As a result of the 2021 drought, there is very little water in the Kings River in California’s San Joaquin Valley. The water that is available is used on crops.
ভালো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখার ৯টি কৌশল
আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:
সেন্টার ফর কোলাবোরেটিভ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (সিসিআইজে)-এর সম্পাদকীয় পরিচালক ইয়াফা ফ্রেডরিক বলেন, নবীন রিপোর্টার হিসেবে তাঁর জীবনে পাওয়া অন্যতম সেরা পরামর্শ ছিল, নিজের ভাষ্যকে কাগজে ঢেলে দেওয়া। কথাটি অবশ্য তাঁকে এতটা কৌশলে বলা হয়নি।
“অনেক বছর আগে আমার একজন জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ছিলেন; তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, আমি নিজের লেখা এত বেশি সম্পাদনা করতাম যে লেখা শুরু করতেই দেরি হয়ে যেত; আর তিনি চেঁচিয়ে বলতেন, “কাগজে ছুঁড়ে দাও, ফ্রেডরিক!” – তিনি স্মৃতি হাতড়ে বলেন।
পানামা পেপারস দলের সদস্য এবং ২০১৭ সালের পুলিৎজার জয়ী ফ্রেডরিক বলেন, কোনো দীর্ঘমেয়াদী অনুসন্ধানী প্রকল্পে প্রথম কয়েকটি অনুচ্ছেদ লেখাটাই একটি বিশেষ সমস্যা হয়ে উঠতে পারে৷ তাঁর মতে, কাগজে কলম ঠেকানো বা কীবোর্ডে আঙুল রাখাটাই মাঝে মাঝে “রিপোর্টিং প্রক্রিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ” হয়ে দাঁড়ায়।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে আপনার মনে হতে পারে আরও অনেক কাজ করার আছে। কিন্তু অন্য রিপোর্টারদের মতই আপনাকেও দিনশেষে স্টোরিটি প্রকাশ করতে হবে এবং তার একটি সময়সীমাও অবশ্যই থাকবে। তাই ফ্রেডরিক তাঁদের রিপোর্টিং ও লিখন-প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তুলে ধরতে লোইস হেনরির সঙ্গে যুক্ত হন, সিসিআইজের ফ্রম নোটবুক টু স্টোরি: প্ল্যানিং অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টিং ইউর রাইটিং অ্যাপ্রোচ (নোটবুক থেকে স্টোরি: আপনার লিখন কৌশলের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন) শীর্ষক ওয়েবিনারে। হেনরি, অনলাইন প্রকাশনা সংস্থা এসজেভি ওয়াটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সম্পাদক। প্রতিষ্ঠানটি ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোয়াকিন ভ্যালির পানি সমস্যা নিয়ে কাজ করে। এই দুই সাংবাদিক তুলে ধরেছেন কীভাবে তাঁরা সম্পাদক ও প্রতিবেদক হিসেবে একসঙ্গে কাজ করেছেন। রাইটার্স ব্লক (এই পরিস্থিতিতে লেখক চিন্তা করতে পারেন না বা কীভাবে লেখা শুরু করবেন, তা বুঝতে পারেন না) নামের দুঃসহ পরিস্থিতির শিকার লেখকদের জন্য তাঁরা কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন। এখানে রইল তাঁদের দেয়া নয়টি পরামর্শ:
১. সাংবাদিকদের রিপোর্টিং ও যৌথকর্মের স্বতন্ত্র ধরনকে সম্মান করুন
ফ্রেডরিক এবং হেনরি, ইনস্টিটিউট অব ননপ্রফিট নিউজের ট্যাপড আউট প্রকল্পের অংশ হিসেবে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে পানির সংকট ও তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অবিচারের সমস্যা নিয়ে দুটি অনুসন্ধানে একসঙ্গে কাজ করেছেন। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় একটি শহর দেবে যাওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করেছে একটি স্টোরি। আর হোয়্যার ইজ দ্য ওয়াটার গোয়িং? শীর্ষক অন্য স্টোরিতে উদঘাটন করা হয়েছে, বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও পানি-সংকট কেন্দ্রিক সংঘাত কীভাবে খরা-কবলিত ক্যালিফোর্নিয়ার জীবন-জীবিকাকে প্রভাবিত করেছে।
এই জুটি বুঝতে পেরেছিল, রিপোর্টারেরা বিভিন্ন রকমের হতে পারে: কেউ কেউ অনেক বেশি কাঠামো ধরে চলেন এবং ভেবেচিন্তে কাজ করেন, আর অন্যদের পরিচালিত করে স্বজ্ঞা ও সৃজনশীলতা। তবে তাঁরা একমত যে উভয় ধরনই কার্যকর হতে পারে।
“ইয়াফা আর আমার কাজের ধারা বেশ আলাদা,” কথাগুলো হেনরির, যিনি এই প্রকল্পের প্রধান প্রতিবেদক, আর ফ্রেডরিক তাঁর প্রধান সম্পাদক৷ “তিনি (ফ্রেডরিক) খুব গোছানো, সুশৃঙ্খল। আমি চলি সহজাত প্রবৃত্তিতে। আমার নিজস্ব এক ধরনের পাগলাটে পদ্ধতি আছে — আমার মস্তিষ্কের ভাবনাগুলো দিগ্বিদিক ছোটে — কিন্তু সেগুলোর শেষ পরিণতি একটি অনুসন্ধান… আপনার কাজের ধারা যাই হোক না কেন, তা দিয়েই চলবে৷ কোনো কৃত্রিম কাঠামোয় নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার প্রয়োজন নেই।”
হেনরি প্রতিটি অনুসন্ধান শুরু করেন একটি বিশদ করণীয়-তালিকা দিয়ে: তাঁর কী কী নথি প্রয়োজন, কী কী সোর্স আছে, তাঁর কাছে তাঁদের ফোন নাম্বার আছে কি না, কোন ওয়েবসাইটগুলো তাঁর দেখা উচিত, কোন ভিজ্যুয়াল উপাদান বিবেচনা করা যায়। তারপর তিনি তালিকা ধরে ধরে কাজ শুরু করেন।
“বিশেষ করে একটি বড় অনুসন্ধানী স্টোরির জন্য আমি যতজনের সাক্ষাৎকার নিই, প্রত্যেকের কাছে জানতে চাই: আমি কি সঠিক পথে আছি? আপনি কি বলতে পারেন, অন্য কোনো উৎস আছে কি না? এভাবে তালিকা বড় হতে থাকে। এগোতে এগোতে, সত্যিই কাজে আসবে এমন জিনিসগুলো আমি তালিকায় গুছিয়ে রাখি: তথ্য, উদ্ধৃতি, বাক্য, নথি; আর বিশেষ করে সম্ভাব্য বৈরী সাক্ষীর (যিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে অসত্য বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাক্ষ্য দিতে পারেন) ক্ষেত্রে প্রতিটি ফোন কলের তারিখ ও সময় টুকে রাখি।”
২. এলিভেটর পিচ তৈরি করুন
ফ্রেডরিক বলেন, যখন মনে হবে আপনার কাছে লেখা শুরু করার পর্যাপ্ত উপাদান আছে, তখন একটি “এলিভেটর পিচ” তৈরি করুন। এটি হল আপনি যা পেয়েছেন আর যেভাবে বলবেন, তার একটি ছোট সারাংশ।
“আপনার স্টোরি কী নিয়ে?” – এই বিষয়টির ওপর ফ্রেডরিক জোর দেন বেশি। “আপনি যদি দুই থেকে চার বাক্যে সেটি বলতে না পারেন, তবে নিজেকে কয়েকটি প্রশ্ন করুন: কী কারণে বিষয়টি [একটি বিশেষ সমস্যা] টিকে আছে? এর পেছনে কি রাজনৈতিক বা কর্পোরেট লালসা কাজ করছে? এটি কি আইনগত? পরিবেশবান্ধব? কারা এই স্টোরির কেন্দ্রীয় চরিত্র এবং তারা কীভাবে জড়িত?”
তিনি বলেন, “এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেয়ে গেলে আপনার এলিভেটর পিচ হয়ে যাবে – যা হবে আপনার নাটগ্রাফ (একটি অনুচ্ছেদে পুরো স্টোরির ধারণা)।” এই সার অনুচ্ছেদ আপনার স্টোরিটিকে দাঁড় করায় এবং স্টোরিতে কী আসতে যাচ্ছে, তা পাঠককে জানায়৷ তিনি আরও বলেন, “একবার এলিভেটর পিচ এবং রিপোর্টিং হয়ে গেলে, বসে খসড়া তৈরির কাজে হাত দিন।”
৩. শুধু লিখে যান
সাংবাদিকেরা একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে লেখা জমা দিতে সিদ্ধহস্ত, তা সে বাড়তি রিপোর্টিংয়ের কারণে হোক বা শেষ সময়ে কাজ করার অভ্যাসের কারণে। ফ্রেডরিকের মতে, এটি মোটেই ভালো কৌশল নয়।
“যত দেরি করবেন লেখা শুরু করা তত কঠিন হবে,” তিনি বলছিলেন। “সাধারণভাবে বললে, রূপরেখা বা মূল স্টোরি যাই হোক না কেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে একটি সময়সীমার মধ্যে থাকতে হয়… যতটা ভয়েরই শোনাক; এটি একটি পেশি, যা নিয়ে ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে। ধরে নিতে হবে যে প্রথম খসড়াটি খুব নিখুঁত হবে না, আর এটি নিয়ে চিন্তারও কিছুৃ নেই।”
সম্পাদক হিসেবে “কোনো লেখকের কাছ থেকে সময়সীমা পেরুনোর পর লেখা পাওয়ার চেয়ে বরং অসম্পূর্ণ লেখা পেলেই” তিনি অনেক খুশি হন।
৪. স্টোরি উপস্থাপনে মাঠের কণ্ঠ ব্যবহার করুন
হেনরি বলেছেন, “মাঠে গিয়ে মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়া যে কত কাজে আসে – তা আমি বলে বোঝাতে পারব না।” রাস্তায় বের হয়ে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁরাও ভাগ্যক্রমে তাঁর স্টোরির মূল চরিত্র হতে পারতেন। “সাক্ষাৎকার নিতে নিতেই আমরা এই লোকগুলোর দেখা পেয়েছি।”
আপনি মাঠ থেকে ফিরে আসার পরও সেই ব্যক্তিগত পরিচয়গুলো কাজে লাগাতে ভুলবেন না । হেনরি বলেন, “কৃষকদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের খুঁজে পেতে আমরা বিপুল পরিমাণ ডেটা ঘেঁটেছি। আমরা এসব ভাষ্যকে আমাদের স্টোরির ওপরের দিকে জায়গা দিয়েছি,” বলেন তিনি। “কারণ আমরা দেখতে চেষ্টা করছিলাম পাঠক আসলে কিসে আগ্রহী এবং সেভাবেই গল্পটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলাম: এরা সেই মানুষ যাঁদের নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে, এরাই তাঁরা যাঁদের জন্য এটি (পানি) প্রাণশক্তি, আর সেটিই তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে।”
৫. মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু মানুষ
ফ্রেডরিক ব্যাখ্যা করে বলেন, পাঠক ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর একটি হলো তাঁদের আগ্রহ আছে এমন চরিত্রদের স্টোরির শুরুতে স্থান দেওয়া। “এদের আমি টেনে ধরে রাখার মতো চরিত্র বলি। পানি নিয়ে দুই জনগোষ্ঠীর লড়াইকে কেন গুরুত্ব দিতে হবে? মূলত সেইসব কৃষকদের কারণে যারা বংশ পরম্পরায় সপরিবারে সেখানে আছেন এবং হুট করে বেঁচে থাকার সংগ্রামে জড়িয়ে গেছেন, হয়ত তাঁরা চাকরি খুইয়েছেন এবং তাঁদের জানা নেই পরে কী করবেন। মূল বিষয় হলো: কে সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা। আর তাই (গল্পের) পরিধি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখুন।”
তাঁর পরামর্শ হলো, সাংবাদিকের যাত্রায় পাঠককেও সঙ্গী করা। “আরেকটি বিষয়ের কথা আমি বলতে চাই – বিশেষ করে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে – আপনি হয়তো প্রায়ই একটি জায়গা থেকে প্রচুর রিপোর্ট করেন এবং খুব সম্ভবত, আপনার পাঠক সেই জায়গা কখনও দেখেননি বা সেখানে যাননি,” তিনি বলেছেন। “জায়গাটা দেখতে কেমন, সেখানকার গন্ধ কেমন? সেখানে থাকতে কেমন লেগেছে, এমন কী কী গুরুত্বপূর্ণ খুঁটিনাটি আপনি বলতে পারেন? সত্যিই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার পাঠকের কাছে স্থানটিকে জীবন্ত করে তুলতে পারে। আপনি জনগোষ্ঠীর কাউকে বা কোনো জায়গাকে গুরুত্ব দিয়ে আদতে ঐ মানুষগুলোকেই গুরুত্ব দিতে পারেন।”
৬. ভাষা সহজ রাখুন
স্টোরির ধারণা থেকে প্রকাশনা পর্যন্ত কতগুলো খসড়া লিখতে হয়েছে, সে কথা ভেবে হাসছিলেন হেনরি। কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের নিজস্ব লিখনশৈলীর বিকাশ এবং তার চর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
“আমার লিখনশৈলী সত্যিই খুব সাদামাটা, তবে এক কাব্যিক লেখকের চমৎকার একটি বই পড়েছিলাম,” তিনি জানান। “তিনি যেভাবে লিখেন, আমিও সেভাবে লেখার চেষ্টা করছিলাম। ইয়াফা সেটি দেখে জবাব দিয়েছিলেন: ‘আপনি যা লিখেছেন, আমি তার কিছুই বুঝিনি। দয়া করে এই লেখা আমাকে আর পড়তে বলবেন না।’’’ তারপর সেই খসড়াটির জায়গা হয়েছিল আস্তাকুঁড়ে।
তাঁদের দুজনেরই পরামর্শ হল: খুব প্রয়োজন না হলে জার্গন (পারিভাষিক শব্দ) এবং টেকনিক্যাল টার্ম এড়িয়ে চলুন। স্টোরি নিয়ে দ্বিতীয় কারো মতামতও নিন।
“আপনি যখন স্টোরি শেষ করে এনেছেন, তখন হয়তো চোখে পড়বে না যে তাতে কোনো ফাঁক, বিভ্রান্তিকর বাক্যাংশ, বা এমন কোনো অনুচ্ছেদ আছে কিনা যাতে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা দরকার,” বলছিলেন ফ্রেডরিক। “তখন আপনার স্টোরি, বাস্তবতাকে কতটা তুলে ধরছে সেটি কোনো বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা পেশাদার সম্পাদককে দেখিয়ে নেওয়া সত্যিই কাজে দিতে পারে।”
৭. যতটা পারেন ফাঁকগুলো পূরণ করে নিন
পানি সংকট নিয়ে অনুসন্ধানে “পূর্ববর্তী ঘটনাপ্রবাহ অনুসরণ” করতে গিয়ে বেশ সময় নিয়েছেন হেনরি। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, কারা শহর থেকে পানি সরিয়ে নিচ্ছে এবং তা কীভাবে ঘটে চলেছে, তা চিহ্নিত করা। কিন্তু তিনি পানি বিক্রির রেকর্ড দেখতে চাইলে বাধার মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত, তাঁদের স্টোরিতে উঠে আসে: যেসব প্রভাবশালী জমি মালিক তাদের এলাকার পানি তুলে নিচ্ছিল তারা আইনী সীমার মধ্যেই ছিল, এবং সেদিকেই রিপোর্টারদের দৃষ্টি সরিয়ে নিতে চাইছিল, যেন সেই ব্যবস্থা নিয়ে তারা প্রশ্ন না তোলেন যার কারণে ক্ষুদ্র কৃষকেরা আর্থিক দুরবস্থায় পড়েছিলেন।
“আমরা সেই ফাঁক মেটাতে অনেক সময় ব্যয় করেছি,” তিনি বলেছেন। “এই বিষয়গুলোর একটি হল: সম্পাদনার আগে পিছে, এবং ফাঁক দূর করার চেষ্টায়, কখনও কখনও আপনাকে পেছনে ফিরতে হবে এবং বলতে হবে: এই ফাঁকই মূল স্টোরি… সত্যিই যা ঘটছে, তা হলো জবাবদিহিতার ঘাটতি।”
৮. সম্পাদকদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করুন
পানি সংকট অনুসন্ধানটি একটি দলীয় প্রচেষ্টা ছিল। এর একটি স্টোরি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে এবং অন্যটি সিসিআইজে-তে। হেনরি এবং ফ্রেডরিকের পাশাপাশি ভিজ্যুয়াল সাংবাদিক, ডেটা সম্পাদক এবং ডিজাইনারদের নিয়ে গঠিত বড় দলেও পারস্পারিক পরামর্শ আদানপ্রদান ও চিন্তাভাবনা চলছিল।
ফ্রেডরিক বলেছেন, “লোইস রিপোর্টিং প্রক্রিয়ার যেখানে ছিলেন… তাঁর যে নথি ছিল, যে নথি ছিল না, এই সপ্তাহে তাঁর সাক্ষাৎকার নেয়া সেরা ব্যক্তি কারা ছিলেন, কারা ছিল সবচেয়ে খারাপ মানুষ – এসব নিয়ে আমরা কথা বলতাম” যেন একটি খসড়া সময়সীমা ধরে রাখা যায়।
“আপনি ঠিক জানেন না এই স্টোরিগুলো, এই বড় বড় অনুসন্ধানী স্টোরিগুলো লিখতে গিয়ে কোথা থেকে শুরু করবেন,” হেনরি বলছিলেন। “শুরু করার মতো অনেক জায়গা আছে। দেবে যাওয়া শহর। যেখানে দেবে যাওয়ার জন্য বাঁধ দিতে শহরবাসীকে অর্থ প্রদানে বাধ্য করা হয়। কৃষকদের কাজ বন্ধ। কেউ কেউ প্রচুর আয় করছে… এখানে এতগুলো অ্যাঙ্গেল যে এগুলোকে সংক্ষেপে তুলে ধরা বেশ কঠিন ছিল।”
হেনরি বলেন, “আমার মনে হয়, যে কোনো স্টোরি, বিশেষ করে দীর্ঘ ও জটিল অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার সময় একজন সম্পাদক থাকা খুব জরুরি, যিনি অনেকটা শেষ চেকপোস্টের মত।”
৯. প্রশ্ন করতে থাকুন
ফ্রেডরিক সাংবাদিকদের মনে করিয়ে দেন যে “সাক্ষাৎকার নেয়া যে কারো কথা সত্য হিসেবে ধরে নেবেন না, কারণ সবাই নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছে। এর মানে এই নয় যে, সেগুলো অবাস্তব অভিজ্ঞতা, বরং বোঝা উচিত যে, একটি স্টোরির অনেকগুলো দিক থাকে।”
হেনরি বলেন, “আপনাকে কোথাও গিয়ে থামতে হবে। মানুষকে পড়তে দিন এবং আপনি রিপোর্টিং ও লেখা চালিয়ে যান।” আপনি হয়ত সব প্রশ্নের উত্তর দেননি, তবে মনে রাখবেন, আপনি প্রকাশ্যে আনছেন মানে এই নয় যে, এখানেই শেষ।
সম্পাদকের দ্রষ্টব্য: এই স্টোরির আধেয় জিআইজেএনের ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের আওতায় পুনঃপ্রকাশিত হতে পারে। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার সব ছবির কপিরাইট রায়ান ক্রিস্টোফার জোন্সের। তাই তাঁর অনুমতি ছাড়া এগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না।
আরও পড়ুন
ফ্রিল্যান্স অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা: জেনে নিন কীভাবে পিচ করবেন
আপনার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন কখন পাঠকপ্রিয় হবে?
বিজ্ঞানভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উত্থান
লরা ডিক্সন জিআইজেএনের সহযোগী সম্পাদক ও যুক্তরাজ্যের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। তিনি কলম্বিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো থেকে রিপোর্ট করেছেন এবং তাঁর কাজ দ্য টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট ও আটলান্টিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স মিডিয়া ফাউন্ডেশন এবং পুলিৎজার সেন্টার ফর ক্রাইসিস রিপোর্টিং থেকে রিপোর্টিং ফেলোশিপ পেয়েছেন।