৮ অনুসন্ধানী সাংবাদিকের প্রিয় রিপোর্টিং টুল
অনুসন্ধানে সহায়ক ওপেন সোর্স টুল সনাক্ত করার জন্য রিপোর্টারদের হাতে বেশ কিছু উপায় আছে।
একটি সহজ উপায় হল, বিশ্বব্যাপী প্রাসঙ্গিক ডিজিটাল টুলগুলোর মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নেওয়া, যেগুলোর ওপর সাংবাদিকদের আস্থা আছে।
যেমন:
- নিরাপদ যোগাযোগের জন্য: সিগন্যাল, প্রোটনমেইল ও ভেরাক্রিপ্ট।
- ডেটা এক্সট্রাকশনের জন্য: গুগল পিনপয়েন্ট, টেসের্যাক্ট, ও গুগল শিট।
- ভিজ্যুয়াল ফরেনসিকের জন্য: গুগল আর্থ প্রো, টুইটডেক, ও ইউটিউব ডিএল।
- সামাজিক মাধ্যম বিশ্লেষণের জন্য: উইভেরিফাই টুইটার এসএনএ, নোড এক্সএল, ও ক্রাউডট্যাঙ্গল।
নির্দিষ্ট বিষয় বা ফাংশনের জন্য টুল খোঁজার আরেকটি উপায় হলো ওপেন সোর্স অ্যাপের বড় কোনো ড্যাশবোর্ডে ক্যাটাগরি অনুযায়ী টুল ব্রাউজ করা – যেমন, বিবিসি আফ্রিকা আই ফরেনসিক ড্যাশবোর্ড, মার্ক ক্রানাট ওসিন্ট ড্যাশবোর্ড, বা ক্রেইগ সিলভারম্যানের ভেরিফিকেশন হ্যান্ডবুক।
আর আপনার যদি নতুন কোনো কৌশল সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দরকার হয় এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে তাদের ব্যবহার সম্পর্কে জানার প্রয়োজন হয়, তাহলে আরেকটি ভালো বিকল্প হলো: জিআইজেএনের টিপস ও টুলস লাইব্রেরি এবং জিআইজেএন টুলবক্স সিরিজে খোঁজ করা।
তবে রিপোর্টারেরা কাজ করতে করতে প্রায়ই বিভিন্ন টুলের মুখোমুখি হন; সেই টুলটি হয়তো নতুন বা আগে থেকেই সুপরিচিত, অথবা অন্য কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য তৈরি। যা-ই হোক না কেন, টুলগুলো যখন প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যায়, তখন সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্টারদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেয়।
জিআইজেএন, বিভিন্ন দেশের আট অনুসন্ধানী সাংবাদিকের কাছে জানতে চেয়েছিল: এবছর তাদের কাছে কোন কোন ওপেন সোর্স রিসোর্সগুলো সবচেয়ে উপকারী বলে মনে হয়েছে বা তারা অনেক বেশি ব্যবহার করেছেন।
মালিনা ম্যাকলিনান ও নিমরা শাহিদ — গ্লোবাল উইটনেসের অনুসন্ধানী সাংবাদিক
ম্যাকলিনান: “নতুন সূত্রের সন্ধান ও পর্যালোচনার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের ডেটাসেট তৈরি করতে ইদানিং আমি ফোরক্যাট সোশ্যাল মিডিয়া ডেটা ক্যাপচার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছি ৷ এছাড়া আমি ভিজ্যুয়ালপিংও ব্যবহার করি, যেটি নির্দিষ্ট কোনো ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা হলে আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা পাঠায়। আপনার কাজ সংশ্লিষ্ট যে ওয়েবসাইটগুলো মাঝেমধ্যে হালনাগাদ করা হয় এবং প্রতিদিন সেগুলোতে একবার করে ঢুঁ দেওয়ার দরকার নেই– এমন ক্ষেত্রে এই অ্যাপ বেশ কাজের।”
তিনি যোগ করেন: “এটি প্রশ্নটির সঙ্গে প্রতারণা করা বলেই মনে হবে, কিন্তু দক্ষতা বাড়াতে গিয়ে এখন পর্যন্ত আমি সবচেয়ে মজা পেয়েছি যে টুলটিতে, তা হলো: জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম কিউজিআইএস। আমি এখানে দেখার চেষ্টা করছি, আমাদের সংগঠনের পরবর্তী অনুসন্ধানগুলোর জন্য জিওস্পেশাল ডেটা ফাইল তৈরি করব কীভাবে।
কর্পোরেট ওয়েবসাইটের জন্য রিপোর্টারদের আরেকটি প্রিয় মনিটরিং টুল হলো ট্র্যাকলি, যা বিনামূল্যে সীমিত সংখ্যক ইউআরএল মনিটরের সুযোগ দেয় এবং বিনিয়োগকারীদের সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট পেজগুলো বা বাধ্যতামূলক ডিসক্লোজার পেজগুলোতে কোনো পরিবর্তন আনা হলে সতর্ক বার্তা দেয়। কোম্পানিগুলো আশা করে যে, এসব পেজের পরিবর্তন কেউ খেয়াল করবে না।
শাহিদ: “এই মুহুর্তে অনুসন্ধানের জন্য আমার প্রায় সবসময় ব্যবহার করতে হয় রিফিনিটিভ এইকন,” বলেন শাহিদ। এইকন একটি রিয়েল-টাইম ফাইনান্সিয়াল ডেটা ও বিশ্লেষণ পোর্টাল, যা ব্যবহারের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্রাহক ফি দিতে হয়। প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ মার্কিন ডলার। “বন উজাড় ও বড় কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে যোগসূত্র বুঝতে, টাকার খোঁজ করার ক্ষেত্রে এই টুল অমূল্য। কারণ বড় কর্পোরেশনগুলো তাদের লেনদেনের তথ্য সবসময় সহজে ও প্রকাশ্যে উন্মোচন করে না। পৃথকভাবে, রিফিনিটিভের পণ্য সংক্রান্ত বিশদ ডেটা জীবাশ্ম জ্বালানি সংক্রান্ত সরবরাহ চেইন অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দারুন উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে।”
অ্যাক্সেল গর্ড হামলেখো — সুইডেনের সরকারি প্রচারমাধ্যম এসভিটি-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
“আরেকটি ওপেন সোর্স ডেটাবেস হলো কোম্পানিজ হাউস ইউকে, যা নিয়ে রিপোর্টারেরা খুব বেশি কথা বলেন না বা তেমন একটা ব্যবহার করেন না,” বলেছেন হামলেখো। “অর্থ পাচার সংশ্লিষ্ট আমাদের সব অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, অনেক বছর ধরে, অফশোর ট্যাক্স হেভেন দ্বীপগুলোতে রাখা গোপন অর্থ বা সম্পদের জন্য শেল কোম্পানি খুঁজে পেতে যুক্তরাজ্যই ছিল অনেকের প্রথম পছন্দ। কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ বা বাহামার মতো আপাতদৃষ্টিতে সম্মানজনক জায়গায় অবস্থিত সন্দেহজনক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে লন্ডনের এই এলএলপি কোম্পানিগুলো।”
তিনি আরও বলেন: “একটি প্রতিষ্ঠান আসল না নকল– তা যাচাইয়ের জন্য মৌলিক নথিপত্র পাওয়ার কথা চিন্তা করলে কোম্পানিজ হাউস অবিশ্বাস্য রকমের সহজ ও কাজের। বিনামূল্যেই এটি ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি সন্দেহজনক কোনো এলএলপি মালিকের খোঁজ পান, তাহলে সেই নাম দিয়ে ডেটাবেসে সার্চ করুন। সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবেন নির্দিষ্ট সেই ব্যক্তির মালিকানাধীন সব কোম্পানির নাম। এছাড়াও, আছে মেরিন ট্রাফিক। এটি বেশ সুপরিচিত একটি টুল, তবে বিভিন্ন জিনিস ট্র্যাক করার জন্য এটি এক কথায় দুর্দান্ত। মধ্য আমেরিকায় খনি নিয়ে প্রতিবেদনসহ বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এটি আমাদের কাজে এসেছে।”
ডেভিড ম্যাকসোয়েইন – প্রোপাবলিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
“যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্য বের করার জন্য আমি হায়ারচুয়াল ব্যবহার করি (এটি হায়ারএজ নামেও পরিচিত, যা সীমিত পরিসরে বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়)। এই টুলের একটি অ্যাড-অন আছে, যা আপনি ক্রোমে ব্যবহার করতে পারেন,” তিনি ব্যাখ্যা করেন। “আপনি কারো লিঙ্কডইন পেজে গেলে এটি তাদের ব্যক্তিগত ইমেইল, এমনকি কখনও কখনও তাদের ফোন নম্বরও খুঁজে বের করে। বছরখানেক আগেও আমি এই টুলটি সম্পর্কে জানতাম না; লোকজনকে খুঁজে পেতে এটি সত্যিই ভালো উপায়।”
“রেকর্ড নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে আমি ব্যবহার করি ট্যাবলিউ, আর ডকুমেন্টক্লাউড তো দুর্দান্ত,” তিনি যোগ করেন। “সার্চের ক্ষেত্রে, আমি একই সার্চ করি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে। মানুষ ভুলে যায় যে, ভিন্ন ভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে জিনিসগুলোকে ভিন্নভাবে ইনডেক্স করা হয় বলে ফলাফলে ভিন্নতা আসে, তাই মাঝে মাঝে আমি আস্ক জিভস, বা ডাক ডাক গো, বা বিং ব্যবহার করি।”
ম্যাকসোয়ান আরও জানান, জটিল, সাক্ষাৎকার-সমৃদ্ধ, বা ধারাবাহিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সব কিছু গুছিয়ে রাখার জন্য স্ক্রিভেনার অনেক উপকারী হতে পারে। নথিপত্র ব্যবস্থাপনার এই অ্যাপটি সাধারণত বইয়ের লেখকেরা ব্যবহার করেন। এটির একটি এককালীন ফি আছে। টুলটির ইনডেক্সিং ফিচারের মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনা বা সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক গবেষণাগুলো সাজানো যায় “কার্ডের” মাধ্যমে। ফলে রিপোর্টারেরা সহজেই অনুসন্ধানী সিরিজটির উদ্ধৃতি ও তথ্যপ্রমাণগুলো এদিক-সেদিক করতে পারেন।
“আপনি একটি প্রোগ্রামে আছেন, সেখানে সেই সংক্রান্ত অধ্যায়গুলো আপনি সহজে দেখে নিতে পারেন; আমি সোর্স ট্রান্সক্রিপ্টে চোখ বুলাতে পারি আর প্রয়োজনীয় উদ্ধৃতিগুলো নিতে পারি এবং আমি কোনো জিনিস হারিয়েও ফেলব না,” তিনি বলেছেন। “আমি এটিকে লেখার সময় অনেক বিষয় ঘাঁটাঘাটি করার একটি চটজলদি উপায় বলে মনে করি। কিন্তু অন্য শহরের কোনো প্রতিবেদক বা আপনার কাজের খোঁজখবর জানতে আগ্রহী কোনো সম্পাদকের সঙ্গে সঙ্গে কাজ করার সময় স্ক্রিভেনার খুব একটা সাহায্য করতে পারবে না। এটি এমন পরিস্থিতির উপযোগী করে তৈরি করা হয়নি।”
ম্যাকসোয়ান আরও বলেন: “সামাজিক নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণের জন্য আমাদের একটি ভালো ওপেন সোর্স টুল প্রয়োজন। আমি সত্যিই গুগল ফিউশন টেবিলস্-এর অভাব অনুভব করি, যা কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের একটি সহজে আঁটসাট ও সহজবোধ্য টুল ছিল। আপনি সেখানে বলে দিতে পারতেন: ‘এই ব্যক্তি এসব ব্যবসার মালিক এবং অমুক অমুক ব্যক্তির সঙ্গে তার ওঠাবসা,’ এরপর সেটি তাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বানানো শুরু করে দিত।”
মার্থা মেন্ডোজা – অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের পুলিৎজারজয়ী অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
“গত বছর থেকে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমি যে টুলটি ব্যবহার করছি, তা হলো পিজিয়নলি,” বলেন তিনি৷ “এটি একটি স্টার্টআপ প্রোগ্রাম – যার উদ্যোক্তা একজন সাবেক কারাবন্দী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাবন্দীদের অবস্থান সনাক্তকরণের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু আপনাকে আগে জানতে হবে তারা কোন সিস্টেমে আছে। পিজিয়নলির প্রতিষ্ঠাতা এই অ্যাপটি তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে কারাবন্দীদের পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন তাদের প্রিয়জন কোন জায়গায় আছেন। আপনি যদি কোনো ছবি পাঠাতে ও যোগাযোগ করতে চান, তাহলে আপনাকে প্রতি মাসে প্রায় ১১ ডলার গুণতে হবে, তবে ওয়েবসাইটটিতে বিনামূল্যে বন্দীদের অবস্থান জানা যায়, হোক তা কাউন্টিতে, ফেডারেল, বা অন্য যে কোনো জায়গায়। এটি আমার দেখা সেরা। আর আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বন্দী অন্য দেশের কোনো নাগরিকের খোঁজ করেন – সে হোক দিল্লি বা টোকিওর কেউ – তাহলে অ্যাপটিতে শুধু তাদের নাম লিখে সার্চ দিন। নামটি খুব সাধারণ হলে বর্ণ ও বয়স নির্ধারণ করে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি সার্চের পরিধি আরও ছোট করে আনতে পারেন।”
মেন্ডোজা আরও বলেন: “বর্তমানে আমার আরেকটি প্রিয় টুল হল সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক – সিএনএসপ্লাস কোর্টহাউস নিউজের সার্চ ফাংশন। যুক্তরাষ্ট্রে, আমাদের কেন্দ্রীয় আদালত ব্যবস্থার ডেটাবেসের নাম পেসার। তবে আপনি যদি প্রাদেশিক ব্যবস্থার দিকে নজর দেন, তাহলে আপনাকে জানতে হবে মামলাটি কোন আদালতে আছে৷ সিএনএসপ্লাস এখন প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় আদালত থেকে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করছে। আমি যদি সেখাতে ‘এন নাইন্টি ফাইভ’ (মাস্ক) এর মত কিছু একটা লিখে সেখানে সার্চ করি তাহলে এ সংক্রান্ত অনেক অভিযোগ, ফৌজদারি মামলা ও জালিয়াতি সংক্রান্ত মামলার তথ্য পাব। ফলাফলগুলোতে আমি মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ, মামলার নম্বর ও এটি কোন আদালতে আছে, তা জানতে পারব। তারপর আমি সেই আদালতে যেতে পারি বা অনলাইন থেকে নথিগুলো পেতে পারি।”
আনাস্তাসিয়া ভ্যালিভা — দ্য মার্শাল প্রজেক্টের ফেলো; কিরগিজস্তান স্কুল অব ডেটার প্রাক্তন সাংবাদিক
“আমার মনে হয়, এই মুহুর্তে অনেক ডেটা রিপোর্টারের পছন্দের টুল হয়ে উঠেছে ট্যাবুলা,” বলেন ভ্যালিভা। ট্যাবুলা বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য এমন একটি টুল যা পিডিএফ ফরম্যাট থেকে ডেটা টেবিল বের করে আনে এবং আপনার কম্পিউটার স্ক্রিনে টেবিলগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সনাক্ত করতে পারে। “আমাদের ব্যবহার করা অনেক টুলের বিপরীতে, এটি সাংবাদিকদের জন্য, সাংবাদিকদের তৈরি করা টুল। সরকারগুলো এখন টেবিলের পরিবর্তে পিডিএফ-এর মাধ্যমে ডেটা সরবরাহ করে। ফলে কার্যকরী ফরম্যাটে ডেটা পাঠানোর জন্য এজেন্সিগুলোর সঙ্গে লড়াই না করে আপনি এ ধরনের একটি টুল ব্যবহার করতে পারেন। ট্যাবুলা খুব সহজ একটি টুল, আর এটি ব্যবহারের জন্য কোডিং জানার দরকার পড়ে না।”
“আমরা মধ্য এশিয়ার সব দেশের জন্য যে ডেটাবেসটি তৈরি করেছি সেটি আমার প্রিয়। এই অঞ্চল নিয়ে ডেটাবেসের সংখ্যা খুব কম,” তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন। “ওপেনডেটা ডট কেজি নামের এই ডেটাবেসে ২০০টির মতো ডেটাসেট আছে এবং এর পরিধি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সংসদীয় আইনের রেকর্ড; পাবলিক টেন্ডার; স্কুলের পরিস্থিতি — আমরা সব কিছুকে এখানে একসঙ্গে রাখি, এবং সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই এখানে অবদান রাখার জন্য। যে কোনো রিপোর্টার এটি ব্যবহার করতে পারেন এবং এটি সরাসরি ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়।”
রোজা ফার্নো – দ্য ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের অনুসন্ধানী স্বাস্থ্য প্রতিবেদক
“বর্তমানে যে টুলে আমি বুঁদ হয়ে আছি, তা হলো পানজিভা,” বলেন ফার্নো৷ পানজিভা একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত সাপ্লাই চেইন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আট মিলিয়ন কোম্পানির ডেটা ও এক বিলিয়নের বেশি চালানের রেকর্ড আছে। “আমি মেডিকেল সাপ্লাই চেইনের ব্যাপারে খুব আগ্রহী, আর আমি যে স্টোরি নিয়ে কাজ করছি তা পানজিভা ছাড়া সম্ভব হত না। দুর্ভাগ্য যে এটি ব্যয়বহুল। আমি এখনো ইম্পোর্ট জিনিয়াস ব্যবহারের চেষ্টা করিনি।” পানজিভা প্রতি মাসে ৯৯৯ মার্কিন ডলার বা বার্ষিক ১০,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যে যত খুশি তত ব্যবহারের সুযোগ দেয়৷ তবে, রিপোর্টারেরা “site:panjiva.com”-এর পর উদ্ধৃতিচিহ্নের ভেতরে সার্চ টার্ম বসিয়ে আলাদাভাবে পানজিভার বিভিন্ন ডেটা পয়েন্ট খোঁজেরও চেষ্টা করতে পারেন৷
“সাধারণভাবে, আমরা যে ডেটাবেসগুলো চাই সেগুলোর আসলে অস্তিত্বই নেই, তাই আমাদের সেগুলো শুন্য থেকে তৈরি করে নিতে হয়। বা বিদ্যমান ডেটাবেসগুলো থেকে প্রয়োজনীয় ডেটা নিয়ে সেগুলো জোড়া লাগাতে হয়,” তিনি জানান৷ “আমার সর্বশেষ অনুসন্ধানটি ছিল কোভাক্স নিয়ে। এই সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী সাম্যতা বজায় রেখে ভ্যাকসিন বিতরণ করতে চেয়েছিল আর আমার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেশিরভাগ দেশে এমন কোনো কেন্দ্রীয় ডেটাবেস নেই, যেখানে দেখা যায় – কোথায়, কতগুলো ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে৷”
ভ্লাদিমির থোরিক — অনুসন্ধানী গণমাধ্যম রাইজ মল্দোভার রুশ-ভাষা সম্পাদক
এ বছরের শুরুর দিকে, থোরিক বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য তিনটি ফোন সাবস্ক্রাইবার অ্যাপের খোঁজ পান। রুশ সশস্ত্র বাহিনীতে মলদোভার নাগরিকদের অন্তর্ভূক্ত করার অবৈধ চেষ্টায় জড়িত নিয়োগকারীদের সনাক্ত করতে এই অ্যাপগুলো বিশেষভাবে কাজে এসেছে। এই ক্যাম্পেইনে নিয়োগকারীদের ফোন নম্বর সহ রাস্তার বিজ্ঞাপন ও টেলিগ্রাম পোস্ট কাজে লাগানো হয়।
“ক্রেমলিন-অধিকৃত ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলে দালালদের যোগসাজশে রুশ সেনাবাহিনীতে মলদোভার অধিবাসীদের নিয়োগ নিয়ে এই অনুসন্ধানে আমি কিছু দুর্দান্ত টুল ব্যবহার করেছি,” থোরিক ব্যাখ্যা করেন। “এই প্রোগ্রামগুলো ফোন নম্বরের মালিককে সনাক্ত করে – এখানে দেখা যায় যে, এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে অন্য গ্রাহকেরা কীভাবে নম্বরটির মালিকের পরিচয় রেকর্ড করেছিলেন৷ এগুলো বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপ: আইকন, ট্রুকলার ও গেটকানেক্ট৷ বিনামূল্যের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে, রুশ মোবাইল ফোন নম্বরধারী গ্রাহক সনাক্তে গেটকানেক্ট খুবই কার্যকরী৷”
থোরিকের দল আগ্রহী চাকুরীপ্রার্থী হিসেবে নিয়োগকারীর নাম্বারে ফোন করেছে এবং বিভিন্ন টেলিগ্রাম বট ব্যবহার করেছে। এ সংক্রান্ত বর্ণনা পাবেন জিআইজেএনের এই লেখায়।
আপনারও কী শেয়ার করার মতো এমন কোনো প্রিয় বা নতুন রিপোর্টিং টুল বা ডেটাবেস আছে? তাহলে সেটির পরিচয় ও ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের জানান।
আরও পড়ুন
রিপোর্টাররা যেসব অনুসন্ধানী টুল পছন্দ করেন
নাভালনিকে বিষপ্রয়োগে জড়িত গুপ্তচরদের যেভাবে উন্মোচন করেছেন সাংবাদিকরা
৯ ওয়াচডগ রিপোর্টার ও ভুল থেকে তাঁদের শিক্ষা
রোয়ান ফিলিপ জিআইজেএনের প্রতিবেদক। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের ২৪টির বেশি দেশে সংবাদ, রাজনীতি, দুর্নীতি ও সংঘাত নিয়ে রিপোর্ট করেছেন।