটিয়ে, এখন ২০২১ সালের জন্য বড় কিছু অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করছে ডিসক্লোজ। লিভোলজি জানিয়েছেন, এবছর তারা অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। এবং আশা করছেন, প্রতি দুই মাসেই তাঁরা একটি করে নতুন অনুসন্ধান প্রকাশ করতে পারবেন। এগুলো প্রকাশিত হবে পডকাস্ট, তথ্যচিত্র, গ্রাফিক নভেলের মতো বিভিন্ন ফরম্যাটে। অনুসন্ধানের বিষয় হিসেবে তাঁরা এবছর বেছে নিয়েছেন সরকারী নজরদারি, অ্যামাজনে বন ধ্বংস এবং খাদ্য শিল্প। 

এবং মহামারির ইতি ঘটেনি বলে, ২০২১ সালেও তাঁরা ব্যাপকভাবে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে মনোযোগ দেবেন।

আরো পড়ুন

যৌন সহিংসতা যাদের হাত ধরে হয়ে উঠেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নতুন ধারা

যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন নিয়ে অনুসন্ধান

হাউ #মিটু চায়না ইন্সপায়ার্ড আ ইউজার-জেনারেটেড মডেল অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম


মেগান ক্লিমেন্ট একজন সাংবাদিক ও সম্পাদক। তিনি জেন্ডারমানবাধিকারআন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক নীতিতে বিশেষজ্ঞ। তার লেখালেখির আরেক বিষয় প্যারিস নগরীযেখানে তিনি ২০১৫ সাল থেকে রয়েছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

সদস্য প্রোফাইল

আমি যা শিখেছি: দ্য ক্যারাভানের বিনোদ কে. যোশির শিক্ষা ও পরামর্শ

বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে নতুন একটি ধারাবাহিক শুরু করেছে জিআইজেএন। ’১০ প্রশ্ন’ শীর্ষক এই ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে আছে ভারতের প্রথম সারির লং-ফর্ম সাংবাদিকতা সাময়িকী, দ্য ক্যারাভানের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সম্পাদক বিনোদ কে. যোশির সাক্ষাৎকার। এখানে তিনি জানিয়েছেন তাঁদের অনুসন্ধান, এর প্রভাব, ভুলভ্রান্তি ও চ্যালেঞ্জগুলোর কথা। এবং দিয়েছেন কিছু শিক্ষণীয় পরামর্শ।

সদস্য প্রোফাইল

আফ্রিকা থেকে: পরিবেশ নিয়ে অনুসন্ধানে যেভাবে শক্তি যোগাচ্ছে জিও-জার্নালিজম

অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম হিসেবে, অক্সপেকার্স সব সময়ই মনোযোগ দিয়েছে ডেটা বিশ্লেষণে। এর সাথে অ্যানিমেটেড ম্যাপ ও ইনফোগ্রাফিক্সের মতো ইন্টারঅ্যাকটিভ ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন টুল ব্যবহার করে তারা খুবই আকর্ষণীয়ভাবে বর্ণনা করে: কিভাবে দূষণ হয়, পানির স্তর নিচে নেমে যায় এবং এর জন্য কারা কিভাবে দায়ী। জিও-জার্নালিজমের এই ধারা তাদের পরিবেশগত অনুসন্ধানকে আরো শক্তিশালী করেছে।

সদস্য প্রোফাইল

মুক্ত সাংবাদিকতার তিউনিসিয় মডেল ইনকিফাদা

তারা কোনো সরকারি বা বেসরকারি কোম্পানির বিজ্ঞাপন নেন না। দেশি-বিদেশী দাতাদেরও খুব একটা পরোয়া করেন না। বিজ্ঞাপণ ও অনুদানের কথা ভাবতে হয় না বলে, তারা সাংবাদিকতাও করতে পারেন কোনোরকম চাপের কাছে নতি স্বীকার না করেই। তাহলে আয় কোথা থেকে আসে ইনকিফাদার? কেমন তাদের মুক্ত সাংবাদিকতার মডেল? যদি জানতে চান আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে, এই লেখা।

সদস্য প্রোফাইল

টাকার গন্ধ শুঁকে সংঘবদ্ধ অপরাধ খুঁজে বের করে যে চেক অনুসন্ধানী দল 

নিজ দেশ থেকে টাকা পাচার করে, চেক প্রজাতন্ত্রে এসে জমি কিনে কিনে রীতিমত জমিদার বনে গিয়েছিলেন মেসিডোনিয়ার এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। সেই গোয়েন্দা জমিদারের কাহিনী ফাঁস করে দিয়েছিল চেক সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (সিসিআইজে)। তাদের বিশেষত্বই হচ্ছে টাকার গন্ধ খুঁজে খুঁজে মাফিয়া গোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের স্বরুপ উন্মোচন করা। সীমিত লোকবল আর টাকার টানাটানির মধ্যেও কিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অনুসন্ধানী দলটি, তারই বিস্তারিত এই লেখায়।