প্রবেশগম্যতা সেটিংস

লেখাপত্র

বিষয়

একাডেমিক-সাংবাদিক সহযোগিতা যেভাবে এগিয়ে নিচ্ছে কানাডার একটি রিপোর্টিং ল্যাব

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

কানাডা বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক সেন্টারের উদ্যোগে একাডেমিক-সাংবাদিক যৌথ অনুসন্ধান

ছবি: শাটারস্টক

সাংবাদিকেরা সাধারণত একাডেমিকদের শরণাপন্ন হন দু-একটি মন্তব্য বা উদ্বৃতির জন্য, যা তাঁদের রিপোর্টিংয়ে একটি সামগ্রিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে অথবা রিপোর্টে যা পাওয়া গেছে, সেই ফলাফলকে পোক্ত করে। তা সে কোনো সাব অ্যাটমিক কণা আবিষ্কারের ব্যাখ্যা হোক বা অফশোর স্কিমের মাধ্যমে টাকা পাচারে সূক্ষ্ম হিসাব-নিকাশ একাডেমিকদের সমর্থন আমাদের সেই বিশ্লেষণের জন্য সঠিকতার সিলমোহর হিসেবে কাজ করে। আর এর বদলে আমাদের সাংবাদিকতা তাদের বিশেষজ্ঞ-জ্ঞানের সঙ্গে গণমাধ্যমের বিস্তৃততর পাঠকগোষ্ঠীর সংযোগ ঘটিয়ে দেয়।  

কিন্তু কেমন হতো, যদি কোনো নিউজরুম গোড়া থেকেই একাডেমিকদের নিয়ে কাজ করত? এবং তাকেও ভার্চ্যুয়াল প্রেস পাস এবং অনুসন্ধানের সময় সম্পাদকীয় মতামত জানানোর সমান সুযোগ দেওয়া হতো?

বিশ্বজুড়ে পোশাকশ্রমিকদের অধিকারের ওপর  কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে ১০ মাসব্যাপী অনুসন্ধানে ঠিক এই কাজই করেছেন টরন্টো স্টারের রিপোর্টার রব ক্রিব ও ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের অধ্যাপক জেনেভিয়েভ লিব্যারন। 

তিন পর্বের সিরিজটি প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়, সঙ্গে বেরোয় একটি পিয়ার-রিভিউড একাডেমিক গবেষণা। তাতে উঠে আসে ভারত থেকে ইথিওপিয়া পর্যন্ত কয়েকটি দেশের পোশাকশ্রমিকদের চিত্র, যাঁরা কোভিড-১৯  মহামারিতে ভেঙে পড়া সরবরাহ চেইনের কারণে আর্থিক ও সুরক্ষাগত প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা, চাকরি হারানো, যৌন হয়রানির মতো বিষয় নিয়ে ক্রিব যেসব রিপোর্টিং করেছেন,  সেগুলের তথ্য এসেছিল চারটি দেশে চালানো জরিপ থেকে। 

লিব্যারন ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা জরিপ করেছিলেন ১ হাজার ১৪০ জন পোশাকশ্রমিকের ওপর। সহযোগিতামূলক এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু কাজের পরিবেশ নয়, কোভিড-১৯ সহায়তা তহবিল থেকে কোম্পানিগুলো কেমন অর্থ পেয়েছে এবং যে শ্রমিকেরা তাদের পণ্য উৎপাদন করছেন, তাঁরা কীভাবে অর্থনৈতিক সুরক্ষা জালের বাইরে থেকে গেছেন, তা-ও দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এটি এমন এক ধরনের রিপোর্টিং প্রকল্প, যা একাডেমিয়া ও সাংবাদিকতার সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া সম্ভব ছিল না। 

শেফিল্ড জরিপটি করেছিল একটি শ্রম অধিকার সংগঠন ও দুটি গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে জোট বেঁধে।  দেশ, শ্রমিক ও এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত করার জন্য তাঁরা সবাই মিলে একটি প্রাথমিক ডেটাসেট তৈরি করেন, যেন এর মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ পরিচালনা সম্ভব হয়।

এই জরিপ থেকে পত্রিকার জন্য অনেকগুলো প্রতিবেদন বেরিয়ে এসেছে। শেফিল্ডের দলটি জরিপে যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, পরে তাঁদের অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্রিব। তিনি তাঁদেরকে কিছু বাড়তি প্রশ্ন করেছেন, যেগুলোর উত্তর প্রয়োজন ছিল প্রতিবেদন লেখার জন্য। এই প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ক্রিব যে চিত্র দেখতে পেয়েছেন, তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো এখানে: 

  • গবেষকদের হিসাব থেকে দেখা গেছে, মহামারি-সংশ্লিষ্ট অর্ডার বাতিলের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে পোশাকশ্রমিকদের বেতন কমেছে প্রায় ৪ দশমিক ৯ থেকে ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। 
  • মহামারি শুরুর পর থেকে চুক্তি বাতিল হওয়া যে ১৪৫ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ চালানো হয়েছিল, তাঁদের প্রায় ৮০ শতাংশই বলেছেন, তাঁরা তাঁদের পুরো বেতন-ভাতা পাননি। তিন ভাগের দুই ভাগ শ্রমিক কিছুই পাননি। 
  • কুড়ি বছরের এক ইথিওপিয়ান নারী বলেছেন, তিনি দেখেছেন কীভাবে ম্যানেজাররা তাঁর সহকর্মীদের আঘাত করছে বা ধাক্কা দিচ্ছে। “আমরা এগুলো নিয়ে অভিযোগ করি, কিন্তু কেউই আমাদের কথা শোনে না বা সাহায্যের চেষ্টা করে না।”
  • ভারতীয় পোশাককর্মী রমেশ, যাঁর বয়স ৪০-এর ঘরে, তিনি কাজ শুরু করেছিলেন ১২ বছর বয়সে। তাঁর আয় অনেক কমে গেছে মহামারির কারণে। তিন সন্তানের পিতা রমেশ বলেছেন, সরকার থেকে কোনো সহায়তা ছাড়া “আমি যে টাকা আয় করছি, তা দিয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন। আমি এ বছর আমার সন্তানদের স্কুলের ফি পরিশোধ করতে পারিনি।”  
  • ইথিওপিয়ার একজন পোশাকশ্রমিককে মূল বেতন হিসেবে দেওয়া হয় মাত্র ২৪ ‍বিরপ্রায় শূন্য দশমিক ৫৭ ডলার। তিনি যদি কারখানার উৎপাদন লক্ষ্য (দিনে ১ হাজার ৪০০ টি-শার্ট) পূরণ করতে পারেন, তাহলে তাঁকে বাড়তি ৭ বির (শূন্য দশমিক ১৬ ডলার) দেওয়া হয় বোনাস হিসেবে। সবচেয়ে লাভজনক দিনে, তিনি বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন মাত্র শূন্য দশমিক ৮২ ডলার। বেশির ভাগ দিনে তিনি পান মাত্র শূন্য দশমিক ৭৩ ডলার।

সহযোগিতামূলক প্রকল্পটিতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে গ্লোবাল রিপোর্টিং সেন্টার (জিআরসি)। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে একাডেমিক ও সাংবাদিকদের মেলবন্ধন ঘটাতে সাহায্য করে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়াভিত্তিক এই অলাভজনক সংগঠন। 

জিআরসির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পিটার ক্লাইন বলেছেন, সাংবাদিকেরা যেভাবে একাডেমিকদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করছেন, তা ভালো সাংবাদিকতাকে আরেক ধাপ এগিয়ে দেবে। 

ক্লাইন ব্যাখ্যা করে বলেন, “প্রথম দিন থেকেই আমরা সাংবাদিক ও পণ্ডিতদের নিউজরুমে নিয়ে আসি সমান অংশীদার হিসেবে। তাঁরা এখানে আরও অন্তরঙ্গ উপায়ে কাজ করতে পারেন। সোর্স কীভাবে নির্ধারণ করা হবে, অনুসন্ধানের পদ্ধতি ও ফলাফল কী হতে পারে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন।”

সাংবাদিক ও পণ্ডিতদের কাজ মূলত একই রকমকাগজপত্র খতিয়ে দেখা, সংখ্যার হিসাব করা, সাক্ষাৎকার নেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু তাঁদের কাজের সময়সীমা এবং সাফল্যের মানদণ্ড বেশ আলাদাও হতে পারে। তবে এ ধরনের সহযোগিতামূলক প্রকল্পে তহবিল জুগিয়ে এবং দুটি পুরোপুরি ভিন্ন ধরনের কাজের সংস্কৃতির মধ্যে দূত হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে জিআরসি এই দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করে।

দুই পণ্ডিত ও সাংবাদিক, জেনেভিয়েভ লিব্যারন ও রব ক্রিবের গার্মেন্টস সরবরাহ চেইন নিয়ে এই প্রতিবেদন একটি সফল সহযোগিতামূলক প্রকল্প হতে পেরেছে বেশ কয়েকটি কারণে। যেমন:  

এতে গবেষণার গভীরতা ও পরিসর বেড়েছে: ইন-ডেপথ একাডেমিক গবেষণার সঙ্গে যখন সাংবাদিকেরা তাঁদের খুঁজে পাওয়া স্পর্শকাতর তথ্যগুলো যুক্ত করেন, তখন অনেক কঠিন একটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজও সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য হয়ে ওঠে।

  • লিব্যারন: “আমার মনে হয়, এটি সাধারণ কোনো মিডিয়া কাভারেজের চেয়ে ভিন্ন রকমের। এই অর্থে যে, এগুলো সত্যিই খুব সমৃদ্ধ প্রতিবেদন, যেখানে সেই গবেষণার মূল জায়গাগুলো তুলে আনা হয়। সাধারণ একটি মিডিয়া প্রতিবেদনে হয়তো শুধু গবেষণাটির শিরোনাম ও সেটি সম্বন্ধে অল্প কিছু জিনিস পড়া বা জানা হয়।”
  • ক্রিব: “স্টোরির স্বার্থে আরও বেশি চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ানো খুবই অর্থপূর্ণ ব্যাপার। এতে আমাদের সামনে ডেটা পাওয়ার সুযোগ থাকে অনেক বেশি। যে বিষয়টি নিয়ে লিখছি, সেটি সম্পর্কে নতুন চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রাপ্তিরও।

নৈতিক সহযোগিতা: সাংবাদিক ও একাডেমিকদুই পেশার মানুষই বাঁধা থাকেন প্রতিষ্ঠান ও সম্পাদকীয় নীতি-নৈতিকতার কাঠামাতে, যা আরও ভালো রিপোর্টিংয়ের সুযোগ করে দেয়। 

  • লিব্যারন: “রবকে আমাদের (একাডেমিক এথিকস রিভিউ অ্যাপ্লিকেশনে) অন্তর্ভুক্ত করায়, আমরা সম্মতি পেয়েছিলাম, যখন আমরা শ্রমিকদের সাক্ষাৎকার নেব, তখন তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করে নেব যে, তাঁরা কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন কি না… সেসব দেশে আমাদের এমন পরিচিত মানুষ ছিলেন, যাঁরা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন। ফলে আমাদের বাড়তি কোনো ভ্রমণেরও প্রয়োজন হয়নি।”
  • ক্রিব: “তথ্য ও ডেটার সোর্স প্রায় একই রকম হলেও সেখান থেকে আমরা কী বের করব, তা ঠিক করার স্বাধীনতা দুজনেরই ছিল। আমরা সাক্ষাৎকারও নিয়েছি স্বাধীনভাবে। সাংবাদিকতার দিক থেকে আমরা একটি আর্থিক ও সরকারি জবাবদিহির দৃষ্টিকোণ যোগ করেছিলাম, যেদিকে একাডেমিকদের মনোযোগ ছিল না। 

জ্ঞানগত রিসোর্স বৃদ্ধি: একাডেমিকরা, সাংবাদিকদের রিপোর্টিংয়ের সুযোগ ও দৃষ্টিকোণ নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সব ডেটা শেয়ার করতে পারেন, যেগুলো স্বাধীনভাবে সংগ্রহ করতে গেলে হয়তো অনেক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হতো। আবার সাংবাদিকেরা জানেন যে, কীভাবে একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী প্রতিবেদন লিখতে হয়, যেটি পরিবর্তনের প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। 

  • লিব্যারন: “আমি আশা করি, যদি সত্যিই গল্পগুলো মানুষের জীবনসংশ্লিষ্ট হয়ে ওঠে, তাহলে সেসব মানুষের থেকে বেশি সাড়া পাওয়া যাবে, যারা (সরকার ও গার্মেন্টস কোম্পানি) শ্রমিকদের অর্থনৈতিক দুর্দশার অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ নিতে পারেন।”
  • ক্রিব: “একাডেমিকরা বিশ্বের এমন কিছু দরিদ্র দেশের শ্রমিকদের ওপর জরিপ চালিয়েছে, যেটি আমরা (রিপোর্টাররা) কখনো করতে পারতাম না। কারণ, সেসব দেশে মাঠপর্যায়ে গিয়ে কাজ করার মতো রিসোর্স ও যোগাযোগ আমাদের ছিল না। ফলে এখানে সত্যিই দুটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তথ্য সংগ্রহের সুযোগ পাওয়া গেছে, এবং সেগুলো লেখাও হয়েছে ভিন্ন দুটি উপায়ে। শেষ পর্যন্ত এই সমন্বয়ের ফলে দুই পক্ষই লাভবান হয়েছে।”

লিব্যারনের লক্ষ্য ছিল, টরন্টো স্টারের প্রতিবেদনগুলোর জন্য আরও বড় প্রভাব তৈরির সুযোগ করে দেওয়া এবং তাঁর গবেষণার ফলাফলগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ক্রিবের প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছিল শ্রমিকদের কণ্ঠ, এবং গল্পগুলো তুলে ধরা হয়েছিল বিস্তৃত পরিসরের পাঠকদের কাছে। লিব্যারনের আশা, আকর্ষণীয়ভাবে গল্পকথনের কারণে এগুলো গার্মেন্টস সরবরাহ চেইনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নজরে আসবে এবং তাঁদের আরও জবাবদিহিমূলক করে তুলবে।

যেসব দেশে আপনার প্রকাশনার কোনো প্রতিনিধি বা স্থানীয় কোনো রিপোর্টিং পার্টনার নেই, সেসব জায়গায় সোর্স খুঁজে পাওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। শেফিল্ডের সঙ্গে কাজ করার ফলে ক্রিব ও তাঁর দল এমন সব সোর্সের কাছে যেতে পেরেছেন, যেগুলো হয়তো অন্য কোনোভাবে পাওয়া সম্ভব ছিল না। বিশেষভাবে কোভিড-১৯ সময়ে লকডাউন ও যাতায়াতের সীমাবদ্ধতার মধ্যে।  

সাংবাদিকেরা কীভাবে অনুসন্ধান করেন, সে বিষয়ে জানাবোঝা, লিব্যারনের জন্য অনেক সম্ভাবনা ও সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, এরপর থেকে তিনি কাজের শুরু থেকেই একজন সাংবাদিককে সঙ্গে নেবেন। কারণ, গবেষণার প্রক্রিয়াটি একে অপরের সংশ্লিষ্ট ও পরিপূরক। একইভাবে ক্রিবও বলেছেন, একাডেমিকরা সাংবাদিকসুলভ রিপোর্টিং প্রক্রিয়ায় অনেক কিছু যুক্ত করতে পারেন। এগুলো নিয়ে তাঁর উপলব্ধি ক্রমেই বাড়ছে। তিনি বলেছেন, “আমার মনে হয়, এটি অনেক লাভজনক। এবং এই মডেল ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।”

এই ধরনের সহযোগিতামূলক প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা খুব একটা ব্যয়বহুল নয় বলে জানিয়েছেন ক্লাইন। বাস্তবে, স্থানীয় সংবাদকে আরও শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন কমিউনিটি বা শহরের নিউজরুম এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পার্টনারশিপ সম্ভাবনার অনেক ক্ষেত্র তৈরি করছে। 

একাডেমিকরা যেসব উপায়ে জোট বাঁধার জন্য সাংবাদিক খুঁজে পেতে পারেন, সেগুলোর মধ্যে আছে: সাংবাদিকতার সম্মেলনগুলোতে গিয়ে এমন রিপোর্টারদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, যাঁদের কাজের ক্ষেত্র একাডেমিকদের গবেষণার সঙ্গে মিলে যায়; এ ছাড়া তাঁরা সাংবাদিকতার স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারেন এবং ছোট প্রকাশনাগুলোর ডেস্ক এডিটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। 

একইভাবে, সাংবাদিকেরাও নানা উপায়ে  একাডেমিক পার্টনার খুঁজে নিতে পারেন। ক্লাইন এ জন্য গুগল স্কলারের মতো ওপেন সোর্স টুল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন, যেখান থেকে সাংবাদিকেরা দেখে নিতে পারেন, তাঁদের অনুসন্ধানের বিষয়টি নিয়ে কারা গবেষণাপত্র লিখেছেন। নজর দিতে পারেন একাডেমিকদের লেখা সম্পাদকীয় কলামে, এবং যোগ দিতে পারেন বিভিন্ন একাডেমিক সম্মেলনে।  

ক্লাইন বলেছেন, “দুজন সাংবাদিক একসঙ্গে কাজ করাটা অস্বাভাবিক নয়। একইভাবে দুই পণ্ডিত একসঙ্গে কাজ করাও স্বাভাবিক। তাই সাংবাদিক ও পণ্ডিত জোট বেঁধে কোনো রিপোর্টিং প্রকল্পে কাজ করাটা অস্বাভাবিক কেন হবে?”

আরও পড়ুন

নিউ মডেলস: হাউ একাডেমিকস, ননপ্রফিট নিউজ অ্যান্ড গভর্নমেন্ট আর কোলাবোরেটিং

হাউ ফরেনসিক আর্কিটেকচার সাপোর্টস জার্নালিস্টস উইথ কমপ্লেক্স ইনভেস্টিগেটিভ টেকনিকস

এ প্রোগ্রাম দ্যাট টার্নস ডক্টরস ইনটু মাকরেকার্স


Katarina Sabados portrait

ক্যাটারিনা সাবাডোস ভ্যানকুভার-ভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিক। তিনি এর আগে কাজ করেছেন ওসিসিআরপির গবেষক হিসেবে। বর্তমানে তিনি কানাডার ন্যাশনাল অবজারভারে জলবায়ু-কেন্দ্রিক ইস্যু কাভার করেন এবং গ্লোবাল রিপোর্টিং সেন্টারে সরবরাহ চেইন নিয়ে রিপোর্টিং করেন।

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

BBC Newsnight NHS investigations lessons learned

কেস স্টাডি

যেভাবে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যসেবা কেলেঙ্কারির স্বরূপ উন্মোচন করেছে বিবিসি নিউজনাইট

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিয়ে ছোট একটি অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করেছিল বিবিসি নিউজনাইট। কিন্তু পরবর্তীতে এক বছরব্যাপী অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নানাবিধ অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার বিস্তারিত চিত্র। পড়ুন, পুরস্কারজয়ী অনুসন্ধানটির নেপথ্যের গল্প ও অভিজ্ঞতা-পরামর্শ।

Firefighters trying to contain a wildfire in Riverside Country in southern California, July 2023. Image: Shutterstock

কেস স্টাডি জলবায়ু

যৌথ অনুসন্ধানে যেভাবে উন্মোচিত হলো দাবানল দূষণ নথিবদ্ধকরণে দুর্বলতার বিরূপ প্রভাব

দাবানল বা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণের ঘটনাগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির (ইপিএ) সরকারী রেকর্ড অন্তর্ভূক্ত না হয়—সেজন্য একটি আইনি ফাঁক রেখে দেওয়া হয়েছে। পড়ুন, কীভাবে এ নিয়ে পরিচালিত হয়েছে একটি যৌথ অনুসন্ধান।

বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান

কেস স্টাডি সংবাদ ও বিশ্লেষণ

সম্পাদকের বাছাই: ২০২১ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধান

অনেক প্রতিবন্ধকতার সত্ত্বেও গত ১ বছরে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, মুদ্রা পাচার, অনিয়ম ও প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলার মত ঘটনা উন্মোচনের চেষ্টা করে গেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা। বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রধান বিষয় ছিল, যথারীতি দুর্নীতি। কিন্তু ২০২১ সালের সেরা স্টোরি বাছাই করতে গিয়ে শুধু অনুসন্ধানের গভীরতা বা কৌশল নয়; বিষয়বস্তুর নতুনত্ব, প্রভাব এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ মনোযোগের মতো বিষয়কেও আমরা আমলে নিয়েছি।

কেস স্টাডি

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় জরিপ: যে খবর এড়িয়ে যাওয়া কঠিন

কখনো কখনো ছোট ছোট স্থানীয় সংবাদপত্র এমন সব বড় খবরের জন্ম দেয়, যা হেভিওয়েট জাতীয় পত্রিকাগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় না। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় দুইশ কিলোমিটার দূরে, যশোরের গ্রামের কাগজের ঘটনাও ঠিক একই রকম।