প্রবেশগম্যতা সেটিংস

Istanbul. Photo: Pixabay

লেখাপত্র

তুরস্কে গণমাধ্যম দখলের ফল যেভাবে উল্টে দিল ছোট ছোট ডিজিটাল মিডিয়া

English

ছবি: ইস্তানবুল, পিক্সাবে

তুরস্কের সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে একরকম ভরাডুবির শিকার হয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল। তার অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতাকে এভাবে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বিশ্বের মনোযোগ কেড়েছে দেশটি। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে, এই নির্বাচনে অবাধ তথ্যের যোগান এবং বিজয়ী বিরোধী দলের পক্ষে জনমত গঠনের শক্তিশালী ক্ষেত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে স্থানীয় ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম।

কয়েক বছর ধরেই সেখানে নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন চলছে। প্রথাগত বড় বড় গণমাধ্যমগুলো পুরোপুরি চলে গেছে রাষ্ট্রের দখলে। প্রশ্ন হল, এত কিছুর পরও ছোট ছোট এসব ডিজিটাল মিডিয়া কীভাবে রাতারাতি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে? ‍যারা তুরস্কের সংকুচিত গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার কাজ করছেন, তাদের জন্য এই প্রশ্নের উত্তরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এরদোয়ান বিরোধীরা যেসব শহরে জয়ী হয়েছেন সেখানে এখন আলোচনা, বিতর্ক এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ বিকশিত হয়েছে। এই অর্জনকে ধরে রাখতে স্থানীয় ডিজিটাল গণমাধ্যমগুলোকে আরো সংহত করার উদ্যোগ নেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

নির্বাচন: রাজনৈতিক মতপ্রকাশের অনন্য সুযোগ

তুরষ্কে ডিজিটাল মিডিয়ার এই উত্থানের পেছনে ভূমিকা রেখেছে প্রথাগত গণমাধ্যমের জবরদখল এবং স্থানীয় নির্বাচনের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।

২০১৩ সালের গাজী পার্ক আন্দোলের পর থেকে এরদোয়ান সরকার সামাজিক মাধ্যম এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ শুরু করে। এই বাধা দ্বিগুন হয় ২০১৬ সালে সরকার উৎখাতের প্রচেষ্টার পর। কিন্তু তখনো ডিজিটাল গণমাধ্যমের ওপর মানুষের তেমন আস্থা ছিল না। মূলত পাঠক-দর্শকদের অনাগ্রহের কারণেই মিডিয়াস্কোপ, টি২৪, ডাইকেন, গেজেট ডুভার, গেরচেক গুনডাম এবং আরটি টিভির মত ইন্টারনেটভিত্তিক মিডিয়াগুলো বাজে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রথাগত গণমাধ্যমগুলোকে নির্লজ্জভাবে সরকারী দলের লেজুড়বৃত্তি করতে দেখে, পাঠকরা সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এর জের ধরেই, স্থানীয় নির্বাচনের আগে দ্রুত বাড়তে থাকে ডিজিটাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা।

বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন তুরষ্কের সাধারণ মানুষ প্রথাগত টেলিভিশন চ্যানেল দেখে, আর ট্যাবলয়েড পত্রিকা পড়ে খবরের চাহিদা মেটাতো। কিন্তু পরিস্থিতি আমূল বদলে যায় ২০১৮ সালের মার্চে। ঐ সময়টাতে এরদোয়ানপন্থী মিডিয়া গ্রুপ ডেমিরোরেন হোল্ডিং কিনে নেয় দোগান গ্রুপের মালিকানাধীন সব গণমাধ্যম। হাতবদল হয় দেশটির প্রথম ও তৃতীয় বৃহত্তম সংবাদপত্র এবং অসংখ্য টিভি চ্যানেল। এর মধ্য দিয়ে প্রথাগত গণমাধ্যমে ভিন্নমত প্রকাশের “শেষ ভরসাও” নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে। এখন দেশটির শীর্ষ ১০ সংবাদপত্রের সবগুলো এবং সেরা ১০টি টিভি চ্যানেলের মধ্যে নয়টিই সরকারের অনুগত।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমগুলোকে নির্লজ্জভাবে সরকারী দলের লেজুড়বৃত্তি করতে দেখে, পাঠকরা সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এর জের ধরেই, স্থানীয় নির্বাচনের আগে দ্রুত বাড়তে থাকে ডিজিটাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা।

নির্বাচনের আগে সংবাদপত্র বা টিভি, সব ধরনের গণমাধ্যমকে গণহারে বিরোধী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে দেখে – শুধু এরদোয়ানের বিপক্ষের নয়, তার সমর্থকরাও হতাশ হচ্ছিলেন। উভয় মতাদর্শের নাগরিকরাই নির্বাচনী কাভারেজে ভারসাম্য আশা করছিলেন। কারণ স্থানীয় নির্বাচনে, তারা জাতীয় নির্বাচনের মত রাজনৈতিকভাবে অতটা বিভক্ত ছিলেন না। তুরস্কের পৌরসভা নির্বাচনে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই দলের চেয়ে স্থানীয় স্বার্থ ও ব্যক্তি ইমেজ গুরুত্বপূর্ণ।

শুধু বিকল্প মাধ্যমের প্রতি মানুষের আগ্রহই যে ডিজিটাল মিডিয়ার এই উত্থানে ভূমিকা রেখেছে, তা নয়। এখানে গণমাধ্যম ব্যবহারে দক্ষ বিরোধী নেতাদেরও বড় ভূমিকা আছে। প্রথাগত মিডিয়ায় সুযোগ না পেয়ে, তারা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, যেখানে তাদের একেকজনের লাখ লাখ অনুসারী ছিল। আর সামাজিক মাধ্যমে বিরোধী নেতাদের এই প্রচার – মিডিয়াস্কোপ, টি২৪, আরটি টিভি এবং কেআরটির মত অনলাইন প্লাটফরমের পাঠকও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

সোশ্যাল মিডিয়ার দক্ষ ব্যবহার

অনেক বছর ধরেই তুরস্কের বিরোধী দলীয় নেতারা সামাজিক মাধ্যমে তাদের বক্তব্য প্রচার করে আসছিলেন। কিন্তু তাতে খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না দেশটির সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে দেন ইকরাম ইমামোগলু। ইস্তানবুলের মেয়র পদে টানা দুই বার ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করেন, প্রায় অচেনা এই নেতা। তিনি প্রচারের জন্য একেবারেই আলাদা কৌশল বেছে নেন। সরকারী দল যেখানে সহিংসতা ও বিভক্তি ছড়িয়ে প্রচার করছিল, সেখানে তিনি বলছিলেন রাজনৈতিক সমঝোতার কথা। এমনকি রিপাবলিকান পিপলস পার্টির প্রার্থী যখন এরদোয়ান সমর্থকদের সাথে ভরা বাজারে কলহে জড়িয়ে পড়েন, তখন ইমামোগলু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্প্রীতির আহ্বান জানাচ্ছিলেন, যা দুই পক্ষের মানুষই পছন্দ করেছিল। এভাবে ফেসবুকে তার অনুসারী ছাড়িয়ে যায় ৩০ লাখ আর টুইটারে ১৬ লাখের বেশি। তিনি নির্বাচনে প্রার্থিতাও ঘোষণা করেছিলেন এই দুই সামাজিক মাধ্যমে।

বিরোধী মতের নেতারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে যতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, সেটি প্রথাগত মিডিয়ার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব ছিল না।

সামাজিক মাধ্যম, বিরোধী নেতাদেরকে শুধু ইন্টারনেটের তারকাই বানায়নি, এটি সরকারের চাপে থাকা সমালোচকদের জন্যেও মতপ্রকাশের বড় একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। তেমনই একজন, দেশটির বিখ্যাত সাংবাদিক উনসাল উনলু। সরকারের চাপে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তিনি ইউটিউবে নিজস্ব বিশ্লেষণ প্রচার করতে থাকেন। ডিজিটাল মাধ্যমে রাজনৈতিক কমেন্ট্রিকে জনপ্রিয় করে তোলায় বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। তার বিরোধী-দল-বান্ধব ইউটিউব চ্যানেল, নির্বাচনের আগে প্রায় এক কোটি মানুষের কাছে পৌঁছায়। টুইটারে অনুসারীর সংখ্যা ১৫৫,০০০ ছাড়ায়।

উনলুর তারকাখ্যাতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা ডিজিটাল প্লাটফরমগুলোর ওপর মানুষের আস্থা তৈরি করেছিল। এর সুফল ভোগ করে মিডিয়াস্কোপের মত গণমাধ্যম, যারা শুধু ডিজিটাল প্লাটফরমে খবর প্রচার করে আসছিল। তখন মানুষ খবরের জন্য এধরনের গণমাধ্যমও দেখা শুরু করে। ফলে তাদের রেটিংও বাড়তে থাকে। বিরোধী মতের নেতারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে যতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, সেটি প্রথাগত মিডিয়ার মাধ্যমে (এমনকি সরকারী নিয়ন্ত্রন আরোপের আগে হলেও) অর্জন করা সম্ভব ছিল না।

ভাবতে হবে জাতীয়, কাজ হবে স্থানীয়

তুরস্কে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য – নতুন সম্ভাবনা এবং শংকা – দুটোই জন্ম দিয়েছে বিরোধী দল ও ডিজিটাল মাধ্যমের এই সাম্প্রতিক উত্থান। সবচেয়ে বড় শংকা হল, এই উত্থানকে হুমকি ধরে নিয়ে ডিজিটাল স্পেইসের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরো কঠোর করতে পারে তুরস্ক সরকার। এতে ইউটিউব, ফেসবুক এবং টুইটারের মত মূলধারার প্লাটফরমে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ আরো সংকুচিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এখনো দেশটির বেশিরভাগ মানুষই হোয়াটসঅ্যাপে আসা বার্তা এবং বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম থেকে পাওয়া খবরের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারে না। গণমাধ্যম সাক্ষরতার এমন অভাবও ডিজিটাল মিডিয়ার সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। আর আরেকটি বড় হুমকি হল, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব।

গণমাধ্যমের মূল দায়িত্ব ক্ষমতাকে জবাবদিহি করা, জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার ক্ষেত্র তৈরি করা। কিন্তু সক্রিয় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া কখনোই সেই শক্তি অর্জন করতে পারবে না; নেহাতই নির্বাচনী জনমত গঠনের উপকরণ হয়ে দাঁড়াবে।

নির্বাচনে ডিজিটাল মিডিয়া যে ঝড় তুলেছে, তা কতদিন টিকে থাকবে বলা মুশকিল। কেননা, টিকে থাকতে হলে, ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকে স্বাবলম্বী হতে হলে – কে কী বললেন সেটি প্রচার করা থেকে বেরিয়ে এসে এসব গণমাধ্যমকে উন্নত কন্টেন্ট তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। আর এখানেই আসে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিষয়টি। গণমাধ্যমের মূল দায়িত্ব ক্ষমতাকে জবাবদিহি করা, জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার ক্ষেত্র তৈরি করা। কিন্তু সক্রিয় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া কখনোই সেই শক্তি অর্জন করতে পারবে না; নেহাতই নির্বাচনী জনমত গঠনের উপকরণ হয়ে দাঁড়াবে।

অবশ্য, সম্পদের এই সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে পারে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো। যথোপযুক্ত উদ্যোগের মাধ্যমে ডিজিটাল মাধ্যমের শক্তি ও প্রভাব বাড়ানোর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে তারা। শুরুটা হতে পারে, উনসাল উনলুর মত আস্থাভাজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সরাসরি সহায়তা দিয়ে। যতদিন না প্রাতিষ্ঠানিক গণমাধ্যমগুলো নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ঠিক করতে পারছে, ততদিন পর্যন্ত উনসুলের মত ব্যক্তিরা ডিজিটাল মাধ্যমে মানুষকে যুক্ত রাখার কাজটি করে যেতে পারেন।

এধরনের মাধ্যমগুলোকে সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রেও দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথাগত গণমাধ্যম উন্নয়ন প্রকল্পের মডেল এখানে কাজ করবে না। এর বদলে, যেতে হবে একেবারে স্থানীয় পর্যায়ে, যেখানে নির্বাচনে জয় পাওয়া নেতারা মিডিয়ার বিকাশে নেয়া উদ্যোগে রাজনৈতিক সমর্থন দেবে।

দেশটির বড় ছয়টি নগরীর পাঁচটিতেই এখন সরকারপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ নেই। সেখানকার পুরনো গণমাধ্যমগুলোকে উজ্জীবিত করা এবং হুমকির মুখে থাকা সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ক্ষেত্র তৈরির জন্য উপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহনের এটাই সময়। সবচেয়ে জরুরী হল, এই সব উদ্যোগের মাধ্যমে ছোট ছোট ডিজিটাল আউটলেটগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি করা। পরস্পরবিচ্ছিন্ন এবং বিভক্ত অবস্থায় থাকার কারণে তারা সহজেই চাপ বা নিপীড়ন শিকার হয়। সংহতির এই উদ্যোগ যে শুধু রাজনৈতিক চাপ মোকাবেলায় তাদেরকে সাহায্য করবে তা নয়। এর মধ্য দিয়ে তুলনামূলক বড় ডিজিটাল আউটলেটগুলো তাদের সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনাকে আরো উন্নত করতে শিখবে, সরকারী নিয়ন্ত্রনের বাইরে থেকে মালিকানার নতুন মডেল তৈরি করতে পারবে এবং এক পর্যায়ে বিদেশী অনুদান নির্ভরতা থেকেও সরে আসতে পারবে।

বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিদেশ থেকে তুর্কী ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করে। সঠিক খবর জানানোর ক্ষেত্রে তাদের অবদান অনেক। কিন্তু অনেকসময় এধরনের প্রতিষ্ঠানকে দেখা হয়, স্থানীয় বিষয়ে বিদেশীদের হস্তক্ষেপ হিসেবে। গণমাধ্যমের উন্নয়ন নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদেরকে বিদেশভিত্তিক এসব সংবাদ মাধ্যমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার এই সময়ে গণমাধ্যম কাঠামোতে “স্থানীয়” প্রতিষ্ঠান যত বাড়বে, সরকারের জন্যেও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ততই কঠিন হবে।

অল্প সময়ের জন্যে হলেও, গণমাধ্যম দখলের চেষ্টা মোটাদাগে সরকারের জন্য হিতেবিপরীত হয়েছে। বরং তুরস্কে এখন ভিন্নমত প্রকাশের বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ডিজিটাল মিডিয়া, যা শাসকের রাজনৈতিক প্রভাব ও জনপ্রিয়তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।  এর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও অনেক। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই সুযোগটি তৈরি হয়েছে স্থানীয় রাজনীতির চাহিদা ও স্বার্থ থেকে, যাকে বিস্তৃত ও ব্যাপক করে তুলেছে ইন্টারনেট। আর এই কথা মাথায় রেখেই গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ভবিষ্যত নীতিমালা এবং অর্থায়ন পরিকল্পনা সাজাতে হবে, যাতে তুরস্কের স্থানীয় ও জনপ্রিয় এইসব ডিজিটাল গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সক্ষমতা বাড়ে।

লেখাটি প্রথম প্রকাশ করে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া অ্যাসিসট্যান্স (সিমা)। এখানে অনুমতি নিয়ে পুনপ্রকাশ করা হল।

ডুইগু গুভেঞ্চ, তুরস্কের একজন স্বাধীন সাংবাদিক। তার সাংবাদিকতা মূলত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে। তিনি কুমুরিয়াত ডেইলি, হুরিয়াত ডেইলি নিউজ, সাবাহ ডেইলি এবং ম্যাকক্ল্যাচি নিউজপেপার গ্রুপের বিশেষ সংবাদদাতা হয়ে কাজ করেছেন।

 

জেরেমি ল্যাংলোইস একজন মধ্য প্রাচ্য বিশ্লেষক। তিনি সামাজিক আন্দোলন এবং গণতন্ত্রায়ন নিয়ে গবেষণা করেন। বর্তমানে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ালশ স্কুল অফ ফরেন সার্ভিসে আরব স্টাডিজে এমএ করছেন।

 

ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে আমাদের লেখা বিনামূল্যে অনলাইন বা প্রিন্টে প্রকাশযোগ্য

লেখাটি পুনঃপ্রকাশ করুন


Material from GIJN’s website is generally available for republication under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International license. Images usually are published under a different license, so we advise you to use alternatives or contact us regarding permission. Here are our full terms for republication. You must credit the author, link to the original story, and name GIJN as the first publisher. For any queries or to send us a courtesy republication note, write to hello@gijn.org.

পরবর্তী

post office boxes, shell companies

পরামর্শ ও টুল

শেল কোম্পানির গোপন মালিকদের যেভাবে খুঁজে বের করবেন

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জন্য শেল কোম্পানি ও সেগুলোর প্রকৃত মালিকদের পরিচয় খুঁজে বের করা বেশ কঠিন হতে পারে। তবে শক্তিশালী কিছু টুল রয়েছে যার সাহায্যে জটিল এই ক্ষেত্রে নতুন আসা সাংবাদিকেরাও গোপনে অবৈধ সম্পদ লুকোনো ব্যক্তিদের পদচিহ্ন খুঁজে বের করতে পারেন।

টেকসইতা পদ্ধতি

সাংবাদিকতার প্রভাব পরিমাপ — আমরা নতুন যা জানি

সব সংবাদমাধ্যমই চেষ্টা করে তাদের রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরির জন্য। কিন্তু এই প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে একেক ধরনের সূচক। পড়ুন, এ নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন কী জানা গেছে।

BBC Newsnight NHS investigations lessons learned

কেস স্টাডি

যেভাবে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যসেবা কেলেঙ্কারির স্বরূপ উন্মোচন করেছে বিবিসি নিউজনাইট

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিয়ে ছোট একটি অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করেছিল বিবিসি নিউজনাইট। কিন্তু পরবর্তীতে এক বছরব্যাপী অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নানাবিধ অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার বিস্তারিত চিত্র। পড়ুন, পুরস্কারজয়ী অনুসন্ধানটির নেপথ্যের গল্প ও অভিজ্ঞতা-পরামর্শ।

টিপশীট ডেটা সাংবাদিকতা পরামর্শ ও টুল

টিপশিট: আপনার অনুসন্ধানে কীভাবে সামুদ্রিক ডেটা ব্যবহার করবেন

সমুদ্র সংক্রান্ত ডেটার ধরন হতে পারে বহুবিচিত্র। সমুদ্রে দূষণ, জীববৈচিত্র্য পরিস্থিতি অথবা অর্থবাণিজ্য— এমন বিভিন্ন ধরনের ডেটা, সাংবাদিকেরা ব্যবহার করতে পারেন তাদের রিপোর্টিংয়ে। এই টিপশিটে পাবেন অনুসন্ধানে সামুদ্রিক ডেটা ব্যবহারের পরামর্শ ও রিসোর্সের খোঁজ।