প্রবেশগম্যতা সেটিংস

IDL-Reporteros founder Gustavo Gorriti
IDL-Reporteros founder Gustavo Gorriti

আইডিএল- রিপোর্টেরসের প্রতিষ্ঠাতা গুস্তাভো গোরিতি

লেখাপত্র

বিষয়

আইডিএল-রিপোর্টেরস: যে নিউজরুম পেরুর রাজনৈতিক অভিজাতদের চ্যালেঞ্জের সাহস দেখিয়েছে

আর্টিকেলটি পড়ুন এই ভাষায়:

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাচ্যুতি, ব্যাপক সংখ্যক ব্যক্তির গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে কোটি ডলারের জরিমানা, সব মিলিয়ে ওডেব্রেখট দুর্নীতি কেলেঙ্কারি নাড়া দিয়েছে লাতিন আমেরিকার মূল শিকড়ে

এ অঞ্চলের কমবেশি সব রাজনৈতিক দলই তাদের প্রচারণা চালানোর জন্য অর্থ পেয়েছিল ব্রাজিলের একটি নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে, যারা ২০০৫ থেকে পরবর্তী এক দশক জুড়ে, মেক্সিকো থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনা পর্যন্ত অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশে লাভজনক সব অবকাঠামো চুক্তি হাতিয়ে নেয়।

তবে চুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে করা হয়েছে দুর্নীতি। যার শুরুটা ব্রাজিলে, যেখানে মামুলি একটি গাড়ি ধোয়ার জায়গাকে ব্যবহার করা হয় অর্থ পাচারের মূল কেন্দ্র হিসেবে। এটি প্রকাশ হওয়ার পর অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা ওই বিশাল নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলোতে নজর দেওয়া শুরু করে। এরপর বিভিন্ন দেশে একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা উন্মোচিত হতে থাকে।

মার্কিন বিচার বিভাগের তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সাল নাগাদ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি “ব্যবসা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মকর্তা, তাদের প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলকে ৭৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার (৭৮৮ মিলিয়ন ডলার) সমপরিমাণ অর্থ ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে”। বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে “ব্যাপক ও ন্যাক্কারজনক ঘুষ ও দরপত্র কারচুপির পরিকল্পনা” হিসেবে সমালোচনা করা হয়। ঘটনাটি লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কর্পোরেট দুর্নীতির মামলায় পরিণত হয়েছে।

ব্রাজিলিয়ান কোম্পানি ওডেব্রেখট কেলেঙ্কারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পেরুর রাজনৈতিক অঙ্গন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ— কয়েক ডজন সরকারী কর্মকর্তা ছাড়াও, দেশটির চারজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে তদন্ত বা বিভিন্ন গোপন তথ্য সরবরাহের দায়ে বিচার করা হচ্ছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে একজন অ্যালান গার্সিয়া, দুর্নীতির অভিযোগ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি একটি কক্ষ তালাবদ্ধ করে বন্দুক চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।

কেলেঙ্কারি ফাঁস করা পেরুর নিউজ আউটলেটটি হচ্ছে ছোট ও স্বাধীন নিউজরুম আইডিএল- রিপোর্টেরোস (আইডিএল-আর)। এর সাংবাদিকরা প্রাথমিকভাবে পেরু সরকারের অবকাঠামো বিষয়ক প্রধান ঠিকাদার সম্পর্কে স্থানীয়ভাবে তাদের অনুসন্ধানগুলো প্রকাশ করতে শুরু করে। পরবর্তীতে তারা সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন নিউজরুমের সঙ্গে নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে গোটা লাতিন আমেরিকা জুড়ে ওডেব্রেখট দুর্নীতি কেলেঙ্কারির ঘটনা উন্মোচিত করে। সাহসী নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী অনুসন্ধানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তারা জিতেছে জিআইজেএনের গ্লোবাল শাইনিং লাইট অ্যাওয়ার্ড

এর আগে লাভা হাতো দুর্নীতি মামলার অনুসন্ধানের জন্য ২০১৯ সালের গ্লোবাল শাইনিং লাইট পুরস্কারে ভূষিত হয় আইডিএল- রিপোর্টেরস। সহকর্মী রোমিনা মেলার সঙ্গে বাম দিকে রয়েছেন গুস্তাভো গোরিতি। ছবি: নিক জাউসি, জিআইজেএন

সত্য প্রকাশের মূল্য চুকানো

জিআইজেএনের সদস্য সংস্থা আইডিএল-আর — এবং এর প্রতিষ্ঠাতা গুস্তাভো গোরিতিকে বর্তমানে একের পর এক ধেয়ে আসা হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ওডেব্রেখট কেলেঙ্কারির ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর পাল্টা প্রতিশোধের অংশ হিসেবে ক্রমাগত ভয় দেখানো হচ্ছে তাদের।

“আইডিএল-আর শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা অনেক প্রতিকূল প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছি,” বলেন গোরিতি। তিনি একজন অভিজ্ঞ অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এবং কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস-এর প্রেস ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড জয়ী। সর্বশেষ হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ধ্বংসাত্মক ও বিভ্রান্তিমূলক কৌশল ব্যবহার করে সুক্ষ্ণভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং “যা সম্পূর্ণভাবে আইডিএল-আরের সুনামহানীর জন্য নকশা করা… আর এভাবে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

যদিও আউটলেটটিকে বিভিন্নভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে, মার্চ থেকে আক্রমণের মাত্রা ক্রমশ বেড়েছে। আর বিষয়টি এমন একটা সময় ঘটেছে যখন অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে গোরিতি এবং ওডেব্রেখট মানি লন্ডারিং এবং দুর্নীতি অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়

সরকার পক্ষের আইনজীবীরা গোরিতিকে তার ফোন সমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন সবগুলো মেসেজিং প্ল্যাটফর্মকে তারা গোরিতির সমস্ত যোগাযোগ দেখতে দেওয়ার অনুরোধ জানাবে। গোরিতি এখন দুটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত। প্রথমত, লাভা হাতো মামলার দুর্নীতিবিরোধী প্রসিকিউটরদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়টি, ফুজিমোরির দলের পক্ষ থেকে গোরিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তার রিপোর্টিং গার্সিয়ার আত্মহত্যাকে প্ররোচিত করার জন্য দায়ী। যদিও অভিযোগের বিষয়টি এখনও প্রাথমিক তদন্তের অধীনে রয়েছে।

পেরুর ডানপন্থী দলের হয়ে কাজ করে উইলাক্স টেলিভিশন। অনেকটা ফক্স নিউজ আদলের নিউজ চ্যানেল— যারা গোরিতির বিরুদ্ধে করা অভিযোগের পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। চ্যানেলটি ফুয়ের্জা পপুলার পার্টির বেশ ঘনিষ্ঠ। এ দলটির নেতা কেইকো ফুজুমোরি আগের দুটি নির্বাচনী প্রচারণার সময় অবৈধভাবে ওডেব্রেখটের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এই অভিযোগের দায়ে জুলাই মাস থেকে ফুজিমোরির বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। যদিও তিনি অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু মামলাটি আইডিএল-আরের ওপর হুমকিগুলোকে বাড়িয়ে তুলছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার শিকার হয়েছেন গোরিতি। যেমন তিনি ক্যান্সারে ভুগছেন এমন বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শারীরিক হয়রানি চালানো হয়। আইডিএল-আরের সদর দফতর ঘিরে ফেলে ময়লা আবর্জনাও নিক্ষেপ করেছে কট্টর-ডানপন্থী বিক্ষোভকারীরা।

“যদিও অভিযোগগুলো তাদের বোকামিরই প্রতিফলন, তবে ক্রমাগত ও বারবার একই ধরনের আচারণ থেকে ধারণা করা যায় যে তারা বহুমুখী দীর্ঘমেয়াদি আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে,” ব্যাখ্যা করেন গোরিতি। “তবে এ আক্রমণটি জঘন্য, যা সবচেয়ে বেশি জোরালো ও দীর্ঘস্থায়ী।”

বিদ্যমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে গোরিতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি— সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে বড় ধরনের উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। গোরিতি— যার “অধিকার অপূরণীয় ক্ষতির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে” বর্ণনা করে গত বছর ইন্টার-আমেরিকান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (আইএসিএইচআর) পেরুর কাছে তাকে সুরক্ষা দেওয়ার অনুরোধ করে। ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে, জিআইজেএনের নির্বাহী পরিচালক এমিলিয়া ডিয়াজ-স্ট্রাক স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে লাতিন আমেরিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ জনেরও বেশি সাংবাদিক আইডিএল-আর এবং গোরিতির প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করে। মার্চ মাসে, ইউএস ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব এবং ন্যাশনাল প্রেসক্লাব জার্নালিজম ইনস্টিটিউটসের নেতৃত্বে ১০টিরও বেশি সাংবাদিকতা সংগঠন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সমর্থক গোষ্ঠীর একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। যেখানে গোরিতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুমকিকে “লাতিন আমেরিকার অন্যতম সেরা একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে নির্লজ্জভাবে চুপ করিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা” হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করা হয়।

মেক্সিকোর কুইন্টো এলিমেন্টো ল্যাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্সেলা তুরাতি বলেন, “[গোরিতি] আমার এবং অন্যান্য অনেক সাংবাদিকের কাছে রীতিমতো একজন নায়ক। কাজের কারণে তার বিরুদ্ধে যখনই প্রতারণামূলক প্রচারণা চালানো হয়, তখনই আমার মনে হয় যে বিরোধী গোষ্ঠীগুলো চায়, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য গোরিতি উচ্চ মূল্য চুকাক।”

অনুসন্ধানী উদ্ভাবনের মাধ্যমে শূন্যতা পূরণ করা

গোরিতি সাংবাদিকতায় নবীন কেউ নন, তিনি খুব ভালো করেই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত। ১৯৮০-এর দশকে তার বিট ছিল পেরুর সেনাবাহিনী এবং বামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী যেমন সেন্ডেরো লুমিনোসো, দ্য শাইনিং পাথের সঙ্গে সহিংস সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনার ওপর প্রতিবেদন তৈরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিম্যান ফেলোশিপের সময় ওই গোষ্ঠীগুলো ওপর লেখা গোরিতির বই— অনেকে যুদ্ধের চূড়ান্ত দলিল হিসেবে বলে গন্য করেন।

The Shining Path book, Gustavo Gorriti

গোরিতির বইকে অনেকেই শাইনিং পাথের বিরুদ্ধে পেরুর সরকারের যুদ্ধের চূড়ান্ত দলিল বলে মনে করেন। ছবি: স্ক্রিনশট, ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা প্রেস

কেইকোর বাবা আলবার্তো ফুজিমোরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই গোরিতি পেরুতে ফিরে আসেন। ঠিক ওই সময় ডেথ স্কোয়াড ও আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে সেন্ডেরো লুমিনোসোর বিরুদ্ধে নৃশংস আক্রমণ চালানো শুরু হয়।

ফুজিমোরি যখন পেরুর কংগ্রেস ভেঙে দেন এবং বাস্তবে একজন একনায়ক হয়ে ওঠেন, গোরিতি তখন ফুজিমোরি সরকারের উপদেষ্টা, স্পাইমাস্টার এবং অস্ত্র ব্যবসায়ী ভ্লাদিমিরো মন্টেসিনোসের একের পর এক দুর্নীতির জাল উন্মোচন করতে শুরু করেন।

১৯৯২ সালে ফুজিমোরি ও মন্টেসিনোসের নির্দেশে গোরিতিকে অপহরণ করে একটি গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গোরিতির সহধর্মিণী গনমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে এমন এনজিও ও মার্কিন সরকারকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন। তাদের হস্তক্ষেপের পর গোরিতিকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মূলত আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তারা গোরিতিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এরপর ১৯৯০ এর দশকের বাকি সময়ে গোরিতিকে পানামায় নির্বাসিত করা হলে তিনি দেশটির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করা শুরু করেন। সরকারি দুর্নীতিগুলো উন্মোচিত হলে পানামার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আর্নেস্তো পেরেজ বলার্ডস গোরিতির কাজের লাইসেন্স প্রত্যাহার করে তাকে বহিষ্কার করেন। কিন্তু আবারও স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপের কারণে গোরিতি পানামায় থেকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, অন্তত যতদিন না তিনি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১১ সালে তিনি পেরুতে ফিরে আসেন।

ওই বছর, কংগ্রেসের বিরোধী সদস্যদের মন্টেসিনোসের ঘুষ দেওয়ার টেপ প্রকাশিত হয়ে পড়লে ফুজিমোরি সরকারের পতন ঘটে। পরবর্তীতে ফুজিমোরি মন্টেসিনোস উভয়ই মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতি অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পর বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন।

পেরুতে ফিরে আসার পর, ২০০৫ সালে পেরুর সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, প্রেস অ্যান্ড সোসাইটি ইনস্টিটিউট (আইপিওয়াইএস)-এর প্রধান হিসেবে মনোনীত হন গোরিতি। তার নেতৃত্বে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে আইপিওয়াইএস, যারা পেরুর সাংবাদিকদের সমর্থনের পাশাপাশি হুমকি ও আক্রমণের শিকার হওয়া এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সহকর্মীদের আশ্রয় দেয়।

তবে ওয়াচডগ রিপোর্টিং শূন্যতার কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন গোরিতি। কয়েক বছর পর তিনি তাই নিউজরুমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। “নিউজরুমের অনুসন্ধানী ইউনিটগুলোর তীব্রভাবে কাটছাঁট চালানোর কারণে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সংকট ছিল,” বলেন তিনি। “আঁটসাট বাজেটের কারণে প্রয়োজন ছিল ছোট অলাভজনক অনুসন্ধানী ইউনিট তৈরির।”

২০০৯ সালে অল্প কয়েকজন বিশ্বস্ত সাংবাদিককে— যেমন রোমিনা মেলা, যিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন— নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আইডিএল-আর। এক বছর পর ২০১০ সালে প্রথম অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আউটলেটটি। ঠিক ওই বছরই ব্রাজিলের প্রধান আবকাঠামো ঠিকাদার কোম্পানি ওডেব্রেখটের সঙ্গে অ্যালান গার্সিয়া সরকারের চুক্তিগুলোকে নিয়ম বহির্ভূত মনে হওয়াতে আউটলেটটি তা নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করে।

“আমরা ভেবেছিলাম [চুক্তিগুলো] অনুসন্ধান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করি, তাছাড়া প্রকল্পগুলোতে অনিয়মের বিষয়ে কিছু ইঙ্গিতও ছিল,” বলেন মেলা। “২০১১ সালে আমরা ঠিকাদার কোম্পানি এবং এর রাষ্ট্রীয় চুক্তি সম্পর্কে আমাদের প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করি। আর এর ঠিক কিছু পরেই আমরা রাষ্ট্রপতি গার্সিয়ার সেক্রেটারি-জেনারেল (মহাসচিব) এবং ওডেব্রেখটের কোম্পানির মধ্যকার চুক্তি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করি। ওই মহাসচিব তখনও একজন রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।”

প্রতিবেশী ব্রাজিলের আউটলেটগুলো যখন কার ওয়াশ বা “লাভা হাতো” কেলেঙ্কারি সম্পর্কে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে শুরু করে, তখন আইডিএল-আর সিদ্ধান্ত নেয় যে, ওডেব্রেখটের লাতিন আমেরিকান দুর্নীতির গোলকধাঁধাকে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে উন্মোচন, অর্থ পাচারের রুট অনুসরণ এবং কারা ঘুষ নিয়েছে তাদের চিহ্নিত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে কাজ করা।

“দুর্নীতি যদি বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে সম্পাদিত হতে থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা বিশ্বাস করি যে প্রতিটি দেশের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য প্রকাশের লক্ষ্যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতারও সে গণ্ডি অতিক্রম করা উচিত, আমরা তাই একটি ভার্চুয়াল নিউজরুম তৈরির মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে তথ্যগুলো ভাগ করে নিয়েছি।” ব্যাখ্যা করেন মেলা।

লাতিন আমেরিকান অনুসন্ধানী আউটলেটগুলোর স্বপ্নের দল গঠন ও তাদের একত্রিত করেছে ওডেব্রেখট অনুসন্ধান। যেখানে রয়েছে লাতিন আমেরিকান সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (সিএলআইপি), মেক্সিকোর কুইন্টো এলিমেন্টো ল্যাব, আর্জেন্টিনার লা নাসিয়ন, ব্রাজিলের মেট্রোপোলেস, পানামার লা প্রেনসা, উরুগুয়ের সুদেস্তাদা এবং ভেনেজুয়েলারে আর্মান্দো ইনফো।

ওডেব্রেখটের ওপর প্রতিবেদন তৈরি ছাড়াও, আইডিএল-আর তুলে ধরেছে পেরুর দুর্নীতির রূপরেখা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পর্শকাতর অন্যান্য দিকগুলো। শুরুটা হয়েছিল ২০১০ সালে পেরুর সেনাবাহিনী কীভাবে অনেক বেশি দামে সাঁজোয়া ব্যক্তিগত যানবাহন ক্রয় করেছিল—সে গল্প দিয়ে। গোরিতি বলেন, নিউজরুম থেকে পরিচালিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান পেরুর বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ পর্যায়ের মধ্যে দুর্নীতির নেটওয়ার্ক প্রকাশ করেছে।

পানামা পেপারস, প্যান্ডোরা পেপারস, ফিনসেন ফাইলস, বাইবেরি ডিভিশন, প্রজেক্ট রাফায়েল এবং মিরোস্লাভা ব্রীচের হত্যার মতো আন্তঃসীমান্ত প্রতিবেদন তৈরির জন্য অংশীদার মিডিয়া আউটলেটগুলোর সঙ্গে অনুসন্ধানী জোটও গঠন করেছে আইডিএল-আর।

আইডিএল-আরের দলটি এখনও ছোট। “আমাদের নিউজরুমটি নির্মমভাবে কঠোর,” কর্মী ও বাজেট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বলেন গোরিতি। বহু বছর ধরে, তাদের অর্থায়নের সিংহভাগই এসেছে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের স্বাধীন সাংবাদিকতা কর্মসূচী থেকে, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে। “আমরা বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের উদার অনুদান পেয়েছি, তবে তা খুবই সামান্য,” বলেন গোরিতি।

স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ করার জন্য, তারা বিশ্বাস করে তহবিল সংগ্রহের ওপর একটি স্ব-আরোপিত সীমাবদ্ধতা প্রয়োজন। “আমরা কার থেকে তহবিল গ্রহণ করবো, সে বিষয়ে আমরা কঠোর সীমারেখা মেনে চলি,” গোরিতি বলেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে তারা স্থানীয় বা বিদেশী কোনো সরকারের কাছ থেকে কোন ধরনের তহবিল বা অনুদান গ্রহণ করে না।

‘গির্জার শহরে’ প্রতিবাদের ঝড়

ওডেব্রেখট কেলেঙ্কারির পর পেরুর রাজনৈতিক নেতৃত্বে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে থাকে। ২০২২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি পেদ্রো কাস্তিলোর কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টাকে অনেকে অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা মিছিল বের করেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

৩৩টি ক্যাথলিক উপাসনালয়ের জন্য কৃষিনির্ভর পাহাড়ী শহর আয়াকুচো পরিচিত “গির্জার শহর” নামে। প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার সময় এখানে ১০জন বেসামরিক লোক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ১৫ বছর। তিনি হৃৎপিণ্ডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয় আইডিএল-আরের একটি প্রতিবেদনে। এটি তৈরি করেছিলেন সিজার প্রাডো এবং রোজা লরা। ২০২৩ সালে তারা সাংবাদিক ও খ্যাতনামা লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের নামানুসারে প্রদত্ত লাতিন আমেরিকার মর্যাদাপূর্ণ গাবো পুরস্কার এবং ২০২৩ সালে কোলপিন পুরস্কারে প্রথম স্থান অর্জন করেন

পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ভূ-অবস্থানগত তথ্য এবং ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাডো ও লরা ঘটনার সঠিক কালপঞ্জী উপস্থাপন করেন। ১০টি মৃত্যুর মধ্যে ৬টি মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, কারা এর নেতৃত্বে দিয়েছেন তা তুলে ধরেন। এছাড়া বিক্ষোভ দমন করার জন্য কোন ইউনিট পাঠানো হয়েছিল, কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে কারা গুলি চালিয়েছিল—তারা তাও প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হন। প্রতিবেদন তৈরিতে তারা বেলিংক্যাট, কলম্বিয়ার সেরোসেটেন্টা, এবং লা সিলা ভ্যাসিয়ার মতো অগ্রণী সংস্থাগুলোর সহায়তা নেন।

“আমাদের কাছে সমস্ত চাক্ষুষ প্রমাণ ছিল, তাই আমাদের প্রতিবেদনটি চাক্ষুষ হওয়া পক্ষে জোরালো যুক্তি ছিল। আমরা একটি ভিডিও তৈরি করি। যা ছিল আইডিএল-আরের জন্য নতুন কিছু। কারণ এটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হলেও, আমরা সাধারণত লেখা ও আলোকচিত্র প্রকাশ করি। কিন্তু এই ধরনের উদ্ভাবনী পদ্ধতির জন্য সবসময় জায়গা থাকে,” বলেন লরা।

আয়াকুচো: হত্যাকাণ্ডের এক্স-রে শীর্ষক ভিডিও রিপোর্টের স্থিরচিত্র। সেনাবাহিনী পাঠানোর পর সাধারণ একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ সমাবেশ কীভাবে মারাত্মক সংঘর্ষে পরিণত হয়– তা নিয়ে অনুসন্ধান করেছিল আইডিএল-আর। ছবি: স্ক্রিনশট, আইডিএল- রিপোর্টেরস।

বিষয়টি ঘিরে প্রাডো এবং লরার হাতে মূল চাবিকাঠি ছিল ভুক্তভোগীদের পরিবার ও তাদের আইনজীবীদের শরণাপন্ন হওয়া। প্রসিকিউটরদের কাছ থেকে তথ্য এবং স্মার্টফোনে ধারণ করা ভিডিওগুলো সরবরাহ করে তারা তা মিলিয়ে দেখেন: বিক্ষোভকারীরা আয়াকুচোর বিমানবন্দরের রানওয়ে দখল করে নিলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আর তখন সেনাবাহিনী ডাকা হয়।

“সেনা সদস্যদের যখন আদেশ দেওয়া হয়, তখন তাদের কাছে প্রায় কোনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ছিল না। আমি মনে করি প্রতিবাদকারীদের তাড়ানোর জন্য খুব অল্পবয়সী সৈন্যদের ডাকা হয়েছিল, যাদের খুব বেশি প্রশিক্ষণ ছিল না। একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেনা সদস্যদের মধ্যে থেকে আদেশ দেওয়ার শৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়ে। সামরিক নেতৃত্ব পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে,” প্রাডো বলেন।

(যদিও ঘটনার বিপরীতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত-রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তে যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করার সময় নিরাপত্তা বাহিনীকে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আদেশ দেওয়া হয়েছিল।)

“আয়াকুচো শুদ্ধতম সাংবাদিকতার প্রতিফলন,” গ্যাবো পুরস্কারের জুরি বলেন। “তারা হাতের কাছে থাকা সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করছে— নজরদারি চিত্র, সেল ফোন এবং মানচিত্র— এগুলো ব্যবহার করে অন্যদের লুকিয়ে রাখতে চাওয়া বিষয়গুলো তারা উন্মোচন করেছে।”

ভবিষ্যৎ

বছরের পর বছর ধরে, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে আইডিএল-আরে অভিযান চালানো, সূত্র প্রকাশের জন্য চাপ দেওয়া, সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি রাখা হয়েছে এবং উগ্র ডানপন্থী সংগঠনগুলো আউটলেটটির সদর দফতরের সামনে সমাবেশ করেছে।

মেলা এবং গোরিতি উভয়েই জোর দিয়ে বলেন যে, আমরা আজ যে সংকটের মুখোমুখি তা এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। গোরিতি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া অন্যান্য আউটলেটগুলোর জন্য বিশেষ করে যে সব দেশে সংবাদপত্রগুলো এ ধরনের আক্রমণের মুখোমুখি এবং যেখানে মানসম্পন্ন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অর্থায়ন ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের উচিৎ আমাদের এ অভিজ্ঞতাগুলোকে সতর্কতামূলক গল্প হিসাবে বিবেচনা করা।

গোরিতি সতর্ক করে দিয়ে আরো বলেন, “এটি একটি নতুন ধরনের হুমকি যা আমরা এখানে মোকাবেলা করছি, বিশ্বের অন্যান্য নিউজরুমগুলোও যার মুখোমুখি বা নিকট ভবিষ্যতে যা তাদের মোকাবেলা করতে হবে। কট্টর-ডানপন্থীরা যদি বিশ্বজুড়ে আরও প্রভাব এবং ক্ষমতা অর্জন করতে থাকে, তবে এই হুমকিগুলো আরও শক্তিশালী হবে। আমরা বিভিন্নভাবে হুমকির বহুমুখী পরিসরগুলো বাড়তে দেখছি।”

তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইডিএল-আরের মতো আউটলেট— যাদের ব্যাপক আর্থিক সংস্থান নেই, তাদের করণীয় হচ্ছে নিউজরুমের অখণ্ডতার উপর ভিত্তি করে লড়াই চালিয়ে যাওয়া, “শুদ্ধতা, নির্ভুলতা, ডেটার প্রভাব, উত্তর দেওয়ার সক্ষমতা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সংহতি প্রতিষ্ঠা করা।”


Santiago Villaসান্তিয়াগো ভিয়া একজন পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক, তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লাতিন আমেরিকার সংবাদ আউটলেটের জন্য কাজ করেছেন। বর্তমানে কলম্বিয়ায় অবস্থান করছেন এবং এল এস্পেকটেডরের জন্য কলাম লিখছেন। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, ভেনিজুয়েলা এবং ইকুয়েডরে বিদেশী সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন।

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

অনুসন্ধান পদ্ধতি

আবাসন খাত নিয়ে মেক্সিকোর পুরস্কারজয়ী প্রতিবেদন : যা শিখতে পারি

পানির মতো মৌলিক পরিষেবার সংকট থেকে মেক্সিকোর সিটির দক্ষিণে সান সেবাস্তিয়ান জোকোর মানুষ আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এককাট্টা হন। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো আসলে এই এলাকায় কী সঙ্কট সৃষ্টি করেছিল, তা অনুসন্ধানের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাবে এই নিবন্ধে।

সংবাদ ও বিশ্লেষণ

মেক্সিকো থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল থেকে ফিলিপাইন : জিআইজেএনের অনুসন্ধানী বইয়ের তাকে

ঐতিহাসিক ভুলভ্রান্তি, করপোরেট লুকোছাপা আর অসদাদচরণ – যা লুকিয়ে রাখাই ক্ষমতাবানদের কাজ তার উদ্ঘাটন নিয়ে লেখা বই এবার জায়গা পেয়েছে জিআইজেএনের বইয়ের তাকে।

হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বার্তাকক্ষের পাশে দাঁড়াচ্ছে রিপোর্টার্স শিল্ড

অনেকটা শূন্য থেকেই গত বছর যাত্রা শুরু করা রিপোর্টার্স শিল্ড বিশ্বেজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর পাশে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে। অলাভজনক সংস্থাটি স্ট্র্যাটেজিক ল-স্যুটস অ্যাগেইনস্ট পাবলিক পার্টিসিপেশন—সংক্ষেপে স্ল্যাপের (জনস্বার্থ বিরোধী কৌশলগত মামলা) বিপরীতে আর্থিক ও প্রয়োজনীয় সমর্থন দিয়ে থাকে। স্ল্যাপ মূলত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিকে নিরুৎসাহিত আর অনুসন্ধানী বার্তাকক্ষকে ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করা হয় ।

অনুসন্ধান পদ্ধতি

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ছেন? এই তথ্য ও পরামর্শ আপনার জন্য

ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে নির্মিত “অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন” কিংবা হালের “দ্য পোস্ট”, “স্পটলাইট” এবং “সেইড” এর মতো চলচ্চিত্র অনেককেই সাংবাদিকতায় উদ্বুদ্ধ করে। বাস্তবে কিন্তু সাংবাদিকতা আরও অনেক বেশি রোমাঞ্চকর। যদি আপনি অনুসন্ধানের কলাকৌশলটা শিখে নিতে পারেন, তাহলে সফল আপনি হবেনই।